শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২০

সংখ্যা: ১২০তম সংখ্যা | বিভাগ:

 “আপনি সব মানুষের চেয়ে মুসলমানদের  অধিক শত্রুরূপে ইহুদী ও মুশরিকদের পাবেন।” সূরা মায়িদার ৯২নং আয়াত শরীফের আলোকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদীদের ষড়যন্ত্রমূলক গোপনীয় বই-‘প্রটোকল’ যা পরবর্তীতে ফাঁস হয়ে যায় তার ছত্রে ছত্রে পাওয়া যায় তাদের জঘন্য ষড়যন্ত্রের বিবিধ কূটকৌশল। যাতে প্রমাণিত হয় যে, আজকের তথাকথিত শাইখুল হাদীছ, খতীব, মুফতি, মুফাস্ছিরে কুরআন, মাওলানা তথা পীর ছাহেবরা ইসলামের নামে ছবি তোলা, হরতাল, লংমার্চ, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী, নির্বাচন, গণতন্ত্র, নারী নেতৃত্ব সমর্থন ইত্যাদি যেসব হারাম কর্মসূচী দ্বারা তথাকথিত ইসলামী আন্দোলন করছে তা মূলতঃ ঐ ইহুদীরা এক শত বছর পূর্বেই তাদের প্রটোকলে লিপিবদ্ধ করেছিল। অর্থাৎ আজকের তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনের নামে গৃহীত হারাম কর্মসূচী যথা ছবি তোলা, লংমার্চ, হরতাল, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী, গণতন্ত্র, নির্বাচন ইত্যাদি সব ওদেরই ইচ্ছার প্রতিফলন। কিন্তু নামধারী উলামারা এখনও তা বুঝছেনা। এক যুগ ছিল, যখন মানুষ সিংহাসনে আসীন রাজা-মহারাজাদেরকে খোদার সত্যিকার প্রতীক মনে করতো এবং নির্দ্বিধায় রাজতান্ত্রিক স্বৈরাচারের নিকট আত্মসমর্পণ করতো। কিন্তু যেদিন আমরা মানুষের মনে তাদের অধিকারের প্রশ্ন জাগিয়ে দিয়েছি, সেদিন থেকেই তারা সিংহাসনে আসীন রাজ-রাজাদের মরণশীল সাধারণ মানুষ মনে করতে শুরু করেছে। রাজা-বাদশাগণ স্বয়ং খোদার খলিফা এই বিশ্বাস যেদিন জনগণের মন থেকে বিদুরিত হয়েছে এবং খোদার প্রতি জনগণের ঈমানকে যখন আমরা হরণ করেছি, তখন থেকে শাসনদন্ড প্রকাশ্য রাস্তায় জনগণের হাতের মুঠোয় এসে পড়েছে। আর ঠিক সে সময়ই আমরা সে বস্তুটি দখল করে নিয়েছি। উপরন্তু সুচতূরভাবে প্রণীত সূত্র ও বাক-চাতুরী, জীবন যাপনের সাধারণ নিয়মাবলী ও অন্যান্য ধরণের প্রবঞ্চনার মাধ্যমে জনসাধারণ ও বিশেষ ব্যক্তিদের ইচ্ছামত পরিচালনা করার কৌশল একমাত্র আমাদের শাসণতন্ত্র সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞদেরই জানা আছে। বিশ্লেষণ, পর্যবেক্ষণ ও সুক্ষ্ম হিসাব-নিকাশের দক্ষতায় আমাদের জুড়ি নেই। রাজনৈতিক কার্যক্রমের পরিকল্পনা প্রণয়ণে আমরা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। একমাত্র জেসুইটদেরই (ঔবংঁরঃং) আমাদের সঙ্গে তুলনা চলতে পারতো। কিন্তু সহজেই আমরা এ দলের বদনাম ছড়িয়ে দিয়েছি এবং আমাদের নিজেদেরকে সযতেœ অন্ধকারে লুকিয়ে রেখেছি। যাহোক, দুনিয়াবাসীর কাছে ক্যাথলিকদের (ঈধঃযড়ষরপং)  শাসন-ব্যবস্থা এবং জাইওনদের (তরড়হ) সর্বাত্মক ক্ষমতার মধ্যে কোন পার্থক্য বোধগম্য না হলেও খোদার নির্বাচিত আমাদের সম্প্রদায়ের নিকট এর গুরুত্ব কিছুতেই উপেক্ষণীয় নয়।   সাময়িকভাবে হয়ত মুসলমান সমাজ জোট গঠন (ঈড়ধষরঃরড়হ) করে আমাদের মুকাবিলা করতে পারে। কিন্তু এ বিপদ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য আমরা তাদের মধ্যে দৃঢ়ভাবে বিভেদের বীজ বপন করে দিয়েছি। সে বীজকে কিছুতেই তুলে ফেলা সম্ভব নয়।  