– হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক খিলাফত প্রাপ্তিঃ একদিন ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী স্বপ্নে দেখতে পেলেন, আসমান-যমীনের সকল স্থানে বিশেষভাবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে, “অমুকদিন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে খিলাফত দেয়া হবে। স্বয়ং আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন সেই খিলাফতদাতা। এরূপ মহা সমারোহে ও ভাবগাম্ভীর্যে এবং গুরুত্বের সাথে পূর্বে কাউকে খিলাফত দেয়া হয়নি। নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানে সকলেই সমবেত। সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উপস্থিত। তাঁদের অনেককে তিনি চিনতেন। উরুজ-নুযুলের সময় অনেকের সাথে সাক্ষাত ঘটেছে। কথা-বার্তা হয়েছে। আবার কারো কারো জীবনী পড়েছেন। কিছুক্ষণ পরেই আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসলেন। সাথে ছিলেন, আফজালুন্ নাছ বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং আমিরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি সাদা, কালো, সবুজ তিন রংয়ের তিনটি পাগড়ী তাঁর মাথা মুবারকে পরিয়ে দিলেন। হাত মুবারকে একটা লাঠি মুবারক দিয়ে বললেন, “আসমান ও যমীনের শ্রেষ্ঠতম নিয়ামত আপনাকে অর্পণ করা হলো। মুসলিম উম্মাহ্র হেদায়েতের কাজে আত্মনিয়োগ করুন।” (সুবহানাল্লাহ) তারপর হতে তিনি লোকদের বাইয়াত করানো শুরু করলেন। সাইয়্যিদুনা মামদুহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে জামান, তাজুল মুফাস্সিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন শাহ ছূফী হযরতুল আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজিহুল্লাহ রমতুল্লাহি আলাইহি অনেকবারই স্বীদ মুরীদ-মুতাকেদীন, ভক্ত ও আশেকীনদের এ ঘটনা বর্ণনা করে শুনাতেন। এরূপ গুরুত্বের সাথে, মহাসমারোহে পূর্বে অন্য কাউকে খিলাফত দেয়া না হলেও আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে অনেককে সরাসরি খিলাফত দিয়েছেন তার অনেক প্রমাণ রয়েছে।
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থাৎ- “প্রত্যেক ফুলেরই ভিন্ন রংও সুঘ্রাণ রয়েছে।” আউলিয়ায়ে কিরামগণের নৈকট্য ও খিলাফত প্রাপ্তির বিষয়টির মধ্যেও ভিন্নতা থাকা স্বাভাবিক। ‘হাবীলিল্ ফাতওয়া’ কিতাবে সুলতানুল আরিফীন, ফক্বীহুল উম্মাত, মুজাদ্দিদে জামান, হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন, ‘একদিন আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বপ্নে সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউসুল আ’যম, হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহিকে বললেন, ‘আপনি লোকদেরকে ওয়াজ করেন না কেন?’ উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে তাঁকে একাধিকবার ওয়াজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো তা সত্ত্বেও তিনি বিনয়বশতঃ নিজেকে অক্ষম মনে করে ওয়াজ-নছীহত করেননি। হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি সবিনয়ে জানালেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আজমী, অনারবী লোক। জ্ঞানী-গুনী, শিক্ষিত আরববাসীদের সামনে কি করে ওয়াজ করব?’ তখন আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আপনি মুখ খুলুন। তিনি মুখ খুললেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় মুখ মুবারক থেকে কিছু থু-থু মুবারক নিয়ে হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মুখ মুবারকে দিয়ে দিলেন। সাথে সাথে পড়লেন,
ادع الى سبيل ربك بالحكمة والموعظة الحسنة.
অর্থাৎ- “আপনার রবের দিকে মানুষকে আহ্বান করুন উত্তম নছীহত এবং হিকমতের সাথে।” (সূরা নহল-১২৫)
অত:পর বললেন, লোকদেরকে ওয়াজ শুনান। পরের দিন যোহর নামায অন্তে তিনি ওয়াজ তথা হেদায়েতের কাজ শুরু করলেন। মাকতুবাত শরীফে উল্লেখ আছে ১০১০ হিজরীতে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসে এক জুমুয়ার দিনে প্রত্যুষে যখন ইমামে রব্বানী, মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমতুল্লাহি আলাইহি হালকায়ে (মজলিসে) উপবিষ্ট ছিলেন। তখন দেখতে পেলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতি সুন্দর ও মূল্যবান একখানা পোষাক নিয়ে আসলেন এবং তাঁকে পরিয়ে দিয়ে বললেন, “আলফে সানী মুজাদ্দিদের পোশাক এটাই।”