মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৯৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

(৩৪তম ফতওয়া হিসেবে)

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।

(পূর্বপ্রকাশিতের পর)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ মাসে প্রকাশিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফসমূহ

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ তারীখ মুবারক= ৮খানা

 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফ= ১১খানা

৬) ক. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২শে জুমাদাল উখরা শরীফ:

আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!

বিশেষ কার্যক্রম মুবারক:

মহান আল্লাহ পাক উনার পরই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক মাক্বাম। উনার পরে উনার স্থলাভিষিক্ত হয়ে যাবতীয় কার্যক্রমের আঞ্জাম দেয়া একজন উম্মতের জন্য অত্যধিক কঠিন। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অসীম রহমত মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যাবতীয় কার্যক্রম অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে আনজাম দিয়েছেন। যা উনার বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি খলীফা মনোনীত হওয়ার পর পর বিশেষ করে যেই ৫টি বিষয়ে বেমেছাল আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেগুলি হচ্ছেন-

১. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার নিরাপত্তা মুবারক: সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি প্রথমে কাফির-মুশরিক ও মুনাফিক্বদের আক্রমণ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার পূর্ণ নিরাপত্তা মুবারক উনার ব্যবস্থা করেন। সুবহানাল্লাহ!

২. মুতার জিহাদ মুবারক উনার বদলা: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় দিদারী শান মুবারক প্রকাশের পূর্বে মুতার জিহাদ মুবারক উনার বদলা গ্রহণের জন্য হযরত উসামা ইবনে যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সেনাপতিত্বে সিরিয়া সীমান্তে সেনাবাহিনী প্রেরণ করেছিলেন এবং উনারা রওয়ানাও হয়েছিলেন। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় দিদারী শান মুবারক প্রকাশ করার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সেই ইচ্ছা মুবারক বাস্তবায়নের জন্য ঐ বাহিনী পুনরায় সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ প্রেরণ করেন। সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ সম্মানিত মুসলমান উনারা কামিয়াবী হাছিল করেন এবং কাফিরেরা কঠিনভাবে লাঞ্ছিত ও পরাজিত হয়। সুবহানাল্লাহ!

৩. যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান: অনেকে পবিত্র যাকাত দিতেও অস্বীকার করে। তারা বলে, তারা নামায পড়বে কিন্তু পবিত্র যাকাত দিবে না। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক ঘোষণা করেন। তিনি বলেন,

وَاللهِ لَاُقَاتِلَنَّ مَنْ فَـرَّقَ بَيْنَ الصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ فَاِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللهِ لَوْ مَنَـعُوْنِىْ عِقَالًا كَانُـوْا يُـؤَدُّوْنَهٗ اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَاتَـلْتُـهُمْ عَلٰى مَنْعِهٖ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবশ্যই সম্মানিত জিহাদ মুবারক করবো, যে ব্যক্তি সম্মানিত ছালাত এবং পবিত্র যাকাত উনাদের মধ্যে পার্থক্য করে। কেননা, পবিত্র যাকাত মাল-সম্পদের হক্ব। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট তারা পবিত্র যাকাত হিসেবে যা দিতো, তার থেকে একটি উটের রশিও যদি দিতে অস্বীকার করে, তবুও আমি তাদের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক করবো।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, ছহীহ ইবনে হিব্বান ১/৪৫১, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৩/৪১০, সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ৮/১৭৬, তাফসীরুল লুবাব লি ইবনে আদিল ১/২৫৮৬, আহ্কামুল কুরআন লি ইবনে আরাবী ৪/১৪৫, আল ঈমান লি ইবনে মুন্দাহ্ ১/১৬৪, শরহু মুশকিলিল আছার ১৫/৮২, শু‘আবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫/১০, মুছান্নাফে আব্দুর রায্যাক্ব ৪/৪৩, ফাতহুল বারী লি ইবনে হাজার আসক্বালানী ১২/২৭৯, শরহে ইবনে বাত্ত্বাল ১৯/৪৪৩, উমদাতুল ক্বারী ৩৫/৩৮৮, ইকমালুল মু’লিম ১/১৮০, শরহুন নববী ১/২০৭, মা‘আলিমুস সুনান লিল খ¦ত্তাবী ২/২, জামিউল উলূম ওয়াল হুকাম লি ইবনে রজব ১/৮৬, আল ইস্তিযকার লিল কুরতুবী ৩/২১৪, দলীলুল ফালিহীন ৭/১২, নাইলুল আওত্বার ১/৩৫৮, আত্ তাওদ্বীহ্ লি ইবনে মুলক্বীন ৩৩/২০, আল কাওয়াকিবুদ দুরারী ২৫/৩৬, যখীরাতুল উক্ববা ২২/২০, ফায়যুল ক্বাদীর ২/১৮৮, আল লামিউছ ছবীহ্ ১৭/৫২২, আত্ তাওশীহ্ লিস সুয়ূত্বী ৯/৪২২১ ইত্যাদি)