মুসলমান সমাজে আমরা এক ব্যক্তিকে অপর ব্যক্তির এবং এক জাতিকে অপর জাতির বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছি। গত ১৪ শতাব্দী জুড়ে আমরা তাদের মধ্যে ধর্মীয় ও অন্যান্য ধরণের বিদ্বেষ ছড়িয়েছি। এজন্যই আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করার সময় একটি রাষ্ট্রও অপর কোন রাষ্ট্রের সহযোগিতা আশা করতে পারে না। কেননা এটা তাদের বিলক্ষণ জানা আছে যে, আমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলে লাভ তো হবেই না, বরং ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি। আমরা অত্যন্ত শক্তিশালী। আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করার সাধ্য কারো নেই। পৃথিবীর জাতিগুলো কোন ক্ষুদ্রতম গোপন চুক্তিও আমাদের বাদ দিয়ে করতে পারে না। “আমার মাধ্যমেই রাজাগণ দেশ শাসন করে।” পয়গম্বরগণই বলে গেছেন যে, “আল্লাহ্ তায়ালাই আমাদের মনোনীত করেছেন সারা দুনিয়া শাসন করার জন্য। (?)” আল্লাহ্ আমাদের কার্যসিদ্ধির উপযুক্ত প্রতিভাও দান করেছেন। (?) যদি আমাদের বিরুদ্ধে শক্তির নিকট সে প্রতিভা ধরা দেয়, তাহলে তারা আমাদের বিরুদ্ধে লড়বে। কিন্তু পুরাতন প্রতিভার তুলনায় নবজাত প্রতিভা শিশুমাত্র। তাই তাদের বিরুদ্ধে আমরা নির্মমভাবে লড়াই করে যাবো। দুনিয়া ইতোপূর্বে এমন ভীষণ লড়াই কখনও দেখতে পায়নি।    প্রার্থনা করি, তাদের হাতে প্রতিভা যেন অনেক দেরীতে আসে। রাষ্ট্রগুলোর সকল চাকা ইঞ্জিনের শক্তিতেই ঘুরে আর সে ইঞ্জিন অর্থাৎ সর্বশক্তি একমাত্র আমাদেরই দখলে। আমাদের বিজ্ঞ মুরুব্বিগণ রাজনৈতিক অর্থ-ব্যবস্থা সম্পর্কিত যে বিজ্ঞান আবিস্কার করেছে, তা সুদূর অতীত থেকেই পুঁজির প্রাধাণ্য প্রচার করে চলছে। সমব্যয় ব্যবস্থার মাধ্যমে পুঁজির যদি অবাধে অগ্রসর হতে দেয়া হয়, তাহলে সে শীগগীরই শিল্প এবং ব্যবসাক্ষেত্রে ইজারাদারী কায়িম করে ফেলবে। দুনিয়ার সর্বত্র এক অদৃশ্য হাতের কারসাজিতে এ ব্যবস্থা ইতোপূর্বে কার্যকরী হতে চলেছে। এ ধরণের স্বাধীনতা শিল্পপতিদের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা তুলে দেবে এবং এর ফলে তারা সাধারণ লোকদের উপর অধিকতর জুলুম করতে পারবে। জলন্ত অগ্নি শিখাকে আমাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধির কাজে ব্যবহার করা আগুন চাপা দেয়ার চাইতে অধিকতর সঙ্গত। অপরের মতবাদের প্রতিবাদ করার চাইতে যে কোন মতবাদকে গ্রহণ করা এবং আমাদের মতলব মাফিক ব্যাখ্যা পেশ করে তাকে কাজে লাগানো অধিকতর সুবিধাজনক। আমাদের ডিরেক্টরেটের (উরৎবপঃড়ধঃব)) প্রধান কার্যসূচি হচ্ছে নিম্নরূপঃ  য সমালোচনার মাধ্যমে গণমনকে বিভ্রান্ত করা। য প্রতিরোধ প্রবৃত্তি দমন করার জন্য মানুষের মনকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে সর্বদা হালকা বিষয়ের দিকে ফিরিয়ে রাখা। য মানব মনের সকল উদ্যোগ-উৎসাহকে নিরর্থক ও অকল্যাণজনক সংগ্রামে অপচয় করে দেয়া।  সকল যুগেই মানুষ কাজের পরিবর্তে কথার গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। কেননা, তারা শুধু বাইরের দিক দেখেই পরিতৃপ্ত। প্রতিশ্রুতি কাজে রূপায়িত হচ্ছে কিনা, তা যাচাই করে দেখার জন্য তারা একবারও চেষ্টা করেনি। সুতরাং আমরা অনেকগুলো লোক দেখানো সংস্থা কায়িম করবো। এগুলো জনগণকে মুগ্ধ করার জন্য তাদের সামনে উন্নতি ও সমৃদ্ধির বিভ্রান্তিকর প্রমাণাদি পেশ করবে।    আমরা সকল দল ও মতের উদ্দেশ্য অনুধাবন করার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে চাপিয়ে নেবো এবং তাদের সম্পর্কে বিরূপ প্রচার করার জন্য বক্তাদের মুখে ভাষা তুলে দেবো। আমাদের এ বক্তাগণ অবিরাম বক্তৃতা করে শ্রোতাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেবে এবং বাক্-শক্তির এক অভাবনীয় দৃষ্টান্ত পেশ করবে। জনমতকে আমাদের নিয়ন্ত্রণে এনে বিভ্রান্ত করার জন্য চতুর্দিক থেকে আমরা একই সঙ্গে পরস্পর-বিরোধী কতকগুলো মতবাদের প্রচার শুরু করবো। এই প্রচার এত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চালিয়ে যাবো যেন ইতোমধ্যে মতবাদের দ্বন্দ্বে মুসলমান সমাজের মাথা ঘুরপাক খেতে শুরু করে এবং তারা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে বাধ্য হয় যে, রাজনীতিক বিষয়ে কোন মতবাদ পোষণ না করাই উত্তম। কেননা এ বিষয়ে জন সাধারণের কোন জ্ঞান নেই। সে সঙ্গে তাদের মনে এ বিশ্বাসও জন্মাবে