মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (পর্ব-২৬)

সংখ্যা: ২৯০তম সংখ্যা | বিভাগ:

(৩৬তম ফতওয়া হিসেবে)

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করা ফরয:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

(১০০৮-১০১৬)

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ قِـرْصَافَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ اَنَّهٗ سَـمِعَ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـقُوْلُ اِبْـنُوا الْمَسَاجِدَ وَاَخْرِجُوا الْقُمَامَةَ مِنْـهَا فَمَنْ بَـنٰـى لِلّٰهِ مَسْجِدًا بَـنَـى اللهُ لَهٗ بَــيْـتًا فِـى الْـجَنَّةِ قَالَ رَجُلٌ يَّا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهٰذِهِ الْمَسَاجِدُ الَّتِـىْ تُــبْـنٰـى فِـى الطَّرِيْقِ قَالَ نَـعَمْ وَاِخْرَاجُ الْقُمَامَةِ مِنْـهَا مُهُوْرُ حُوْرِ الْعِـيْـنِ

অর্থ: “হযরত আবূ ক্বিরছাফাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছেন, তোমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করো এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখো। অর্থাৎ ভাঙ্গার তো প্রশ্নই আসে না বরং আরো বেশী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ নির্মাণ করতে হবে এবং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করো। সুবহানাল্লাহ! কেননা যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য একটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একটি বালাখানা নির্মাণ করবেন। সুবহানাল্লাহ! একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যে সকল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক রাস্তায় নির্মাণ করা হয়? (সেই সকল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনাদের হুকুম কী? ওই সকল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা নির্মাণ করবেন, উনাদের জন্যও কি সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ বালাখানা নির্মাণ করা হবে?) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হঁ্যা। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক থেকে ময়লা দূর করা অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ভাঙ্গার তো প্রশ্নই আসে না বরং আরো বেশী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ নির্মাণ করতে হবে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহ শুধু নির্মাণ করলেই চলবে না। সাথে সাথে উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণও করতে হবে এবং তা’যীম-তাকরীমের সাথে উত্তমভাবে সংরক্ষণ করাটা সম্মানিত জান্নাতী হুর উনাদের মোহরানাস্বরূপ। (অর্থাৎ যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করবে এবং তা’যীম-তাকরীমের সাথে উত্তমভাবে সংরক্ষণ করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে হুরদের সাথে বিবাহ দিবেন। অর্থাৎ নিশ্চিত সেই ব্যক্তি জান্নাতী হবে।)” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববারনী শরীফ ৩/১৯, দুররে মানছূর ৪/১৪৪, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/১১৩, জামি‘উছ ছগীর ১/৫, ফাতহুল কাবীর ১/২১, জামি‘উল আহাদীছ ১/১৩৭, কাশফুল খফা ২/৩৪, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ৩/৪৮৮, কানযুল ‘উম্মাল ৭/৬৫৫ ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

(১০১৭-১০২০)

عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْـقَةِ عَلَيْـهَا السَّلَامُ قَالَتْ اَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِـبِنَاءِ الْمَسَاجِدِ فِـى الدُّوْرِ وَاَنْ تُـنَظَّفَ وَتُطَـيَّبَ

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বাড়িতে বাড়িতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশ মুবারক করেছেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় করে রাখার জন্য অর্থাৎ ভাঙ্গার তো প্রশ্নই আসে না বরং আরো বেশী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ নির্মাণ করতে হবে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ নির্মাণ করার জন্য এবং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ ইত্যাদি)

উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, স্বয়ং যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করার জন্য এবং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এ ছাড়াও স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই বিশেষভাবে বাড়িতে বাড়িতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করার এবং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই রাস্তা নির্মাণের দোহাই দিয়ে, সৌন্দর্য বর্ধনের নামে এবং বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গার তো প্রশ্নই উঠে না; বরং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী প্রতি বাড়িতে বাড়িতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করতে হবে এবং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করতে হবে। উল্লেখ্য এই দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ সম্মানিত মুসলমান উনাদের সুবিধার্থে রাস্তার পাশে ও মোড়ে মোড়ে আরো অসংখ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করতে হবে এবং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করতে হবে। যাতে করে সম্মানিত মুসলমান উনাদের সম্মানিত নামায আদায় করতে কোনো প্রকার অসুবিধা না হয়। সুবহানাল্লাহ! যিনি বা যাঁরা এ বরকতময় ও নিয়ামতপূর্ণ কাজের আনজাম দিবেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী উনারা প্রত্যেকেই নিশ্চিত জান্নাতী হবেন। সুবহানাল্লাহ!

