(৩৪তম ফতওয়া হিসেবে)
“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।
(পূর্বপ্রকাশিতের পর)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ মাসে প্রকাশিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফসমূহ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ তারীখ মুবারক= ৮খানা
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফ= ১১খানা
৬) ক. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২শে জুমাদাল উখরা শরীফ:
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসিম বা নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম’। উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর আলাইহিস সালাম’। তিনি একজন কাফিরের মুখে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার কথা শুনে বিশ্বাস স্থাপন করার কারণে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যবান মুবারক-এ) উনাকে ‘ছিদ্দীক্বে আকবর’ সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই তিনি সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম’ হিসেবে সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
اِنَّ اللهَ سَـمّٰى سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَبَا بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَلـٰى لِسَانِ نَـبِـيِّهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صِدِّيْـقًا
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যবান মুবারক-এ) সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর আলাইহিস সালাম উনাকে ‘ছিদ্দীক্ব’ লক্বব মুবারক-এ ভূষিত করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা, মুস্তাদরকে হাকিম, দারাকুতনী ইত্যাদি)
সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য স্বীয় মাল-জান সমস্ত কিছু কুরবান করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এতো অধিক সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করতেন, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! একবার মুশরিকরা উনাকে এমন কঠিন নির্যাতন করে যে, উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক, সম্মানিত নাক মুবারক, সম্মানিত কান মুবারক সবকিছু রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায় এবং তিনি বেহুঁশ হয়ে পড়েন। সকলে ধারণা করতে থাকে যে, তিনি হয়তো সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন। কিন্তু উনার হুঁশ মুবারক ফেরার পর সর্বপ্রথম উনার কথা এটাই ছিল যে, ‘আমার মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি অবস্থায় আছেন? তিনি কেমন আছেন? এই সময় উনার সম্মানিতা মাতা তিনি উনাকে এক বাটি দুধ দিয়ে পান করার জন্য বলেন। তখন তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি ঐ পর্যন্ত কিছুই খাবো না, পান করবো না, যেই পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক না হয়।’ সুবহানাল্লাহ!
তিনিই একমাত্র ব্যক্তিত্ব মুবারক, যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার কথা শুনে একাধারে ৬ মাস ঘুমাননি। সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার পথে সম্মানিত ছাওর গুহা মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত উরু মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক) রেখে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুত্বমাইন্নাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘুমানো শান মুবারক) প্রকাশ করেন অর্থাৎ বিশ্রাম মুবারক নেন। তখন একটা বিষাক্ত সাপ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার পা মুবারক-এ বারবার দংশন করতে থাকে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিং ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুত্বমাইন্নাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘুমানো শান মুবারক-এ) অর্থাৎ বিশ্রাম মুবারক-এ যেন কোনো রকম অসুবিধা না হয়। এই ফিকির করে তিনি উনার পা মুবারক গর্তের মুখ থেকে এক মুহুর্তের জন্যও সড়াননি। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুননাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় দীদার মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নেওয়ার পর একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে সংবাদ দিলেন যে, হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার তত্ত্বাবধানে কয়েকজন হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা মনোনীত করার ব্যাপারে আলোচনা করছেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বিষয়টি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে অবহিত করলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে এবং হযরত আবূ উবাইদাহ্ ইবনে জাররাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে অথার্ৎ উনাদেরকে সাথে নিয়ে সেখানে গেলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন যে, আপনারা কোন্ বিষয়ে আলোচনা মুবারক করছেন? উনারা বললেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা মনোনীত করার ব্যাপারে আলোচনা মুবারক করছি। এই ব্যাপারে আমাদের পরামর্শ হলো- হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের থেকে একজন এবং হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের থেকে একজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা মনোনীত করা যেতে পারে। একথা শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘আমি নিজ কান মুবারক-এ শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিজ যবান মুবারক-এ) ইরশাদ মুবারক করেছেন-
اَلْاَئِمَّةُ مِنْ قُـرَيْشٍ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা মনোনীত হবেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরাইশগণ উনাদের মধ্য থেকে।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে বাযযার, মুসনাদে আবী ইয়া’লা, মুস্তাদরাকে হাকিম, আল মু’জামুল কাবীর, মুছন্নাফে ইবনে আবী শায়বা ইত্যাদি)
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “আমার ডান পাশে রয়েছেন এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেছেন-
لَوْ كَانَ بَـعْدِىْ نَبِـىٌّ لَكَانَ حَضْرَتْ اَلْفَارُوْقُ الْاَعْظَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ (حَضْرَتْ عُمَرُ بْنُ الْـخَطَّابِ عَلَيْهِ السَّلَامُ)
অর্থ: “আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন, তাহলে সেই ব্যক্তিত্ব মুবারকই হতেন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
আর বাম পাশে রয়েছেন হযরত আবূ উবাইদাহ্ ইবনে জাররাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। যিনি হচ্ছেন-
اَمِيْـنُ اللهِ وَاَمِيْـنُ رَسُوْلِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের ‘আমীন’ বা বিশ্বস্ত ব্যক্তিত্ব মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
অতএব এই দুইজনের একজনকে আপনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা মনোনীত করতে পারেন।
এই কথা মুবারক শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, এই ব্যাপারে আমার কিছু কথা রয়েছে- সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় ব্যক্তিত্ব মুবারক থাকতে অন্য কেউ কখনোই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা হতে পারেন না। যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার একই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে তিনখানা ফযীলত মুবারক বর্ণনা করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ثَـانِـىَ اثْـنَـيْـنِ اِذْ هُـمَا فِـى الْغَارِ اِذْ يَـقُوْلُ لِصَاحِبِهٖ لَا تَـحْزَنْ اِنَّ اللهَ مَعَنَا
অর্থ: “দুই জনের দ্বিতীয়, উনারা দু’জন যখন সম্মানিত (ছাওর) গুহা মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক করছিলেন, তখন তিনি উনার ছহিব, সঙ্গী, খাদিম, সাথী উনাকে বললেন, আপনি চিন্তিত হবেন না। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সাথে রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪০)
কাজেই এমন ব্যক্তিত্ব মুবারক উপস্থিত থাকতে অন্য কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা হতে পারেন না। একথা বলে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বাই‘আত মুবারক হওয়ার জন্য উনার সম্মানিত হাত মুবারক খলীফাতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ রাখলেন এবং সম্মানিত বাই‘আত মুবারক করানোর জন্য অনুরোধ করলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাথে সেই মজলিসে উপস্থিত সকলেই সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত মুবারক উনার সম্মানিত বাই‘আত মুবারক গ্রহণ করেন। পরের দিন সম্মানিত বাই‘আতে আম অনুষ্ঠিত হন এবং পর্যায়ক্রমে সকলেই সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত মুবারক উনার সম্মানিত বাই‘আত মুবারক গ্রহণ করেন। এভাবেই খলীফাতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র প্রথম খলীফা মনোনীত হন। সুবহানাল্লাহ!
অন্যদিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন,
اِنَّ حَضْرَتْ اَبَا بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَـلِـىْ مِنْ بَۢـعْدِىْ ثُـمَّ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ بَۢـعْدِهٖ ثُـمَّ حَضْرَتْ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ بَۢـعْدِهٖ ثُـمَّ حَضْرَتْ عَلِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ بَۢـعْدِهٖ
অর্থ: “আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক উনার পর প্রথমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা হবেন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি, অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি, তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি, অতঃপর ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি।” (গুনিয়াতুত ত্বলিবীন, মাকতুবাত শরীফ)
তাহলে কি করে এই কথা বলা জায়িয হতে পারে যে, হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা গণতান্ত্রিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খলীফা নির্বাচিত হয়েছেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! এরূপ আক্বীদাহ পোষণ করা কস্মিনকালেও জায়েয নেই; বরং কাট্টা কুফরী ও চির জাহান্নামী হওয়ার কারণ। না‘ঊযুবিল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পরের দিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৩ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার) সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত খিলাফত মুবারক গ্রহণ করেন। তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৩ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ থেকে ১৩ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২শে জুমাদাল উখরা শরীফ পর্যন্ত মোট ২ বৎসর ৩ মাস ৯ দিন সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনা করেছেন। অর্থাৎ উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারক কাল হচ্ছেন- ২ বৎসর ৩ মাস ৯ দিন। সুবহানাল্লাহ!
(পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)