(৩৬তম ফতওয়া হিসেবে)
“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য—সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খেদমত মুবারক—এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কতিপয় সুওয়াল—জাওয়াব
(পূর্বপ্রকাশিতের পর)
সুওয়াল—৪
খাস জায়গায় লিজ নিয়ে ৪০—৫০ বছর আগে জনগণের সুবিধার্থে মসজিদ বানানো হয়েছে। এখন সেই মসজিদ কি সরকার ভেঙ্গে ফেলতে পারবে?
জাওয়াব: খাস বা সরকারী জমি বলে কোনো জমি নেই, সব জমির হাক্বিক্বতে মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং দেশ হিসেবে জনগণ মালিক। সরকারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য, সরকারকে জমির মালিকানা দেয়া হয়নি। তাই সরকারী জমি বলে কোনো জমি নেই। অতএব দেশের খাস জমি থাকলে তার মালিক জনগণই হবে। এখন জনগণ যদি জনগণের প্রয়োজনে তাদের মালিকানাভুক্ত জমিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করেন, তবে সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার হুকুম অন্যান্য সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাদের মতোই হবেন। সরকার সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক—এ হাত দিতে পারবে না। তবে ব্যক্তি মালিকানার কোনো জমিতে অনুমতি ছাড়া মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক বানানো যাবে না।
জনগণের সুবিধার্থে খাস জায়গায় যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক তৈরি করা হয়েছে এবং তাতে আযান দিয়ে নামায পড়া হয়েছে উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকও ওয়াক্ফকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ন্যায় হুকুম রাখে। কেননা জনগণই হচ্ছেন খাস জায়গার মালিক। এখন জনগণই যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে তাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করে সেখানে আযান দিয়ে নামায আদায় করেছেন তখন তা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক হিসেবে গণ্য হয়ে গেছেন এবং উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানাধীন হয়ে গেছেন।
আর খাস জায়গার মালিক সরকার নয়। তাই সরকারের পক্ষে খাস জায়গায় নির্মিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গাও জায়িয নেই।
কাজেই এখন আর কেউ উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙতে পারবে না। কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গার অধিকার কারো নেই।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَنْ اَظْـلَمُ مِـمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ يُّذْكَرَ فِـيْـهَا اسْـمُهٗ وَسَعٰى فِـىْ خَرَابِـهَا اُولٰٓـئِكَ مَا كَانَ لَـهُمْ اَنْ يَّدْخُلُوْهَا اِلَّا خَآئِفِيْـنَ لَـهُمْ فِـى الدُّنْـيَا خِزْىٌ وَلَـهُمْ فِـى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ
অর্থ: “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে? যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় বা বিরাণ করতে চেষ্টা করে। তাদের জন্য ভীত—সন্ত্রস্ত অবস্থায় অর্থাৎ খালিছ তওবা—ইস্তিগফার করা ব্যতীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে প্রবেশ করা জায়িয নেই। তাদের জন্য রয়েছে ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নং ১১৪)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ‘তাফসীরে সমরকন্দী শরীফ, তাফসীরে খাযিন শরীফ ও তাফসীরে বাগবী শরীফ’ উনার মধ্যে وَمَنْ اَظْـلَمُ “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে?” এই অংশের ব্যাখ্যায় উল্লেখ রয়েছে, وَمَنْ اَكْفَرُ “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় কাফির আর কে? অর্থাৎ ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক স্মরণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় বা বিরাণ করতে চেষ্টা করে।” (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক বন্ধ করে রাখে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গে বা ভাঙ্গার কোশেশ করে অর্থাৎ হক্ব আদায় করে না, তা’যীম—তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করে না) না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে সমরকন্দী শরীফ ১/৮৬, তাফসীরে খাযিন শরীফ ১/৭২, তাফসীরে বাগবী শরীফ ১/১৫৭)
