হক্বের বিরোধীতা প্রথম নবী, রসূল ও মানুষ হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম থেকেই শুরু হয়েছে। এ বিরোধীতার ধারাবাহিকতায় শহীদ হয়েছেন ৭০ হাজার বণী ইস্রাঈল নবী। অন্যান্য নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের ন্যায় আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরও চরম বিরোধীতা করেছিল “আবূ জাহিলের গোষ্ঠী।” তাঁর বিরোধীতা করতে গিয়ে নামাযরত অবস্থায় তাঁর উপর উটের নাড়িভুড়ি নিক্ষেপ করেছে, পথে কাঁটা দিয়ে রেখেছে, শিয়াবে আবূ তালিবে অবরোধ করে রেখেছে। শুধু তাই নয়, মানুষ যেন সত্যটাকে গ্রহণ না করে, সে জন্যে অনবরত মিথ্যা অপপ্রচার করেছে। আবূ জাহিলের গোষ্ঠী অপপ্রচার করতো তিনি পাগল, জিনের আছর করা রোগী, যাদুকর, ছাবী বা ধর্মত্যাগী ইত্যাদি বলে। ঐ কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী আবূ জাহিলের গোষ্ঠী সেখানেই থেমে থাকেনি, তারা পরবর্তীতে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও ইমাম মুজতাহিদ তথা আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণেরও চরম বিরোধীতা করেছে। মূলতঃ হক্ব ও নাহক্বের বিরোধীতা পূর্বেও ছিল এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। কেননা, কিতাবে উল্লেখ আছে যে,
لكل موسى فرعون ولكل فرعون موسى.
অর্থাৎ প্রত্যেক মূসা আলাইহিস্ সালাম বা হাদীকে তাকলীফ বা কষ্ট দেয়ার জন্য একজন ফিরআউন বা বিরোধীতা কারী রয়েছে। তদ্রুপ প্রত্যেক ফিরআউন বা গোমরাহদেরকে হিদায়েতের জন্যে একজন মুসা তথা হাদী রয়েছেন।” এরই বাস্তবতা আমরা পরিপূর্ণভাবে লক্ষ্য করেছি, বর্তমান পনের শতকের মুজাদ্দিদ ও ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ক্ষেত্রে তিনি যখনই হক্ব প্রকাশ ও প্রচার শুরু করলেন তখনই যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাজ্জাবরা উনার বিরোধীতা শুরু করলো। উনার বক্তব্যকে দলীলের দ্বারা খণ্ডন করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়ে বেছে নিল সেই আবূ জাহিলের পথ “মিথ্যা অপপ্রচার।” বাতিল পন্থিরা এ পর্যন্ত বহু মিথ্যা অপপ্রচারই করেছে। তবে তাদের প্রতিটি মিথ্যা অপপ্রচারেরই দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়া হয়েছে। উক্ত জবাবের কোন খণ্ডনমূলক জবাব না দিতে পেরে তারা বাধ্য হয়েছে “অপপ্রচারের কলম” বন্ধ করতে। তবে ইদানিং নতুন কিছু আবূ জাহিল, মুনাফিক আর দাজ্জালে কাজ্জাবের আবির্ভাব ঘটেছে। তাদের শিরোচ্ছেদ করার জন্যেই আমার এ লিখা। হালে ঢাকার এক খারেজী মাদ্রাসার একটি সাময়িকীতে এক আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাজ্জাব রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর বিরোধীতা করতে গিয়ে উক্ত সাময়িকীতে যে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করেছে তা লেখককে আশাদুদ্ দরজার জাহিল, যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক, গোমরাহ ও দাজ্জালে কাজ্জাব হিসেবেই প্রমাণিত করেছে। পক্ষান্তরে তার উক্ত লেখাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। কেননা, সে তার উক্ত লিখায় রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর আক্বীদা ও আমলগত কোন ভুলই দলীল দ্বারা ছাবেত করতে পারেনি। যা লিখেছে তার সবই মনগড়া ও বানানো। কুরআন-সুন্নাহর সাথে তার কোনই সম্পর্ক নেই। স্মর্তব্য যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর আক্বীদা ও আমলগত কোন ত্রুটি বাতিল পন্থিরা আজ পর্যন্ত প্রমাণ করতে পারেনি। ইনশাআল্লাহ কেউ পারবেও না। কেননা তিনি আক্বীদার ক্ষেত্রে পরিপূর্ণরূপেই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী। যেমন তিনি বিশ্বাস করেন- মহান আল্লাহ পাক এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই, তিনি নিরাকার, তিনি ইল্ম ও কুদরতের দ্বারা সর্বোত্র বিরাজমান ও আস্মা ও ছিফাত দ্বারা সর্বত্র জাহির বা প্রকাশমান, তাঁর হাক্বীক্বী ছূরত কেউ পৃথিবীতে দেখবে না, তবে মেছালী ছূরত দেখা সম্ভব, তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, তিনি সমস্ত কিছু থেকে