শাইখুল হাদীছ দাবী করলেও হাদীছ শরীফে নিষিদ্ধ ঘোষিত লংমার্চ এখন তার মজ্জাগত  বার বার লংমার্চের পর সবশেষে ইহলোক থেকে পরলোকে লংমার্চ করেই কি তিনি মাওসেতুং-এর সাথে মিলিত হবেন?

সংখ্যা: ১৩৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

লংমার্চের প্রবর্তক চীনা কমুনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান মাও জেডোঙের (মাওসেতুং) স্বীকারোক্তিঃ “ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহে লংমার্চ এ ধরনের প্রথম ঘটনা। একটি ইস্তেহার, একটি প্রচার বাহিনী, একটি বীজ বপনকারী যন্ত্র। পানগু যখন স্বর্গ থেকে মর্ত আলাদা করে দেয় এবং তিন রাজা ও পাঁচ সম্রাট রাজত্ব করত সেই থেকে ইতিহাস কি কখনো আমাদের মত একটি লংমার্চ প্রত্যক্ষ করেছে? দীর্ঘ বারো মাস বেশ কিছু বিমান আকাশ থেকে আমাদের ওপর নজর রেখেছে এবং বোমা ফেলেছে। মাটিতে কয়েক শত-সহস্র মানুষের এক বিশাল বাহিনী আমাদের ঘেরাও, অনুসরণ, গতিরোধ করেছে এবং প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, পথে আমরা অবর্ণনীয় কষ্ট এবং বিপদের মোকাবেলা করেছি; তথাপি দু’পা ব্যবহার করে আমরা এগারোটি প্রদেশের দৈর্ঘ্যে এবং প্রস্থে বিশ হাজার লী’র বেশী দূরত্ব অতিক্রম করেছি। জিজ্ঞেস করতে চাই ইতিহাসে কি কখনো এ ধরনের লংমার্চের ঘটনা ঘটেছে? না, কখনোই নয়। লংমার্চ একটি ইস্তেহার। লংমার্চ গোটা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে লাল ফৌজ বীরদের বাহিনী, সাম্রাজ্যবাদীরা এবং তাদের পা চাটা কুকুর জিয়াং জিয়েশি (চিয়াং কাই-শেক) ও তার দোসররা নপুংসক, আমাদের ঘেরাও, অনুসরণ, প্রতিরোধ এবং গতিরোধে তাদের চরম ব্যর্থতার কথাও লংমার্চ জানিয়ে দিয়েছে। লংমার্চ একটি প্রচারণী শক্তিও। এগারোটি প্রদেশের প্রায় ২০ কোটি জনগণকে লংমার্চ দেখিয়েছে লাল ফৌজের পথই তাদের মুক্তির একমাত্র পথ। লংমার্চ ছাড়া ব্যাপক জনগণ স্বল্প সময়ে কিভাবে লাল ফৌজের বাস্তবতা সম্পর্কে জানতে পারতেন? লংমার্চ বীজ বপনকারী যন্ত্রও। এগারোটি প্রদেশে লংমার্চ যে অসংখ্য বীজ বুনেছে, তা মঞ্জুরিত হবে, পাতা গজাবে, বিকশিত হবে, ফল ধারণ করবে এবং ভবিষ্যতেও ফসল দেবে। এক কথায় আমাদের জন্য বিজয় এবং শত্রুর জন্য পরাজয়ের মধ্য দিয়ে লংমার্চ শেষ হয়েছে। কারা লংমার্চকে বিজয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছে? কমিউনিস্ট পার্টি। কমিউনিস্ট পার্টি ছাড়া এ ধরনের একটি লংমার্চ কল্পনাই করা যেতনা।” পাঠক! এভাবেই লংমার্চের স্মৃতিচারণ করেছেন লংমার্চের একক কৃতিত্বের দাবিদার- চীনা কমুনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান মাওসেতুং। যা তার Selected works of maolsetung, Vol-1, Page-161-12 এ সঙ্কলিত হয়েছে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, চীনের পর বাংলাদেশে লংমার্চ করার ক্ষেত্রে মাওসেতুং-এর প্রধান খলীফা কে?  এই প্রশ্ন যদি করা হয় তবে অনিবার্যভাবে তার জবাবে বলতে হয় তথাকথিত শাইখুল হাদীছ আজিজুল হকের কথা। কমুনিস্ট মাওসেতুং-এর এতই একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে উঠছেন তিনি যে, ঘাটে-অঘাটে শুধু লংমার্চের আহবান জানানোই এখন তার প্রবৃত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলাবাহুল্য, বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার প্রতিবাদে তথা ইসলামের বিষয়ে তিনিই প্রথম কমুনিস্ট মাওসেতুং লংমার্চের আহবান জানান। এখন ইসলাম ছাড়াও দুনিয়াবী বিষয়েও লংমার্চের আহবান করতে তিনি পারদর্শী হয়েছেন এবং তা তার চেতনায় পরিণত হয়েছে। এই সেদিনও তার স্বগোত্রীয় দৈনিক, তথাকথিত ইনকিলাবে তার বরাতে খবরের হেডিং করলো, “প্রয়োজনে টিপাইমুখী লংমার্চ। দেশী-বিদেশী চক্রের ষড়যন্ত্র রুখতে ঐক্য গড়তে