“আপনি সব মানুষের চেয়ে মুসলমানদের অধিক শত্রুরূপে ইহুদী ও মুশরিকদের পাবেন।” সূরা মায়িদার ৮২নং আয়াত শরীফের আলোকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদীদের ষড়যন্ত্রমূলক গোপনীয় বই-‘প্রটোকল’ যা পরবর্তীতে ফাঁস হয়ে যায় তার ছত্রে ছত্রে পাওয়া যায় তাদের জঘন্য ষড়যন্ত্রের বিবিধ কূটকৌশল। যাতে প্রমাণিত হয় যে, আজকের তথাকথিত শাইখুল হাদীছ, খতীব, মুফতি, মুফাস্ছিরে কুরআন, মাওলানা তথা পীর ছাহেবরা ইসলামের নামে ছবি তোলা, হরতাল, লংমার্চ, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী, নির্বাচন, গণতন্ত্র, নারী নেতৃত্ব সমর্থন ইত্যাদি যেসব হারাম কর্মসূচী দ্বারা তথাকথিত ইসলামী আন্দোলন করছে তা মূলতঃ ঐ ইহুদীরা একশত বছর পূর্বেই তাদের প্রটোকলে লিপিবদ্ধ করেছিল; কিন্তু নামধারী উলামারা এখনও তা বুঝছেনা। ইহুদী প্রটোকলের ভাষ্যনুযায়ী আরো প্রতিভাত হয় যে, গণতান্ত্রিক কায়দায় ক্ষমতা বদলের প্রক্রিয়া মূলতঃ ইহুদীদের সূত্র। আর এভাবে গণতান্ত্রিক সরকারে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের দ্বন্দ্ব-সংঘাতে যে উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরী হয় তা লুফে নেয় ইহুদীরা।
উল্লেখ্য, ইহুদীরা নিজেরাও জানে যে অধিকাংশ জনগণের দোহাই একটা বোধশক্তিহীন, যুক্তিবিবর্জিত ও অন্ধ শক্তি। কিন্তু সেটাকেই ওরা মুসলমানদের কাছে তথা সারাবিশ্বে বড় সুন্দর করে একমাত্র চালিকা শক্তিরূপে উপস্থাপন করে আসছে। আর মুসলমান ওদেরই পাতা ফাঁদে পূর্ণরূপে নিমজ্জিত হয়েছে। এবং এর দ্বারা ওরা ওদের ভাষায় মুসলমানদের মাতাল করে যেরূপ ইচ্ছা সেরূপ ব্যবহার করছে। ওরা বিভিন্ন এজেন্ট লাগিয়ে মুসলমানদের চরিত্র নষ্ট করছে, দুর্নীতি ও বিলাসিতায় মত্ত করে দিয়েছে। নিম্নে এ সম্পর্কে ওদের প্রটোকলের ভাষ্য তুলে ধরা হলো- “রাজনৈতিক আজাদী একটা খেয়ালমাত্র- বাস্তব সত্য নয়। ক্ষমতাসীন ব্যক্তি বা দলকে অপসারণ করার উদ্দেশ্যে জনগণকে নিজের দলে শামিল করা দরকার আর এ উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য আজাদীর কাল্পনিক ছবিটিকে কখন কিভাবে ব্যবহার করতে হবে তা জেনে নেয়াই হচ্ছে বুদ্ধিমান ব্যক্তির কৃতিত্ব। এ কাজটা সহজ হয়ে যায় যদি বিরোধী পক্ষ ও আজাদী তথাকথিত উদারতাবাদের সংক্রামক রোগে রোগাক্রান্ত হয় এবং এসব খোশ-খেয়ালের তাগিদে নিজের ক্ষমতার অংশবিশেষ ছেড়ে দিতে সম্মত হয়। এখানেই আমাদের উপস্থাপিত সূত্রের বিজয়। জীবনের বাস্তব নিয়মানুসারেই সরকারের শিথিল শাসন ক্ষমতা অনতিবিলম্বে নয়া সরকারের হস্তগত হয়। কেননা, জাতির অন্ধ জনশক্তি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা ছাড়া একদিনও চলতে পারে না। এজন্যই নয়া শাসন কর্তৃপক্ষ পুরাতন শিথিল কর্তৃপক্ষের