যে, রাজনীতি কি উপায়ে চলে তা একমাত্র নেতাগণই বুঝতে পারেন। কাজেই সাধারণ মানুষের এতে হস্তক্ষেপ  না করাই সঙ্গত। এটা হলো আমাদের এক নম্বর গোপন নীতিভঙ্গি (চধষরপু)। অভ্যাস, ধৈর্য ও বেসামরিক জীবন যাত্রার ব্যর্থতাকে এমন পর্যায়ে পৌছিয়ে দিতে হবে যেন সমাজের একটি লোকও বিভ্রান্তিকর পরিবেশে নিজের সঠিক ভূমিকা নির্ণয় করতে না পারে এবং এর ফলে পরস্পর পরস্পরের নিকট দূর্বোধ্য হয়ে উঠে। এ পদক্ষেপ আমাদের উপায়েও সাহায্য করবে। সেটা হলোঃ সকল দলের লোকদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বপন, আমাদের বশ্যতা স্বীকার করতে অনিচ্ছুক সকল ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে বিচ্ছিন্নকরণ এবং আমাদের লক্ষ্য-পথে বাধা সৃষ্টি করতে সক্ষম ব্যক্তিদের উদ্যম-উৎসাহকে স্তিমিতকরণ। ব্যক্তিগত উদ্যম-উৎসাহের চাইতে অধিকতর বিপজ্জনক বিষয় আমাদের জন্য আর কিছুই নয়। প্রতিভা বলে চালিত ব্যক্তিগত উদ্যম আমাদের জন্য লক্ষ লক্ষ লোকের বিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার চাইতেও বেশী বিপজ্জনক। মুসলমান সমাজের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আমরা এমনভাবে পরিচালিত করবো, যেন তারা উদ্যোগ-উৎসাহ নিয়ে কোন কাজে হাত দিলেই হতাশায় তাদের হাত অসাঢ় হয়ে আসে। কার্যকলাপের স্বাধীনতা থেকে উদ্ভুত মানসিক উত্তেজনার বশবর্তী একদল অপর দলের সম্মুখীন হলে পরস্পর সংঘাতে অবতীর্ণ হয় এবং এ সংঘাতের ফলে গভীর মানসিক ক্ষোভ, উদ্যমহীনতা সেগুলোর মাধ্যমে আমরা গইম তথা মুসলমানদেরকে এমনভাবে মাটিতে শুইয়ে দেবো, যেন তারা বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষমতা আমাদের হাতে তুলে দেয় এবং ধীরে ধীরে নির্বিবাদে আমরা  পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের  শাসন ক্ষমতা আমাদের নিয়ন্ত্রণে এনে একটি বিশ্বজোড়া সুপার গর্ভনমেন্ট কায়িম করতে পারি।  আজকের শাসকদের স্থলে আমরা এমন একটি ব্যবস্থা কায়েম করবো, যাকে সুপার গভর্নমেন্ট সবোচ্চ শাসন-ব্যবস্থা বলা হবে। আমাদের সুপার গভর্নমেন্ট-এর হাত সর্বত্র সাড়াশীর মত নির্বিবাদে পৌঁছে যাবে এবং এর অধীনস্থ সংস্থাগুলো এমন ব্যাপক ক্ষমতাসম্পন্ন হবে যে, পৃথিবীর বর্তমান রাষ্ট্রগুলোকে পদানত করা আমাদের সুপার গভর্নমেন্টের (সুপার গভর্নমেন্ট বলতে এখানে জাতিসংঘকে বোঝানো হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘও মূলতঃ ইহুদীদেরই কার্যকাঠামো) পক্ষে বিন্দুমাত্র কঠিন হবে না। -সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলমগীর, ঢাকা।  প্রসঙ্গঃ ‘ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা’ এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাববার (১৪)  কথিত গণতন্ত্র বিচার বিভাগকে মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশেষতঃ হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্ট অর্থাৎ উচ্চতর আদালতকে খুবই শ্রদ্ধার সাথে ও ভরসার সাথে মূল্যায়ণ করা হয়।  এসব আদালতের বিচারকদের বিচারপতি বলা হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, বিচারপতিরা অভিজাত বংশের, প্রজ্ঞাসম্পন্ন ও প্রশ্নাতীত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকেন। কিন্তু পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকার বিচারপতিরাও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।  বলাবাহুল্য, বাংলাদেশেও যে বিচারপতির ভূমিকা নিয়ে কথা উঠেনি তা নয়। বিচারপতিরা নিরপেক্ষ হবেন এটাই কথিত গণতন্ত্রের ভাষ্য। কিন্তু এ নিরপেক্ষতা এখন প্রশ্নের সম্মুখীন।    