এভাবে তিনি অত্যন্ত শক্তভাবে পবিত্র যাকাত অস্বীকারকারীদের ফিতনা নিমূর্ল করেন। সুবহানাল্লাহ!

৪. জিযিয়া কর দিতে অস্বীকারকারীদের দমন: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় দিদারী শান মুবারক প্রকাশের পর আরবের অনেক গোত্র জিযিয়া কর দিতে অস্বীকার করে। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এই সকল গোত্রের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক ঘোষণা করেন এবং তাদেরকে জিযিয়া কর দিতে বাধ্য করেন। সুবহানাল্লাহ!

৫. মিথ্যা নবী দাবীদারদের নির্মূল করণ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় দিদারী শান মুবারক প্রকাশের পর ইয়ামামার মুসায়লামাতুল কায্যাব, নজদের তোলায়হা এবং ইয়ারবু গোত্রের নাসারা মহিলা সাজাহ্ তারা নিজেদেরকে নবী দাবি করে। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি তাদের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক ঘোষণা করেন। মুসায়লামাতুল কায্যাবকে জিহাদের ময়দানে হত্যা করা হয়। তোলায়হা এবং সাজাহ্ পালিয়ে যায়। পরে তারা তওবা করে ঈমান আনে। এভাবে তিনি মিথ্যা নবী দাবীদারদের নির্মূল করেন। সুবহানাল্লাহ!

এরপর আরবের অনেক গোত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে অস্বীকার করে। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এই সকল মুরতাদদের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক ঘোষণা করেন এবং অত্যন্ত শক্তভাবে তাদেরকে প্রতিহত ও নির্মূল করেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরে আমার সম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার উপর এমন দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তা যদি কোনো পাহাড়ের উপর নাযিল হতো, তাহলে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যেত।”

ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন,

لَقَدْ قُمْنَا بَـعْدَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَقَامًا كُـنَّا نَـهْلِكُ فِـيْهِ لَوْ لَا اَنَّ اللهَ مَنَّ عَلَـيْـنَا بِسَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِيْقِ الْاَكْـبَـرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় দিদারী শান মুবারক প্রকাশের পর আমরা সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম এমন কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিলাম যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের উপর যদি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিমুস সালাম উনার মাধ্যমে অনুগ্রহ, দয়া, ইহসান না করতেন, তাহলে আমরা ধ্বংস হয়ে যেতাম।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে আবী শায়বাহ, ইযালাতুল খফা)

একখানা বিশেষ নছীহতপূর্ণ ওয়াক্বেয়াহ্ মুবারক:

একবার সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিতা আহলিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে বললেন, ‘ফিরনি খাওয়াতো সুন্নত’ অনেক দিন হয়ে গেলো ফিরনি খাওয়া হচ্ছে না। এই ঘটনার অনেক দিন পর উনার সম্মানিতা আহলিয়া আলাইহাস সালাম তিনি ফিরনি রান্না করে উনার সামনে পেশ করলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত আহলিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন- এই ফিরনি কোথা থেকে পেলেন? তিনি বললেন, প্রতিদিনের খাবার থেকে কিছু রেখে রেখে জমা করেছি। আজকে এই ফিরনি রান্না করেছি। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তাহলে তো এই পরিমাণ ভাতা আমি বেশি গ্রহণ করছি। তাহলে তো এটা কমাতে হবে। এরপর তিনি বাইতুল মাল থেকে ঐ পরিমাণ ভাতা কমিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!