হবে।” (সূত্রঃ দৈনিক ইনকিলাব ১৭ই ডিসেম্বর ৩নং পৃষ্ঠা।) উল্লেখ্য, শাইখুল হাদীছ দাবী না করে যদি তিনি এ কথা বলতেন তাহলে আমাদের বলার কিছু থাকত না। কারণ, শাইখুল হাদীছ হিসেবে তার নিশ্চয়ই জানা রয়েছে, বেদ্বীন ও বদ্দ্বীনদের অনুসরণ ও অনুকরণ সম্পর্কে আল্লাহ পাক-এর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,  “যে ব্যক্তি আমাদের ভিন্ন অন্য জাতির অনুসরণ করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।” (তিরমিযী, মিশকাত) তিনি আরো বলেন,  “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (আবূ দাউদ, মুসনাদে আহমদ) যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আলোচ্য শাইখুল হাদীছ দাবীদারের হাশর-নশর যে চীনা কমুনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান, লংমার্চের একক কৃতিত্বের দাবীদার মাওসেতুং-এর সাথেই হতে পারে; তিরমিযী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ তথা সিহাহ্ সিত্তাহ্র হাদীছ শরীফের সে কথা তথাকথিত শাইখুল হাদীছের অস্বীকারের কোন উপায় আছে কি?  “তোমরা চিন্তিত হয়োনা, পেরেশানীগ্রস্ত হয়োনা তোমরাই কামিয়াব হবে যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক।” এই আয়াত শরীফের প্রেক্ষিতে অথবা  “যতক্ষণ তোমরা কুরআন-সুন্নাহ্ আঁকড়ে ধরবে ততক্ষণ তোমরা কামিয়াবীর শীর্ষে থাকবে। আর যখনই তা থেকে বিচ্যূত হবে তখনই লাঞ্ছিত পদদলিত হবে।”  বিদায় হজ্বের মশহুর এই হাদীছ শরীফের বর্ণনায় বাংলাদেশের সিলেট জেলার ওপারে ভারতে টিপাইমুখী বাঁধ নির্মাণের প্রস্তুতি গ্রহণে ফারাক্কার চেয়েও ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কায় শাইখুল হাদীছ দাবীদার দেশবাসী মুসলমানদের উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফের আমল করতে বলবেন এটাই ছিল কাঙ্খিত ও বাঞ্ছিত। কিন্তু তা না করে তিনি যেভাবে বার বার লংমার্চের দিকে মুসলমানদের আহ্বান করছেন তাতে মুসলিম উম্মাহ্ ভীষণ শঙ্কিত।  কারণ, কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক বলেন যে, “যখন কেউ ইসলাম ছেড়ে কুফরীর দিকে ঝুঁকে; তখন আল্লাহ পাক সেদিকেই তাকে ঝুঁকান যেদিকে সে ঝুঁকেছে।”  তথাকথিত শাইখুল হাদীছের অবস্থা হয়েছে তদ্রুপ। কুরআন-সুন্নাহ্ ছেড়ে কমুনিস্ট মাওসেতুং-এর লংমার্চের দিকে ঝুঁকার কারণে এখন তার মনে-মগজে-মুখে শুধু লংমার্চ আর লংমার্চ।  অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, যেনো-তেনো বিষয়ে লংমার্চ আর লংমার্চের আহ্বান জানাতে জানাতে হায়াত শেষ হয়ে যাবার উপক্রম হলে দুনিয়া থেকে পরকালে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি লংমার্চের ঘোষণা দিবেন। বিশ্বাবাসীকে জানিয়ে দিবেন,  লংমার্চ করেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ছিলেন আমৃত্যু লংমার্চের চেতনাবাহক ও কমরেড মাওসেতুং-এর একনিষ্ঠ প্রচারক।  ফলতঃ উদ্ধৃত হাদীছ শরীফ মুতাবিক লংমার্চের প্রক্রিয়ায় নাস্তিক কমুনিস্ট-এর সাথে আবাদুল আবাদের জন্য জাহান্নামে থাকাই হতে পারে তার অনিবার্য পরিণতি। ইসলামের খোলশধারী এসব শাইখুল হাদীছ দাবীদার সম্পর্কেই হাদীছ শরীফে ব্যক্ত হয়েছে, “নিশ্চয়ই সৃষ্টির নিকৃষ্ট হচ্ছে নামধারী আমলহীন আলিম।”

-মুহম্মদ তারীফুর রহমান, ঢাকা।

একটি অভূতপূর্ব ওয়াজ শরীফ এবং কম্পিউটারে কুরআন শরীফ, মাজার শরীফের উপরে ভাসমান দৃশ্য ও তাঞ্জানিয়ার সেই ছেলের কথা

প্রসঙ্গঃ দরসে বুখারীর পঞ্চদশ বছর পূর্তি নামধারী জাহিরী আলিমদের ডামাডোলের বিপরীতে মুজাদ্দিদুয্ যামানের পরিচয়

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৫

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -১৪

কুরআন শরীফের মু’জিযা এবং মাহিউদ্দীনের মিথ্যাচারীতা