লক্বব মুবারকের সংখ্যা নিরূপণ আউলিয়া-ই-কিরামগণের লক্বব মুবারকের সংখ্যা নিরূপণ করা সম্ভব নয়। কারণ, লক্বব মুবারকের উৎস হচ্ছে গুণাবলী। যিনি যত গুণাবলীর অধিকারী তিনি তত লক্ববেরই অধিকারী। তবে তা ব্যাপকভাবে জাহির (প্রকাশিত) হওয়া আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইহসান, ফযল-করম। কাজেই যারা ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নাম মুবারকের পূর্বে লক্বব মুবারক দেখে আঁতকে উঠেন, বিরূপ মন্তব্য করেন, আশ্চর্য্য বোধ করে বলেন, “এতো লক্বব কেন? পূর্ববর্তী কোন আউলিয়া-ই-কিরামের এতো লক্বব ছিলনা এমনকি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এতো লক্বব নেই।” সঙ্গতঃ কারণে তারা জাহিল-মূর্খ বিবেচিত হন কিংবা আউলিয়া-ই-কিরাম বিদ্বেষী লক্ববে ভূষিত হন। যা কুফরীর আলামত। কেননা আল্লাহ পাক বলেন,
ولا تقف ما ليس لك به علم ان السمع والبصر والفؤاد كل اولئك كان عنه مسئولا.
অর্থঃ- “যে বিষয়ে তোমার যথাযথ জ্ঞান নেই তার অনুসরণ করনা। কেননা কান, চোখ এবং অন্তঃকরণ সম্পর্কে প্রত্যেক ব্যক্তিকে (ক্বিয়ামতের দিন) জিজ্ঞাসা করা হবে।” (সূরা বণী ইসরাঈল/৩৬) হাদীছে কুদসীতে বর্ণিত আছে,
من عادى لى وليا فقد اذنته بالخرب.
অর্থঃ- “যে আমার ওলীর সাথে বিদ্বেষ পোষণ করে আমি তার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করি।” (বুখারী শরীফ) আর এরূপ অবান্তর, অজ্ঞতাপ্রসূত, জিহালত এবং বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য তারাই পোষণ করতে পারেন যাদের অন্তরে নিফাকী এবং কুফরীর বীজ রয়েছে। তাছাড়া হিংসাত্মক মনোভাব অত্যন্ত মারাত্মক এবং ক্ষতিকারকও বটে। হিংসার কারণে মানুষের আমল বরবাদ হয়ে যায়। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ان الحسد ليأكل الحسنات كما تأكل النار الحطب.
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই হিংসা সমস্ত নেক আমলকে বরবাদ করে দেয় যেমন আগুন লাকড়ীকে ছাই করে দেয়।” আল্লাহ্ পাক বলেন,
ولا تتمنوا ما فضل الله به بعضكم على بعض.
অর্থঃ- “আল্লাহ পাক তোমাদের একজনের উপর অন্যজনকে যে মর্যাদা দিয়েছেন তোমরা তার আকাঙ্খী হয়ো না।” (সূরা নিসা/৩২) কেননা, এরূপ আকাঙ্খা হিংসাত্মক মনোভাবকে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করে। যা কঠিন গুনাহ্র অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ পাক একজনকে নিয়ামত দিবেন, ইহসান করবেন আর অন্যজন তাঁর প্রতি হিংসাত্মক মনোভাব পোষণ করবে তা প্রকারন্তরে আল্লাহ পাক-এরই বিরোধিতা। তবে যিনি যে গুণের অধিকারী নন কিংবা যে গুণ যার মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়না সে গুণে তাকে সম্বোধন করা বা লক্বব দেয়া উচিত নয়। কেননা, সেটা যেমন হাস্যকর তেমনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে উপেক্ষা করা, উপহাস বা তাচ্ছিল্যের নামান্তর। যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অসন্তুষ্টির কারণ। (চলবে)