আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাই‘আতে আক্বাবাহ্ শরীফ তিন বার অনুষ্ঠিত হয়েছেন। প্রথম বার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী দৃষ্টিতে ৫১তম বছর বয়স মুবারক-এ, দ্বিতীয় বার দুনিয়াবী দৃষ্টিতে ৫২তম বছর বয়স মুবারক-এ এবং তৃতীয় বার দুনিয়াবী দৃষ্টিতে ৫৩তম বছর বয়স মুবারক-এ। প্রথম বার ৬/৭ জন, দ্বিতীয় বার ১২ জন এবং তৃতীয় তথা শেষ বার ৭৩ জন পুরুষ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম এবং ২ জন মহিলা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমা উনারা বাই‘আত মুবারক গ্রহণ করেন।” (সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন-
فَوَاعَدْنَاهُ شِعْبَ الْعَقَبَةِ فَاجْتَمَعْنَا عِنْدَهَا مِنْ رَجُلٍ وَرَجُلَيْـنِ حَتّٰـى تَوَافَيْنَا فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَامَ نُبَايِعُكَ قَالَ تُبَايِعُوْنِـىْ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِـى النَّشَاطِ وَالْكَسَلِ وَالنَّفَقَةِ فِـى الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ وَعَلَى الْاَمْرِ بِالْمَعْرُوْفِ والنَّهْىِ عَنِ الْمُنْكَرِ وَاَنْ تَقُوْلُوْا فِـى اللهِ لَا تَـخَافُوْا فِـى اللهِ لَوْمَةَ لَائِمٍ وَعَلـٰى اَنْ تَنْصُرُوْنِـىْ فَتَمْنَعُوْنِـىْ اِذَا قَدِمْتُ عَلَيْكُمْ مِـمَّا تَـمْنَعُوْنَ مِنْهُ اَنْفُسَكُمْ وَاَزْوَاجَكُمْ وَاَبْنَاءَكُمْ وَلَكُمُ الْـجَنَّةُ فَقُمْنَا اِلَيْهِ نُبَايِعُهٗ وَاَخَذَ بِيَدِهٖ حَضْرَتْ اَسْعَدُ بْنُ زُرَارَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَهُوَ مِنْ اَصْغَرِهِمْ وَفِـىْ رِوَايَةِ الْبَيْهَقِىِّ وَهُوَ اَصْغَرُ السَّبْعِيْـنَ اِلَّا اَنَا فَقَالَ رُوَيْدًا يَا اَهْلَ الْـمَدِيْنَةِ (يَثْرِبَ) فَاِنَّا لَـمْ نَضْرِبْ اِلَيْهِ اَكْبَادَ الْاِبِلِ اِلَّا وَنَـحْنُ نَعْلَمُ اَنَّهٗ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاَنَّ اِخْرَاجَهُ الْيَوْمَ مُنَاوَاَةٌ لِّلْعَرَبِ كَافَّةً وَقَتْلُ خِيَارِكُمْ وَاَنْ تَعَضَّكُمُ السُّيُوْفُ فَاِمَّا اَنْتُمْ قَوْمٌ تَصْبِـرُوْنَ عَلـٰى ذٰلِكَ فَخُذُوْهُ وَاَجْرُكُمْ عَلَى اللهِ وَاِمَّا اَنْتُمْ قَوْمٌ تَـخَافُوْنَ مِنْ اَنْفُسِكُمْ خِيْفَةً فَذَرُوْهُ فَبَيِّنُوْا ذٰلِكَ فَهُوَ اَعْذُرُ لَكُمْ عِنْدَ اللهِ قَالُوْا اَمِطْ عَنَّا يَا حَضْرَتْ اَسْعَدُ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فَوَاللهِ لَا نَدَعُ هٰذِهِ الْبَيْعَةَ وَلَا نَسْلُبُهَا اَبَدًا قَالَ فَقُمْنَا اِلَيْهِ فَبَايَعْنَاهُ وَاَخَذَ عَلَيْنَا وَشَرَطَ وَيُعْطِيْنَا عَلـٰى ذٰلِكَ الْـجَنَّةَ.