স্থান অতি সহজে দখল করে নেয়। আজাদীর ধারণা কখনও বাস্তবে রূপ লাভ করতে পারেনা। কেননা, এ ধারণাটিকে বাস্তবায়িত করার সঠিক উপায় কারো জানা নেই। মানুষকে কিছুদিনের জন্য নিজ হাতে সরকার পরিচালনার জন্য ছেড়ে দেয়াই যথেষ্ট। এর ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই তারা একটা উচ্ছৃঙ্খল জনতায় পরিণত হবে। ঠিক এ সুযোগেই আমরা তাদের মধ্যে আমাদের নিজস্ব পন্থায় খেলা শুরু করবো। যেন অচিরেই তাদের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় এবং যুদ্ধের দাবানলে তাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা ও জাতীয় মর্যাদা জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কোন রাষ্ট্র নিজস্ব অব্যবস্থার দরুন ধ্বংস হোক অথবা আভ্যন্তরীণ গোলযোগের দরুন বহিঃশত্রুর পদানত হোক, যে কোন অবস্থায়ই যে তার পতন ঘটে এটা অনস্বীকার্য। আর এ উভয় ধরণের পতন ঘটানোর পন্থাই রয়েছে আমাদের আয়ত্বে। পুঁজির সর্বাত্মক ক্ষমতাও সম্পূর্ণরূপে আমাদেরই করায়ত্তে। রাষ্ট্রকে এমন অবস্থায় পৌঁছানো হবে যে, সে পুঁজির সামান্য একটু খড়-কুটার জন্য উদগ্রীব হয়ে সাহায্যের আশায় হাত বাড়াবে। অন্যথায় সে ধ্বংসের অতল গহ্বরে ডুবে যাবে। সাধারণ জনসমষ্টিকে যুক্তিসঙ্গত উপদেশ ও ভাল কথার দ্বারা সাফল্যজনকভাবে শাসন করার আশা পোষণ করা কি সুস্থ মস্তিস্ক ও যুক্তিবাদী লোকের পক্ষে সম্ভব? বিপরীতে কোন যুক্তি ও উপদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা যুক্তি খুঁজে বের করা কঠিন নয়। এসব যুক্তি যতই ভিত্তিহীন হোক না কেন, তা জনসমষ্টিকে আকৃষ্ট করতে পারে। কেননা তাদের বিচার-বুদ্ধি খুবই স্থূল ও অগভীর। সাধারণ জনসমষ্টির ভেতর ও বাইরের সকল লোকই সামান্যতম উত্তেজনা, মূল্যহীন আক্বীদা-বিশ্বাস, পূর্ব প্রচলিত রীতিনীতি এবং ভাবাবেগ দ্বারা পরিচালিত হয়ে সহজেই দলীয় কোন্দলে লিপ্ত হয়। এর ফলে কোন বিষয়েই তারা সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারে না। এমনকি একটি পরিপূর্ণ যুক্তিসঙ্গত বিষয়েও তারা মতৈক্য স্থাপনে ব্যর্থ হয়। জনসভাগুলোতে গৃহীত প্রতিটি প্রস্তাবই বিশেষ ঘটনাচক্র অথবা সাজানো সংখ্যাগরিষ্ঠের উপর নির্ভরশীল। আর জনগণের এ সংখ্যা গরিষ্ঠতা রাজনৈতিক গুপ্ত তথ্যাবলী সম্পর্কে নিতান্তই অজ্ঞ। তাই তারা এমন সব হাস্যস্পদ প্রস্তাব গ্রহণ করে যা প্রচলিত শাসন ব্যবস্থায় নৈরাজ্যের বীজ বপন করে দেয়। রাজনীতি ও নৈতিকতার মধ্যে কোন সাদৃশ্য নেই। নৈতিকতার দ্বারা চালিত শাসক কদাচ দক্ষ রাজনীতিবিদ নয়। তাই তার ক্ষমতার আসন সর্বদা টল-টলায়মান। যে ব্যক্তি দক্ষতার সাথে শাসন করতে চায় তাকে ধূর্ততা ও অন্যের মনে বিশ্বাস জন্মানোর চাতূর্য রপ্ত করতে হবে। সরলতা ও সাধুতার মত মহান গুণাবলী