[সমস্ত প্রশংসা খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য এবং অশেষ-অসীম সম্মানিত ছলাত ও সালাম মুবারক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ। মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের খাছ রহমত, বরকত, সাকীনাহ, দয়া-দান, ইহসান মুবারক উনাদের কারণে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগ উনার তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের অকাট্ট দলীলের আলোকে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩.নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬.মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহরীমি সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯.ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪.প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে র্ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮.নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০.শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহর বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহরের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) ২২.হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪.হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়ত উনার নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২২০তম সংখ্যা-চলমান), ৩৪. “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ ও মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৩৮-চলমান), ৩৫. “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ মহাসম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৬৪-২৮৬), ৩৬. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৬৫-চলমান), পেশ করার পাশাপাশি-
‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক’ পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়ার বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ থেকে দলীল
(৪)
হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার যামানায় ফেরাউন ও তার দলবল যখন অবাধ্যতার চরম সীমায় উপনীত হলো, তখন হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তাদের বিরুদ্ধে বদদো‘আ করলেন,
وَقَالَ مُوْسٰى رَبَّـنَاۤ اِنَّكَ اٰتَـيْتَ فِرْعَوْنَ وَمَلَاَهٗ زِيْـنَةً وَّاَمْوَالًا فِـى الْـحَيٰوةِ الدُّنْـيَا رَبَّـنَا لِيُضِلُّوْا عَنْ سَبِيْلِكَ رَبَّـنَا اطْمِسْ عَلـٰىۤ اَمْوَالِـهِمْ وَاشْدُدْ عَلـٰى قُـلُوْبِـهِمْ فَلَا يُـؤْمِنُـوْا حَتّٰـى يَـرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِيْمَ .قَالَ قَدْ اُجِيْـبَتْ دَعْوَتُكُمَا فَاسْتَقِيْمَا
অর্থ: “আর হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আয় আমাদের রব তা‘য়ালা! আপনি ফেরাউনকে এবং তার সভাসদদেরকে পার্থিব জীবনের আড়ম্বর দান করেছেন এবং সম্পদ দান করেছেন। আয় আমাদের রব তা‘য়ালা! (আপনি তাদেরকে এ সমস্ত কিছু দিয়েছেন) এ গুলো দিয়ে তারা মানুষদেরকে আপনার পথ থেকে বিপথগামী করে যাচ্ছে, পথভ্রষ্ট করে যাচ্ছে। আয় আমাদের রব তা‘য়ালা! আপনি তাদের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দিন এবং তাদের অন্তরগুলোকে কঠোর করে দিন। তারা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান আনবে না, যতক্ষণ না তারা বেদনাদায়ক আযাব প্রত্যক্ষ করবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের সম্মানিত দোআ মুবারক কবূল করা হলো। অতএব, আপনারা দুজন অটল থাকুন।” সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইঊনুস শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৮-৮৯)
তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি ফেরাউন ও তার দলবলের উপর আযাব-গযব নাযিল করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الطُّوْفَانَ وَالْـجَرَادَ وَالْقُمَّلَ وَالضَّفَادِعَ وَالدَّمَ اٰيٰتٍ مُّفَصَّلٰتٍ فَاسْتَكْبَـرُوْا وَكَانُـوْا قَـوْمًا مُّـجْرِمِيْـنَ
অর্থ: “সুতরাং আমি তাদের উপর পাঠিয়ে দিলাম তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ এবং রক্ত একের পর এক বিভিন্ন (আযাব-গযব সম্বোলিত) নিদর্শন। তারপরেও তারা অহংকার করতে থাকলো। মূলত তারা ছিলো পাপিষ্ঠ ক্বওম।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৩)
সবশেষে মহান আল্লাহ পাক তিনি ৪ শত বছর রাজত্বকারী ফেরাউন এবং তার দলবলকে লোহিত সাগরে ডুবিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেন। সুবহানাল্লাহ! একইভাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন খোদায়ী গযব দ্বারা ১৭ শত বছর রাজত্বকারী নমরূদকে, ১ হাজার বছর রাজত্বকারী শাদ্দাদকে, কুচক্রী হামানকে এবং অঢেল ধন-সম্পদের মালিক কারূনকে তার ধন-সম্পদসহ ধ্বংস করে দিয়েছেন। ধ্বংস করে দিয়েছেন আদ, ছামূদসহ আরো বহু অবাধ্য জাতিকে। সুবহানাল্লাহ!
আবরাহা ও তার দলবল যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ ধ্বংস করতে এসেছিলো, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার গিলাফ মুবারক ধরে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রোনাজারি করে দো‘আ মুবারক করেন এবং বলেন, ‘আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক উনার মালিক এবং হিফাযতকারী। আমি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক দেখাশুনার দায়িত্বে ছিলাম, তা যথাযথ পালন করার চেষ্টা করেছি। এখন আবরাহা এসেছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার ক্ষতি করার জন্য। সে যে পরিমাণ সৈন্য-সামন্ত এবং অস্ত্রপাতি নিয়ে এসেছে তাকে বাধা দেয়ার মত আমাদের প্রস্তুতি নেই। কাজেই, আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক আপনার হিফাযতে দিয়ে যাচ্ছি, আপনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক হিফাযত করুন এবং আবরাহাকে তার দলবলসহ ধ্বংস করে দিন।’
তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আবরাহা ও তার দলবলের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি প্রেরণ করে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَاَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْـرًا اَبَابِيْلَ تَـرْمِيْهِمْ بِـحِجَارَةٍ مِّنْ سِجِّيْلٍ فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَّاْكُوْلٍ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রেরণ করলেন তাদের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। তারা তাদের উপর কঙ্করময় পাথর নিক্ষেপ করলো। অত:পর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণের ন্যায় করে দিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফীল শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩-৫)
সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা, আস সাফফাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি উনার খোদায়ী জবান মুবারক-এ অসংখ্যবার ইরশাদ মুবারক করেছেন, “কাফির-মুশরিকরা যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারক উনার খিলাফ নানা ব্যঙ্গচিত্র করে যাচ্ছে, কার্টুন ও সিনেমা প্রকাশ করে যাচ্ছে, নানা কুরুচি সম্পন্ন লেখালেখি করে যাচ্ছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! এবং কোটি কোটি মুসলমানদেরকে শহীদ করে যাচ্ছে, তাই তাদের উপর এমন কঠিন আযাব-গযব নাযিল হবে, যেটা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। হযরত আবুল বাশার ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে, হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার যামানায়, হযরত ছালেহ আলাইহিস সালাম উনার যামানায়, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার যামানায়, হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার যামানায় অর্থাৎ সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের যামানায় কাফির-মুশরিকদের উপর যত আযাব-গযব নাযিল হয়েছে এবং সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত কাফির-মুশরিকদের উপর যত আযাব-গযব নাযিল হয়েছে, তাদের উপর তার চেয়ে লক্ষ-কোটি গুণ বেশি খোদায়ী আযাব-গযব নাযিল হবে। তারা দুনিয়ার যমীন থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি উনার আরশ কাঁপানো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্ববূল মুনাজাত শরীফ উনার মধ্যে বলতে থাকেন, “আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি দয়া করে সমস্ত কাফির, মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীন, ইহুদী, নাছারা, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজুসী, মুশরিক, ওলামায়ে সূ’, মুনাফিক এদের সবাইকে, এদের সবাইকে, এদের সবাইকে, ধ্বংস করে দিন, নিশ্চিহ্ন করে দিন, মিটিয়ে দিন, এদের অস্তিত্ব বিলীন করে দিন, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিন, দাবানলের দ্বারা কয়লা বানিয়ে দিন, তুষারপাতের দ্বারা পাত্থর বানিয়ে দিন, টর্নেডোর দ্বারা ধ্বংস করে দিন, ভূমিকম্পের দ্বারা নিশ্চিহ্ন করে দিন, ভূমিধসের দ্বারা নিশ্চিহ্ন করে দিন, আযাব-গযব দ্বারা লুলা-লেংড়া বানিয়ে দিন, বোবা, বধির, অন্ধ বানিয়ে দিন, এদেরকে কঠিন ফক্বীর বানিয়ে দিন, খাদ্যের অভাবে কংকাল বানিয়ে দিন, পয়সার অভাবে পাগল বানিয়ে দিন, এদেরকে ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন। পানির সাথে মিশিয়ে, বাতাসের সাথে মিশিয়ে দিন, মাটির সাথে, আগুনের সাথে মিশিয়ে দিন, মিশিয়ে দিন, মিশিয়ে দিন, আবরাহার চাইতে কঠিনভাবে, নমরূদ, শাদ্দাদ, ফেরাউন, হামান, কারূন, আদ, ছামূদ, আবূ জাহিল, আবূ লাহাব, উতবাহ, শায়বাহ, মুগীরাহ, কা’ব বিন আশরাফ, আবূ রফে’, উবাই বিন সুলূল এদের চাইতে লক্ষ-কোটিগুণ বেশি কঠিনভাবে ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন, ধ্বংস করে দিন।” (আমীন! আমীন!! আমীন!!!)
সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১০ম খলীফা, আস সাফফাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমরা ১৪২৮ হিজরী শরীফ (১৩৭৪ শামসী, ২০০৭ ঈসায়ী) সাল থেকেই বলে আসছি যে, পূর্ববর্তী সমস্ত জাতির উপর যত আযাব-গযব নাযিল হয়েছে, তার চেয়ে লক্ষ-কোটি গুণ বেশি খোদায়ী আযাব-গযবে পড়ে সমস্ত কাফির-মুশরিক এবং মুনাফিক্বগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১০ম খলীফা, আস সাফফাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “১৪২৮ হিজরী শরীফ (১৩৭৪ শামসী, ২০০৭ ঈসায়ী) সাল থেকে কাফের, মুশরিকদের দেশে গযব নাযিল হওয়া শুরু হয়েছে। পৃথিবীর এমন কোনো কাফেরের দেশ নেই যেখানে গযব নাযিল হয় নাই। আমেরিকার ৫১টা স্টেটের মধ্যে শত শত বার গযব নাযিল হয়েছে। চীন, জাপান, ফ্রান্সেও। এই যে অস্ট্রেলিয়ার ৪ ভাগের ৩ ভাগ পুড়ে গেলো, কানাডার দুইটা প্রদেশ পুড়ে গেলো আগুনে এরকম অনেক হয়েছে। এরা দাবানল, তুষারপাত, বন্যা, তুফান বিভিন্নভাবে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে পর্যায়ক্রমে। কিন্তু একটা মুসলমান দেশেও কেউ দেখাতে পারবে না এই ধরণের কোনো গযব নাযিল হয়েছে।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা স্বর্ণের অক্ষরে লিখে রাখো, একটা কাফেরও বেঁচে থাকতে পারবে না। করোনার পরে আরো ভয়াবহ কঠিন গযব আসতেছে। সম্মানিত মুসলমান উনাদের কিছুই হবে না।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
(অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)