৫ম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক হচ্ছেন- স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে রাস্তা নির্মাণ করতে নিষেধ করেছেন:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

(১০২১-১০৩২)

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ عَنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ خِصَالٌ لَّا تَـنْـبَغِىْ فِـى الْمَسْجِدِ لَا يُــتَّخَذُ طَرِيْـقًا

অর্থ: “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এমন কিছু অভ্যাস বা কাজ রয়েছে যা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাদের মধ্যে করা জায়িয নেই। যেমন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাদেরকে (ভেঙ্গে) রাস্তা বানানো জায়েয নেই। বরং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশ মুবারক করা হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ, আল জামি‘উছ ছগীর ১/৩৬৬, আল ফাতহুল কাবীর ২/৮২, জামি‘উল আহাদীছ ১২/২৭৫, মিছবাহুয যুজাযাহ ১/৯৫, আত তানভীর শরহু জামি‘য়িছ ছগীর ৫/৪৮২, আল বাদরুল মুনীর ৯/৫১১, আদ দিরায়াহ ১/২৮৮, আল বাহরুল রায়িক্ব ৬/৩১৭, আদ দুররুল মানছূর লিস সুয়ূত্বী ১১/৭৮, তাফসীরে ইবনে কাছীর ৬/৬৩, আল মুহাররুল ওয়াজীয ৬/৪৩৭ ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

(১০৩৩-১০৪৪)

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـتَّخِذُوا الْمَسَاجِدَ طُـرُقًا

অর্থ: “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাদেরকে (ভেঙ্গে) রাস্তা হিসেবে গ্রহণ করো না (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে রাস্তা তৈরী করো না বরং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করো।)।” (আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ১০/৪৫৩, আল মু’জামুল আওসাত্ব ১/১৪, শরহু সুনানি ইবনে মাজাহ লিল মুগলত্বাই ১/১২৪৪, ফাইযুল ক্বদীর ৬/৫০২, আত তাইসীর বিশরহিল জামিয়িছ ছগীর ২/৯৪৫, মাছাবীহুত তানভীর ২/২৫, আত তানভীর শরহুল জামিয়িছ ছগীর ১১/৮২, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/৩৪, আল জামি‘উছ ছগীর ২/৩৮৮, আল ফাতহুল কাবীর ৩/৩০০, দায়লামী শরীফ ৫/১৫, জামি‘উল আহাদীছ ১২/২৭৫ ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

(১০৪৫-১০৪৭)

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ وَحَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّهٗ نَـهٰى اَنْ تُــتَّخَذَ الْـمَسَاجِدُ طُـرُقًا

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাদেরকে রাস্তা বানাতে (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে রাস্তা নির্মাণ করতে) নিষেধ করেছেন। বরং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার আদেশ মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু সুনানি ইবনে মাজাহ ১/১২৫০, যাখীরাতুল হুফ্ফায ২/৮৮৬)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

(১০৪৮-১০৫৫)

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـقُوْمُ السَّاعَةُ حَتّٰـى تُـتَّخَذَ الْمَسَاجِدُ طُـرُقًا

অর্থ: “হযরত ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাদেরকে (ভেঙ্গে) রাস্তা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।” অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ না করে ভেঙ্গে রাস্তা নির্মাণ করা ক্বিয়ামতের আলামত বা লক্ষণ।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (মুস্তাদরাকে হাকিম ৪/৪৪৬, মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার লিল বাইহাক্বী ৩/১৬৩, আদ দুররুল মানছূর লিস সুয়ূত্বী ১৩/২৮৯, আল বাদরুল মুনীর ৯/৫১১, জামি‘উল আহাদীছ ১৬/২৮১, মুখতাছারু তালখীছিয যাহাবী ৭/৩২৯৬, আল উম্ম লিল ইমাম আশ শাফিয়ী ৭/১৮৬, খাছায়েছু কুবরা ২/২৪০ ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

(১০৫৬)

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ اَمَارَاتِ السَّاعَةِ اَنْ تُـتَّخَذَ الْمَسَاجِدُ طُـرُقًا

অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ক্বিয়ামতের আলামত বা লক্ষণসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাদেরকে (ভেঙ্গে) রাস্তা বানানো অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ না করে ভেঙ্গে রাস্তা তৈরি করা ক্বিয়ামতের আলামত।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (আল বাদরুল মুনীর ৯/৫১১)

উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে রাস্তা নির্মাণ করা জায়িয নেই। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে রাস্তা নির্মাণ করতে স্বয়ং যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা নিষেধ তো করেছেনই এমনকি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

উপরোক্ত বর্ণনা থেকে আরো প্রমাণিত হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে রাস্তা নির্মাণ করা ক্বিয়ামতের আলামত বা লক্ষণ। তাই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব,  নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশ মুবারক অমান্য করে যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ না করে বরং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙবে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গার কাজে ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক বিরাণ করার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির করার ক্ষেত্রে বাঁধা দিবে, দেয়ার চেষ্টা করবে এবং এই সংশ্লিষ্ট কাজে সমর্থন করবে, তারাই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের শত্রু। আর তারাই সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, সবচেয়ে বড় কাট্টা মুশরিক, সবচেয়ে বড় কাট্টা যালিম এবং চির মাল‘ঊন ও চির জাহান্নামী। না‘ঊযুবিল্লাহ!

অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

 

 

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা লুঙ্গি চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৭

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৮

ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া— (১)

ফতওয়া বিভাগ-গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (২)

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-(৩)