অর্থ: “সম্মানিত ‘আক্ববাহ্ উনার গিরি সঙ্কটে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমাদের সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত হলো। যথাসময়ে একজন দু’জন করে আমরা সকলে সেখানে উপস্থিত হলাম। অতঃপর আমরা বললাম- ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কোন্ কোন্ শর্তসমূহের ভিত্তিতে আমরা আপনার নিকট বাই‘আত গ্রহণ করবো? তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা আমার নিকট বাই‘আত গ্রহণ করবেন এই শর্তে- (১) ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক সবসময় আপনারা আমার প্রত্যেকটি আদেশ-নিষেধ মুবারক অবশ্যই শুনবেন এবং অবশ্যই মানবেন, (২) স্বচ্ছল হন বা অস্বচ্ছল হন, আমি যেখানে খরচ করতে বলি, আপনারা অবশ্যই সেখানে ধন-সম্পদ খরচ করবেন, (৩) প্রত্যেক সৎকাজে আদেশ করবেন এবং অসৎ কাজে নিষেধ করবেন। (৪) মহান আল্লাহ পাক উনার (এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের) রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে এ কাজগুলি করতে গিয়ে কোনো নিন্দাকারীর নিন্দাকে পরওয়া করবেন না। (৫) আমি যখন আপনাদের নিকট তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পবিত্র মদীনা শরীফ তাশরীফ মুবারক রাখবো, তখন আপনারা নিজেদেরকে এবং আপনাদের আহলিয়া ও সন্তানদেরকে যেভাবে হিফাযত করেন, তার চেয়েও উত্তমভাবে আমাকে (এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে) সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিবেন, আমার (এবং আমর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। এর বিনিময়ে আপনাদের জন্য রয়েছেন সম্মানিত জান্নাত মুবারক তথা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার নিকট বাই‘আত হওয়ার জন্য আমরা উঠে দাঁড়ালাম। আর হযরত আস‘আদ ইবনে যুরারা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) হাত রাখলেন। তিনি উনাদের মধ্যে দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সবচেয়ে ছোট ছিলেন। ইমাম বাইহাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণনায় রয়েছে, তিনি ৭০ জন পুরুষ উনাদের মধ্যে দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সবচেয়ে ছোট ছিলেন। (বর্ণনাকারী হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন,) আমি ব্যতীত অর্থাৎ একমাত্র আমি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার চেয়ে ছোট ছিলাম। অতঃপর তিনি বললেন, হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসীগণ! থামুন, আমরা উটের পিঠে আরোহন করে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসেছি এজন্যে যে, আমরা জানি, নিশ্চয়ই উনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তবে কথা হলো, আজ যদি আপনারা উনাকে এখান থেকে নিয়ে যান, তাহলে আরবের সকলেই আপনাদের শত্রু হয়ে যাবে, তারা আপনাদের নেতৃস্থানীয় লোকদের শহীদ করবে এবং তীক্ষè তরবারী আপনাদের গর্দান উড়িয়ে দিবে। এই পরিস্থিতিতে আপনারা যদি এই অঙ্গীকারে ইস্তিক্বামত তথা অবিচল থাকতে পারেন, অটল থাকতে পারেন, তাহলে আপনারা উনাকে নিয়ে যান। আপনাদের প্রতিদান মহান আল্লাহ পাক তিনিই দিবেন অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন। সুবহানাল্লাহ! আর যদি আপনারা নিজেদের ব্যাপারে অত্যন্ত শঙ্কিত হয়ে থাকেন, উনার পরিপূর্ণ সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে অক্ষমতার ভয় করেন, তাহলে সেটা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে উনাকে রেখে যান। মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ওযর পেশ করার জন্য এটিই হবে সহজতর। উপস্থিত লোকজন বললেন, হে হযরত আস‘আদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! আপনি এখান থেকে সরে যান। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমরা এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাই‘আত মুবারক ত্যাগ করবো না এবং কস্মিনকালেও এর বরখেলাফ করবো না। সুবহানাল্লাহ!
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখে দাঁড়িয়ে উনার নিকট বাই‘আত গ্রহণ করলাম। তিনি কিছু শর্ত দিয়ে আমাদের থেকে বাই‘আত গ্রহণ করেন। আর বিনিময়ে আমাদেরকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক দানের প্রতিশ্রুতি মুবারক দেন তথা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু উনার অর্থাৎ উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক দানের প্রতিশ্রুতি মুবারক দেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ২২/৩৪৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلنُّقَبَاءِ مِنَ الْاَنْصَارِ تُؤْوُوْنِـىْ وَتَـمْنَعُوْنِـىْ قَالُوْا نَعَمْ فَمَا لَنَا قَالَ اَلْـجَنَّةُ.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে যাঁরা নেতৃস্থানীয় উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা কি আমার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন এবং আমার সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক বিধান করবেন? উনারা বললেন, অবশ্যই; (সাথে সাথে উনারা আরো বললেন, বিনিময়ে) আমাদের জন্য কি রয়েছে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত জান্নাত মুবারক তথা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ২/৬৮২)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
قَالَ حَضْرَتْ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فَلَمَّا اجْتَمَعْنَا فِـى الشِّعْبِ نَنْتَظِرُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتّٰـى جَاءَنَا وَمَعَهٗ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ خَاتِـمُ الْـمُهَاجِرِيْنَ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَهُوَ يَوْمَئِذٍ عَلـٰى دِيْنِ قَوْمِهٖ اِلَّا اَنَّهٗ اَحَبَّ اَنْ يَّـحْضُرَ اَمْرَ ابْنِ اَخِيْهِ وَيَتَوَثَّقَ لَهٗ فَلَمَّا جَلَسَ كَانَ أَوَّلُ مُتَكَلِّمٍ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ خَاتِـمَ الْـمُهَاجِرِيْنَ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ الْعَبَّاسَ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْـخَزْرَجِ قَالَ وَكَانَتِ الْعَرَبُ اِنَّـمَا يُسَمُّوْنَ هٰذَا الْـحَىَّ مِنَ الْاَنْصَارِ الْـخَزْرَجَ خَزْرَجَهَا وَاَوْسَهَا اِنَّ سَيِّدَنَا مَوْلـٰـنَا مُـحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَّا حَيْثُ قَدْ عَلِمْتُمْ وَقَدْ مَنَعْنَاهُ مِنْ قَوْمِنَا مِـمَّنْ هُوَ عَلـٰى مِثْلِ رَاْيِنَا فِيْهِ فَهُوَ فِـىْ عِزَّةٍ مِّنْ قَوْمِهٖ وَمَنَعَةٍ فِـىْ بَلَدِهٖ وَاِنَّهٗ قَدْ اَبٰـى اِلَّا الِانْـحِيَازَ اِلَيْكُمْ وَاللُّحُوْقَ بِكُمْ فَاِنْ كُنْتُمْ تَرَوْنَ اَنَّكُمْ وَافُوْنَ لَهٗ بِـمَا دَعَوْتُـمُوْهُ اِلَيْهِ وَمَانِعُوْهُ مِـمَّنْ خَالَفَهٗ فَاَنْتُمْ وَمَا تَـحَمَّلْتُمْ مِّنْ ذٰلِكَ وَاِنْ كُنْتُمْ تَرَوْنَ اَنَّكُمْ مُسْلِمُوْهُ وَخَاذَلُوْهُ بَعْدَ الْـخُرُوْجِ اِلَيْكُمْ فَمِنَ الْاٰنَ فَدَعَوْهُ فَاِنَّهٗ فِـىْ عِزَّةٍ وَّمَنَعَةٍ مِّنْ قَوْمِهٖ وَبَلَدِهٖ قَالَ فَقُلْنَا لَهٗ قَدْ سَـمِعْنَا مَا قُلْتَ فَتَكَلَّمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخُذْ لِنَفْسِكَ وَلِرَبِّكَ مَا اَحْبَبْتَ قَالَ فَتَكَلَّمَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَلَا الْقُرْاٰنَ وَدَعَا اِلَـى اللهِ وَرَغَّبَ فِـى الْاِسْلَامِ قَالَ اُبَايِعُكُمْ عَلـٰى اَنْ تَـمْنَعُوْنِـىْ مِـمَّا تَـمْنَعُوْنَ مِنْهُ نِسَاءَكُمْ وَاَبْنَاءَكُمْ قَالَ فَاَخَذَ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءُ بْنُ مَعْرُوْرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ بِيَدِهٖ وَقَالَ نَعَمْ فَوَالَّذِىْ بَعَثَكَ بِالْـحَقِّ نَبِيًا لَـنَمْنَعَنَّكَ مِـمَّا نَـمْنَعُ مِنْهُ اُزُرَنَا فَبَايِعْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “হযরত কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, যখন আমরা (‘আক্বাবায়) গিরিসঙ্কটে একত্রিত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আনার অপেক্ষায় ছিলাম, তখন এক সময় তিনি দয়া করে তাশরীফ মুবারক আনলেন। উনার সাথে ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত খ্বতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম) তিনি। সাইয়্যিদুনা হযরত খ্বতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম তিনি তখনো (আনুষ্ঠানিকভাবে) সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেননি। তবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে গৃহীতব্য সিদ্ধান্তে উপস্থিত থাকাটা এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষে সুদৃঢ় অঙ্গীকার নেয়াটা তিনি পছন্দ করেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত উপবেশন মুবারক করলেন, তখন সর্বপ্রথম বাক্যালাপকারী ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত খ্বতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম তিনি। তিনি বললেন, হে খাযরাজ গোত্রের লোকজন! বর্ণনাকারী বলেন, আরবগণ হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের খাযরাজ এবং আওস উভয়গোত্রকে খাযরাজ বলে সম্ভোধন করতেন। (তিনি বলেন,) নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের মাঝে সম্মানিত অবস্থায় অবস্থান মুবারক করছেন, যা আপনারা অবশ্যই জানেন। আর অবশ্যই আমরা আমাদের গোত্রের যারা আমাদের মতবাদে বিশ্বাসী তাদের থেকে উনাকে সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিয়েছি। কাজেই তিনি উনার গোত্রের মধ্যে সম্মানজনক অবস্থায় রয়েছেন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শহর মুবারক-এ তিনি তাদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। নিশ্চয়ই এসব রেখে তিনি আপনাদের সাথে মিলিত হওয়ার সিদ্ধান্ত মুবারক নিয়েছেন। সুতরাং এখন আপনারা যদি মনে করেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেয়া প্রতিশ্রুতিসমূহ আপনারা পরিপূর্ণভাবে পালন করতে পারবেন এবং বিরোধিতাকারীদের থেকে উনাকে সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিতে পারবেন, তাহলে উনাকে নিতে পারেন। আর যদি আপনারা মনে করেন যে, আপনারা উনাকে সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দেয়ার কথা বলে নিয়ে যাবেন, অতঃপর আপনাদের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পর উনাকে অপমানিত করবেন, (না‘ঊযুবিল্লাহ!) তাহলে এখনই উনাকে রেখে যান। কারণ, তিনি উনার গোত্রের মধ্যে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শহর মুবারক উনার মধ্যে সম্মান এবং নিরাপত্তার মধ্যে আছেন। বর্ণনাকারী হযরত কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আমরা সাইয়্যিদুনা হযরত খ্বতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললাম- আপনি যা বলেছেন, অবশ্যই আমরা তা শুনেছি। ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি কথা মুবারক বলুন এবং আপনার জন্য আর আপনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য আপনি যা পছন্দ করেন, তা গ্রহণ করুন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কথা মুবারক বললেন। তখন তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে আহ্বান মুবারক করেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি উৎসাহিত করেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি আপনাদেরকে বাই‘আত মুবারক করাবো এই শর্তে যে, আপনারা নিজেদেরকে এবং আপনাদের আহলিয়া ও সন্তানদেরকে যেভাবে হিফাযত করেন, তার চেয়েও উত্তমভাবে আমাকে (এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে) সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিবেন, আমার (এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। বর্ণনাকারী বলেন, হযরত বারা ইবনে মা’রূর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) হাত রেখে বলেন, অবশ্যই; যিনি আপনাকে সত্য (দ্বীন) সহকারে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী-রসূল হিসেবে প্রেরণ মুবারক করেছেন উনার ক্বসম! অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই আমরা আমাদের নিজেদেরকে এবং আমাদের আহলিয়া ও সন্তানদেরকে যেভাবে হিফাযত করি, তার চেয়েও উত্তমভাবে আপনাকে (এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে) সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিবো, আপনার (এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অর্থাৎ আপনাদের) সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবো। সুতরাং ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আমাদেরকে বাই‘আত মুবারক করান।” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৩/৯৫-৯৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اِنَّ الْقَوْمَ لَمَّا اجْتَمَعُوْا لِبَيْعَةِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ حَضْرَتْ اَلْعبَّاسُ بْنُ عُبَادَةَ بْنِ نَضْلَةَ الْاَنْصَارِىُّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَخُوْ بَنِـىْ سَالِـمِ بْنِ عَوْفٍ يَا مَعْشَرَ الْـخَزْرَجِ هَلْ تَدْرُوْنَ عَلَامَ تُبَايِعُوْنَ هٰذَا الرَّجُلَ قَالُوْا نَعَمْ قَالَ اِنَّكُمْ تُبَايِعُوْنَهٗ عَلـٰى حَرْبِ الْاَحْـمَرِ وَالْاَسْوَدِ مِنَ النَّاسِ فَاِنْ كُنْتُمْ تَرَوْنَ اَنَّكُمْ اِذَا اَنْـهَكَتْ اَمْوَالُكُمْ مُصِيْبَةً وَاَشْرَافُكُمْ قَتْلًا اَسْلَمْتُمُوْهُ فَمِنَ الْاٰنَ فَهُوَ وَاللهِ اِنْ فَعَلْتُمْ خِزْىُ الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاِنْ كُنْتُمْ تَرَوْنَ اَنَّكُمْ وَافُوْنَ لَهٗ بِـمَا دَعَوْتُـمُوْهُ اِلَيْهِ عَلـٰى نَهْكَةِ الْاَمْوَالِ وَقَتْلِ الْاَشْرَافِ فَخُذُوْهُ فَهُوَ وَاللهِ خَيْرُ الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ قَالُوْا فَاِنَّا نَاْخُذُهٗ عَلـٰى مُصِيْبَةِ الْاَمْوَالِ وَقَتْلِ الْاَشْرَافِ فَمَا لَنَا بِذٰلِكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنْ نَّـحْنُ وَفَيْنَا قَالَ الْـجَنَّةُ قَالُوا ابْسُطْ يَدَكَ فَبَسَطَ يَدَهٗ فَبَايَعُوْهُ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট বাই‘আত হওয়ার জন্য লোকজন তথা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা যখন একত্রিত হলেন, তখন বনূ সালিম ইবনে আওফ গোত্রের হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘উবাদাহ্ ইবনে নাদ্বলাহ্ আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, হে খাযরাজ সম্প্রদায়ের লোকজন! আপনারা কোন্ শর্তে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট বাই‘আত গ্রহণ করছেন তা কি আপনারা জানেন? (উপস্থিত লোকজন) উনারা বললেন, অবশ্যই; জানি। তিনি বললেন, মূলত আপনারা বাই‘আত গ্রহণ করছেন এই শর্তে যে, (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কারণে) আপনাদেরকে লাল এবং কালো মানুষ তথা পৃথিবীর সকল মানুষের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক করতে হবে। আপনারা যদি মনে করেন যে, আপনারা বিপদে পড়লে, আপনাদের ধন-সম্পদ বিনষ্ট হলে এবং সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ আপনাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ শহীদ হলে, আপনারা উনাকে শত্রুর হাতে তুলে দিবেন, না‘ঊযুবিল্লাহ! তাহলে এখনই উনাকে রেখে যান। কেননা, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! নিশ্চয়ই সেটা এমন একটা সর্বনিকৃষ্ট কাজ যদি আপনারা (তখন সেটা) করেন অর্থাৎ তখন যদি আপনারা উনাকে ছেড়ে যান, তাহলে তা হবে আপনাদের ইহকাল-পরকালের জন্য তথা অনন্তকালের জন্য ক্ষতি ও লাঞ্ছনার কারণ। আর যদি আপনারা মনে করেন যে, ধন-সম্পদ বিসর্জন দিয়ে, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব উনারা শহীদ হওয়া সত্বেও আপনারা অঙ্গীকার রক্ষা করতে পারবেন, প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারবেন, তাহলে আপনারা উনাকে নিয়ে যান। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! তখন তা হবে আপনাদের ইহকাল-পরকালের জন্য তথা অনন্তকালের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম। সুবহানাল্লাহ! (উপস্থিত লোকজন) উনারা বললেন, ধন-সম্পদ বিসর্জন এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব উনারা শহীদ হওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও আমরা উনাকে (ইত্মিনানের সাথে) গ্রহণ করবো। ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা যদি এই অঙ্গীকার পালন করি, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাই‘আত মুবারক রক্ষা করি, তাহলে আমাদের জন্য কী রয়েছেন? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, (আপনাদের জন্য) সম্মানিত জান্নাত মুবারক তথা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা বললেন, তাহলে দয়া করে আপনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) প্রসারিত করুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) প্রসারিত করলেন। তখন (উপস্থিত) সকলেই উনার নিকট বাই‘আত গ্রহণ করলেন।” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতে ইবনে হিশাম ১/১৪৪৬, সীরাতে ইবনে হিব্বান ১/১২২, আর রওদ্বুল উন্ফ ৪/৭৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৩/২০৫, তারীখে ত্ববারী ২/৩৬৪, তালক্বীহ্ ৩/৩৭, বিদায়াহ্-নিহায়াহ্ ৩/১৬২ ইত্যাদি)
বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত ‘উবাদাহ্ ইবনে ছমিত রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন-
اِنَّا بَايَعْنَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّمَ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِـى النَّشَاطِ وَالْكَسَلِ وَالنَّفَقَةِ فِـى الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ وَعَلَى الْاَمْرِ بِالْمَعْرُوْفِ وَالنَّهْىِ عَنِ الْمُنْكَرِ وَعَلَى اَنْ نَّقُوْلَ فِـى اللهِ لَا تَاْخُذُنَا فِيْهِ لَوْمَةُ لَائِمٍ وَعَلـٰى اَنْ نَّنْصُرَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّمَ اِذَا قَدِمَ عَلَيْنَا الْـمَدِيْنَةَ (يَثْرِبَ) بـِمَا نَـمْنَعُ مِنْهُ اَنْفُسَنَا وَاَزْوَاجَنَا وَاَبْنَاءَنَا وَلَنَا الْـجَنَّةُ فَهٰذِهٖ بَيْعَةُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّمَ بَايَعْنَاهُ عَلَيْهَا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আমরা এই শর্তে বাইয়াত গ্রহণ করেছি যে, (১) ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক সবসময় আমার উনার প্রত্যেকটি আদেশ-নিষেধ মুবারক অবশ্যই শুনবো এবং অবশ্যই মানবো, (২) স্বচ্ছল হই বা অস্বচ্ছল হই, উনি যেখানে খরচ করতে বলেন, অবশ্যই আমরা সেখানে ধন-সম্পদ খরচ করবো, (৩) প্রত্যেক সৎকাজে আদেশ করবো এবং অসৎ কাজে নিষেধ করবো। (৪) মহান আল্লাহ পাক উনার (এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের) রেযামন্দি-সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে এ কাজগুলি করতে গিয়ে কোনো নিন্দাকারীর নিন্দাকে আমরা পরওয়া করবো না। (৫) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন আমাদের নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পবিত্র মদীনা শরীফ তাশরীফ মুবারক রাখবেন, তখন আমরা আমাদের নিজেদেরকে এবং আমাদের আহলিয়া ও সন্তানদেরকে যেভাবে হিফাযত করি, তার চেয়েও উত্তমভাবে উনাকে (এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে) সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিবো, উনার (এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবো। এর বিনিময়ে আমাদের জন্য রয়েছেন সম্মানিত জান্নাত মুবারক তথা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! এটি ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাই‘আত মুবারক। আমরা এই শর্তসমূহের ভিত্তিতে উনার নিকট বাই‘আত মুবারক হয়েছি।” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ ২/৪৫১-৪৫২, তারীখুল ইসলাম ১/২৯২, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৩/১৬৩)
‘মুসনাদে শাশী’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ اَخَذَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَعَلـٰى اَلِهٖ وَسَلَّمَ الْبَيْعَةَ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِـى الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ وَالْمَنْشَطِ وَالْمَكْرَهِ وَاَلَّا نُنَازِعَ الْاَمْرَ اَهْلَهٗ وَاَنْ نَّقُوْمَ بِالْـحَقِّ حَيْثُ مَا كُنَّا لَا نَـخَافُ فِـى اللهِ لَوْمَةَ لَائِمٍ.
অর্থ: “হযরত ‘উবাদাহ্ ইবনে ছামিত রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের নিকট থেকে এই শর্তে বাই‘আত গ্রহণ করেছেন যে, (১) স্বচ্ছল হই বা অস্বচ্ছল ইহ, আনন্দ-বিষাদ সর্বাস্থায় আমারা উনার প্রত্যেকটি সম্মানিত আদেশ-নিষেধ মুবারক অবশ্যই শুনবো এবং অবশ্যই মানবো অর্থাৎ সব অবস্থায় উনার আনুগত্য মুবারক করবো। (২) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোনো বিষয়ে আমরা কস্মিনকালেও কোনো প্রকার বাদানুবাদ, চূ-চেরা, ক্বীলও ক্বাল করবো না। (৩) আমরা যেখানেই থাকিনা কেনো, যে অবস্থায় থাকিনা কেনো, সর্বাস্থায় (আমরা) হক্বের উপর ইস্তিক্বামাত তথা দৃঢ়চিত্ত থাকবো। (৪) মহান আল্লাহ পাক উনার (এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের) রেযামন্দি-সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে এ কাজগুলি করতে গিয়ে কোনো নিন্দুকের নিন্দাকে আমরা কখনোই তোয়াক্কা করবো না।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে শাশী ৩/১২৩)
অপর বর্ণনায় এসেছে-
بَايَعْنَاهُ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِـى النَّشَاطِ وَالْكَسَلِ وَعَلَى النَّفَقَةِ فِـى الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ وَعَلَى الْاَمْرِ بِالْمَعْرُوْفِ وَالنَّهْىِ عَنِ الْمُنْكَرِ وَاَنْ نَّقُوْلَ فِـى اللهِ لَا تَاْخُذُنَا فِـى اللهِ لَوْمَةُ لَائِمٍ وَعَلـٰى اَنْ نَّنْصُرَهٗ اِذَا قَدِمَ عَلَيْنَا الْـمَدِيْنَةَ (يَثْرِبَ) فَنَمْنَعَهٗ مَا نَـمْنَعُ مِنْهُ اَنْفُسَنَا وَاَزْوَاجَنَا وَاَهْلَنَا وَلَنَا الْـجَنَّةُ وَمَنْ وَفّٰـى وَفَّـى اللهُ لَهُ الْـجَنَّةَ بِـمَا بَايَعَ عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَعَلـٰى اٰلِهٖ وَسَلَّمَ وَمَنْ نَّكَثَ فَاِنَّـمَا يَنْكُثُ عَلـٰى نَفْسِهٖ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আমরা এই শর্তে বাইয়াত গ্রহণ করেছি যে, (১) ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক সবসময় আমার উনার প্রত্যেকটি সম্মানিত আদেশ-নিষেধ মুবারক অবশ্যই শুনবো এবং অবশ্যই মানবো। (২) স্বচ্ছল হই বা অস্বচ্ছল হই, উনি যেখানে খরচ করতে বলেন, আমরা অবশ্যই সেখানে ধন-সম্পদ খরচ করবো, (৩) আমরা প্রত্যেক সৎকাজে আদেশ করবো এবং অসৎ কাজে নিষেধ করবো। (৪) মহান আল্লাহ পাক উনার (এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের) রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে এ কাজগুলি করতে গিয়ে কোনো নিন্দাকারীর নিন্দাকে আমরা পরওয়া করবো না। (৫) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন আমাদের নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখবেন, তখন আমরা আমাদের নিজেদেরকে এবং আমাদের আহলিয়া ও সন্তানদেরকে যেভাবে হিফাযত করি, তার চেয়েও উত্তমভাবে উনাকে (এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে) সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিবো, উনার (এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবো। এর বিনিময়ে আমাদের জন্য রয়েছেন সম্মানিত জান্নাত মুবারক তথা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যাঁরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক দানের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবেন তথা মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক দান করবেন। সুবহানাল্লাহ! আর যারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে, নিশ্চয়ই তারা তাদের নফসের সাথে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (মুসনাদে শাশী ৩/১৭৩)
সেটাই যিনি খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ اللهَ اشْتَـرٰى مِنَ الْمُؤْمِنِيْـنَ اَنْفُسَهُمْ وَاَمْوَالَـهُمْ بِـاَنَّ لَـهُمُ الْـجَنَّةَ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই যিনি খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার বিনিময়ে মু’মিন উনাদের থেকে উনাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১১)
সুতরাং বাইয়াত হওয়া মানে বিক্রি হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার বিনিময়ে তথা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহব্বত-মারিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে নিজের জান-মাল সমস্ত কিছু বিক্রি করে দেয়া। সুবহানাল্লাহ! সে বিষয়টিই স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাই‘আতে আক্বাবাহ্ শরীফ উনার মধ্যে। সুবহানাল্লাহ! এখানে যে শর্তগুলো দেয়া হয়েছে, সংক্ষেপে সেগুলো হলো-
১. ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক সবসময় প্রত্যেকটি আদেশ-নিষেধ মুবারক অবশ্যই শুনতে হবে এবং অবশ্যই মানতে হবে।
২. স্বচ্ছল বা অস্বচ্ছল সর্বাস্থায় যেখানে খরচ করতে বলা হবে, অবশ্যই সেখানে ধন-সম্পদ খরচ করতে হবে।
৩. প্রত্যেক সৎকাজে আদেশ করতে হবে এবং অসৎ কাজে নিষেধ করতে হবে।
৪. পিতা-মাতা, পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্তুতি, সমস্ত মানুষ, অর্থ-সম্পদ এবং নিজের জীবনের চেয়েও বেশি মুহব্বত করতে হবে এবং সমস্ত কিছু কুরবান করে দিয়ে হলেও যথাযথভাবে সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে হবে।
৫. নিজেদেরকে এবং নিজেদের আহলিয়া ও সন্তানদেরকে যেভাবে হিফাযত করা হয়, তার চেয়েও লক্ষ কোটি গুণ উত্তমভাবে সম্মানিত নিরাপত্তা মুবারক দিতে হবে, সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে হবে।
৬. যথাযথভাবে সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে গিয়ে সারা পৃথিবীও যদি বিরুদ্ধে চলে যায় এবং নিজের জান-মাল, আল-আওলাদ এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরাও যদি কুরবান হয়ে যায়, তারপরেও এক চুল পরিমাণ পিছু টান দেয়া যাবে না। এবং
৭. সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে এ সমস্ত কাজ মুবারকগুলো করতে যেয়ে কোনো নিন্দাকারীর নিন্দাকে কখনও পরওয়া করা যাবে না।
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এই শর্ত-শারায়েতগুলো ক্বিয়ামত পর্যন্ত চলবে। কেননা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَلشَّيْخُ لِقَوْمِهٖ كَالنَّبِـىِّ فِـىْ اُمَّتِهٖ.
অর্থ: “উম্মত মাঝে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা যেমন, মুরীদ মাঝে শায়েখ আলাইহিস সালাম তিনি তেমন।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ, মাকতুবাত শরীফ, জামিউল জাওয়ামি’, আল জামিউছ ছগীর ইত্যাদি)
কাজেই, একজন মুরীদের জন্য উপরোক্ত শর্তগুলো মেনে চলা ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! যারা মুরীদ হবে তাদেরকে অবশ্যই বীনা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বালে উপরোক্ত শর্তগুলো যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। তবেই তারা হাক্বীক্বী ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ মুবারক লাভ করতে পারবে, হাক্বীক্বী ইছলাহ্ হাছিল করতে পারবে এবং হাক্বীক্বী মুহব্বত-মারিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পারবে, ইহকাল-পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে পারবে। সুবহানাল্লাহ! অন্যথায় কস্মিনকালেও কোনো কিছু হাছিল করা সম্ভব নয়।”
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে উপরোক্ত শর্তগুলো যথাযথভাবে মেনে উনার হাক্বীক্বী গোলামী করার মাধ্যম দিয়ে হাক্বীক্বী মুহব্বত-মারিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার এবং ইহকাল-পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-মুফতী মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ছিদ্দীক্ব ইবনে আকরাম