উল্লেখ্য, সারা পৃথিবীতে অসংখ্য লোক (হাবীবুল্লাহ) নাম ব্যবহার করেছেন। তাহলে কি তারা সকলেই আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সমকক্ষতা দাবী করেছেন? (নাউযুবিল্লাহ) সুতরাং গাউসুল আ’যম লক্বব ব্যবহার করলেও এর দ্বারা গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সমকক্ষতা দাবী করা বুঝায়না। মহান আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা তাঁকেই উক্ত লক্বব মুবারক দান করতে পারেন। স্মর্তব্য, গাউসুল আ’যম বা আউলিয়ায়ে কিরামগণের জন্য কোন লক্বব বা মাক্বামসমূহ যে কেবলমাত্র একজনই হাছিল করবেন অন্য কেউ পারবেন না এমন কোন কথা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের কোথাও নেই। বরং একথা বললে মহান আল্লাহ পাক-এর উপরে তোহমত দেয়া হয়। কারণ স্বয়ং আল্লাহ পাকতো অন্য কাউকে দিবেন না বলেননি। মূলতঃ গাউসুল আ’যম বা অন্য কোন লক্ববই ওলীআল্লাহগণের জন্য চুড়ান্ত লক্বব নয়। মহান আল্লাহ পাক যেমন অসীম, তাঁর মা’রিফাত, মুহব্বত, সন্তুষ্টি, রেজামন্দী তথা তাঁর বেলায়েতও তেমনি অসীম। সুতরাং মহান আল্লাহ পাক-এর মা’রিফাত, মুহব্বত, সন্তুষ্টি ও নৈকট্যই হচ্ছে আউলিয়ায়ে কিরামগণের হাক্বীক্বী মাক্বাম, মর্যাদা ও মর্তবা।
জাহিল, ভণ্ড ও প্রতারকরা রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর বিরোধিতা করতে গিয়ে আরেকটি মূর্খতাসূচক কথা বলে থাকে যে, “তিনি কোন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেননি।” মূর্খ ও জাহিলের দলেরা একটি দলীলও কি দেখাতে পারবে যে, ওলীআল্লাহ হতে হলে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেই হবে। মাদ্রাসায় লেখাপড়া না করলে কেউ ওলীআল্লাহ হতে পারবেনা?” (নাউযুবিল্লাহ) মূলতঃ তাদের বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে অশুদ্ধ ও মূর্খতাসূচক। স্মর্তব্য যে, একজন দু’জন নয় বরং হাজার হাজার আউলিয়ায়ে কিরাম অতীত হয়েছেন যারা কোন মাদ্রাসায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে লেখাপড়া করেননি। জাহিল, নাদানরা ইতিহাস সম্পর্কেও অজ্ঞ। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সর্বপ্রথম চার’শ হিজরীতে। এর পূর্বে যত গাউস, কুতুব, আবদাল, মুজাদ্দিদ, ইমাম-মুজতাহিদ, ফক্বীহ তথা ওলীআল্লাহগণ অতীত হয়েছেন তাঁরা কেউই নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেননি। তাহলে কি মূর্খ জাহিলরা একথা বলবে যে, চার’শ হিজরীর পূর্বে যারা অতীত হয়েছেন তারা কেউ আলিম নন? (নাউযুবিল্লাহ)
মূলতঃ একথা বললে ও বিশ্বাস করলে অতীতের হাজার হাজার আউলিয়ায়ে কিরামগণকে অস্বীকার করা হয়। তাহলে চার মাযহাবের অস্তিত্ব থাকে না, চার তরীক্বারও অস্তিত্বের প্রশ্ন আসে। কারণ, চার মাযহাব চারশত হিজরীর পূর্বের এবং চার তরীক্বার মূল উৎস হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ থেকে।
সুতরাং সে কথা বললে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকেও অস্বীকার করা হয়। কারণ, তাঁরাও কোন মাদ্রাসায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে পড়াশুনা করেননি। এছাড়া সারা পৃথিবীতে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত বলতে যে চার মাযহাবের অনুসারীদেরকে বুঝায়। অর্থাৎ হানাফী, শাফিয়ী, হাম্বলী ও মালিকী মাযহাব। এই মাযহাবের যারা প্রতিষ্ঠাতা তথা হযরত ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহিগণ কেউই কোন মাদ্রাসায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে লেখাপড়া করেননি।
তাহলে কি মূর্খ জাহিলরা বলবে যে, তাঁরা আলিম নন? (নাউযুবিল্লাহ) আর তাঁদেরকে আলিম হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ার অর্থ হলো মাযহাবকে অমান্য করা। যা স্পষ্টরূপে গোমরাহী ও কুফরী। -সাইয়্যিদ মুহম্মদ আখতারুজ্জামান, ঢাকা।
‘ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি তোলা, রাখা, আঁকা, দেখা হারাম’ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