উক্ত সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীর “তাফসীরে আহমদী” উনার ১৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছেন,
اِنَّـهَا تَدُلُّ عَلٰى اَنَّ هَدْمَ الْمسَاجِدِ وَتَـخْرِيْـبَـهَا مَـمْنُـوْعٌ وَكَذَا الْمَنْعُ عَنِ الصَّلٰوةِ وَالْعِـبَادَةِ وَاِنْ كَانَ مَـمْلُوْكًا لِلْمَانِعِ
অর্থ: উক্ত সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা বুঝা যায় যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ধ্বংস করা বা বিরান করা নিষিদ্ধ। অনুরূপ তাতে নামায ও ইবাদত করতে নিষেধ করাও হারাম, যদিও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকখানা নিষেধকারীর অধীনে থাকে।
দলীলসমূহ: ১. তাফসীরে ত্ববারী শরীফ, ২. তাফসীরে খাযিন শরীফ, ৩. তাফসীরে বাগবী শরীফ, ৪. তাফসীরে মাযহারী শরীফ, ৫. তাফসীরে আহমদী শরীফ, ৬. তাফসীরে সামারকন্দী শরীফ, ৭. তাফসীরে জালালাইন শরীফ, ৮. তাফসীরে দুররে মানছূর শরীফ, ৯. তাফসীরে নিশাপুরী, ১০. মাজমাউয যাওয়াইদ, ১১. জামি‘উছ ছগীর, ১২. ফাতহুল কাবীর, ১৩. জামি‘উল আহাদীছ, ১৪. কাশফুল খফা, ১৫. আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ, ১৬. কানযুল ‘উম্মাল, ১৭. সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী, ১৮. মুছান্নাফে আবী শায়বা, ১৯. শুয়াবুল ঈমান, ২০. ত্ববারানী শরীফ ইত্যাদি।
সুওয়াল—৫
মসজিদের মালিক কে? মসজিদ ভাঙতে হলে কার অনুমতি লাগবে? কার অনুমতি শরীয়তে গ্রহণযোগ্য?
জাওয়াব: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার একমাত্র মালিক হচ্ছেন খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি। মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানাধীন কোনো কিছু ভাঙ্গার অনুমতি মাখলুকাতের কেউ দিতে পারে না। কারো অনুমতি বা নির্দেশনা গ্রহণযোগ্য নয়। যে অনুমতি বা নির্দেশনা দিবে সে কাফির হিসেবে গণ্য হবে। এমনকি যে অনুমতি চাইবে সেও কাফির হিসেবে গণ্য হবে।
যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَاَنَّ الْمَسٰجِدَ لِلّٰهِ
অর্থ: “আর নিশ্চয়ই সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। অর্থাৎ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা জিন শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮)
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـى الدَّرْدَاءِ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمَسَاجِدُ بُـيُـوْتُ اللهِ
অর্থ: “হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (শু‘আবুল ঈমান ৪/৩৮০, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ২২/১৫৪, কানজুল উম্মাল ৭/৫৭৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ بُـيُـوْتَ اللهِ فِـى الْاَرْضِ الْمَسَاجِدُ وَاِنَّ حَقًّا عَلَى اللهِ اَنْ يُّكْرِمَ مَنْ زَارَهٗ فِـيْـهَا
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক। আর নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার হক্ব হচ্ছেন যাঁরা ওই সকল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক উনাদের মধ্যে প্রবেশ করবেন, উনাদেরকে সম্মানিত করা।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ৯/৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/৩২, জামি‘উল আহাদীছ লিস সূয়ূত্বী ৮/৪৮০, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ৩/৪৬৬ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْـهُ قَالَ اَلْمَسَاجِدُ بُـيُـوْتُ اللهِ فِـى الْاَرْضِ تُضِىْءُ لِاَهْلِ السَّمَاءِ كَمَا تُضِىْءُ نُـجُوْمُ السَّمَاءِ لِاَهْلِ الْاَرْضِ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন দুনিয়ার যমীনে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক।’ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ আসমানবাসী উনাদেরকে এমনভাবে আলোকিত করে থাকেন, যেমনিভাবে আসমানের তারকারাজি যমীনবাসী উনাদেরকে আলোকিত করে থাকে।” সুবহানাল্লাহ! (শু‘আবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৪/৩৮০, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/১৫, জামি‘উল আহাদীছ ৮/৩৩৮, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ৩/৪৬৭ ইত্যাদি)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন—
