গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে ‘ইসলাম’ রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃত। দেশের প্রায় নব্বইভাগ লোক ইসলাম ধর্মাবলাম্বী বলে প্রচারিত। যারা উম্মতে মুহম্মদী হিসেবে নিজেদের দাবী করে থাকে। আর এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক-এর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “বণী ইস্রাঈলের মধ্যে হয়েছে বায়াত্তর ফিরক্বা। আর আমার উম্মতের মাঝে হবে তিয়াত্তর ফিরক্বা। তন্মধ্যে কেবল একটি দলই হক্ব।” অথচ অপরাপর দলগুলো হক্ব দল হিসেবেই দাবী করছে। সমাজে বিরাজ করছে। কিন্তু তাদের আক্বীদায় রয়েছে গলদ। তাদের কেউ স্বতঃসিদ্ধ মাযহাব মানছে না। অথচ কুরআন-সুন্নাহ মতে মাযহাব মানা ফরজে আইন। উল্লেখ্য, মাযহাব দ্বীন পালনের ধারাবাহিকতাকে সমুন্নত করে। স্বেচ্ছাচারিতার দরজাকে রুদ্ধ করে আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অনুগত ও নিবেদিত করে। তাই ইসলাম বিদ্বেষী ইহুদী, খ্রীষ্টান গং সে ধারাবাহিকতাকে নষ্ট করতে উদ্যত হয়েছিলো বহু আগেই। এ অভিপ্রায়েই তারা সৌদি আরবে ইবনে ওহাব নামক ফরমাবরদারের দ্বারা ওহাবী মতবাদের পত্তন ঘটিয়েছিলো। ওহাবী মতবাদ আর লা-মাযহাবী মতবাদ মূলতঃ প্রায় একই। তবে যে কথা বিশেষ প্রণিধানযোগ্য যে, ইসলাম বিদ্বেষী ইহুদী-খ্রীষ্টান গং মুসলমানদের ধর্ম পালনে বিভেদ তৈরীর পিছনে যুগপৎভাবে মুসলমানের দেশ দখলের বিষয়টিকেও সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা হিসেবে রেখেছে। “ওহাবী মতবাদের প্রবর্তক ইবনে ওহাবের মত লাদেনও ওদের চর”- সে কথা আল বাইয়্যিনাতে বহু লেখালেখির পর এখন সবাই সহজেই বুঝতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি এও বিশ্বাসযোগ্য যে, বাতিল আক্বীদার দলের সাথেই মূলতঃ সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা তথা ইহুদী-খ্রীষ্টান গং-এর নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ইসলাম বিদ্বেষী ইহুদী-খ্রীষ্টান গং জানে যে, “আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের লোকেরাই হক্ব এবং তারা সীমালঙ্ঘন করেনা।” সুতরাং এক্ষেত্রে তথা ওহাবী, সালাফী লা-মাযহাবীদেরই তাদের খুব পছন্দ। কারণ, যেহেতু এদের ঈমানে ত্রুটি রয়েছে তাই এরা স্বেচ্ছাচারী। এরা মনগড়াভাবে যে কাউকে কাফির ঘোষণা করতে পারে। তাদের সম্পত্তি লুটপাট করতে পারে। নারীর সম্ভ্রম হরণ করতে পারে। এ ব্যাপারে গত ২২শে ফেব্রুয়ারী ২০০৫ ঈসায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেসনোটে বলা হয়, “সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকের কয়েকটি শাখায় বোমা হামলা এবং বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সর্বত্র পুলিশি তৎপরতা জোরদার করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, মৌলভীবাজার, গোপালগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, ধামরাই ও সাভারে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নাশকতার উদ্দেশ্যে আনা পেট্রোল বোমা, শাটারগান, পিস্তল, দেশে তৈরি রিভলবার, বিস্ফোরক দ্রব্য, হাতে তৈরি গ্রেনেড, বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র, ছুরি, চাকু, জঙ্গি কার্যক্রমের শ্লোগান