মশহুর সিলসিলার নাতি নিজের দেয়া দৃষ্টান্ত অনুযায়ী নিজেই কেনানের ক্বায়িম-মক্বাম সাব্যস্ত হলেন

সংখ্যা: ১২৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

দৃষ্টান্তটা তিনিই দিয়েছেন। বলেছেন “চৌধুরীর ছেলে চৌধুরী হতে পারে, পাঠানের ছেলে পাঠান হতে পারে, সৈয়দের ছেলে সৈয়দ হতে পারে কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত ইসলাম অনুযায়ী না চলবে মুসলমান হওয়া চলবেনা। উদাহরণ হিসেবে বলেছেন, “উলুল আ’যম পয়গাম্বর (আলাইহিস্ সালাম-এর) ছেলে কেনান ইসলামকে ছেড়ে দেয়ায় কাফির হয়েছিল।” এতদ্বপ্রেক্ষিতে বলতে হয় যে, দৃষ্টান্তটা দেয়ার সাথে সাথে তিনি নিজেই দৃষ্টান্ত হয়েছেন। যেমন হয়েছে ইবলিস। সে বেহেশ্ত দেখল, দোযখ দেখল, ফেরেশ্তা দেখল, ফেরেশ্তাদের তা’লীম দিল।  “আল্লাহ পাক-এর এক বান্দা বহু বছর ইবাদত করার পর গোমরাহ-কাফির হয়ে যাবে” লৌহ মাহ্ফুজে এ লেখা দেখে ফেরেশ্তাদের কাঁদাকাটির প্রেক্ষিতে ইবলিস ফেরেশ্তাদেরকে রক্ষার জন্য দোয়া করল কিন্তু নিজের জন্য ঘূর্ণাক্ষরে একবারও দোয়া করলনা; নিজের দিকটা আদৌ ভেবে দেখলনা। ঠিক এক মশহুর সিলসিলার নাতি ছাহেবও উপরোক্ত নছীহত করার ক্ষেত্রে একবারও ভেবে দেখলনা যে, তার কৃত নছীহত তার প্রতিই সর্বাগ্রে প্রযোজ্য। সে মুজাদ্দিদুয্ যামান-এর নাতী হওয়া সত্ত্বেও, সুলতানুল আরিফীন-এর ভাতিজা হওয়া সত্ত্বেও, ক্বাইয়্যূমুয্ যামান-এর পুত্র হওয়া সত্ত্বেও সে যে আজকে তাদের পবিত্র ধারা হতে ত্যাজ্য ও বর্জিত হয়ে কেনানের ক্বায়িম-মক্বাম হয়েছে তা একটুও সে ভেবে দেখেনি। মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল আরিফীন, ক্বাইয়্যূমুয্ যামান সকলেই ইল্মে তাছাউফের তথা হক্কানী পীর প্রথার ধারক-বাহক ছিলেন। তাঁরা সকলেই পরিপূর্ণ ফয়েযপ্রাপ্ত ও তাওয়াজ্জুহ দানকারী পীর ছাহেব হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তাঁরা সকলেই ইলমে তাছাউফ তথা পীর ছাহেবের হাতে বাইয়াত হওয়াকে ফরয স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাদেরই বংশধর দাবী করে বর্তমান নাতির আক্বীদা সম্পর্কে গত ১লা নভেম্বর শনিবার ২০০৩ দৈনিক ইনকিলাবের ২য় পৃষ্ঠায় নিজস্ব প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে লিখা হয় “এদিকে আগামী ১২ ডিসেম্বর থেকে …….. ৮ দিনব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল শুরু হবে। বিশুদ্ধ ধর্ম চর্চার প্রতিষ্ঠান … … … পীর প্রথা তুলে দেয়ার পর এই প্রথম এই বিশাল  আয়োজন করা হয়েছে।” পাশাপাশি ২৯শে অক্টোবর দৈনিক সংগ্রামের ২য় পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয় “এদিকে আগামী ১২ই ডিসেম্বর থেকে …….. ৮ দিনব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল শুরু হবে। অক্ষম, অথর্ব এবং ইসলামের পরিপন্থী হওয়ার কারণে বিশুদ্ধ ধর্ম চর্চার প্রতিষ্ঠান …….. পীর প্রথা তুলে দেয়ার পর এই প্রথম এই বিশাল আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।” নাতি ছাহেবের উপরোক্ত বক্তব্যদ্বয়ের দ্বারা প্রতিভাত  হয় যে, তার দাদা, বাপ-চাচারা অশুদ্ধ ধর্ম চর্চা করেছেন। তারা পীর ছাহেব হয়ে অথর্ব, অক্ষম এবং ইসলামের পরিপন্থী কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। (নাঊযুবিল্লাহ) নাতি ছাহেবের এই বক্তব্য দ্বারা আরো প্রতিভাত হয় যে, অতীতের সব আউলিয়া-ই-কিরাম তথা সব ফিক্বাহর ইমাম ও সব ত্বরীক্বার ইমাম তারা অথর্ব, অক্ষম ও ইসলাম পরিপন্থী কাজ করেছেন। (নাঊযুবিল্লাহ) ইমামে আ’যম, হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, সাইয়্যিদুত্ ত্বয়িফা হযরত জোনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি; গাউছূল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি; হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশ্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি, আফযালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁরা সবাই ইসলামের পরিপন্থী অথর্ব, অক্ষম কাজ করেছেন। (নাঊযুবিল্লাহ) কারণ তারা সকলেই পীর ছাহেবের হাতে বাইয়াত হওয়া ফরয বলেছেন আর নিজেরাও পীর ছাহেব ছিলেন এবং আরো বলেছেন, “যার পীর নাই তার পীর শয়তান।” তদুপরি শুধু পীর ছাহেব নয় পীর প্রথা অর্থাৎ ইলমে তাছাউফের বিরুদ্ধে বলে নাতি ছাহেব সরাসরি আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফ তথা আল্লাহ পাক-এর কালাম কুরআন শরীফের বিরুদ্ধে বলেছেন। আর যে কুরআন-সুন্নাহ্র বিরুদ্ধে বলল সে স্পষ্ট কুফরী করল।  