-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
পীরে কামিল-এর পরিচয়ঃ
দ্বিতীয়তঃ ‘পীরে কামিল’-এর আমলের ভিত্তি হবে তাক্বওয়া। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
اوصيكم بتقوى الله فانه رأس الامر كله.
অর্থঃ- “আমি তোমাদেরকে তাক্বওয়া হাছিলের ওছীয়ত করছি। কেননা, তাক্বওয়া বা খোদাভীতি হচ্ছে সমস্ত আমলের মূল।”
সেক্ষেত্রে যিনি যত বেশী তাক্বওয়ার অধিকারী তিনি আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তত বেশী নৈকট্যশীল, সন্তুষ্টি-রেজামন্দি প্রাপ্ত। মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
ان اكرمكم عند الله اتقكم.
অর্থঃ- নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যিনি যত বেশী মুত্তাক্বী তিনি আল্লাহ পাক-এর ততবেশী নৈকট্যশীল, প্রিয়।” (সূরা হুজুরাত/১৩)
তাক্বওয়া কি? মুত্তাক্বী কাকে বলে?
‘তাক্বওয়া’ এর সাধারন অর্থ হচ্ছে আল্লাহভীতি। যিনি আল্লাহভীতি হাছিল করেছেন তাঁকে মুত্তাক্বী বলে। আর সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মুত্তাক্বী হচ্ছেন আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
কাজেই যিনি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইত্য়াত (অনুসরণ-অনুকরণ) করবেন তিনি হবেন হাক্বীক্বী মুত্তাক্বী, তিনিই হচ্ছেন ‘কামিল পীর ছাহেব।’ আর তাঁরই ছোহবত ইখতিয়ার করতে হবে।
প্রসঙ্গতঃ ইমাম-মুজতাহিদ এবং আউলিয়ায়ে কিরামগণ ফতওয়া দিয়েছেন, “যে ব্যক্তি অহরহ সুন্নতে যায়েদা তথা মুস্তাহাব আমল ছেড়ে দেয় সে ব্যক্তি কামিল পীর ছাহেব নন। সুতরাং তার কাছে বাইয়াত হওয়া কিংবা তার ছোহবত ইখতিয়ার করা জায়িয নেই।
বর্তমান যামানায় মুত্তাক্বীর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সাক্ষাত উদাহরণ হচ্ছেন- খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী।
তাঁর তাক্বওয়া বা পরহেযগারী’র মেছাল (উদাহরণ) তিনি নিজেই। তাঁর তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতির গভীরতা শুধু আল্লাহ পাকই জানেন। আর জানেন আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সেক্ষেত্রে তাঁর বর্ণনা দেয়া আমার মত ইলম্, আক্বল, সমঝহীন ব্যক্তির পক্ষে অসম্ভব তো বটেই এমনকি রীতিমত অনধিকার চর্চা বৈকি।
কাজেই আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অসন্তুষ্টির ভয়ই আমাকে সে বর্ণনা দেয়া থেকে বিরত রেখেছে।
তবে মুসলিম উম্মাহ্কে এতটুকু জানিয়ে দিতে চাই, যদি কোন ব্যক্তি হাক্বীক্বী মুত্তাক্বী, হাক্বীক্বী পরহেযগার হতে চায়, সে যেন তাঁর ছোহবত ইখতিয়ার করে।
যদি কেউ আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চরম-পরম নৈকট্য লাভ করতে চায় সে যেন তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য কোশেশ করে।
যদি কেউ হাক্বীক্বী মু’মিন, প্রকৃত মুসলমান হতে চায়, সে যেন তাঁর দরবার শরীফকে বালিশ বানায় এবং তাঁর ছোহবতকেই নিজের জন্য লাযিম (আবশ্যক) করে নেয়।
সর্বোপরি কেউ যদি আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখে দেখে ইত্য়াত (অনুসরণ-অনুকরণ) করার বাসনা রাখে সে যেন আমার মামদুহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীকে দেখে দেখে তাঁর ইত্য়াত (অনুসরণ-অনুকরণ) করে।
কারণ তিনি মাথার তালু থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত, সকাল থেকে সন্ধ্যা এবং সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কখনো কোন অবস্থায় সুন্নতের খেলাফ কোন আমল করেন না, কথা বলেন না। তাঁর দ্বারা এমন কোন আচার-আচরণও প্রকাশিত হয়না যা সুন্নতের পরিপন্থী। তিনি প্রতিটি বিষয়েই আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সরাসরি দেখে, শুনে, জিজ্ঞাসা করে আমল করে থাকেন। আর আদেশ-নিষেধের ব্যাপারটিও অনুরূপ। (সুবহনাল্লাহ)