বিবাহের জন্য মেয়ে বা ছেলের যে সব গুণ ও স্বভাব-চরিত্র তালাশ-অন্বেষণ করা সুন্নত তা প্রধানত সাতটি – ১. দ্বীনদারী, ২. উত্তম চরিত্র, ৩. সুরত বা সৌন্দর্য ৪. অল্প মোহরানা, ৫. বংশ, ৬. কুমারীত্ব, ৭. বিবাহের অযোগ্য হওয়া থেকে মুক্ত।
১. দ্বীনদারী: মেয়ে অথবা ছেলে দ্বীনদার, সৎস্বভাব বিশিষ্ট হওয়া। এটা প্রধান গুণ এবং অত্যাবশ্যকীয়। যদি কেউ স্বভাব-চরিত্র এবং দ্বীনদারীর দিক দিয়ে দুর্বল হয় তাহলে সে তার আহলিয়া ও আহালের মুখকে ছোট করে থাকে। যার কারণে আহাল ও আহালিয়া উভয়ে পেরেশানীতে পড়ে যায়। তাদের দাম্পত্য জীবন হয় দুর্বিষহ। কেননা আহাল কিংবা আহলিয়া যদি কোন অসন্তুষ্টিমূলক বা অবাঞ্ছিত পথ অবলম্বন করে তবুও তারা বিপদ থেকে মুক্তি পায় না। আর যদি তারা কঠিন না হয়ে সহজ পথে চলে তাহলে দ্বীনদারী ও সম্মানের হানি ঘটে। উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক তা কোনক্রমে অক্ষুন্ন থাকেনা। এরূপ অবস্থায় আহাল কিংবা আহালিয়া যদি খুবছূরত ও সম্পদশালী হয় তাহলে বিপদ আরও বড় হয়ে দেখা দেয়। কেননা আহলিয়া তার আহালকে তখন তালাক দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। আর আহালও বিনা কারণে আহালিয়াকে তালাক দেয়ার রাস্তা খেঁাজে। এ পরিস্থিতিতে আহাল বা আহালিয়া ভীষণ দুর্বিপাকে পড়ে যায়। একদিকে একজন অপরজনের বিচ্ছেদ যাতনায় অস্থির হয়ে পরে, অন্যদিকে ঐ আহলিয়া বা আহালের সাথে বসবাস করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাদের অবস্থা ঠিক ঐব্যক্তির মত, যে একদা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, মাহবূব নূরে মজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার পবিত্র দরবার শরীফে হাজির হলেন। বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার আহলিয়া বা স্ত্রী কোন স্পর্শকারীর হাতকে ফিরিয়ে দেয় না। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি উনাকে তালাক দিতে পারেন। সে ব্যক্তি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি উনাকে অত্যধিক মুহব্বত করি। তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তাহলে উনাকে রেখে দিন। (আবু দাঊদ শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত আছে, যারা রূপ-সৌন্দর্য এবং অর্থ-সম্পদ দেখে বিবাহ করে তারা রূপ-সৌন্দর্য ও অর্থ-সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়। আর যারা দ্বীনদার-আল্লাহওয়ালা, আল্লাহওয়ালী হওয়ার জন্য বিবাহ করে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে রূপ-সৌন্দর্য ও অর্থ-সম্পদের মধ্যে বরকত দান করেন। সুবহানাল্লাহ্!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা শুধু রূপ-সৌন্দর্য দেখে বিবাহ করোনা, কেননা হয়তো সেই রূপ-সৌন্দর্যই মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। আর শুধু অর্থ-সম্পদ দেখেও বিবাহ করবেনা। কেননা, হয়তো এই ধন-সম্পদের কারণে ফিতনা-ফ্যাসাদে পড়ে যাবে। (ইহ্য়াউ উলূমিদ্দীন- ১/৪১০)