কারণ, সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ একমত যে কুরআন-সুন্নাহ্য় একথা স্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছে, “ইলমে তাছাউফ হাছিল করা ফরয।” আর ইলমে তাছাউফ হাছিলের প্রথাই প্রচলিত ভাষায় পীর প্রথা (অবশ্যই হক্কানী-রব্বানী) বলে প্রচলিত। আর সামগ্রিকভাবে সেই পীর প্রথার বিরুদ্ধে বলে নাতি ছাহেব স্পষ্ট কুফরী করেছেন।  তবে শুধু কুফরীতেই তিনি সীমাবদ্ধ থাকেননি; তিনি জ্বলজ্যান্ত মুনাফিকীও করেছেন। পীর প্রথা তুলে দেয়ার প্রমাণ পেশ করতে তিনি ইনকিলাবে প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়েছেন …….. কুরাঈশী আর সংগ্রাম পত্রিকায় ছাপিয়েছেন … … …। অর্থাৎ উভয়ক্ষেত্রে তিনি পীর প্রথার বিরুদ্ধে বলার পাশাপাশি পীর কথাটি খুব সচেতনভাবে বাদ দিয়েছেন। অথচ এক লিফলেটে আবার বলেছেন “পীরদের মাধ্যমে এ দেশের ইসলাম প্রচার হয়েছে। মানুষ তাওহীদের শিক্ষা পেয়েছে। জাহান্নামী মানুষ জান্নাতী হয়েছে….। ফুরফুরার পীর ছাহেবগণ হাজার বছর ধরে মানুষকে আল্লাহ পাক-এর দিকে ডাকছেন। তামাম বিশ্বের হক্কানী উলামাগণ ফুরফুরাকে হক্ব বলেছেন। দেশ বিদেশের বিখ্যাত আলিম ও শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিকরা ফুরফুরার মুরীদ ছিলেন এখনও আছেন।” পাঠক! দৈনিক ইনকিলাবে এবং সংগ্রামে দেয়া নাতি ছাহেবের প্রেস বিজ্ঞপ্তি আর ১৬-১৭ মে’র রহমতুল্লিল আলামীন কনফারেন্স উপলক্ষে প্রচারিত এই লিফলেটের মধ্যে কি ধরনের স্ববিরোধী বক্তব্য বিদ্যমান।  ১৬-১৮ মে’র মাহফিল উপলক্ষে প্রচারিত এই লিফলেটে বলা হয়েছে, পরিচালনায়  …….. পীর ছাহেব হুযূর  এবং তার নছীহতে পীর ছাহেবদের ওসীলায়ই মানুষ মুসলমান হয়েছে, জান্নাতী হয়েছে, সে কথা উচ্ছসিতভাবে বলা হয়েছে। আর ১২ই ডিসেম্বর থেকে আয়োজিত ৮ দিনের মাহফিলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মাত্র ৬ মাসের মাথায় পীর ছাহেব হিসেবে নিজের নামকে গোপন করা হয়েছে এবং গোটা পীর প্রথা তথা ইলমে তাছাউফের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে।  উল্লেখ্য, এ প্রেক্ষিতে নাতি ছাহেব নিজের বক্তব্য দ্বারাই নিজে জাহান্নামী প্রমাণিত হয়েছে। কারণ তার প্রচারিত লিফলেটে সে বলেছে, “পীর ছাহেবদের মাধ্যমে এদেশের ইসলাম প্রচার হয়েছে। মানুষ তাওহীদের শিক্ষা পেয়েছে। জাহান্নমী মানুষ জান্নাতী হয়েছে।” আর এখন সে পীর ছাহেবদের বিরুদ্ধে তার দেয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই তাহলে সাব্যস্ত হয় যে, সে বর্তমানে ইসলাম থেকে দূরে সরে গেছে। তাওহীদের শিক্ষা পেয়েও ভুলে গেছে এবং জান্নাতী থেকে জাহান্নামী হয়েছে। ফুরফুরা শরীফের পীর ছাহেবগণ প্রায় হাজার বছর ধরে মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন।  আর সেই বংশের হয়েও পীর প্রথা তথা ইলমে তাছাউফ তথা ইসলামকে অস্বীকার করার কারণে নাতি ছাহেব আজকে তার দেয়া উদাহরণ “উলুল আ’যম পয়গাম্বরের বেটা কেনান ইসলামকে ছেড়ে দেয়ায় কাফির হয়েছিল” নিজেই তার দৃষ্টান্ত হয়েছে।

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।

 শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২২  

ইরাকের মীরজাফর সাদ্দাম  রাশিয়ার বেলারুশ যেতে চায় কেন?    

চট্টলার বহুল প্রচলিত দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ্যে আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাতের কাছে ক্ষমা চেয়ে তারা রক্ষা পেলো ॥

প্রসঙ্গঃ ছবি, অশ্লীল ছবি ইনকিলাব ও হাটহাজারীর আহমক শাফী উপাখ্যান

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২৩