যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-২৮

সংখ্যা: ১৫১তম সংখ্যা | বিভাগ:

মূলতঃ যুগে যুগে মিথ্যাবাদী আর মুনাফিকরাই হক্বের বিরোধিতা করেছে, হক্বের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করেছে। তাই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে মুনাফিকদেরকে ‘কায্যাব’ বা মিথ্যাবাদী বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন, পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ পাক সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী।” (সূরা মুনাফিকুন/১)

উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে যারা মুনাফিক তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আবার যারা মিথ্যাবাদী তারাই মুনাফিক। কেননা হাদীছ শরীফে মুনাফিকের যে  আলামত বা লক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে তন্মধ্যে একটি হলো মিথ্যা কথা বলা।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর যারা বিরোধিতাকারী তারা উক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফেরই পূর্ণ মিছদাক।  অর্থাৎ তারা একই সাথে মুনাফিক ও কাট্টা মিথ্যাবাদী, তাই তারা মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্যে স্মরণীকা বার্ষিকী, পত্র-পত্রিকা ও বক্তৃতার মাধ্যমে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়। যেমন, যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সুলূলের বংশধর ও  দাজ্জালে কায্যাব, খারিজীপন্থী ওহাবীদের আরেকটি মিথ্যা অপপ্রচার হচ্ছে,

(১৬)

আশাদ্দুদ দরজার জাহিল হেমায়েত উদ্দীন ওরফে কায্যাবুদ্দীন তার ভ্রান্ত পুস্তিকা “………ভ্রান্ত মতবাদে” লিখেছে, “নিজের নামের আগে পিছে প্রায় ৫২টি উচ্চ অর্থ সম্পন্ন খেতাব সংযুক্ত করেছেন। আজ পর্যন্ত উম্মতের কেউ এমন খেতাবের বিশাল বহর নিজের নামের সাথে যোগ করেননি।”

“মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূলক জবাব”

যাক কায্যাবুদ্দীন গং তাহলে অবশেষে সুর পাল্টাতে বাধ্য হয়েছে। আগে তারা বলতো স্বয়ং আল্লাহ পাক-এর হাবীব  হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরও এত লক্বব ছিলনা। আর এখন বলছে উম্মত এত লক্বব ব্যবহার করেননি। অর্থাৎ কায্যাবুদ্দীনের বক্তব্য দ্বারা এটাই বুঝা যাচ্ছে যে, উম্মত এত লক্বব ব্যবহার না করলেও উম্মতের যিনি রসূল, আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এত লক্বব ব্যবহার করেছেন। সুতরাং কায্যাবুদ্দীনের বক্তব্য দ্বারাই লক্বব ব্যবহার ‘সুন্নতে রসূল’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমাণিত হয়। অতএব, যেখানে স্বয়ং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ্য লক্বব ব্যবহার করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত এবং কায্যাবুদ্দীনও তা অস্বীকার করেনি। সেখানে “উম্মতের কেউ এত লক্বব ব্যবহার করেননি” এ বক্তব্য প্রদান করা জিহালত ও গোমরাহী বৈ কিছুই নয়। এ ক্ষেত্রে উক্ত বক্তব্য একেবারেই মূল্যহীন।  শুধু মূল্যহীনই নয় বরং তার উক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যাও বটে। কারণ পূর্ববর্তী অনেক ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরামগণেরই অসংখ্য লক্বব ছিল। নিম্নে তার কিছু দলীল ভিত্তিক প্রমাণ পেশ করা হলো-

[ধারাবাহিক]

সুতরাং, নিজ নামের সাথে লক্বব ব্যবহার করা শুধু জায়িয নয় বরং খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিগণকে বিভিন্নজন লক্বব দান করেছেন। এটা যেরূপ সত্য, তাঁরা নিজেরা নিজেদের লক্বব প্রকাশ করেছেন এটাও তদ্রুপ সত্য। পূর্ববর্তী আউলিয়ায়ে কিরামগণের জীবনী মুবারক ও কিতাবাদি সমূহে এর বহু প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে। যেমন প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত সীরাতগ্রন্থ “আখবারুল আখইয়ার” কিতাবে গাউছূল আ’যম বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে লিখেন, গাউছূল আ’যম বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি নিজেই নিজের লক্বব মুবারক প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, “আমি উম্মুক্ত তলোয়ার, আমি বিধ্বংসী কামান, আমার তীর লক্ষ্যভেদকারী, আমার বর্শা নির্ভুল, আমার ঘোড়া জ্বীন বিহীন, আমি আল্লাহ্র আগুনে বিদগ্ধ প্রেমিক, আমি অতলান্তিক মহা সমুদ্র, আমি যুগের নকীব, আমি মুহিব্ব, মাহ্বুবদের হাল আমার হাতের মুঠোয়, আমি আল্লাহ পাক-এর তরফ হতে মাহফুয, আমি তাঁর নেক নজর দ্বারা বেষ্টিত, আমার দৃষ্টি লাওহে মাহফুযের দিকে নিবদ্ধ, আমি ইল্মের সমুদ্র, আমি আল্লাহ্র দীদারে মশগুল, আমি তোমাদের সকলের চেয়ে আল্লাহ্ পাক-এর অধিক মাহ্বুব, আমি নায়েবে রসূল, আমিই তাঁর ওয়ারিছ, আমি জ্বিন, ইনসান ও ফেরেশ্তাদেরও পীর, আমি পীরদেরও পীর, আমার সৃষ্টি সকল সৃষ্টির ঊর্ধ্বে, আমি মানুষের জ্ঞান ও আক্বলের বাইরে, আমি তাদেরই অন্তর্ভুক্ত, যাঁদেরকে কেবল আল্লাহ্ পাকই চিনেন।”

