– হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
আউলিয়া-ই-কিরামগণের নাম মুবারকে কিভাবে লক্বব মুবারক সন্নিবেশিত হয় (পূর্ব প্রকাশিতের পর) উল্লেখ্য যে, কামালতে নুবুওওয়াত, কামালতে রিসালত এবং কামালতে উলুল আ’যম মাক্বামের হিস্সাপ্রাপ্ত আউলিয়া-ই-কিরামগণ নিজস্ব ইখতিয়ার বহির্ভূত। তাঁদের নিজস্ব কোন মত নেই, কোন পথ নেই। তাঁরা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ পাক-এর মতে মত, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথে পথ। কাজেই নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ যেমন ওহী ব্যতীত কোন কথা বলেননা, কোন কাজ করেন না তদ্রুপ তাঁরাও ইলহাম-ইলকা ব্যতীত কোন কাজ করেন না, কোন কথা বলেন না। এ প্রসঙ্গে হাদীছে কুদসীতে বর্ণিত আছে। আল্লাহ পাক বলেন,
ولا يزال عبدى يتقرب الى بالنوافل حتى احببته فاذا احببته فكنت سمعه الذى يسمع به وبصره الذى يبصربه ويده التى يبطش بها ورجله التى يمشى بها وان سالنى لاعطينه.
অর্থঃ- “আমার বান্দা নফল আমল করতে করতে এমন এক পর্যায়ে উপনীত হয় যে, আমি তাকে মুহব্বত করি। আর আমি যখন তাকে মুহব্বত করি তখন আমি তার কান হই যে কান দ্বারা সে শুনে। আমি তার চোখ হই যে চোখ দ্বারা সে দেখে। আমি তার হাত হই যে হাত দ্বারা সে ধরে। আমি তার পা হই যে পা দ্বারা সে চলে। আর সে আমার নিকট যা প্রার্থনা করে আমি তা তাকে দিয়ে থাকি।” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ) অর্থাৎ সেই বান্দার সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনুগত্যের শৃঙ্খলে এমনভাবে আবদ্ধ হয়ে যায় যে, তাঁর কথা হয় আল্লাহ্ পাক-এরই কথা। কাজ হয় আল্লাহ্ পাক-এরই কাজ। কোন কিছু শোনা বা দেখাটাও হয় আল্লাহ্ পাক এর জন্যই শোনা বা দেখার অর্ন্তভুক্ত। গাউছুল আয’ম হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি যা করি এবং তোমাদেরকে যা বলি তা মূলতঃ আমার নয়। বরং আল্লাহ্ পাকই আমার মুখ দিয়ে তা বলে থাকেন। (ফাতহুর রব্বানী) লক্বব মুবারকের সংখ্যা নিরূপন আউলিয়াই কিরামগণের লক্বব বা উপাধির সংখ্যা নিরুপন করা সম্ভব নয়। কেননা লক্ববের উৎস হচ্ছে ছিফত বা গুণ। গুণবাচক নামকেই সাধারণত লক্বব বা উপাধি বলা হয়। কাজেই যিনি যত গুণের অধিকারী মূলত: তিনি তত লক্ববের অধিকারী হয়ে থাকেন। এ প্রসঙ্গে আশিকে রসূল আল্লামা আলী ইবনে বুরহানুদ্দীন হালাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
لايخفى ان جميع اسمائه صلى الله عليه وسلم مشتقة من صفات قامت به توجب له المدح والكمال فله من كل وصف اسم.
অর্থঃ- “প্রকাশ থাকে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সমস্ত নাম মুবারকই তাঁর মহান গুণাবলী থেকে উদ্ভুত। তাঁর প্রশংসা করা এবং শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দেয়া ফরয/ওয়াজিব হিসেবে প্রমাণিত। সুতরাং তাঁর প্রত্যেকটি ছিফত বা গুণই হচ্ছে লক্বব মুবারকের অন্তর্ভুক্ত।” (সিরাতুল হালাবিয়া ১/১২৮) (অসমাপ্ত)