পূর্ব প্রকাশিতের পর
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম. হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বসা ছিলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, লা’নত যখন আসে তখন ভালো মন্দ সব একসাথে ধ্বংস করে দেয়, মিটিয়ে দেয়। তখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যখন মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত আসে, গযব আসে তখন খারাপ লোকগুলো ধ্বংস হয়ে যায় সেটা ঠিকই রয়েছে, তাহলে যারা নেককার রয়েছেন, পরহেযগার রয়েছেন উনারাও কেন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন? তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, যারা সত্যিই নেককার রয়েছেন উনারা তাদেরকে পাপে বাধা দিয়েছিলেন কিন্তু তারা সেটা শুনেনি। তাই যদি হয়ে থাকে, যখন আযাব-গযব আসবে সকলকে নিয়ে যাবে। তবে যারা নেককার উনারা পরকালে তার বদলা, সেটার বিনিময়, ফায়দা হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু যারা বাধা দিবে না তারা বদকারদের সাথে একই সাথে ধ্বংস হয়ে যাবে এবং মালউন, লা’নতগ্রস্ত হয়ে যাবে। নাউযুবিল্লাহ!
এখনতো আমরা সেটাই দেখতে পাচ্ছি, সারা পৃথিবীর যে অবস্থা রয়েছে যারা আলিম ছূফী দরবেশ রয়েছে তারা তো মানুষকে নেককাজে ধাবিত করতেছেনা, পাপ থেকে বাধা দিচ্ছে না। এরা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নামে তন্ত্র মন্ত্র করে যাচ্ছে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নামে পর্দার খিলাফ করে বেপর্দা হচ্ছে, ছবি তুলে যাচ্ছে, টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রাম করে যাচ্ছে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নাম দিয়ে মানুষকে ধোকা দিচ্ছে, মূর্তি বানাচ্ছে এবং সেটা পোড়াচ্ছে, কুশপত্তলিকা দাহ করতেছে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নিয়ম-নীতি বাদ দিয়ে তারা ব্লাসফেমী আইন তলব করে যাচ্ছে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নাম দিয়ে তারা কাট্টা কাফির জাতি হিন্দু, মুসলমান বিদ্বেষী সেই গান্ধির হরতাল তারা করে যাচ্ছে, কাট্রা নাস্তিক মাওসেতুং কোটি কোটি মুসলমান উনাদেরকে যে শহীদ করেছে সেই কাট্টা নাস্তিক মাওসেতুংয়ের তারা লংমার্চ করে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! এরাতো মানুষকে বাধা দিচ্ছেই না বরং নিজেরাও হারাম কাজে জড়িত হয়ে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বণী ইসরাইলের সেই সমস্ত আলিম সাহেব, ছূফী সাহেব, আহবার এবং রব্বানিউন যারা ছিলো, রুহবান যারা ছিলো তারা নিজেরা মানুষকে বাধা
দেয়নি। নিজেরাও হারাম কাজে জড়িত হয়েছিলো। তারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। আকৃতি-বিকৃতি হয়েছিলো। এখন দেখা যাচ্ছে, উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে যারা এই সমস্ত মালানা সাহেব, যারা ঠিক একইভাবে এ সমস্ত হারামে মশগুল হয়ে গেছে, জড়িত হয়ে গেছে; এখন তাহলে তাদেরও তো ধ্বংস রয়েছে। সেই ধ্বংসের একটা নিদর্শন হচ্ছে ইরাক। ইহুদী নাছারারা প্রতারণা করে ধোকা দিয়ে ইরাককে নিয়ে গেলো মুসলামান উনাদের হাত থেকে। সেখানে হাজার হাজার মূর্তি তৈরী করা হয়েছিল। সেখানকার উলামায়ে সূ’রা ফতওয়া দিয়েছিলো, মূর্তি বানানো জায়িয রয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! যদি পূজা না করা হয়। নাউযুবিল্লাহ! মূর্তি সেটা পূজা করা হোক বা না হোক সব অবস্থাতেই মূর্তি তৈরী করা হারাম।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
بعثت لكسر الـمزامير والاصنام
“যে আমি প্রেরিত হয়েছি বাদ্য যন্ত্র ও মূর্তি ধ্বংস করার জন্য।”