রাজনীতি ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা মহাপাপ। কেননা, এ গুণাবলী শক্তিশালী দুশমনের চাইতেও অধিকতর সক্রিয় ও সুনিশ্চিত পন্থায় ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে তার আসন থেকে নামিয়ে দেয়। মুসলমানদের পরিচালিত রাষ্ট্রে এসব বিষয় সদগুণ বলে বিবেচিত হতে পারে কিন্তু আমাদের পক্ষে কখনও এসব বিষয়কে গ্রহণ করা বিজ্ঞের কাজ বিবেচিত হবে না। আমাদের দৃষ্টিতে শক্তিই হলো ন্যায়। প্রচলিত ‘ন্যায়নীতি’ একটি গুণবাচক শব্দমাত্র। বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই। ন্যায়নীতির সবচাইতে ভালো ব্যাখ্যা হলো- আমি যা চাই, তা আমাকে দাও যেন আমি প্রমাণ করতে পার যে, আমি তোমার চেয়ে বেশী শক্তিশালী।” বর্তমান জরাজীর্ণ কর্তৃত্বের মুকাবিলায় আমাদের কর্তৃত্ব হবে অত্যন্ত পরাক্রান্ত। আমরা এতটা শক্তিসঞ্চয় করতে চাই যেন কোন ধূর্ততম ব্যক্তির পক্ষেও আমাদের ক্ষমতাকে হেয় প্রতিপন্ন করা সম্ভব না হয়। যে পর্যন্ত তা না হবে সে পর্যন্ত আমাদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অদৃশ্য থাকবে। কাজেই আমাদের পরিকল্পনা রচনার সময় কোন পন্থা ভাল এবং কোন পন্থা নৈতিক নিয়মাবলী সিদ্ধ, এসব বিষয় বিচার-বিবেচনা করার চাইতে কোন বিষয়টি আমাদের জন্য জরুরী ও উপকারী তাই লক্ষ্য করা উচিত। আমাদের কাছে এমন একটি সুপরিকল্পিত কার্যসূচী রয়েছে যার এক চুল পরিমাণ অংশও বাতিল করলে আমাদের শত শত বছরের শ্রম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। সন্তোষজনক কার্যক্রম গ্রহণের বিস্তারিত উপায় উপলব্ধি করার জন্য জনসাধারণের নৃশংসতা, শৈথিল্য এবং অস্থিরতা সম্পর্কে জ্ঞান হওয়া দরকার। এরা নিজেদের জীবনের ভাল-মন্দ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে কি পরিমাণ অযোগ্য, তাও উপলব্ধি করা অত্যন্ত জরুরী। এটাও মনে রাখতে হবে যে, জনসমষ্টির শক্তি একটা বোধশক্তিহীন যুক্তি বিবর্জিত ও অন্ধ শক্তি। এ শক্তি সর্বদাই কোন চতুর মহলের অনুগ্রহ ও পরামর্শের মুখাপেক্ষী। এক অন্ধ অপর অন্ধকে গভীর খাদে নিক্ষেপ করা ছাড়া মূলতঃ কোন পথ দেখাতে পারে না। অনুরূপভাবে জনসাধারণ হলো কতকগুলো মস্তিষ্কহীন লোকের সমষ্টি। যে ব্যক্তি শৈশব থেকেই স্বাধীন শাসন পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষা পেয়েছে একমাত্র সেই রাজনৈতিক বর্ণমালা দ্বারা কখন ও কোন শব্দ কিভাবে গঠন করা যায় তা বুঝতে পারে। একটি জনসমষ্টিকে তাদের নিজেদের অবস্থায় ছেড়ে দিলে তাদেরই মধ্য থেকে উচ্ছৃঙ্খল মহলটি অগ্রসর হয়ে পারস্পরিক ক্ষমতা ও মর্যাদার দ্বন্দ্ব শুরু করে শীঘ্রই সমাজে বহু দল ও উপদল সৃষ্টি করবে এবং সর্বত্র চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সমাজকে ধ্বংস করে