কায্যাবুদ্দীন লিখেছে, “তাঁরা খেতাবের বহর জুড়ে দেয়াকে সুন্নত মনে করেননি।”

কায্যাবুদ্দীনের উক্ত জিহালতপূর্ণ বক্তব্যের জবাবে প্রথমতঃ বলতে হয় যে, কে সুন্নত মনে করলো, আর কে করলোনা সেটা মুল বিষয় নয়। কারণ কারো কিছু মনে করার সাথে ‘সুন্নত’-এর কোন সম্পর্ক নেই। সুন্নত-এর সম্পর্ক হচ্ছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্বওল, ফে’ল ও তাকরীর মুবারকের সাথে। তাঁর ক্বওল, ফে’ল ও তাকরীর মুবারক দ্বারা যেটা প্রমাণিত হবে সেটাই সুন্নত। আর তার খিলাফ হলে তা সুন্নত নয়। যেহেতু ক্বওল, ফে’ল ও তাকরীর মুবারকের দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, তিনি নিজে নিজের লক্বব প্রকাশ করেছেন। তাই এটা সুন্নত। কেউ মনে করুক আর না করুক। অথবা মানুক আর নাই মানুক। আমরা এটাকে সুন্নত মনে করি। কায্যাবুদ্দীন যদি এটাকে সুন্নতের খিলাফ প্রমাণ করতে চায়, তবে তাকে কুরআন-সুন্নাহ থেকে দলীল পেশ করতে হবে।

দ্বিতীয়তঃ বলতে হয় যে, কায্যাবুদ্দীন যে ঢালাও ভাবে বলল, “তারা …….. সুন্নত মনে করেননি।” সে কি তাঁদের সকলের মনের ভেতর প্রবেশ করেছিল? অথবা সে কি মানুষের মনের বা অন্তরের খবর জানার দাবী করে? যদি সে এরূপ দাবী করে তবে তো সে আল্লাহ দাবী করলো। (নাঊযুবিল্লাহ) “তাঁরা সুন্নত মনে করেননি”-এর কোন দলীল কায্যাবুদ্দীন দিতে পারবে কি? বিষয়টিকে যদিও কেউ কেউ সুন্নত বলে কিতাবে উল্লেখ করেননি, কিন্তু সুন্নত নয় বা সুন্নতের খিলাফ অথবা আমি সুন্নত মনে করিনা এ ধরনের কোন বক্তব্য কোন কিতাব থেকে কায্যাবুদ্দীন দেখাতে পারবে কি? কস্মিনকালেও সে তা পারবেনা।

তাহলে কি করে বলা যেতে পারে যে, “তাঁরা সুন্নত মনে করেননি।” তবে হ্যাঁ, কেউ যদি লক্বব ব্যবহারকে অপছন্দ করে থাকে তবে সেটা তার নিতান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। সে কেন অপছন্দ করেছে সেটা আগে জানতে হবে। সে অজ্ঞতার কারণে অপছন্দ করলো, না অন্য কোন কারণে। সেটা না জানা পর্যন্ত তার ব্যপারে কোন ফায়সালা দেয়া যাবে না। তবে এ ফায়সালা দেয়া যায় যে, কারো মনে করা বা না করার সাথে যেরূপ সুন্নতের কোন সম্পর্ক নেই, তদ্রুপ কারো পছন্দ-অপছন্দর সাথেও সুন্নতের কোন সম্পর্ক নেই।

