বিবাহের পূর্বে ইস্তিখারাহ করা
মুরীদ তার সকল কাজই নিজের শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নির্দেশ মুবারক কিংবা পরামর্শ মুবারকে সুসম্পন্ন করবে। এটা খাছ সুন্নত মুবারকের অন্তর্ভুক্ত। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এরূপই করতেন। উনারা উনাদের সব কাজ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক অনুমতি নিয়েই সুসম্পন্ন করতেন। আর যারা সম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হতে পারেনি তারা বিবাহের পূর্বে ইস্তিখারাহ করতে পারে। اِسْتِخَارَةٌ (ইস্তিখারাহ) শব্দের অর্থ: কল্যান কামনা করা। সঠিক দিক নির্দেশনা প্রার্থনা করা।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইস্তিখারাহ করা আদম সন্তানের জন্য সৌভাগ্য। যে ইস্তিখারাহ করবে সে নিরাশ হবে না। তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে যেমন সূরা শরীফ শিক্ষা দিতেন, সেরূপই ইস্তিখারাহও শিক্ষা দিতেন। (তাবিজাত ৫ম/২১৮)
ইমামুল আউওয়াল হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন। যে ব্যক্তি চায় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে স্বপ্নযোগে কোন ভালো-মন্দ অবগত করিয়ে দেন, তাহলে সে যেন ইস্তিখারাহ করে।
হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যে ব্যক্তি চারটি বিষয়ের তাওফীক্ব পেয়েছে, সে ব্যক্তি চারটি নিয়ামত হতে বঞ্চিত হবে না।
১। যে ব্যক্তি তাওবা করার তাওফীক্ব পেয়েছে সে ব্যক্তি কবুল হওয়া থেকে বঞ্চিত হবেনা।
২। যে ব্যক্তি ইস্তিখারাহ করার তাওফীক্ব পেয়েছে, সে ব্যক্তি কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে না।
৩। যে ব্যক্তি পরামর্শ গ্রহণ করার তাওফীক্ব পেয়েছে, সে ব্যক্তি ন্যায় কার্য হতে বঞ্চিত হবে না।
৪। যে ব্যক্তি দোয়া-মুনাজাত করার তাওফীক্ব পেয়েছে, সে মনোবাঞ্চা পূর্ণ হওয়া থেকে বঞ্চিত হবে না।
ইস্তিখারাহ করার নিয়ম
ওযু করে পাক কাপড় পরিধান করত দুই রাকয়াত নামায পড়বে। প্রথম রাকায়াতে সূরা ফাতিহা শরীফ পড়ে পবিত্র সূরা কাফিরূন আর দ্বিতীয় রাকয়াতে পবিত্র সূরা ইখলাছ পড়বে। তারপরে পাক বিছানায় পশ্চিম দিকে মুখ ফিরে ডান দিকে কাৎ হয়ে শুয়ে পবিত্র সূরা আশ শামস ৭ বার, পবিত্র সূরা আল লাইল ৭ বার, পবিত্র সূরা আত্ব ত্বীন ৭ বার ও পবিত্র সূরা ইখলাছ ৭ বার পড়ে নিম্নোক্ত প্রকার দোয়া পড়বে।
اَللّٰهُمَّ إِنِيْ أَسْتَخِيْـرُكَ بِعِلْمِكَ وَاَسْتَـقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ فَإِنَّكَ تَـقْدِرُ وَلَا أَقْدِرُ وَتَـعْلَمْ وَلَا أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُـوْبِ اَللّٰهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَـعْلَمُ أَنَّ هٰذَا الْأَمْرَ خَيْـرٌ لِّيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاَقْدِرْهُ لِيْ ثُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْهِ وَإِنْ كُنْتَ تَـعْلَمُ أَنَّ هٰذَا الْأَمْرَ شَرٌّ لِّيْ فِيْ دِيْنِىْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاَصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاَصْرِفْنِيْ عَنْهُ وَأَقْدِرْ لِىَ الْخَيْرِ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ اَرْضِنِيْ بِهٖ
(তাবিজাত-২/২৯৪, ৫/২১৮)