পূর্ব প্রকাশিতের পর
আপনি একজন সমঝদার ব্যক্তি হওয়ার পরও আপনি ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন না।
أَوَلَيْسَ هَذِهِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى يَقْرَؤُونَ التَّوْرَاةَ، وَالإِنْجِيْلَ لاَ يَعْمَلُوْنَ بِشَىءٍ مِمَّا فِيهِمَا
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে যিয়াদ বিন লাবীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি কি বিষয়টা লক্ষ্য করেননি, ইহুদী-নাছারা তাদের তাওরাত শরীফ, যাবূর শরীফ, ইনজীল শরীফতো রয়েছে, এখনও রয়েছে, যতটুকুই রয়েছে তারা তো সেটা পড়ে থাকে কিন্তু আমলতো তারা করেনা।
لاَ يَعْمَلُوْنَ بِشَىءٍ مِمَّا فِيْهِمَا
আসমানী কিতাবসমূহে উনাদের মধ্যে যা আদেশ নিষেধ ছিলো তারা তো তা আমল করে না। তাদের প্রত্যেকটা আসমানী কিতাবে রয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আসবেন, উনার প্রতি ঈমান আনা ফরয। তারা তো সেটা করলো না। তারা তাওরাত শরীফ, যাবূর শরীফ ইনজীল শরীফ পড়ে থাকে কিন্তু আমল তো তারা করে না। এখন ইহুদী নাছারাদের যদি এ অবস্থা হতে পারে তাহলে উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের কেন এ অবস্থা হবে না। এক সময় আসবে তারাও পবিত্র কুরআন শরীফ পড়বে, পড়াবে, তা’লীম দিবে, দরস্-তাদরীস করবে, মসজিদ থাকবে, মাদরাসা থাকবে, আলিম, ছূফী, দরবেশ, শায়েখ, মুফতী, মুহাদ্দিছ, শাইখুল হাদীছ, মুফাসসিরে কুরআন, পীর, বুযুর্গ অনেক থাকবে কিন্তু দেখা যাবে তারা রসম-রেওয়াজ। বনী ইসরাঈলের সেই মালানাদের মত তারা পড়বে কিন্তু আমল থাকবে না। আমল থেকে তারা গাফিল হবে।
এখনতো আমরা সেটাই দেখতে পাচ্ছি। পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী এখনতো সেই অবস্থাই দেখা যাচ্ছে। পবিত্র কুরআন শরীফ তো ঠিকই রয়েছে, পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে, ইজমা’ শরীফ রয়েছে, ক্বিয়াস শরীফ রয়েছে, হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি কিতাব রয়েছে, তাতে কোন ঘাটতি নেই কমতি নেই। মাওলানা ছাহেব অনেক রয়েছে, মুফতী ছাহেব রয়েছে, শায়খুল হাদীছ, মুফাসসিরে কুরআন রয়েছে, আলিম ছূফী দরবেশ পীর-বুযূর্গ অনেক রয়েছে। এখন আমলটা কোথায়? সকলেই এরা দেখা যাচ্ছে ইসলামের নামে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র করে থাকে। তন্ত্র-মন্ত্র করে, এরা বেপর্দা হচ্ছে। পর্দা করা ফরয হওয়ার পরও, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাধ্যমে পর্দা করা ফরয হওয়ার পরেও তারা বেপর্দা হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! হাজার হাজার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ছবি তোলা হারাম বলা হয়েছে, এরা ছবি তুলেই যাচ্ছে। নাউযুবিল্লহ! পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে তোমরা বেদ্বীন-বদদ্বীনদের অনুসরণ করো না।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُوْلِ اللّـهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
তোমাদের জন্য তোমাদের রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝেই উত্তম আদর্শ মুবারক রয়েছে। সে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বাদ দিয়ে তারা কি করে থাকে? এরা আব্রাহাম লিঙ্কনকে অনুসরণ করে গনতন্ত্র করে। সেই কাট্রা জাতী হিন্দু পাপাত্মা গান্ধিকে অনুসরণ করে তারা হরতাল করে থাকে। কাট্রা নাস্তিক মাওসেতুংকে অনুসরণ করে তারা লংমার্চ করে থাকে। সেই হিন্দু খ্রিস্টানদের অনুসরণ করে তারা কুশপুত্তলিকা দাহ করে থাকে। এ ধরনের অসংখ্য অগণিত কাজ তারা করে থাকে। এখনতো দেখা যাচ্ছে ঠিকই আসমানী কিতাব রয়েছে, পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে, মাসয়ালা মাসায়িল সবই রয়েছে। এরা মালানা, মাদরাসা থেকে ফারেগ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে কিন্তু আমলটা কোথায়? আমলতো ইলম্সহ সলব হয়ে গেছে। এরা রসম রেওয়াজ, বণী ইসরাঈলের মালানাদের মত তারা হয়ে গেছে। এখন আযাব গযব নাযিল হওয়াটা শুধু বাকি রয়েছে। তবে, এদের ব্যক্তিগতভাবে অবশ্যই অনেকের উপর আযাব-গযব নাযিল হচ্ছে। যার কারণে এদের অনেকের ইদানিং ইন্তিকাল করার পরে দেখা গেছে আকৃতি-বিকৃতি হয়ে গেছে। নাউযুবিল্লাহ!