উনার পরবর্তী খলীফা মনোনীত করা:

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, খলীফাতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যখন খুব অসুস্থ, তখন তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যূন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে ডেকে বললেন, আপনি লিখুন- “আমার পরে আমি খলীফা মনোনীত করলাম…..।” এই কথা মুবারক বলে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যূন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি নিজেই সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক যোগ করে বাক্যটি পূর্ণ করলেন। যেহেতু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার পর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত খলীফা হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছেন। তাই সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক লিখেছেন। সুবহানাল্লাহ!

অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার হুঁশ মুবারক যখন ফিরলেন, তখন তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যূন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, আপনি কি লিখেছেন তা আমাকে পাঠ করে শুনান। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহসি সালাম তিনি পাঠ করে শুনালেন, “আমি হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব ইবনে আবূ কুহাফাহ্ আলাইহিস সালাম- আমার পরে মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত করলাম- ফারূক্বে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনাকে।” সুবহানাল্লাহ!

এটা শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি খুব খুশি হলেন এবং বললেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত যূন নূরাঈন আলাইহিস সালাম! আপনি আমার মনের কথাটাই লিখেছেন। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যাম আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যূন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের জন্য দো‘আ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

মুনাজাত শেষে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার ওসীয়তনামাকে মোহরাঙ্কিত করেন এবং তার অনুলিপি বিভিন্ন এলাকায় প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্তগণ উনাদের নিকট পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। অতঃপর তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহসি সালাম উনাকে ডাকলেন এবং উনাকে অবহিত করলেন যে, তিনি উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের উপর মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত করে গেলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহসি সালাম তিনি আরয করলেন, ‘হে খলীফাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমাকে এই দায়িত্ব দিবেন না। কারণ, খিলাফতের আমার কোনোই প্রয়োজন নেই।’ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি জবাবে বললেন, ‘কিন্তু আপনাকে খিলাফতের প্রয়োজন রয়েছে।’ সুবহানাল্লাহ! (ইযালাতুল খফা)

সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত করার পর লোকজন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে বললেন, আপনি অতিশ্রীঘই মহান আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাৎ মুবারক-এ চলে যাবেন। কিন্তু আপনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জালালী তবীয়তের কথা জানা সত্ত্বেও যে উনাকে মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত করলেন, তাহলে আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কি জবাব মুবারক দিবেন? জবাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন,

اَجْلِسُوْنِـىْ اَجْلِسُوْنِـىْ اَقُـوْلُ وَلَّـيْتُ عَلَيْهِمْ خَيْـرَهُمْ

‘তোমরা আমাকে বসাও, তোমরা আমাকে বসাও। আমি জবাব মুবারক দিবো যে, দুনিয়ার যমীনে যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক ছিলেন, উনাকে আমি মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (আর রিয়াদ্বুন নাদ্বরা, ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন, গুনিয়াতুত ত্বালিবীন ইত্যাদি)

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় দিদারী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সবচেয়ে বড় নেক আমল মুবারক হচ্ছেন- উনার পর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত খলীফা মনোনীত করা। সুবহানাল্লাহ!

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক (৩৩তম পর্ব)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (পর্ব-৩৫)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ ও মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৭৯

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী লিবাস বা পোশাক পরিধান করা প্রত্যেক ঈমানদার পুরুষ ও মহিলা উনাদের জন্য ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (পর্ব-১২)

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র, মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া – (১৯)