মূলতঃ যুগে যুগে মিথ্যাবাদী আর মুনাফিকরাই হক্বের বিরোধিতা করেছে, হক্বের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করেছে। তাই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে মুনাফিকদেরকে ‘কায্যাব’ বা মিথ্যাবাদী বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন, পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ পাক সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী।” (সূরা মুনাফিকুন/১) উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে যারা মুনাফিক তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আবার যারা মিথ্যাবাদী তারাই মুনাফিক। কেননা হাদীছ শরীফে মুনাফিকের যে আলামত বা লক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে তন্মধ্যে একটি হলো মিথ্যা কথা বলা।” মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর যারা বিরোধিতাকারী তারা উক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফেরই পূর্ণ মিছদাক। অর্থাৎ তারা একই সাথে মুনাফিক ও কাট্টা মিথ্যাবাদী, তাই তারা মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্যে স্মরণীকা বার্ষিকী, পত্র-পত্রিকা ও বক্তৃতার মাধ্যমে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়। যেমন, যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সুলূলের বংশধর ও দাজ্জালে কায্যাব, খারিজীপন্থী ওহাবীদের আরেকটি মিথ্যা অপপ্রচার হচ্ছে, [ধারাবাহিক] (১৪) আশাদ্দুদ দরজার জাহিল কায্যাবুদ্দীন তার “……ভ্রান্ত মতবাদে” লিখেছে, “ ………. তিনি দাবী করেন যে, “তাঁকে ইলমে লাদুন্নী দান করা হয়েছে এবং তিনি ‘বাহরুল উলূম’ বা জ্ঞানের সমুদ্র। তাঁর দাবী হলো তিনি সাধারণ পীর নন, বরং গাউছূল আ’যম এবং আমীরুল মু’মিনীন ফিত্ তাছাউফ …..। তার মুরীদগণের বর্ণনা মতে বড় পীর আব্দুল ক্বাদির জিলানীর চেয়েও তার মাকাম অনেক ঊর্ধ্বে। মাসিক আল বাইয়্যিনাত ৭৩তম সংখ্যার ৪৬ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছেঃ উল্লেখ্য রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নামের পূর্বে যেসব লক্বব রয়েছে, উনি তারও ঊর্ধ্বে। এমনকি ‘গাউছূল আ’যম’ লক্ববেরও ঊর্ধ্বে।” “মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূলক জবাব” (দ্বিতীয় অংশ) বস্তুত: সে কুটকৌশলে সাধারণ লোকদেরকে বিভ্রান্ত ও উত্তেজিত করার হীন স্বার্থেই এরূপ মিথ্যাচারিতা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এর জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছে তার পরবর্তী বক্তব্য। কাযযাবুদ্দীন লিখেছে, “…. তার মুরীদগণের বর্ণনা মতে বড় পীর ছাহেব হযরত আব্দুল্লাহ ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চেয়েও তার মাক্বাম অনেক ঊর্ধ্বে।”
এর জবাব বলতে হয় যে, কাযযাবুদ্দীনের এ বক্তব্যও ডাহা মিথ্যা, মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর কোথাও এ ধরনের কোন কথা উল্লেখ নেই। কাযযাবুদ্দীন সাধারণ লোকদেরকে বিভ্রান্ত ও রাজারবাগ শরীফ উনার বিরুদ্ধে তাদেরকে উত্তেজিত করার অসৎ উদ্দেশ্যেই মনগড়া এ বক্তব্য প্রদান করেছে। আর তার এ মনগড়া ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যা বক্তব্যকে সাধারণের নিকট গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ৭৩তম সংখ্যার ৪৬নং পৃষ্ঠার যে বর্ণনা উল্লেক করেছে, তাতেও সে মিথ্যা ও জালিয়াতীর আশ্রয় নিয়েছে এবং আল বাইয়্যিনাত-এ প্রদত্ত উক্ত বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে। যেমন সে লিখেছে, “উল্লেখ্য রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারক উনার পূর্বে যা কিছু লক্বব রয়েছে, তিনি উনারও ঊর্ধ্বে। এমনকি কথিত গাউছুল আ’যম লক্ববেরও ঊর্ধ্বে।”
কাযযাবুদ্দীন এ ক্ষেত্রে জঘন্যতম জালিয়াতি ও কারচুপি করেছে। কারণ সে আল বাইয়্যিনাতের উক্ত পৃষ্ঠার পরবর্তী অংশটুকু গোপন রেখেছে। সে ভাল করেই জানে যে, পরবর্তী অংশটুকু উল্লেখ করলে বা গোপন না রাখলে তার সকল ষড়যন্ত্রের জালই ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যাবে। তাই সে এত বড় জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। কাযযাবুদ্দীনের জালিয়াতী ও প্রতারণাময় কলঙ্কিত চেহারা জনসম্মুখে উন্মোচন করে দেয়ার লক্ষ্যে আল বাইয়্যিনাত-এর ৭৩তম সংখ্যার ৪৬ পৃষ্ঠার যে অংশটুকু সে প্রতারণামূলক ভাবে জালিয়াতি করে গোপন রেখেছে নিম্নে সে অংশটুকু হুবহু উল্লেখ করা হলো- “….. যেমনটি ছিলেন গাউসুল আযম, মুহিউদ্দীন, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
উনাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল হুযূর, আপনি কি গাউসুল আ’যম? তিনি জবাব দিলেন হ্যাঁ, জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি কি মুজাদ্দিদুয যামান? জবাব দেয়া হল হ্যাঁ, জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি কি ইমামুল আয়িম্মা? জবাব দেয়া হল- হ্যাঁ। জিজ্ঞাসাকারীর জিজ্ঞাসা শেষ হয়ে গেল। সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউসুল আ’যম, মুহিউদ্দীন হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হে ব্যক্তি তোমার কি আর কিছু জানার নেই? জিজ্ঞাসাকারী বলল, না। তখন গাউছুল আ’যম, মুহিউদ্দীন, হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন দেখ, তুমি যা বললে, আমি তারও উপরে, তারও উপরে, অরাউল অরা, অরাউল অরা, আমার মাকাম।
সুতরাং যারা মনে করে যে, গাউছুল আ’যমই হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সর্বশেষ মাক্বাম এবং এই লক্বব আর কেউই ব্যবহার করতে পারবেনা, তারা মূলত: গ-মূর্খ এবং গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুহব্বতের, অনুগ্রহভাজনের একান্তই অনুপযুক্ত ………।”
আল বাইয়্যিনাত-এর উক্ত বক্তব্য দ্বারা মূলত: এটাই বুঝানো হয়েছে যে, বড় পীর হযরত আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাক্বাম ‘গাউছুল আ’যম’ পর্যন্তই শেষ নয়, এরও অনেক ঊর্ধ্বে উনার মাক্বাম। যদি তাই হয়ে থাকে তবে ‘গাউছুল আ’যম লক্ববের ঊর্ধ্বে’ একথার দ্বারা বড় পীর ছাহেবের মাক্বামের ঊর্ধ্বে বুঝায় কি করে? এটা কাযযাবুদ্দীনের সুস্পষ্ট অপব্যাখ্যা ও জালিয়াতি নয় কি? (চলবে)
-মুফতী মুহম্মদ ইবনে ইসহাক, বাসাবো, ঢাকা।
বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১