এদের প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَأَنسَاهُمْ ذِكْرَ اللّـهِ اُولـئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِ الَا إِنَّ حِزْبَ الشَّيْطَانِ هُمُ الْخَاسِرُونَ. اِنَّ الَّذِينَ يُحَادُّونَ الله وَرَسُولَه اولـئِكَ فِي الْأَذَلِّينَ. كَتَبَ اللّهُ لَأَغْلِبَنَّ اَنَا وَرُسُلِىْ إِنَّ اللّـهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ِاسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَأَنسَاهُمْ ذِكْرَ اللّـهِ اُولـئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِ الَا إِنَّ حِزْبَ الشَّيْطَانِ هُمُ الْخَاسِرُونَ.
আসল ব্যপার হচ্ছে, এদের উপর শয়তান গালিব হয়েছে, প্রবল হয়ে গেছে, এদেরকে শয়তান পরাস্ত করে ফেলেছে। এদের রূহানী কুওওয়াতের অভাবে, যিকির-ফিকিরের অভাবে, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে নিসবত-তায়াল্লুক উনার অভাবে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মুহব্বত, তায়াল্লুক উনার অভাবে এদেরকে শয়তান পরাস্ত করে ফেলেছে। যার কারণে,
فَاَنْسَاهُمْ ذِكْرَ اللّـهِ
মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে, যিকির-ফিকির থেকে, সুন্নত মুবারক উনার পাবন্দি থেকে এদেরকে ভুলিয়ে দিয়েছে, মাহরূম করে দিয়েছে।
اُولـئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِ
আসলে এরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভূলে যাওয়ার কারণে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ভুলে যাওয়ার কারণে শয়তান প্রবল হওয়ার কারণে এরা শয়তানের দলের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেছে।
الَا إِنَّ حِزْبَ الشَّيْطَانِ هُمُ الْخَاسِرُونَ.
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাবধান হয়ে যাও! নিশ্চয়ই তারা শয়তানের দলের অন্তর্ভুক্ত। এরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত। শুধু ক্ষতিগ্রস্তই নয়, বরং
اِنَّ الَّذِينَ يُحَادُّونَ الله وَرَسُولَه اولـئِكَ فِى الْأَذَلِّينَ.
নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বিরাধিতা করে, বিদ্বেষ পোষন করে, চূ-চেরা ক্বীল-ক্বাল করে-
اولـئِكَ فِى الْأَذَلِّينَ
এরা অবশ্যই লাঞ্চিত। এরা অবশ্যই লাঞ্চিত হবে, অপমানিত হবে, অবহেলিত হবে।
এরপর মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন এই সমস্ত উলামায়ে সূ, এই সমস্ত বেদ্বীন-বদদ্বীন গোমরাহ যারা, ফাসিক-ফুজ্জার যারা রয়েছে, এরা শয়তানের দল হয়ে গেলো, এরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলো, লাঞ্ছিত হয়ে গেলো।
كَتَبَ اللّهُ لَأَغْلِبَنَّ اَنَا وَرُسُلِىْ
মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন, তিনি এটা ফরয করে দিয়েছেন, লিপিবদ্ধ করে দিয়েছেন-
لَأَغْلِبَنَّ اَنَا وَرُسُلِىْ
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা অবশ্যই কামিয়াবী হাছিল করবেন এবং উনাদেরকে যারা অনুসরণ করবেন ইতায়াত করবেন উনারাও কামিয়াবী হাছিল করবেন। সুবহানআল্লাহ!
انَّ اللّـهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি পরাক্রমশীল, শক্তিশালী। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমতাবান সব বিষয়ে সকলের উপরে। (অসমাপ্ত)