বেনিয়াজ, তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। কুরআন শরীফ মহান আল্লাহ পাক-এর কালাম যা গায়রে মাখলূক। মহান আল্লাহ পাক মানব জাতির হিদায়াতের জন্য এক লক্ষ্য মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী ও রসূল পাঠিয়েছেন। হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্ব শেষ নবী ও সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল। তিনি নূরে মুজাস্সাম বা নূর মুবারক দ্বারা তৈরী, তাঁর শরীর মুবারকের কোন ছায়া ছিলনা, তাঁর শরীর মুবারকের সমস্ত কিছুই ছিল পবিত্র থেকে পবিত্রতম, উনার পর আর কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম পৃথিবীতে আগমণ করবেন না। কারণ তিনি “খাতামুন্ নাবিয়্যীন” কেউ নবী দাবী করলে সে কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হবে। যেমন, কাদিয়ানী, বাহাই সম্প্রদায়। নবী-রসূলগণ সকলেই ছিলেন মা’ছূম বা নিষ্পাপ। নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের পর পৃথিবীতে সবচেয়ে মর্যাদাবান ও সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হচ্ছেন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ। এর পর তাবেঈনগণ, এরপর তাবে তাবেঈনগণ। হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের বিরোধীতা ও সমালোচনা করা কূফরী, তাঁরা প্রত্যেকেই মি’য়ারে হক্ব বা সত্যের মাপকাঠি, তাঁদের কোন ইজতিহাদই ভুল ছিলনা। এমনিভাবে ইসলামের প্রতিটি বিষয়ই তিনি কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী। যার ফলে বাতিল পন্থিরা বা বিরোধীতাকারীরা তাঁর কোন একটি আক্বীদাও ভুল প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। অনুরূপভাবে তিনি আমলের ক্ষেত্রেও পরিপূর্ণভাবে কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াস অনুসরণ করেন। অর্থাৎ, ফরয, ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদা, সুন্নতে যায়িদা এমনকি মুস্তাহাব আমলগুলোও সুক্ষাতিসুক্ষ্মভাবে পালন করেন। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামায়াতে তাকবীরে উলার সাথে নিজে ইমাম হয়ে আদায় করেন, রমাদ্বান মাসে রোযা রাখেন, তারাবীহ নামায নিজে ইমাম হয়ে জামায়াতে আদায় করেন, প্রতি বৎসর রমাদ্বান শরীফের শেষ দশদিন ই’তিকাফ করেন, ছদকাতুল ফিতর আদায় করেন, যাকাত প্রদান করেন, ঈদের নামায ছয় তাকবীরের সহিত নিজ ইমামতীতে আদায় করেন, প্রতি রাত্রে তাহাজ্জুদ নামায আদায় করেন, এমনকি সফরে থাকাকালিন সময়েও কখনো তাহাজ্জুদ নামায তরক করেন না। কুরবানী করেন, তিনি খাছ শরয়ী পর্দা করেন, তাক্বওয়া বা পরহেযগারীর জন্যে তাঁর সামনে ৫/৭ বৎসরের মেয়েও আসতে দেননা এবং তাঁর অন্দর মহলেও ৫ বৎসরের ছেলে প্রবেশ করতে পারে না। তিনি যাচাই-বাছাই করে হাদিয়া গ্রহণ করেন। বিশেষ বিশেষ দিন ও মাসে তিনি নফল রোযা রেখে থাকেন। চলা-ফেরা, খাওয়া-দাওয়া লেবাস বা পোষাকে পরিপূর্ণরূপে সুন্নতের ইত্তেবা করে থাকেন। এমনিভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াস মুতাবিক আমল করে থাকেন। যার ফলে বাতিল পন্থি বা বিরোধীতাকারীরা আজ পর্যন্ত উনার একটি আমলও শরীয়ত বিরোধী বা সুন্নত পরিপন্থী প্রমাণ করতে পারেনি। অনুরূপভাবে উক্ত সাময়িকীর লেখক যূগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাজ্জাবও পারেনি রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর কোন আক্বীদা ও আমল শরীয়ত বিরোধী প্রমাণ করতে। পেরেছে শধু উনার “লক্বব মুবারক ও স্বপ্নের” মনগড়া, মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত ব্যাখ্যা দিয়ে নিজেকে যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাজ্জাব হিসেবে সাব্যস্ত করতে। সে যে আসলেই যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাজ্জাব ও আশাদুদ্ দরজার জাহিল তা অত্র “দাঁতভাঙ্গা জবাব” এসে যাওয়ার পর আরো সুষ্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হবে। (চলবে) -মুফতী ইবনে ইসহাক, ঢাকা।
ইরাকের মীরজাফর সাদ্দাম রাশিয়ার বেলারুশ যেতে চায় কেন?
প্রসঙ্গঃ ছবি, অশ্লীল ছবি ইনকিলাব ও হাটহাজারীর আহমক শাফী উপাখ্যান