-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
পীরে কামিল-এর পরিচয়ঃ
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, বিশিষ্ট ছূফী আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলমগীর ছাহেব দামাত বারাকাতাহুল আলীয়া বলেন, একদিন আমরা কয়েকজন ছূফী ভাই হযরত মামদুহ মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ছোহবতে মসজিদে বসা ছিলাম।
এক পর্যায়ে একজন বললেন, “শুনেছিলাম আউলিয়ায়ে কিরামগণের নাকি অনেক কারামত থাকে। আপনিও তো ওলীআল্লাহ। আপনার কারামত কি?”
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদুহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এমন একজন ব্যক্তিত্ব যে, প্রশ্ন করতে সময় লাগে কিন্তু তাঁর জাওয়াব দিতে সময় লাগেনা। সমস্ত জাওয়াবই যেন উনার প্রস্তুত থাকে। কোন প্রকার চিন্তা-ফিকির করতে হয়না।
উল্লেখ্য যদিও তার অনেক অনেক অভূতপূর্ব কারামত রয়েছে তারপরও সেগুলোর বর্ণনা না দিয়ে তিনি বললেন, “দুনিয়াদার, লোকগুলো ছোহবত পেয়ে দুনিয়াদারী ছেড়ে দিয়ে দ্বীনদার, আল্লাহওয়ালা হচ্ছে। আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মারিফাত-মুহব্বত হাছিলের জন্য ছূফী হচ্ছে। মাথার তালু থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত সুন্নতের পরিপূর্ণ পাবন্দ হচ্ছে, এটা কি কারামত নয়? সাথে সাথে এটাও বললেন যে, যুগের শ্রেষ্ঠ আলিম হযরত আবু বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইলমে ফিক্বাহ শেষ করে ইলমে তাছাউফ শিক্ষার জন্য বিভিন্ন ওলীআল্লাহ’র ছোহবতে গেলেন কিন্তু কাউকে পছন্দ হলো না। অনেক লোকের পরামর্শে শেষ পর্যন্ত সাইয়্যিদুত্ ত্বয়িফা, হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ছোহবত ইখতিয়ারের জন্য তাঁর খানকা শরীফে হাজির হলেন। দশ দিন অবস্থান করার পর তাঁর মাল-সামানা নিয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। সেই সময় সাইয়্যিদুত্ ত্বফিয়া হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, হে আবু বকর শিবলী! আপনি কেন এসেছিলেন আর কেনইবা চলে যাচ্ছেন। হযরত আবু বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, হুযূর! ইলমে তাছাউফ শিক্ষার জন্য আপনার ছোহবতে এসেছিলাম। সেলক্ষ্যে দশ দিন অবস্থানও করলাম কিন্তু আপনার একটা কারামতও দেখলাম না। তাই চলে যাচ্ছি।’
সাইয়্যিদুত্ ত্বয়িফা হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘আপনি সেই আবু বকর শিবলী, যিনি চল্লিশ হাজার হাদীছ শরীফ হিফ্য করেছেন। চারশ’ উস্তাযের নিকট ইল্ম শিক্ষা কেেছন। তিনি সম্মতি জ্ঞাপন করলেন। আপনি যুগের শ্রেষ্ঠ আলিম হিসেবে মাশহুর। বলুন তো, এই দশদিনে আমাকে কি কোন সুন্নতের খিলাফ আমল করতে দেখেছেন? হযরত আবু বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি কিছুক্ষণ নীরব রইলেই অতঃপর বললেন, জ্বী, না। আপনাকে কখন কোন সুন্নতের খিলাফ আমল করতে দেখিনি।’ সাইয়্যিদুত্ ত্বয়িফা হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি এই ঘটনা শুনে বললেন, এটাই হচ্ছে আমার সবচেয়ে বড় কারামত।” (অসমাপ্ত)