ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৪৩

সংখ্যা: ১৭০তম সংখ্যা | বিভাগ:

ভাষান্তর: আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

[শয়তান যে মানুষকে নেক ছূরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী-খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য।   “Confession of a British Spy and British enmity aainst Islam”  গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। (ইনশাআল্লাহ)]

(ধারাবাহিক)

১৫। সাইয়্যিদগন নবী বংশের অধঃস্থন পুরুষ, এ বিশ্বাসের প্রতি লোকজনকে সন্দেহ প্রবণ করবে। যারা কালো ও সবুজ পাগড়ী পরিধান করেন এবং সাইয়্যিদ নন তাদের সঙ্গে সাইয়্যিদগণকে একাকার করে ফেলতে হবে। এতে লোকজন সাইয়্যিদগণ সম্পর্কে হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে এবং পরিশেষে সাইয়্যিদগণের সম্পর্কে আস্থা হারাবে। সাইয়্যিদগণের ধর্মীয় কর্তৃত্ব নষ্ট করতে হবে এবং মাথা থেকে পাগড়ী খুলে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে নুবুওওতি আখলাক্ব নষ্ট হয় এবং ধর্মীয় কর্তৃত্বের বিষয়গুলো কখনও সম্মান না পায়। (বিখ্যাত আলিম সাইয়্যিদ আবদ-উল-হাকিম আরওয়াসি রহমতুল্লাহি আলাইহি ইস্তাম্বুল থাকতে আসহাব-ই-কিরাম নামে যে কিতাব রচনা করেন তাতে লিখেছেন, হযরত ফাতিমা-তুজ-জোহরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এবং তাঁর মুবারক আওলাদগণ দুনিয়ার শেষ দিন পর্যন্ত আহলে বাইয়াত হিসেবে বিবেচিত হবেন। উনাদের মুহব্বত করা সবার জন্য ফরয। আহলে বাইতকে ভালবাসা, অন্তর দিয়ে কিংবা দৈহিকভাবে এবং সম্পদের মাধ্যমে সাহায্য করা, ভক্তি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা এবং উনাদের অধিকারের প্রতি নজর রাখা হলে যে কেহ ঈমানের সাথে ইন্তিকাল করতে পারবে। সিরিয়ার হামা শহরে সাইয়্যিদগণের জন্য আইনী আদালতের ব্যবস্থা ছিল। মিশরের আব্বাসীয়া খিলাফতের সময় হযরত ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর বংশধরগণকে শরীফ বলা হতো। তারা সাদা পোশাক পরিধান করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। আর হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর বংশধরগণকে বলা হতো সাইয়্যিদ। তাঁরা সবুজ পোশাক পরিধান করতেন। এ সম্মানিত দুই পরিবারের যে সকল শিশু জন্মগ্রহন করতেন তাদেরকে দু’জন স্বাক্ষী এবং একজন বিচারকের সামনে নিবন্ধনকৃত করা হত। কিন্তু সূলতান আব্দুল মজিদ খান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর শাসন আমলে বৃটিশদের দালাল রশিদ পাশা তার বৃটিশ প্রভুদের ইঙ্গিতে এই আইনী আদালত বাতিল করে। ফতওয়া-ই-হাদিসিয়ায় বলা হয়েছে, ইসলামের প্রথম যুগে আহলে বাইতের যে কোন বংশধরদের শরীফ নামে অভিহিত করা হতো। যেমন- শরীফই আব্বাসী, শরীফ-ই জয়নালী ইত্যাদি। ফাতেমী শাসকরা ছিল শিয়া। তারা হযরত ইমাম হুসাইন এবং ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমার বংশধরগণকে শরীফ নামে অভিহিত করতেন। মিশরের তুর্কী শাসকের একজন আশরাফ শাবান বিন হুসাইন নির্দেশ দেন সাইয়্যিদগণ সবুজ পোশাক পরিধান করবেন যাতে উনাদের শরীফদের থেকে আলাদাভাবে চেনা যায়। এ প্রথা ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে, যদিও ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে এর কোন মূল্য নেই।) ১৬। শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা যেখানে শোক প্রকাশ করে সেসব ধ্বংস করে দিতে হবে। কারণ তা হচ্ছে বিদয়াত এবং পরিত্যাজ্য। সেখানে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দিতে হবে এবং ধর্ম প্রচারকদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। ধর্মপ্রচারক এবং শোক প্রকাশের স্থানগুলোর মালিকদের উপর কর আরোপ করতে হবে। ১৭। স্বাধীনতার কথা বলতে গিয়ে সকল মুসলমানগণকে বোঝাবে যে প্রত্যেক মানুষই স্বাধীন। সে যা খুশী তাই করতে পারে। আমর বিল মারুফ এবং নাহি আনিল মুনকার ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী ফরয নয়। উপরন্তু, তাদের মধ্যে এই বিশ্বাস প্রবেশ করিয়ে দিবে যে, খ্রিষ্টানরা তাদের নিজেদের বিশ্বাস নিয়ে থাকবে, আর ইহুদীরা তাদের নিয়ম মেনে চলবে কেউ কারো হৃদয়ে আঘাত করবে না। আমর বিল মা’রূফ এবং নাহি আনিল মুনকার হচ্ছে খলীফাদের কাজ। ১৮। মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ এবং বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করতে হবে। বিয়ে শাদীও থাকবে নিয়ন্ত্রিত। বলতে হবে, একজন আরবী কোন ইরানী বিয়ে করতে পারে না, একজন ইরানী পারবে না আরবীকে বিয়ে করতে। একইভাবে একজন তুর্কী পারবে না ইরানীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে। ১৯। ইসলাম ধর্ম প্রচার এবং মানুষের ইসলাম কবুল করা বন্ধে সর্বাত্মক চেষ্টা নিবে। এ ব্যাপারে প্রচারণা চালাবে যে, ইসলাম শুধু আরব দেশে সীমাবদ্ধ থাকার মতই একটি বিশেষ ধর্ম। প্রমাণ হিসেবে কুরআন শরীফের এই আয়াত শরীফের উদ্ধৃতি দিবে, “কেবল তোমাদের এবং তোমাদের মত লোকজনের জন্যই শুধূ যিকির।” ২০। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কেবল রাষ্ট্রের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে যাতে লোকজন ব্যক্তিগত উদ্যোগে কখনও মাদ্রাসা বা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম না হয়। (চলবে)

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮

‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’- একটি সূক্ষ্ম ও গভীর ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া অথচ নিশ্চুপ তথাকথিত খতীব, মহিউদ্দীন, আমিনী ও শাইখুল হাদীছ গং তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ীরা- (১)

মওদুদীর নীতি থেকেও যারা পথভ্রষ্ট সেই জামাত- জামাতীদের জন্যও ভয়ঙ্কর মুনাফিক॥ আর সাধারণের জন্য তো বলারই অপেক্ষা রাখেনা

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২