-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
পীরে কামিল-এর পরিচয়ঃ কামিল পীর ছাহেবের নিকট বাইয়াত হওয়া যেমন ফরজ, বাইয়াত গ্রহণের পূর্বে সেই পীর ছাহেবের পরিচয় জানাও তেমনি ফরয। কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ফিক্বাহ এবং ফতওয়ার কিতাবে কামিল পীর ছাহেবের যে পরিচয় দেয়া হয়েছে আলোচ্য নিবন্ধে আমরা সেই পরিচয় পেশ করবো ইনশাআল্লাহ। যার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ্র নিকট ইমামুল আইম্মা, মুহইস্ সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর “পীরে কামিল” লক্বব মুবারকের বিষয়টি আরো সুস্পষ্ট হয়ে যাবে। তারা বাতিল পন্থী, আউলিয়ায়ে কিরাম বিদ্বেষীদের ধোকা থেকেও মুক্ত থাকতে পারবে। হযরত ইমাম-মুজতাহিদ এবং আউলিয়ায়ে কিরামগণের অভিমত- ‘নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামকে চেনা সহজ কিন্তু আউলিয়ায়ে কিরামকে চেনা কঠিন। কারণ নবী-রসূল আলাইহিস্ সালামগণ স্বীয় উম্মতকে নিজের পরিচয় দান করেন। আর আউলিয়ায়ে কিরামগণ নিজকে সর্বদা পুশিদা (গোপন) রাখার কোশেশ করেন। সঙ্গতকারণে তাঁদের পরিচয় পাওয়া খুবই কঠিন। তবে আউলিয়ায়ে কিরামগণের আমল-আখলাক, ছীরত-সূরত দেখে তাঁদেরকে চিনে নিতে হয়। সাধারন লোকদের জন্য যদিওবা বিষয়টি তত সহজ নয়। তবে হক্ব তালাশী ব্যক্তি যদি অনুসন্ধিসু মন নিয়ে আউলিয়ায়ে কিরামের পরিচয় জানার কোশেশ (চেষ্টা) করে তাহলে অবশ্যই তারাও আউলিয়ায়ে কিরামগণের পরিচয় জানতে পারবে। মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
والذين جهدوا فينا لنهدينهم سبلنا وان الله لمع المحسنين.
অর্থঃ- “যারা আমাকে (আল্লাহ পাক) পাওয়ার জন্য কোশেশ করে আমি অবশ্যই অবশ্যই তাদেরকে সে পথ পদর্শন করি। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক আউলিয়ায়ে কিরামগণের সাথেই থাকেন।” কুরআন শরীফ শ্বাশত। পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুর বর্ণনা সেখানে বিদ্যমান। নবী-রসূল আলাইহিস্ সালামগণের পাশাপাশি আউলিয়ায়ে কিরামগণের আলোচনাও স্থান পেয়েছে। নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের পৃথক পৃথক নাম মুবারক, তাঁদের বিস্তারিত পরিচয় এবং মর্যাদা-মর্তবার হৃদয়গ্রাহী বর্ণনা এসেছে। আউলিয়ায়ে কিরামগণের বিষয়টি সেভাবে বর্ণিত না হলেও সম্মিলিতভাবে তাঁদের পরিচয়, বিভিন্ন অবস্থা, শ্রেণী বিন্যাস এবং মর্যাদা-মর্তবার বিষয়টির বর্ণনা রয়েছে। কাজেই সে সমস্ত বর্ণনা সাথে যারা সামঞ্জস্যশীল হবেন, যাদের মধ্যে সে সব ছীফত বা গুনাবলী পাওয়া যাবে তাঁরাই আউলিয়ায়ে কিরামের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবেন। আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
الذين امنوا وكانوا يتقون.
অর্থঃ- “আউলিয়ায়ে কিরাম হচ্ছেন তাঁরাই যারা ঈমান এনেছেন এবং তাক্বওয়া হাছিল করেছেন।” (সূরা ইউনূছ আলাইহিস্ সালাম/৬৩) কাজেই আউলিয়ায়ে কিরাম তথা পীরে কামিল-এর প্রথম পরিচয় হচ্ছে, তিনি আক্বীদা বা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত হবেন। আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা বা বিশ্বাসসমূহের উপর যথাযথভাবে আত্মস্থ থাকবেন। প্রসঙ্গতঃ বর্তমান জামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, মুইহস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নাম মুবারক বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য। তিনি একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি বাতিলপন্থীদের সকল বাতিল আক্বীদা খণ্ডন করে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ছহীহ্ আক্বীদা শিক্ষা দিয়ে থাকেন। বর্তমানে তিনিই বর্তমান জামানার আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের একমাত্র ইমাম বটে। তাঁর ছোহবত ইখতিয়ারকারীগণ কিছুদিন ছোহবতের কারণে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত এবং অপরাপর বাতিল দলগুলোর সুস্পষ্ট এবং বিস্তারিত পরিচয় পেয়ে যান। যা তাঁর প্রতি বিদ্বেষপোষণকারী,রাজারবাগ শরীফ বিরোধিরাও সর্বাত্মকভাবে মানতে এবং স্বীকার করতে বাধ্য।