اَلْـمَسْجِدُ بَـيْتُ اللهِ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
‘শারহু যাদিল মুস্তাক্বনি’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
اَلشَّخْصُ اِذَا اَوْقَفَ مَسْجِدًا خَرَجَ مِنْ مِلْكِهٖ حَتّٰـى صَاحِبُ الْاَرْضِ لَا يَسْتَطِيْعُ اَنْ يَّــتَصَرَّفَ فِـيْهِ لِاَنَّهٗ خَرَجَ مِنْ مِلْكِـيَّـتِهٖ لِلّٰهِ{وَاَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلّٰهِ} فَالْـمَسْجِدُ اِذَا اَوْقَفَ خَرَجَ عَنْ مِلْكِـيَّةِ صَاحِبِهٖ
অর্থ: “কোনো ব্যক্তি যখন কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ওয়াক্বফ করে, তখন উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক তার মালিকানা থেকে বের হয়ে যায়। এমনকি যে ব্যক্তি জায়গা দান করেছে, সে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করারও ক্ষমতা রাখে না। কেননা উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক তার মালিকানা থেকে বের হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানায় চলে গেছেন। (আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,) নিশ্চয়ই সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। অর্থাৎ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদের মালিক হচ্ছেন স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি। সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা জিন শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮) সুতরাং যখন কেউ কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ওয়াক্বফ করে, তখন তা তার মালিকানা থেকে বের হয়ে যায়।”
‘দুরারুল হুক্কাম’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছেন,
قَالَ حَضْرَتْ اَبُـوْ يُـوْسُفَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ هُوَ مَسْجِدٌ اَبَدًا اِلـٰى قِـيَامِ السَّاعَةِ لَا يَـعُوْدُ مِيْـرَاثًا وَلَا يَـجُوْزُ نَـقْلُهٗ وَنَـقْلُ مَالِهٖ اِلـٰى مَسْجِدٍ اٰخَرَ سَوَاءٌ كَانُـوْا يُصَلُّوْنَ فِـيْهِ اَوْ لَا وَهُوَ الْفَتْـوٰى
অর্থ: “হযরত ইমাম আবূ ইঊসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ক্বিয়ামত পর্যন্ত আবাদুল আবাদ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক হিসেবেই থাকবেন, কোনো উত্তরাধিকারীর অধিকারভুক্ত হবে না। আর উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক স্থানান্তর করা এবং উনার সম্পত্তি অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক—এ স্থানান্তর করাও জায়িয হবে না, লোকজন সেখানে নামায পড়ুক অথবা না পড়–ক। এটাই হচ্ছে ফতওয়া।” সুবহানাল্লাহ! (দুরারুল হুক্কাম ২/১৩৫)
কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার মালিক স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি নিজেই অন্য কেউ নয়। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার একচ্ছত্র মালিক যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি, তাই কোনো অবস্থাতেই রাস্তা—ঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, নদী রক্ষণাবেক্ষণ বা সরকারী—বেসরকারী যে কোনো প্রয়োজনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গা বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার জায়গা স্থানান্তরিত করা জায়িয নেই বরং তা সম্পূর্ণরূপে হারাম এবং কাট্টা কুফরীর অন্তভুর্ক্ত ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানাধীন কোনো কিছু ভাঙ্গার অনুমতি মাখলুকাতের কেউ দিতে পারে না। কারো অনুমতি বা নির্দেশনা গ্রহণযোগ্য নয়। যে অনুমতি বা নির্দেশনা দিবে সে কাফির হিসেবে গণ্য হবে। এমনকি যে অনুমতি চাইবে সেও কাফির হিসেবে গণ্য হবে।
পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন।