৩৬তম ফতওয়া হিসেবে
“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত
ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক
(৩)
সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ
মুবারক উনার ভূমিকা:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ ছিলেন সম্মানিত ছলাত বা নামায থেকে শুরু করে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সমস্ত কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে সম্মানিত ছলাত মুবারক আদায় করতেন, উনাদেরকে যাবতীয় বিষয়ে সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন মুবারক দিতেন, উনাদেরকে সম্মানিত ছোহবত মুবারক হাদিয়া করতেন, সম্মানিত বিচার-ফায়ছালা মুবারক করতেন এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে এখানেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) বায়াত হতেন, এখানেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ আহত মুজাহিদগণ উনাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হতো। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সময়ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ ছিলেন সম্মানিত ছলাত বা নামায থেকে শুরু করে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সমস্ত কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল। সুবহানাল্লাহ! এখানেই সম্মানিত ছলাত আদয়া করা হতো, এখানেই মজলিসে শূরা তথা পরামর্শ মজলিস বসতো, এখান থেকেই মুজাহিদগণ উনাদেরকে সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ময়দানে পাঠানো হতো, এখানেই বিচারকার্য পরিচালনা করা হতো। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সূচনালগ্নে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার যাবতীয় কার্যক্রম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভিত্তিকই ছিলো। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখান থেকেই দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ!
মুসলমানরা আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার সেই গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার কথা ভুলে গেছে বিধায়, তাদের এই করুণ অবস্থা! না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা সারা পৃথিবীতে লাঞ্ছিত হচ্ছে, অপমাণিত হচ্ছে, পর্যদুস্ত হচ্ছে, কাফির-মুশরিকদের হাতে মার খাচ্ছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
তাই সম্মানিত মুসলমান উনাদের উচিত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি হাক্বীক্বীভাবে উপলব্ধি করা। সুবহানাল্লাহ!
হযরত শাহ ওলীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘রওযাতুল আহবাব’ নামক কিতাব উনার বরাত দিয়ে বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে শহর, উপশহর, শহরতলি ও গঞ্জ-বন্দর মিলে ১০৩৬টি এলাকা বিজিত হয়েছে। সে সব এলাকায় চার হাজার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক তৈরি হয়েছেন এবং চার হাজার গির্জা বিরান হয়েছে। উক্ত চার হাজার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাদের মধ্যে নয়শ’ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জামে’ মসজিদ মুবারক রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (ইযালাতুল খফা)
মূল কথা হলো, যেখানেই সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আলো পৌঁছেছে, সেখানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসিজদ মুবারক নির্মাণ করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের থেকে শুরু করে হযরত আউলিয়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত ছিলো। উনারা যেখানেই সম্মানিত হিদায়াত মুবারক উনার কাজে গিয়েছেন, সেখানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সারা পৃথিবীতে এর বহু নিদর্শন রয়েছে। এমনকি খোদ বাংলাদেশেও এর অনেক নিদর্শন রয়েছে। যেমন- বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রামে ৬৯ হিজরী সনের হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের কর্তৃক নির্মিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার নিদর্শন পাওয়া গেছে। সুবহানাল্লাহ! হযরত খান জাহান আলী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নির্মিত বাঘের হাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের কথা তো সকলেরই জানা রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণের ধারা অব্যাহত রাখা ব্যতীত সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক হচ্ছেন, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক এবং সমস্ত মুসলমান উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইবাদাতখানা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে কি করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণের ধারা অব্যাহত রাখা ব্যতীত সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম এবং সম্মানিত মুসলমান উনাদের অস্তিত্ব দুনিয়ার যমীনে টিকে থাকতে পারে? এটা কস্মিনকালেও কল্পনা করা যায় না। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণের ধারা অব্যাহত রাখার মাধ্যমেই দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত মুসলমান উনাদের অস্তিত্ব টিকে থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, বর্তমানে যারা আমাদের দেশ থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কূটকৌশলের সাথে একের পর এক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে যাচ্ছে, না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু, উনার মাহবূব হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শত্রু, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের শত্রু, সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শত্রু এবং সম্মানিত মুসলমান উনাদের শত্রু। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
(১০২-১০৩)
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فَلْيُحِبَّنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ فَلْيُحِبَّ اَصْحَابِـىْ وَمَنْ اَحَبَّ اَصْحَابِـىْ فَلْيُحِبَّ الْقُرْاٰنَ وَمَنْ اَحَبَّ الْقُرْاٰنَ فَلْيُحِبَّ الْمَسَاجِدَ فَاِنَّهَا اَفْنِيَةُ اللهِ اَبْنِيَتُهٗ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করে, সে যেন আমাকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করে, সে যেন আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে মুহব্বত করে, সে যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে মুহব্বত করে, সে যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে মুহব্বত করে। (মুহব্বতের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অর্থাৎ যাতে কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙতে না পারে বা কোন প্রকার ক্ষতি করতে না পারে এবং মুসল্লীদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ কেন্দ্রিক কোন ইবাদতে বিঘœ সৃষ্টি করতে না পারে। সুবহানাল্লাহ!) কেননা নিঃসন্দেহে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার আঙ্গিনা, মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী শরীফ ১২/২৬৬, শরহুল বুখারী শরীফ ১/৪১৪)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে যেই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্ট তা হচ্ছে- যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত করে, তার জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে মুহব্বত করা। মুহব্বতের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে বেশি বেশি করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করা এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অর্থাৎ যাতে কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙতে না পারে বা কোন প্রকার ক্ষতি করতে না পারে এবং মুছল্লীদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক কেন্দ্রিক কোন ইবাদতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে মুহব্বত করে না, সে মূলত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত করে না। না‘ঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ সে ঈমানদার নয় বরং কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
যদি তাই হয়, তাহলে বর্তমানে যারা আমাদের দেশ থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কূটকৌশলের সাথে একের পর এক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে যাচ্ছে, না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! নি:সন্দেহে তারা কস্মিনাকালেও ঈমানদার নয়; বরং কাট্টা কাফির, চির জাহান্নামী এবং চির মাল‘ঊন। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
সারা বিশ্বের সমস্ত মুসলমান সরকারসহ সমস্ত ঈমানদার-মুসলমান উনাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে, এ বিষয়ে শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণের ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক-
(১) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ সম্পর্কে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক:
যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
(১০৪)
فِـىْ بُيُوْتٍ اَذِنَ اللهُ اَنْ تُرْفَعَ وَيُذْكَرَ فِيْهَا اسْـمُهٗ يُسَبِّحُ لَهٗ فِيْهَا بِالْغُدُوِّ وَالْاٰصَالِ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত আদেশ মুবারক করেন- নির্মাণ ও সম্মান করার জন্য এবং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য অর্থাৎ না ভাঙ্গার জন্য, ঐ সকল মুবারক ঘরসমূহ উনাদেরকে যে সকল মুবারক ঘরসমূহে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক স্মরণ করা হয় ও তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করা হয় সকাল-সন্ধ্যায়।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)
আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত بُيُوْتٍ ‘সম্মানিত ঘর মুবারকসমূহ’ শব্দ মুবারক উনার ব্যাখ্যায় পৃথিবীর সমস্ত বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থসমূহে الْمَسَاجِدُ ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ’ উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ আলোচ্য সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত بُيُوْتٍ ‘সম্মানিত ঘর মুবারকসমূহ’ দ্বারা উদ্দেশ্য الْمَسَاجِدُ ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ’। সুবহানাল্লাহ!
যেমন ‘তাফসীরে মাযহারী শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
(১০৫)
وَالْمُرَادُ بِـهَا الْـمَسَاجِدُ قَالَ حَضْرَتْ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَلْـمَسَاجِدُ بُيُوْتُ اللهِ فِى الْاَرْضِ وَهِىَ تُضِىْءُ لِاَهْلِ السَّمَاءِ كَمَا تُضِىْءُ لِاَهْلِ الْاَرْضِ النُّجُوْمُ.
অর্থ: “এখানে ‘সম্মানিত ঘর মুবারকসমূহ’ দ্বারা উদ্দেশ্য ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ’। হযরত সা‘ঈদ ইবনে জুবাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছে দুনিয়ার যমীনে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ঘর মুবারক।’ সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ আসমানবাসী উনাদেরকে এমনভাবে আলোকিত করে থাকেন, যেমনিভাবে আসমানের তারকারাজি যমীনবাসী উনাদেরকে আলোকিত করে থাকে।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে মাযহারী শরীফ ৬/৩৩৯)
‘তাফসীরে বাগভী শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
(১০৬)
وَالْبُيُوْتُ هِىَ الْمَسَاجِدُ
অর্থ: “আর ‘মহাসম্মানিত ঘর মুবারকসমূহ’ হচ্ছে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ’।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে বাগভী শরীফ ৩/৪১৮)
‘তাফসীরে নীশাপুরী শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
(১০৭)
{فِـىْ بُيُوْتٍ} يَعْنِى الْـمَسَاجِدَ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ঘর মুবারকসমূহে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে নীশাপূরী শরীফ ১/৭৬৫)
আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে اَذِنَ শব্দ মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছে ‘তিনি সম্মানিত আদেশ করেছেন’।
যেমন- এই সম্পর্কে ‘তাফসীরে নীশাপূরী শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
(১০৮)
اَمَرَ اللهُ اَنْ تُبْنٰى
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করার জন্য সম্মানিত আদেশ মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে নীশপূরী শরীফ ১/৭৬৫)
অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন