লা-মাযহাবী তথা খারিজী, ওহাবী তথা বদ-আক্বীদাভুক্ত দলের লোকেরাই ধর্মের শত্রু, দেশের শত্রু॥ বোমা-গ্রেনেড হামলার এরাই প্রতিভূ – ৩

সংখ্যা: ১৪১তম সংখ্যা | বিভাগ:

কুরআন শরীফের প্রথম শব্দ ‘ইক্বরা’ অর্থ পড়ুন। হাদীস শরীফে প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য পড়াশোনা তথা ইল্ম অর্জন করাকেও ফরজ বলা হয়েছে। ইসলাম ‘ব্রাহ্মনবাদী’ ধর্ম নয়। কিতাব পড়ার জন্য শুধু ব্রাহ্মনদের মতই কোন আলাদা মহল ইসলামে স্বীকৃত নেই। যদিও সাধারণের অনেকেই মনে করে আলিম-ওলামা হবে শুধু মাদ্রাসায় পড়ুয়ারা। অথচ আলিম-ওলামা হবার জন্য যে, মাদ্রাসায় পড়া শর্ত নয়, সে কথা আজও সাধারণে ওয়াকিফহাল নয়। পাশাপাশি মাদ্রাসার নামে অনেকক্ষেত্রে যে একটি অশুভ ও অনাকাঙ্খিত গোষ্ঠী তৈরি হচ্ছে সে সম্পর্কেও সবাই সচেতন নয়। তবে একটি বিষয় লক্ষ্য করার মত যে হালে উদ্ভূত মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী তৎপরতার সাথে কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক একটা কানেকশন রয়েছে। যা এ লেখার গত দু’ পর্বে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার তথ্য ভিত্তিক রিপোর্টের আলোকে ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত এমনই একটি ইস্যু হল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে একটি প্রশ্ন অনিবার্যভাবে দাঁড়িয়ে যায় যে, আসলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকার আসলে কে? কারণ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহীদবাড়িয়া এলাকার ‘এদারায়ে তালিমিয়া কওমী’ মাদ্রাসার চেয়ারম্যান তথাকথিত বড় হুজুর তার ১১০টি মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে দোর্দ- প্রতাপে এখনও নিজস্ব রাজত্ব চালান পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ২০০০ সালে হরতাল ঘোষণা করে ভাংচুর, ট্রেন চলাচল বন্ধ ও নানা সন্ত্রাসী তৎপরতার পাশাপাশি খোদ এসপি, ডিসিকেও অবরুদ্ধ করে রাখে তথাকথিত বড় হুজুরের বাহিনী। অর্থাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তথাকথিত বড় হুজুর ও তার সাঙ্গপাঙ্গের কাছে ডিসি, এসপিরাও অসহায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাই বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন চলে না তথাকথিত বড় হুজুরের রাজত্বে চলে সে প্রশ্ন আজকের নয় বরং বহু পুরানো? এদিকে তথাকথিত এই বড় হুজুর ও তার জঙ্গিবাহিনী যে এনজিওদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন চালায় তাই নয়। বরং ইসলামের একক এজেন্ট তথা নিয়ন্ত্রকও হয়ে উঠছেন তিনি। তার ওখানে অন্য কেউ ওয়াজ মাহফিল করতে পারবে না। এমনকি তার রাজত্বে কেউ মীলাদ শরীফও পড়তে পারবে না বা ক্বিয়ামও করতে পারবে না। মীলাদ বা ক্বিয়াম করলে তার বাড়ীতে রাতের আঁধারে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। গত ৫০ বছরে এরূপ বহু ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ইসলামের নামে নিজস্ব মনগড়া একটা মতবাদ এরা দাঁড় করিয়েছে। সে মতবাদের বাইরে কারো পদচারণা হলেই তার উপর চলে জুলুম। সে প্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খোদ মুসলমানরাই স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনে অপরাগ। বিষয়টি কয়েক পুরুষ ধরে মর্মে মর্মে  সবাই অনুভব করলেও তথাকথিত বড় হুজুরের ভয়ে এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ প্রায় সবাই। কিন্তু তারপরেও ক্ষোভ ঠিকই বিরাজ করে। সম্প্রতি এ বিষয়ে ‘সাপ্তাহিক ২০০০’-এ ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বড় হুজুরের রাজত্ব’ শীর্ষক বিশেষ প্রতিবেদন পত্রস্থ হয়।  ব্রাহ্মণবাড়িয়া বড় হুজুরের রাজত্ব শীর্ষক প্রতিবেদনে প্রতিবেদক প্রথম লাইনেই প্রশ্ন করেছেন, ব্রাহ্মনবাড়িয়া কি বাংলাদেশের বাইরে? যত অদ্ভুত, বিস্ময়কর বা অজ্ঞতাপ্রসূত বলে মনে হোক না কেন এ প্রশ্ন প্রথম উঠেছিল ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে। এরপর ২০০০ সালের এপ্রিলেও। আরো জোরদার হয়েছে সেই একই প্রশ্ন। এরপর তিনি লিখেন জঙ্গি সন্ত্রাসবাদী তৈরির কারখানাঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহীদবাড়িয়া এলাকার এদারায়ে তা’লিমিয়া কওমি মাদ্রাসার অধীনে জেলা জুড়ে পরিচালিত হচ্ছে প্রায় ১১০টি কওমি মাদ্রাসা। এই কওমি মাদ্রাসা জঙ্গি তৈরির মূল সূতিকার। গোয়েন্দা সুত্র মতে, জঙ্গি সংগঠন ‘খতমে নবুওয়ত’ এই মাদ্রাসা থেকে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের জঙ্গি তৎপরতা। জন্ম দিচ্ছে শত শত ধর্মান্ধ উগ্রজঙ্গি। যারা নিঃশঙ্কচিত্তে হত্যা করতে উদ্যত হয় সংবিধান বিশেষজ্ঞ ডঃ কামাল হোসেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম এম আকাশের মতো ব্যক্তিত্বকে। ক্ষমতাসীন চারদলীয় জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের কয়েক নেতার পরিচালনায় চলছে এ কার্যক্রম। আর এদের নেতৃত্বে আছেন কথিত বড় হুজুর। এরা নিজস্ব পাঠ্যসূচি অনুসরণ করে যার মধ্যে বাধ্যতামূলক আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ আছে। ভারতের ‘দেওবন্দ’ মাদ্রাসার অনুসরণে মাদ্রাসাগুলো পরিচালিত হয়।  এদের মূল কাজ, বিভিন্ন ইস্যু সৃষ্টি করে জঙ্গি আন্দোলনের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এবং ইসলামী জঙ্গি নেতাদের নির্দেশনা মতো ১১০টি মাদ্রাসার ২৫ হাজার ছাত্র বিভিন্ন সময়ে নির্দিষ্ট এলাকায় বিক্ষোভ ও জ্বালাও পোড়াওসহ বিভিন্ন জঙ্গি তৎপরতা পরিচালনা করে। ২০০৪ সালের শেষ দিকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের ৩ সদস্যের একটি দল আসে বাংলাদেশে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া এদারায়ে তা’লিমিয়া মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা ঘুরে দেখে। দেশ ছেড়ে যাবার সময় মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে মজলিশপুর আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা’ সরাইল উপজেলার বেপারীপাড়ার ‘মাদ্রাসায়ে ইসলামিয়া বায়তুল উলুম’ কসবা উপজেলার সৈয়দাবাদের ‘মাদ্রাসায়ে ছানী ইউনুছিয়া’ সুহিলপুরের উত্তর সুলিপুর উলুমে শরীয়া মাদ্রাসা, দারুল আলকাম মাদ্রাসাসহ কয়েকটি মাদ্রাসার জঙ্গিবাদী নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংশ্রবের কথা তারা উল্লেখ করেন। এদের বিরুদ্ধে তালেবান সম্পৃক্ততা ও মুজাহিদ বাহিনী গঠনের মাধ্যমে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। স্থানীয় প্রশাসন নজর রাখছে। এদিকে স্থানীয় প্রশাসন সব জেনেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পালনে বিন্দুমাত্র তৎপরতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই সুযোগে দ্বিগুণ শক্তিতে বিস্তৃত হয়েছে জঙ্গি তৎপরতা। তাদের মূল শক্তি কোথায়? পাকিস্তান, কাতার, কুয়েত, মিসরের একাধিক সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌলবাদীদের। এসব দেশের নেতারাও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অহরহ আসছেন-যাচ্ছেন। অভিযোগ আছে, ১৯ কিলোমিটার দূরে ত্রিপুরা সীমান্ত থাকায় অস্ত্রের লেনদেন ওই পথ দিয়েই হচ্ছে। ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা, পাকিস্তানের করাচি মাদ্রাসার অনেক পোস্টার এখানকার মাদ্রাসার দেয়ালে ঝুলতে দেখা যায়। এসব দেশের শক্তিতেই মৌলবাদী সংগঠন এতো অর্থবান আর সরকারের সহায়তায় বলবান। এছাড়াও চট্টগ্রাম ও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জঙ্গিরা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলে।। অস্ত্রপাতি, প্রশিক্ষণ ওইসব সংগঠনের সদস্যরাই দেয়।  এসব জঙ্গি তৎপরতার জন্য টাকা যোগায় কে? স্থানীয় ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের সদস্য হুমায়ুন কবির জানান, হুন্ডির মাধ্যমে প্রচুর টাকা আসছে। এনাম আর্নটের নামে এক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাংলাদেশে ছিল এবং তার একটি সংগঠনও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তৎপরতা চালাতো। এই এনাম সাহেব ওসামা বিন লাদেন ও  আল কায়েদার সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অর্থের অন্যতম শক্তিশালী যোগানদাতা বলে বিশ্বে পরিচিত। ২০০৩ সালের ২৩ জুন বিষয়টি জানাজানির পর বাংলাদেশ ব্যাংক ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের তৎপরতার কারণে ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সংগঠনের অস্তিত্ব প্রায় ভৌতিক উপায়ে উধাও হয়ে যায়। সরেজমিন মজলিশপুর মজলিশপুর ইউনিয়নের বাজারের পেছনেই আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা। এখানকার একজন ছাত্র নাম ইমরান মিয়া। সে জানালো ফজর নামাযের পর নিয়মিত শরীরচর্চা হয়। সে সময় নানা রকম মারামারির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। যেমন, কোনো লাঠি ধরতে হলে, লাঠিটির মোটা ও ভারি অংশ ধরতে হয়। লাঠি দিয়ে কাউকে আঘাত করতে হলে আঘাত করার সময় মুখে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে হয়। এছাড়াও দলগত আক্রমণ পরিচালনা কিভাবে করতে হয় তাও শেখানো হয়। একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, এখানে নড়াইলের জাগ্রত জনতার সৈনিক পার্টির প্রশিক্ষকরা প্রশিক্ষণ দেয়।  তিল্লিনগর রাহিমা মাদ্রাসা মজলিশপুর থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে তিল্লিনগর গ্রাম। এখানেই ‘তিল্লিনগর রাহিমা মাদ্রাসা। মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মোঃ এরফান উদ্দিন জানালেন, পাকিস্তানের মারকাদুজা ওয়াতিল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এ মাদ্রাসার অর্থায়ন করে। তিনি আরো জানান, মারকাদুজা ওয়াতিল পুরো দেশে ২০টির মতো মাদ্রাসা চালায়। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই একটাই। ঢাকায় সংগঠনটির প্রধান কার্যালয় আছে। হাফেজ এরফান বলেন, সংগঠনটির পরিচালনা কমিটির দু’জন সদস্য আব্দুল মালেক ও দেলোয়ার হোসেন প্রায় আসেন। এই মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম অন্যান্য কওমি মাদ্রাসার মতোই। এখানে শিক্ষক ১৯ জন। ছাত্র ২০০ জন। শরীরচর্চা হয়। তিন সদস্যের তদন্ত টিম এই মাদ্রাসায়ও এসেছিল। তারা দেখেছে একটা বদ্ধ ঘরে অনেকগুলো একই সাইজের গরান কাঠের লাঠি। বেশ কিছু পাকিস্তানি মুদ্রিত বই। এবং দেখেছে অনেক ছাত্র পাঞ্জাবিতে লুকিয়ে কিছু সরিয়ে ফেলছে। কিন্তু কি লুকিয়ে নিচ্ছে তা তারা দেখতে পায়নি। কুয়েতের অর্থায়নে এই মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা সাজিদুর রহমান। স্থানীয়রা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যত মৌলবাদী কর্মকান্ড সংগঠিত হয়, তার অপারেশনে কমান্ডার এই সাজিদুর। স্থানীয় স্কুলের সুপারেনটেনডেন্ট চমন শিকদার জুলকারনী জানান, কাতারপন্থি সাজিদুর রহমান ‘৯০-এর দিকে দেশে ফেরেন। তিনি আসার পরই মৌলবাদী গ্রুপগুলো নতুন মাত্রা পায়। বিশাল দারুল আলকাম আল ইসলাম কমপ্লেক্স তৈরি করেন। কমপ্লেক্সের ভেতরে ঢোকার অনুমতি সবার নেই। এই প্রতিবেদকও একাধিকবার চেষ্টা করে মাওলানা সাজিদুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে পারেনি, ভেতরেও ঢুকতে পারেনি। এই কমপ্লেক্স ও সাজিদুর নিয়ে এলাকায় যে কথাটি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত তা হলো, এটি ‘মারকাজুল ইসলাম’ নামে জঙ্গি সংগঠনের শক্ত ঘাটি এবং সাজিদুর রহমমান তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। আবু সালেহ মোঃ সালেহ নামের একজন মিসরীয়কে বিগত ৭-৮ মাস যাবৎ এই কমপ্লেক্সের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় লোকদের সন্দেহ ও প্রশাসনের চাপের কারণে মিসরীয় ওই ব্যক্তিটি এলাকা ছেড়ে এখন ঢাকার লালবাগে মুফতি আমিনীর মসজিদে অবস্থান করছেন। আলহেরা কমপ্লেক্স: ভাদুগড়ের বড় হুজুরের নিয়ন্ত্রণাধীন আলহেরা কমপ্লেক্স আরেকটি ঘাঁটি। এখানে প্রায়ই সন্দেহভাজন লোকজনকে ঘুরতে দেখা যায়। হাফেজ ইদ্রিস, মুফতি মোবারক উল্লাহ এই কমপ্লেক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী। এই কমপ্লেক্স থেকে খতমে নবুওওয়াতের জেলাভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। স্থানীয় একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, জঙ্গি ঘাটির তালিকায় ২৪টি মাদ্রাসার নাম এসেছে। এগুলোর সব কটাতেই কড়া নজর রাখা হচ্ছে।  তবে অন্যান্য সূত্রমতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় প্রায় ৬৫টি মাদ্রাসায় জঙ্গি তৎপরতার কার্যক্রমের খবর পাওয়া যায়। স্থানীয়রা আরো জানায়, বেশ কিছু কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসায় এ জাতীয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। তারা বলেন, বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলোর মধ্যে ৫টি জামায়াতের অধীনে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মৌলবাদীদের এই তৎপরতা হলো দেশের বিভিন্ন স্থানে এদের সুসংগঠিত হওয়ার একটি প্রতিফলন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বড় হুজুরের পরিচালনায় জঙ্গিপনা শক্ত হাতে দমন করার দায়িত্ব সরকারের। জনসাধারণের এই দাবি উপেক্ষার কোনো সুযোগ নেই। (সাপ্তাহিক ২০০০, ২৫ ফেব্রুয়ারি, পৃষ্ঠাঃ ১৯-২৫) উল্লেখ্য সাপ্তাহিক ২০০০ এর ঐ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তথাকথিত বড় হুজুর বলেন, আমরা ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসার আদলে চলার চেষ্টা করি। (সাপ্তাহিক ২০০০, ২৫শে ফেব্রুয়ারি/২০০৫, পৃঃ-২২) মূলত এখানেই একটা বিষয় পরিষ্কার হয়। হালে যারা দেওবন্দী আক্বীদার প্রতিভূ সেজেছেন তারা অনেকেই আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শানে মহা ত্রুটি যুক্ত