সুন্নতের সম্পর্ক হচ্ছে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্বওল,  ফে’ল ও তাকরীর মুবারকের সাথে। ক্বওল, ফে’ল ও তাকরীর মুবারক দ্বারা যেটা ‘সুন্নত’ প্রমাণিত সেটাকে আল্লাহ পাক না করুন, পৃথিবীর সমস্ত মানুষও যদি সুন্নত মনে না করে তবু আমরা সেটাকে সুন্নত মনে করি, আর পৃথিবীর সমস্ত মানুষও যদি সেটাকে অপছন্দ করে তবু আমরা সেটাকে পছন্দ করি। কারণ আমরা জানি সুন্নতকে সুন্নত মনে না করা এবং সুন্নতকে অপছন্দ করা কুফরী। কাজেই কায্যাবুদ্দীন যে আবলতাবল জারিজুরি মেরে জনগণকে ধোকা দিবে, তা সে কখনো পারবেনা। কারণ জনগণ কায্যাবুদ্দীনের মতো এতটা আশাদ্দুদ্দরজার জাহিল নয়।

সর্বশেষে বলতে চাই, কায্যাবুদ্দীন যে এত জারিজুরি প্রকাশ করছে যে, “তারা নিজের নামে নিজে লক্বব জুড়ে দেননি” অথচ কায্যাবুদ্দীন নিজেই তো নিজের নামে লক্বব জুড়ে দিয়েছে। তার প্রমাণ তার ভ্রান্ত পুস্তিকা “….. ভ্রান্ত মতবাদ” সে উক্ত পুস্তিকার একেবারে শুরুতেই তার নিজের নামে নিজে লক্বব জুড়ে দিয়েছে। যেমন, মাওলানা, হাফিয, মুহাদ্দিছ, ইমাম, খতীব, ইসলামী গবেষক, আহকামে জিন্দেগীর মুছান্নিফ, গবেষক, লিখক ইত্যাদি। তার মনে রাখা দরকার যে, “পরের জন্য কুয়ো খুঁড়লে সে কুয়োয় নিজেকেই পরতে হয়।”

কায্যাবুদ্দীন হয়তো নিজের খোড়া কুয়ো থেকে বেড়িয়ে আসার জন্যে সর্বশেষ অস্ত্র ব্যবহার করবে এই বলে যে, ‘দু’, চার, পাঁচটা জুড়ে দিলে কোন অসুবিধা নেই। আমি তো বলেছি, “লক্ববের বহরের কথা।” বেতাল কায্যাবুদ্দীন আসলেই তাল হারিয়ে ফেলেছে। দু’, চার, পাঁচটা লক্বব জুড়ে দিলে অসুবিধা নেই। ৫০/৬০ জুড়ে দিলে অসুবিধা আছে। তার এ দাবীর পিছনে কি দলীল আছে? বাহাছে জনগণের সামনে সে এটা প্রমাণ করতে পারবে তো?

তাই কায্যাবুদ্দীনের প্রতি উপদেশ রইল, প্রথমে যেন ইলম্ হাছিল করে, তারপর ফতওয়া দেয়। নিজেই নিজের নামে লক্বব জুড়ে দিয়ে আবার ফতওয়াবাজী করছে যে, কেউ নিজের নামে নিজে লক্বব জুড়ে দেয়নি। মিথ্যাবাদী প্রতারক।

লক্বব সম্পর্কিত আলোচনা আর দীর্ঘ না করে মিথ্যাবাদী প্রতারক কায্যাবুদ্দীনকে দু’একটি প্রশ্ন করেই এ সম্পকির্ত লিখা খতম করছি। কায্যাবুদ্দীনের নিকট প্রশ্ন-

১। কুরআন-সুন্নাহ্র দৃষ্টিতে নিজের নামে নিজে লক্বব জুড়ে দেয়া জায়িয না নাজায়িয?

২। নাজায়িয হলে কোন আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফের দৃষ্টিতে তা নাজায়িয এবং কেন?

৩। জায়িয হলে কয়টা পর্যন্ত জুড়ে দেয়া জায়িয? দু’চারটা, পাঁচটা না ৫০টা অথবা ১০০টা? অর্থাৎ কুরআন-সুন্নাহ্র কোথাও কি লক্বব জুড়ে দেয়ার সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে?

অতএব, কায্যাবুদ্দীনকে উল্লিখিত প্রশ্নগুলোর জবাব কুরআন-সুন্নাহর দলীলের দ্বারা অবশ্যই দিতে হবে। নচেৎ জনগণই তাকে লাঞ্ছিত করে দেশ ছাড়া করবে। (চলবে)

-মুফতী মুহম্মদ ইবনে ইসহাক, বাসাবো, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের  দাঁতভাঙ্গা জবাব- ১৫

 বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫ 

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-৩

চাঁদের তারিখ নিয়ে জাহিলী যুগের বদ প্রথার পুনঃপ্রচলন॥ নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’ ঈদ, কুরবানীসহ জামিউল ইবাদত হজ্জও হচ্ছে বরবাদ

শুধু ছবি তোলা নিয়েই বড় ধোঁকা নয়, গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র চর্চা করে “ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের” নামেও তিনি মহা ধোঁকা দিচ্ছেন