হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) কখনও আল্লাহ পাক সংশ্লিষ্ট আউলিয়া-ই-কিরামকে সরাসরি ইলহাম ও ইলকা করেন। কখনও বা অপর কোন ওলীআল্লাহকে। আবার কখনও বা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুসংবাদ দান করেন। কখন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম। আবার কখনও ইমাম, মুজতাহিদ আউলিয়া-ই-কিরাম, স্বপ্ন, কাশ্ফ, মুরাকাবা-মুশাহাদা ইত্যাদির মাধ্যমে তাঁর মহান মর্যাদা-মর্তবার সুসংবাদ দিয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ সরাসরি লৌহ-মাহফুযে সন্নিবেশিত গুণাবলী বা লক্বব মুবারকগুলো দেখতে পান। তখন তাঁদের অন্তর সেই আউলিয়া-ই-কিরামের প্রতি ঝুঁকে যায়। সঙ্গত কারণে তখন তাঁরা সংশ্লিষ্ট আউলিয়া-ই-কিরামকে মুহব্বত করতে থাকেন। মাল-জান সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে তাঁর তা’যীম-তাক্বরীম করেন। একান্তভাবে সন্তুষ্টি-রেযামন্দি লাভের জন্য প্রাণ পণ কোশেশে লিপ্ত হন। সমসাময়িক ইমাম-মুজতাহিদ আউলিয়া-ই-কিরাম এবং হক্ব তালাশী সকল মু’মিন মুসলমানই তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতঃ অবহিত উক্ত লক্বব মুবারক দ্বারা তাঁদেরকে সম্বোধন করতে থাকেন। আর তাঁর নাম মুবারক লিখার ক্ষেত্রেও উক্ত লক্বব মুবারকসহ লিখে থাকেন। যা রহমত-বরকত, সাকীনাহ হাছিলের ওসীলা বা মাধ্যম। আর সঙ্গত কারণে লক্বব দ্বারা সম্বোধিত উক্ত আউলিয়া-ই-কিরাম লক্বব দ্বারা সম্বোধনকারীকে নিষেধও করতে পারেন না। কেননা হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,
من اتاه رزق من غير مسئلة فرده فانما يرده على الله تعالى.
অর্থঃ- “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যদি সুওয়াল বা কামনা ব্যতীত কারো কাছে কোন রিযিক আসে আর তা যদি সে গ্রহণ না করে ফিরিয়ে দেয় তাহলে সে যেন তা আল্লাহ পাককেই ফিরিয়ে দিল।” আর সম্মান-মর্যাদা, প্রভাব-প্রতিপত্তি সেটাও যে রিযিকের অন্তর্ভুক্ত তা ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। সর্বোপরি আউলিয়া-ই-কিরামগণকে সম্মানসূচক অতি উত্তম নাম বা লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করা সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, একজন মু’মিন ব্যক্তির জন্য অপর মু’মিনের হক্ব (অধিকার) হচ্ছে, তাকে তার অতি পছন্দনীয় নাম বা লক্বব দ্বারা সম্বোধন করা। এতদ্ব্যতীত যদি কারো সুন্দর অর্থবহ গুণবাচক অধিক নাম বা লক্বব থাকে তবে সে লক্বব দ্বারা সম্বোধনের পরিবর্তে তার অপছন্দনীয় নাম বা লক্বব দ্বারা সম্বোধন করা নিষেধ। আল্লাহ পাক বলেন, “তোমরা মন্দ লক্বব দ্বারা কাউকে সম্বোধন করনা। কেননা ঈমান আনার পর (প্রকৃত মু’মিনকে) মন্দ লক্বব দ্বারা ডাকা গর্হিত কাজ। আর যারা এসব কাজ হতে তওবা করেনা (বিরত থাকবেনা) তারা জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা হুজরাত/১১) তবে উক্ত স্বপ্ন, কাশফ, মুরাকাবা-মুশাহাদা ইত্যাদি অবশ্যই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস সম্মত হতে হবে। কেননা, কুরআন-সুন্নাহ্র খিলাফ স্বপ্ন, কাশফ-কারামত, মুরাকাবা-মুশাহাদা কোনটাই গ্রহণযোগ্য নয়। অতএব, বলতে হয় যে, বর্তমান যামানার ইমাম, ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, কতুবুুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নাম মুবারকের পূর্বে উল্লিখিত লক্বব মুবারক বা উপাধিসমূহ যে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসসম্মত তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। য (অসমাপ্ত)