আক্বীদার তথা ওহাবী আক্বীদার ধারক-বাহক সেজেছেন। তারা আল্লাহর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মাটির মানুষ মনে করেন। তাঁকে কেবলমাত্র বড় ভাইয়ের মত মনে করেন। তা’যীম তাকরীম করাকে নাজায়িয মনে করেন। (নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক) মূলত দেওবন্দ সম্পৃক্ত এ মহলটির পদচারণা আসলে শত-সহস্র আওলিয়ায়ে কিরাম-এর পদধন্য এই বাংলার মাটির সাথে সামঞ্জস্য নয়। আউলিয়ায়ে কিরাম-এর ফায়েজ-তাওয়াজ্জুতে বাংলার মানুষ পেয়েছে সহীহ আক্বীদা। আল্লাহ পাক এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূরর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি প্রগাঢ় মুহব্বত। তাই মীলাদ শরীফ পাঠে, ক্বিয়াম করতে, মাযার শরীফ জিয়ারতে নামাযের পর মুনাজাত, ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাতে বাংলার মানুষ অন্তরে অনুভব করেন অব্যক্ত প্রশান্তি, ভাল লাগা, সাকিনা, রহমত ও বরকত। আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ছহীহ আক্বীদার খিলাফ দেওবন্দ আক্বীদা সংশ্লিষ্টরা তাই এক শতাব্দী পরে হলেও তাই যেমন তারা বাংলার মানুষের মূল ধারার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারেনি তেমনি পারেনি আউলিয়ায়ে কিরাম-এর নির্দেশিত ছহীহ আক্বীদা ধারণ করতে। হক্ব মত-পথের বাইরে বরং ওহাবী আক্বীদায় অন্তর্ভুক্ত হওয়াতে তাই তারা খোদায়ী রহমত শূন্য হয়ে সালেহীনদের পথ, সূরা ফাতিহায় প্রার্থিত সোজা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ওহাবী আক্বীদার পথ ধরে তারা এখন মার্কিনীদের চর উসামা বিন লাদেন, মোল্লা ওমর আর বাংলা সন্ত্রাসী ও গালিবের এজেন্ট হয়েছে। তাদের মিত্র সেজেছে। তাদের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, আর সন্ত্রাসবাদে দীক্ষা নিয়েছে। মীলাদ ক্বিয়ামকারীদের বাড়ীঘর পেট্রোল ঢেলে জ্বালানোর পর তারা মাজার শরীফে বোমা হামলা চালিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী গজার মাছ হত্যা করেছে। রূহানিয়ত আর আমলের দ্বারা ইসলামের কাজ করার পরিবর্তে তারা এখন বোমা আর গ্রেনেড হামলাকেই গ্রহণ করেছে।  এক্ষেত্রে ওহাবী খারেজী লা-মাযহাবী জামাতীসহ সব বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরকারা ঐক্যমতে পৌঁছেছে। যেমনটি হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “উম্মতে মুহম্মদীর ৭৩ ফিরকার মধ্যে হক মাত্র একটি। পৃথক এই একটিই। আর বাকী সবগুলোই এক প্রকার। তারা সবাই  জাহান্নামে মিলিত হবে।” (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক)

 -মুহম্মদ আরিফুর রহমান,  ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব।  খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১১         

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১

 রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাক্বীক্বী নায়িব ও ওয়ারিছ। তাঁর বিরোধীতাকারীরা মুনাফিক, কাফির ও শয়তানের অনুসারী -১১     

 “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে সিনেমা”  নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’রা ॥ সর্বাঙ্গে দায়ী তারা 

অবশেষে তথাকথিত ইসলামী জামাতের আমীর নিজামী ও বায়তুল মোকাররামের তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক, এরপর এবার মুফতে আমিনীও রাজারবাগ শরীফের তাজদীদ মানতে বাধ্য হলেন