মূলতঃ পৃথিবীর ইতিহাসে এযাবত যত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম, হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম ও ইমাম-মুজতাহিদগণ অতীত হয়েছেন তন্মধ্যে একজনও দেখানো যাবে না যে, যিনি লক্বব মুবারক ব্যবহার করেননি। প্রত্যেকেই নিজের জীবদ্দশায় অসংখ্য লক্বব মুবারক ব্যবহার করেছেন। জাহিল, ভ-, প্রতারক ধর্মব্যবসায়ী যারা বলে যে, “আজ পর্যন্ত কেউ এত লক্বব ব্যবহার করেননি” তাদের এ জেহালতি মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে শুধুমাত্র নিম্নোক্ত গুটি কয়েক কিতাবে কতিপয় সর্বজনমান্য আউলিয়ায়ে কিরাম বা ইমাম মুজতাহিদগণের লক্বব মুবারকের সংখ্যা বর্ণনা করা হলো- (ধারাবাহিক) ৭২। মাওলানা আব্দুশ্ শাকুর-এর ১২টি লক্বব। (তোহাফাতু আহল্সি সুন্নাত) ৭৩। হযরতুল আল্লামা নকী আলী খান-এর ১৩টি লক্বব। (আল কালামুল আওযাহ) ৭৪। মাওলানা শাহ ইয়ার আলী ছাহেব-এর ১৪টি লক্বব। (ফতোয়ায়ে ফয়জুর রসূল ১ম/১৪-১৬) ৭৫। মাওলানা ইলিয়াস কাদেরী ছাহেব-এর ১৫টি লক্বব। (ফয়জানুচ্ছুন্নাহ ৭-৮-৯) ৭৬। মাওলানা আযীযুল হক (চাটগামী)-এর ৩৯টি লক্বব মুবারক। (দেওয়ানে আযীয) ৭৭। মাওলানা আবুল আলী আব্দুর রহমান মুবারকপুরী-এর ৬টি লক্বব। (তোহফাতুল আহত্তায়াজি শরহে তিরমীযী) ৭৮। সাইয়্যিদ শাহ আলে রসূল-এর ১১টি লক্বব। (আল কালামুল আওদাহ) আউলিয়ায়ে কিরামগণের উপরোক্ত সকল লক্বব মুবারক ছাড়াও আরো অসংখ্য অগণিত লক্বব মুবারক অতীতের সকল আউলিয়ায়ে কিরামগণ স্বীয় জীবদ্দশায় এবং নিজস্ব লিখিত কিতাবাদীতে ব্যববহার করেছেন। মূলতঃ অতীতে যত নির্ভরযোগ্য ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরামগণ ছিলেন তাঁদের একজনও দেখানো যাবে না যে, তাঁরা কোন না কোন লক্বব ব্যবহার করেননি। তবে কেউ অনেক বেশী লক্বব প্রকাশ করেছেন কেউ কম প্রকাশ করেছেন। সুতরাং জাহিল, বিদ্য়াতী ও প্রতারক যারা বলে যে, ‘আজ পর্যন্ত উম্মতের কেউ এত লক্বব ব্যবহার করেনি’ তাদের এ বক্তব্য চরম পর্যায়ের মিথ্যা, ধোঁকা ও প্রতারণামূলক বলে প্রতীয়মান হলো। লক্বব ব্যবহার করা নাজায়িয, হারাম বা শরীয়তের খিলাফ এমন কোন কথা শরীয়ত তথা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের কোথাও ভ-, প্রতারক ও মিথ্যুকরা দেখাতে পারবে না। তাদের প্রতি এ বিষয়ে প্রকাশ্য বাহাছের চ্যালেঞ্জ দেয়া হয়েছে, হচ্ছে ও হবে ইনশাআল্লাহ্।
অতঃপর আওলাদে রসুল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর বিরোধিতাকারীরা তথা ভ-, প্রতারক, উলামায়ে ‘ছূ’রা গাউছুল আ’যম লক্বব ব্যবহারের বিরোধিতা করে বলে থাকে যে, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি ব্যতীত অন্য কেউ এ লক্বব ব্যবহার করতে পারবে না। অর্থাৎ তিনি ব্যতীত অন্য কেউ গাউসুল আ’যম হতে পারবে না। ভ-, প্রতারকরা কি এর একটা দলীলও দেখাতে পারবে? হাক্বীক্বত নুবুওওয়াতের ধারাবাহিকতা বন্ধ হয়েছে। যার কারণে ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কেউ নবী হবে না কিন্তু বিলায়েতের ধারা বন্ধ হয়নি ও ক্বিয়ামত পর্যন্ত হবে না। আর যেহেতু বিলায়েতের ধারাবাহিকতা বন্ধ হয়নি সেহেতু বিলায়েতের সাথে সংশ্লিষ্ট মাকামসমূহও ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবে। যে সকল মাকাম ইতিপূর্বে বিভিন্ন আউলিয়ায়ে কিরামগণ কর্তৃক জাহির হয়েছে তা যে অন্য কেউ হাছিল করতে পারবে না, একথা সম্পূর্ণরূপে ভুল। বরং মহান আল্লাহ পাক তাঁর যে কোন খাছ বান্দাকে যে কোন সময় বিলায়েতের যে কোন মাকাম বা লক্বব দান করতে পারেন।
ذلك فضل الله يؤتيه من يشاء.
অর্থঃ- “এটা মহান আল্লাহ পাক-এর ফজল ও করম। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকেই তা দান করেন।” আর কোন ব্যক্তি কোন লক্বব প্রকাশ করার অর্থ এই নয় যে, উক্ত ব্যক্তি সেই লক্ববপ্রাপ্ত ব্যক্তির সমকক্ষ বা তার চেয়ে বেশী মর্যাদার দাবীকারী। যদি তাই হয় তাহলে মহান আল্লাহ পাক-এর একখানা খাছ লক্বব মুবারক হলো হৃèব্জৈশুব্জ (মাওলানা)। তাহলে সারা পৃথিবীতে যত লোক নিজের নামে ‘মাওলানা’ লক্বব ব্যবহার করেছেন তারা কি সকলেই আল্লাহ পাক-এর সমকক্ষ দাবী করছে? (নাউযুবিল্লাহ) (চলবে) -সাইয়্যিদ মুহম্মদ আখতারুজ্জামান, ঢাকা।
‘ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি তোলা, রাখা, আঁকা, দেখা হারাম’ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