ও গেরিলা হামলার নির্দেশনাবলী সংবলিত পুস্তক, বুকলেট, লিফলেট ও পত্রিকা। গ্রেফতারকৃতদের কয়েকজন তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে, তারা সবাই জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) ও জামা’তুল মুজাহেদীনের সক্রিয় সদস্য। ইসলামের নামে জিহাদ করার কথা বলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের দিয়ে হত্যা, হামলা, চুরি, ডাকাতিসহ যেসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে, সেগুলোকে ইসলামের জন্য জেহাদের অংশ হিসেবে তাদের শিক্ষা দেয়া হয়েছে। তারা বলেছে, লক্ষ্য অর্জনের জন্য এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে তাদের লিপ্ত করা হয়েছে। তারা দাবি করেছে, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা সন্ত্রাসী এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডাক্তার গালিব তাদের দলনেতা। প্রেসনোটে বলা হয়, সরকার উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে, এ সংগঠন দু’টির সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন, ডাকাতি,বোমা হামলা ও হুমকিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে শান্তিপ্রিয় জনগণের জীবন ও সম্পদহানি করে আসছে। এরা ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে একদল তরুণকে বিপথগামী করে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে। (নয়াদিগন্ত, ২৪ ফ্রেব্রুয়ারি/২০০৫) সিলেটে মাযার শরীফে বোমা হামলার জন্য এরাই দায়ীঃ সালাফী, লা-মাযহাবী তথা আহলে হাদীছ নামধারীরা মূলতঃ প্রচ- রকমের ওলীআল্লাহ বিদ্বেষী। হাদীছ শরীফের অপব্যাখ্যা ও নিজেদের গ-ীভূক্ত হাদীছ শরীফের বাইরে থেকে এরা ওলীআল্লাহগণের নামে বিষোদগার করে থাকে। এদের বক্তব্য থেকেই প্রমাণিত হয় যে, সিলেটে মাযার শরীফে বোমা হামলার জন্য এরাই দায়ী। হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত শাহ পরান রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে চরম বেয়াদবীমূলক কথাঃ গত ১৯শে ফেব্রুয়ারী সিলেটে এদের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এদের বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোঃ মোসলেহ উদ্দিন বলেন, “হযরত শাহজালাল ও শাহ পরান অশিক্ষিত ছিলেন। কুরআন-সুন্নাহ্ সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞান ছিলনা। আমি ইতিহাসে তাদের সম্বন্ধে কিছুুই পাইনা। এই দরগাহর খাদেমরা হারাম খাচ্ছেন। যারা এখানে দান-খয়রাত করছেন এবং এখানে যাচ্ছেন, হাদীস যদি সত্য হয় তবে তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম।” (প্রথম আলো ২০ ফেব্রুয়ারী/২০০৫) অর্থাৎ এরাই যে হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত শাহ পরান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার অপচেষ্টায় নিয়োজিত তা খুব স্পষ্ট করে প্রকাশ পায়। পাশাপাশি এরাই যে মাযার শরীফে বোমা হামলার জন্য দায়ী তা এদের প্রধান নেতার বক্তব্যে আরো জোরালো ভাবে ধরা পড়ে। “গতকাল শনিবার সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সিলেটে সংগঠনের প্রথম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, গত বছর দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ওয়াজ করে যাওয়ার পর আমি এই মাঠে এসে বক্তৃতা দিয়েছিলাম। এর দু’দিন পরই সিলেটে হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাযার প্রাঙ্গণে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।” (প্রথম আলো ২০ ফেব্রুয়ারী/২০০৫) এদেশীয় লা-মাযহাবী, সালাফী, রহমান, গালিব, বাংলা সন্ত্রাসী গং মার্কিনী চর, লাদেনের সোল এজেন্ট। যারা এসবের অন্তরালে এদেশকে মার্কিনীদের করদ রাজ্য করতে চায়ঃ ১৯৯৮ সালের ১৮ই জানুয়ারী দেশের এক কবিকে হত্যার উদ্দেশ্রে জঙ্গি মৌলবাদীরা যে হামলা চালায় তারপর ৪৮ জন জঙ্গি মৌলবাদীকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে দু’জন ছিলো বিদেশি। একজন পাকিস্তানের মোহাম্মদ সাজিদ এবং অপর জন দক্ষিণ আফ্রিকার আহমদ সফিক আহমদ। গ্রেফতারের পর এই দুই বিদেশি নাগরিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশকে বলে, ‘বাংলাদেশে একটা জঙ্গি বাহিনী গঠন করার জন্য ওসামাবিন লাদেন নিয়মিতভাবে অর্থ সরবরাহ করছেন।’ পুলিশের একজন কর্মকর্তা সে সময় আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, লাদেন তাকে এই খাতে ২ কোটি টাকা দিয়েছেন যা দেশের ৪২১টা মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়। (সাপ্তাহিক বিচিত্রা/১২ সেপ্টেম্বর ২০০৩) সম্প্রতি মানব উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র পরিচালিক এক জরিপে দেখা যাচ্ছে, মৌলবাদী জঙ্গি গ্রুপগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনার মাধ্যমে বার্ষিক কমপক্ষে পাঁচশ’ কোটি টাকা মুনাফা করে থাকে। বাংলা সন্ত্রাসী বাহিনীর নতুন রিক্রুটদের যে ট্রেনিং দেয়া হয়, সেখানে প্রদর্শিত হয় ভিডিও টেপ। ভিডিওতে ধারণ করা রয়েছে আফগানিস্তানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত ফারুক ক্যাম্পে আল কাযেদার সদস্যদের যুদ্ধে প্রশিক্ষণের দৃশ্যবলী। টেপে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের বৃক্ততাও ধারণ করা রয়েছে। আরো জানা গেছে, বাংলা বাহিনীর অন্তত ২০ জন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং ওসামা বিল লাদেনের সঙ্গে কাজ করার অভিক্ততা অর্জন করেছেন। কট্টরপন্থী লা-মাযহাবী, নেতা আব্দুর রহমান; বিন লাদেনের হাতের তৈরী এই সংগঠনের বিশেষ নেতা হলে আব্দুর রহমান। সে আফগানিস্তান থেকে ট্রেনিং নিয়ে এসেছে এবং তাকে আল কায়েদার সদস্য বলে সন্দেহ করা হয়। আব্দুর রহমান ঢাকায় এক দূতাবাসে গত শতাব্দির আশির দশকের শেষার্ধে চাকরি করতেন। মদিনা ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে তিনি ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সফর করেন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, সারাদেশে আমরা জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছি। সশস্ত্র ইসলামি বিপ্লবই আমাদের লক্ষ্য। (সাপ্তাহিক মৃদুভাষণ/ ৩১ মে, ২০০৪) উল্লেখ্য, বিশ্ব সন্ত্রাসী ওসামা বিন লাদেনের নেটওয়ার্ক বাংলাদেশে তালেবানী শাসন কায়েম করার জন্য তৈরি করেছে আব্দুর রহমানকে। সৌদি আরবে ট্রেনিং শেষে সে সরকারি চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে এসে নিজেই সরকার প্রধান হওয়ার খোয়াব দেখতে শুরু করে। গঠন করে জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি)। এই মৌলবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ১৯৯৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এই হিসাব থেকে দেখা যায় দীর্ঘ ছয় বছর ধরে আব্দুর রহমান তার সাংগঠনিক ও সামরিক তৎপরতা চালাচ্ছে বাংলাদেশ। মজলিশে সুরা গঠন করে নিজেই হয় সেই সুরার প্রধান অর্থাৎ আমীর। বাংলাদেশের কোনও রাজনৈতিক দলের ১০ হাজার সার্বক্ষণিক কর্মী নেই। অথচ জেএমজিবি’র দাবি মতে তাদের আছে ১০ হাজার সার্বক্ষণিক লোক। এই মিলিট্যান্ট কর্মীদের হাতে রয়েছে লাঠি, বল্লম, ছোরা, তরবারী, হকি স্টিক, বন্দুক, পিস্তুল, রিভলবার। মাওলানা আব্দুর রহমান সম্পর্কে আরো জানা যায়, তারা বাড়ি জামালপুরের চরশী গ্রামে। তিনি ইসলামী জঙ্গী সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীনের প্রধান বা শায়াব। তার পিতা মাওলানা আব্দুল্লাহ ইবান ফজল জামিয়াতুল আহলে হাদিসের নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৭১ সালের দুর্ধর্ষ আল বদর আব্দুল্লাহ ইবনে ফজলের রয়েছে নানা অপকর্মের ঘটনা। (সাপ্তাহিক বিচিত্রা ২৮ মে, ২০০৪) আব্দুর রহমানের সহযোগি কট্টর লা-মাযহাবী নেতা গালিবের ইতিহাসঃ ব্রিটিশ আমলে এ দেশে মাওলানা আব্দুল্লাহ হিল কাফী ওয়াল কুরাইশী লা-মাযহাবী তথা আহলে হাদীছ আন্দোলন নামে সংগঠন গড়ে তুলে। দীর্ঘকাল থেকে বাংলাদেশে এ সংগঠনের আমীর ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডাক্তার এমএ বারী। চাকরির সুবাদে ডাক্তার গালিব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডাক্তার এম এ বারীর হাত ধরে এ আন্দোলনে যোগদান করে। পরবর্তীকালে ১৯৯৪ সালে সে নিজে আমির হয়ে বাংলাদেশ আহলে হাদিস আন্দোলন নামে সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করে। এ সংগঠনের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়ায়। সেখানে গড়ে তোলে একটি মাদ্রাসা। এ সুবাদে সে লিবিয়া, ইরান, মায়ানমার ও সউদি আরবসহ বিশ্বের বহু দেশ সফর করে। বহির্বিশ্বের অনেক দেশের লা-মাযহাবী তথা আহলে হাদিস আন্দোলন সংগঠনের নেতারা তার কাছে আসা-যাওয়া করে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সে বিহির্বিশ্ব থেকে কোটি কোটি টাকা এনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইসলামী জঙ্গি সংগঠন মুজাহেদীনকে সংগঠিত করে চলেছে এবং এসব অর্থ থেকে নিজেও অনেক অনেক টাকা মেরেছে। সম্প্রতিককালে ওই জঙ্গি সংগঠনের ক্যাডাররা জোরেশোরে তৎপরতা চালালে নাটোর, বগুড়া ও জয়পুরহাটে পুলিশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। তারা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে তথ্য দিয়েছে, রাবি’র আরবি বিভাগের প্রফেসর ডাক্তার গালিব তাদের নেতা এবং সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছে। সম্প্রতি কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় ডাক্তার গালিবের জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার বিষয় নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে পুলিশ প্রশাসনের টনক নরে। মূলতঃ “বাংলাদেশে জঙ্গী মৌলবাদী সংগঠনের সংখ্যা কত এ বিষয়ে সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০০৩ সালে গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিবেদনে মাত্র ১১টি জঙ্গী সংগঠনের উল্লেখ ছিলো। (জনকণ্ঠ, ১৯ আগস্ট, ২০০৩) বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশ্য, আধা গোপন ও গোপন এসব সংগঠনের জঙ্গী ও জিহাদী তৎপরতার সংবাদ প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হচ্ছে। পত্রিকা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে জঙ্গী মৌলবাদী সংগঠনের সংখ্যা বর্তমানে ৪৩টি। এগুলো হচ্ছে- ১. জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ, ২. শাহাদাত-ই-আল হিকমা, ৩. জামায়াত-ই-ইয়াহিয়া আল তুরাত, ৪. হিজবুত তওহিদ, ৫. আল হারাত আল ইসলামিয়া, ৬. আল মারকাজুল আল ইসলামী, ৭. জামায়াতুল ফালাইয়া, ৮. তাওহিদী জনতা, ৯. বিশ্ব ইসলামী ফ্রন্ট, ১০. জুম্মাতুল আল-সাদাত, ১১. শাহাদত-ই-নব্যুয়ত, ১২. হরকাতুল জিহাদ, ১৩. আল্লাহর দল, ১৪. জইশে মোস্তফা বাংলাদেশ, ১৫. আল জিহাদ বাংলাদেশ, ১৬. ওয়ার্ল্ড ইসলামিক ফ্রন্ট ফর জিহাদ, ১৭. জইশে মুহম্মদ, ১৮. জামাত উল-মুজাহিদুল বাংলাদেশ, ১৯. ওয়ারৎ ইসলামিক ফ্রন্ট, ২০. জামাত-আস-সাদাত, ২১. আল খিদমত, ২২. জাগ্রত মুসলিম জনতা (জেএমবি), ২৩. হরকত-এ-ইসলাম আল জিহাদ, ২৪. হিজবুল্লাহ ইসলামী সমাজ, ২৫. মুসলিম মিল্লাত শরিয়া কাউন্সিল, ২৬. আহলে হাদিস, ২৭. হিজবুল মাহাদী, ২৮. বাসবিদ, ২৯. হিজবুত তাহরীর, ৩০. আল কায়েদা, ৩১. আল ইসলাম মার্টায়ারস ব্রিগেড, ৩২. ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুয়ত মুভমেন্ট, ৩৩. আমরা ঢাকাবাসী, ৩৪. আরাকান রোহিঙ্গা ফোর্স, ৩৫. ইসলামিক সলিডারিটি ফ্রন্ট, ৩৬. আরাকানস পিপলস আর্মি, ৩৭. লিবারেশন মায়ানমার ফোর্স, ৩৮. আরাকান মোজাহিদ পার্টি, ৩৯. রোহিঙ্গা ইনডিপেনডেন্ট রেফার্স (আর আইএফ), ৪০. রোহিঙ্গা ইনডিপেনডেন্ট আর্মি (এআইআর), ৪১. রোহিঙ্গা প্যাট্রিঅটিক ফ্রন্ট (আরপিএফ), ৪২. রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), ৪৩. রোহিঙ্গা ইসলামিক ফ্রন্ট (এআরআইএফ)। এর ভেতর দশটি সংগঠন হচ্ছে রোহিঙ্গা ও আরাকানের মুসলিমদের, যারা বাংলাদেশে সমান তৎপর। এসব সংগঠনের সদস্য সংখ্যা নিরূপণ করা কঠিন। ‘জাগ্রত মুসলিম জনতা’ দাবি করেছে, সারাদেশে তাদের তিরিশ হাজার সদস্য রয়েছে, যাদের ভেতর দশ হাজার সর্বক্ষণিক। (ডেইলি স্টার, ৫ মে ২০০৪) সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরবর্তী আট মাসে জেএমবি-এর সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে পঞ্চাশ হাজারে উপনীত হয়েছে। (জনকণ্ঠ, ৩১ জানুয়ারী ২০০৫) এদেশীয় সালাফী, লা-মাযহাবী, তথা আহলে হাদীছ নামধারীরা ৭১ এও রাজাকার ছিলো এখনও দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্রী পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে যে, বাংলা সন্ত্রাসী, গালিব ও আব্দুর রহমান এরা সবাই রাজাকার পরিবারের লোক। শুধু তাই নয়, সব সন্ত্রাসী, জঙ্গীবাদী, মৌলবাদী গ্রুপই মূলতঃ বাতিলপন্থী, লা-মাযহাবী, সালাফী, নামধারী তথা ক্বওমী, খারিজী গোষ্ঠীভুক্ত। ৭১ এও এরা দেশের সাথে বেঈমানী করেছে। এখনও দেশ, জাতি ধর্মের সাথে চরম ষড়যন্ত্র করছে।
-মুহম্মদ মুসলিম, ঢাকা।
বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১