দেবে। সাধারণ মানুষের পক্ষে কি শান্তভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হয়ে দেশ পরিচালনার ব্যাপারে ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে উঠে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব? তারা কি বাইরের দুশমনের আক্রমনের মুখে আত্মরক্ষা করতে সমর্থ? এটা অচিন্ত্যনীয়। এরূপ চেষ্টা করলে জনতার মধ্যে যতগুলো মস্তিস্ক রয়েছে ঠিক তত অংশেই তাদের পরিকল্পনা বিভক্ত হয়ে যাবে এবং বিভিন্ন অংশ পারস্পরিক সাদৃশ্য হারিয়ে এমন একটা দুর্বোধ্য নকশা পেশ করবে যা কার্যকারী করা কিছুতেই সম্ভব নয়।
জনসাধারণ প্রকৃতিগতভাবে বর্বর। সুযোগ পেলেই তারা বর্বরতা প্রকাশ করে। তাই সাধারণ মানুষ আজাদী পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত গতিতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। আর নৈরাজ্য হলো চরম পর্যায়ের বর্বরতা। নেশাগ্রস্ত জানোয়ারের দিকে তাকাও? মদ্যপানজনিত তার মাতাল অবস্থা লক্ষ্য কর, এটাই হলো তাকে যথেচ্ছা ব্যবহার করার উপযুক্ত সময়। এভাবে মুসলমানদের মাতাল করে কাজ উদ্ধার করার পথ একমাত্র আমাদেরই জ্ঞাত। এরা তরল পানীয় নেশায় বিভোর। এদের যুব সমাজ নৈতিক অধঃপতন ও শ্রেণী বিদ্বেষে বোধশক্তিহীন হয়ে গেছে। এদের এ অবস্থায় ঠেলে দেয়ার জন্য আমাদের এজেন্টগণ ধনীদের গৃহশিক্ষক, উর্দি পরিহিত (বা বিশেষ পোশাকে সজ্জিত) ভৃত্য ও ধাত্রীরূপে এবং কেরানী ও অপরাপর শ্রেণীর কর্মচারীর বেশে কাজ করছে। জনসমাগম স্থলে আমাদের বিশেষ নারী এজেন্টগণও মুসলমানদের নৈতিক চরিত্রের পতন ঘটানোর কাজে লিপ্ত রয়েছে আর নারী এজেন্টদের সঙ্গে মুসলিম সমাজের ঐসব সোসাইটি গার্লও রয়েছে; যারা স্বেচ্ছায় দুর্নীতি ও বিলাসিতার ক্ষেত্রে তাদের অনুসরণ করে চলে। আমাদের গুপ্ত সংকেত হলো শক্তি ও বিশ্বাস করানো; শক্তিই রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিজয় হয়। এটা গোপন রাখা নেতার অপরিহার্য নীতি। যে শাসক তার শাসনদণ্ড নতুন শক্তির নিকট হস্তান্তর করতে প্রস্তুত নয়, ধূর্ততা এবং অপরের আস্থা অর্জনই হবে তার শাসননীতি। এটাই কল্যাণের একমাত্র পথ। সুতরাং ঘুষ, প্রবঞ্চনা ও বিশ্বাসঘাতকতা থেকে আমরা বিন্দুমাত্র পশ্চাদপদ হবনা, যদি তা আমাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধির সহায়ক হয়। রাজনীতিক্ষেত্রে অপরের সম্পত্তি কি উপায়ে নির্দ্বিধায় জবরদখল করা যায় তা আমাদের অবশ্যই জানতে হবে, যদি এ জবরদখলের দ্বারা অপরের বশ্যতা ও আমাদের কর্তৃত্বের পথ খোলাসা হয়।
-সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলমগীর, ঢাকা।
ইরাকের মীরজাফর সাদ্দাম রাশিয়ার বেলারুশ যেতে চায় কেন?
প্রসঙ্গঃ ছবি, অশ্লীল ছবি ইনকিলাব ও হাটহাজারীর আহমক শাফী উপাখ্যান