অথচ তারা ফতওয়া দিয়ে থাকে, যদি পূজা না করা হয় তাহলে মূর্তি বানানো জায়িয রয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! আমাদের দেশের উলামায়ে সূ’রাও একই ফতওয়া দিয়েছে। যারজন্য আমাদের দেশে দেখা যায় অনেক জায়গায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে মূর্তি বানানো হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! এই মূর্তি গুলোর কারণে আমাদের দেশেও লা’নত বর্ষিত হচ্ছে। এর থেকে ইস্তিগফার তাওবা করতে হবে। এই সমস্ত মূর্তিগুলো ভেঙ্গে মিটিয়ে দিতে হবে। ঠিক একইভাবে এরা ছবি তুলতেছে। ছবি তোলার জন্য বাধ্য করতেছে, সেটাও লা’নতের কারণ। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে, যে ঘরে ছবি থাকে, কুকুর থাকে, মূর্তি থাকে সেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না।
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
ان اشد الناس عذابا يوم القيامة الـمصورون
নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি হবে ঐ ব্যক্তির যে ছবি তোলে, আঁকে।
কাজেই এখন দেখা যাচ্ছে, সেই বণী ইসরাঈলের মত উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে যারা আলিম, ছুফী, দরবেশ দাবি করে থাকে তারা একই অবস্থায় উপনীত হয়েছে। এখনতো আযাব গযব ছাড়া আর কিছু আশা করা যেতে পারে না। যার কারণে দেখা যাচ্ছে, সারা পৃথিবীতে বন্যা, তুফান, মারামারি, কাটাকাটি, ফিতনা-ফাসাদ, আযাব-গযব নানা দিক থেকে মানুষদেরকে গ্রেফতার করেছে। এই আযাব গযব এসেছে এবং আসবে যখন আলিম ছূফী দরবেশ যারা তারা বিভ্রান্ত হয়ে যাবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে-
عَنْ حضرت زِيَادِ بْنِ لَبِيدٍ رضى الله تعالى عنه، قَالَ : ذَكَرَ النَّبِيُّ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ شَيْئًا ، فَقَالَ : ذَاكَ عِنْدَ أَوَانِ ذَهَابِ الْعِلْمِ ، قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَكَيْفَ يَذْهَبُ الْعِلْمُ ، وَنَحْنُ نَقْرَأُ الْقُرْآنَ ، وَنُقْرِئُهُ أَبْنَاءَنَا ، وَيُقْرِئُهُ أَبْنَاؤُنَا أَبْنَاءَهُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ؟ قَالَ : ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ زِيَادُ إِنْ كُنْتُ لأَرَاكَ مِنْ أَفْقَهِ رَجُلٍ بِالْمَدِينَةِ أَوَلَيْسَ هَذِهِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى يَقْرَؤُونَ التَّوْرَاةَ وَالإِنْجِيلَ لاَ يَعْمَلُونَ بِشَيْءٍ مِمَّا فِيهِمَا
“হযরত যিয়াদ বিন লাবীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন দেখ, যখন ইলম ছলব হয়ে যাবে আমল উঠে যাবে। যখন ইলম ছলব হয়ে যাবে, তখন যমীনের মধ্যে ফিতনা ফাসাদ সৃষ্টি হবে। আযাব গযব নাযিল হতে থাকবে পর্যায়ক্রমে। মানুষের অশান্তি বৃদ্ধি পাবে। সবদিক থেকে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে পর্যায়ক্রমে। যখন মানুষ ইল্ম্ চর্চা ছেড়ে দিবে, আমল ছেড়ে দিবে। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন ইরশাদ মুবারক করলেন এ কথা, তখন হযরত যিয়াদ বিন লাবীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সমঝদার লোক ছিলেন, ফক্বীহ ছিলেন তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
وَكَيْفَ يَذْهَبُ الْعِلْمُ
ইল্ম্ কি করে ছলব হয়ে যাবে, আমল কিভাবে বরবাদ হয়ে যাবে-
وَنَحْنُ نَقْرَأُ الْقُرْانَ وَنُقْرِئُهُ أَبْنَاءَنَا وَيُقْرِئُهُ أَبْنَاؤُنَا أَبْنَاءَهُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ؟
আমরা পবিত্র কুরআন শরীফ পড়ে থাকি, পবিত্র হাদীছ শরীফ শিক্ষা করতেছি। আমরা আমাদের আল আওলাদদের শিক্ষা দিবো, তারা তাদের আল আওলাদদের শিক্ষা দিবে, তারা আবার তাদের আল আওলাদদের শিক্ষা দিবে। পর্যায়ক্রমে ক্বিয়ামত পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকবে। তাহলে কি করে ইলম ছলব হয়ে যাবে? আমল নষ্ট হয়ে যাবে? তিনি যখন একথা বললেন, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন-
ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ زِيَادُ
আরবীতে একটা কথা রয়েছে, আপনার মাতা আপনাকে হারাক হে যিয়াদ! অর্থাৎ আপনার জন্য আফসুস!
إِنْ كُنْتُ لأَرَاكَ مِنْ أَفْقَهِ رَجُلٍ بِالْمَدِينَةِ
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমি তো আপনাকে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে একজন সমঝদার ব্যক্তি মনে করে থাকি। আপনি কি বললেন? (অসমাপ্ত)