মূলতঃ গোটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই প্রশ্নের সম্মুখীন। গণতন্ত্রে  নির্বাচন যাতে সততার সাথে, নিরপেক্ষতার সাথে তথা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হতে পারে সে জন্য আলাদা নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যে যথাযথ ভূমিকা রাখেনা সে সম্পর্কে সব রাজনৈতিক দলই কমবেশী অভিযোগ করেছে। এ নিয়ে বহু দেন-দরবার এমনকি বিদেশী বিশেষজ্ঞেরও প্রেসক্রিপশন নেয়া হয়েছে। কিন্তুু তাতেও গোলমাল থামেনি।   অবশেষে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফর্মূলা প্রনয়ণ করা হয়েছে। এটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের গণতন্ত্রীদের জন্য এক মহা আবিস্কার। এটা দক্ষিণ এশিয়াসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই প্রশংসিত হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু দৃশ্যপট দর্শনে মালুম হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনে নিরপেক্ষতা রক্ষার এ মহা আবিস্কারও যেন আজকে ফুটো বেলুনের মত চুপসে যাচ্ছে।  সংবিধানের ৫৮ গ (৩)  অনুসারে বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিদের মধ্যে যিনি সবার শেষে অবসর নিয়েছেন তিনিই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত হবেন।  এতদ্বপ্রেক্ষিতে অভিযোগ উঠেছে যে, ক্ষমতাসীন সরকার প্রধান বিচারপতি নিয়োগে এমনসব কলা-কৌশল প্রয়োগ করছেন যাতে করে তাদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ক্ষমতাসীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হন তাদেরই ভাবধারার লোক। গত ৯ই জুন দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত “সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বয়স সীমা বাড়ানোর বিল বাজেট অধিবেশনে আসছে” শীর্ষক নিম্নোক্ত প্রতিবেদন থেকে তাই প্রতিভাত হয়।    “আপিল বিভাগের বিচারপতি কে এম হাসানকে দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি করার সিদ্ধান্ত সরকার চূড়ান্ত করেছে। বর্তমান প্রধান বিচারপতি মাইর্নু রেযা চৌধুরী এর পরই কে এম হাসানকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হবে। তিনি ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারি অবসর গ্রহণ করবেন। এ পরিস্থিতিতে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা দু’বছর বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। …. এসবই করা হচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের পদকে মাথায় রেখে।         …. প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দীর্ঘ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, রাষ্ট্রপতির কাছে কে এম হাসানকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রস্তাব করা হবে। কিন্তু সরকারের হিসাব অনুযায়ী জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচনের সময় তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারবেন না। এ পর্যায়ে বিচারপতিদের বয়স বৃদ্ধি করতে সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরীর একটি প্রস্তাব নতুন করে সামনে আনা হয়েছে। প্রস্তাবটিতে সামান্য পরিবর্তন করে বাস্তবায়ন করার পক্ষে সরকারের নীতি নির্ধারকরা মত দিয়েছেন। …. এ সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনীর বিল পাস হতে পারে। সেক্ষেত্রে বর্তমান প্রধান বিচারপতি মাইনূর রেজা চৌধুরী আরও দু’বছর প্রধান বিচারপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন।           … পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রশ্নে সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি মুহম্মদ রুহুল আমিন এবং দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মুহম্মদ ফজলুল করিমকে সুপারসিড (ডিঙ্গানো) করা হবে। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের আপিল বিভাগে নিয়োগের প্রশ্নে কয়েক দফা জ্যেষ্ঠদের ডিঙ্গানোর নজির রয়েছে। কিন্তু প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরণের ঘটনা বাংলাদেশে আগে কখনও ঘটেনি। … বর্তমান জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি মুহম্মদ রুহুল আমিন সম্পর্কে বলা হয়, ২০০৬ সালের ১ জুন তিনি অবসর গ্রহণ করবেন। সে হিসাবে আগামী নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হবেন তিনি। তাকে আওয়ামী লীগ সরকার হাইকোর্টের দু’জন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙ্গিয়ে আপিল বিভাগে নিয়োগ করে। তিনি আপিল বিভাগে জ্যেষ্ঠ হয়েছেন বলে নোটে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। অপরদিকে বিচারপতি কে এম হাসান সম্পর্কে বলা হয়, জাতীয়তাবাদী দলের গঠনের সময় থেকেই তিনি বিভিন্ন ভূমিকা পালন করেন। তিনি বিএনপি’র বিগত শাসনামলে দূতপুলের সদস্য ছিলেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের সংগঠিত করা ছাড়াও বিএনপি সরকারের কূটনৈতিক দায়িত্বও তিনি সাফল্যের সঙ্গে পালন করেন। বর্তমান প্রধান বিচারপতি ছাড়া বিচারপতি হিসাবে  তিনিই সবার মধ্যে জ্যেষ্ঠ। বিগত সরকারের সময়ে তাকে সুপারসিড করায় বর্তমান সরকারের সময়ে তিনি আপিল বিভাগে বিচারপতি হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বিচারপতি কে এম হাসানকে সরকারি দল আগামী সংসদ নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করতে আগ্রহী। কিন্তু তাকে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি করা হলেও তিনি ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারীতে অবসর গ্রহণ করবেন। এরপর বর্তমান জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি  মুহম্মদ রুহুল আমীনকে প্রধান বিচারপতি করা সরকারের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়বে। অন্যরা আগেই অবসরে চলে যাবেন। সেক্ষেত্রে বর্তমান সংসদের মেয়াদ ২০০৬ সালের অক্টোবর মাসে শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে বিচারপতি রুহুল আমিন অবসর গ্রহণ করলে তিনিই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন। এ পরিস্থিতিতে বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধির পুরনো প্রস্তাব বিবেচনায় এসেছে।           সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী গত বছরের ৬ মার্চ এই প্রস্তাবটি পাঠিয়েছিলেন। তিনি অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের বয়স ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৬০ বছর এবং সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের বয়স ৬৫ থেকে ৬৮ করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু এই প্রস্তাব অনুযায়ী সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের বয়স তিন বছর বৃদ্ধি করা হলে বর্তমান প্রধান বিচারপতিই হবেন আগামী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান। আবার বিচারপতি কে এম হাসান তখন পর্যন্ত থাকবেন কর্মরত। সে জন্যই তিন বছরের স্থলে দুই বছর অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসর গ্রহণের বয়স সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ৬৭ বছর করার চিন্তা করা হচ্ছে।”  উল্লেখ্য, যদিও রিপোর্টটি কিছুদিন পূর্বের এবং এর সবকিছুই বাস্তবায়িত হয়নি তবুও এটি প্রণিধানযোগ্য। এ কারণে যে এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন সরকার যে তত্ত্বাবাধয়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রভাব তৈরীর প্রক্রিয়া চালায় তা এ রিপোর্টটিতে ফুটে উঠেছে।  অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলতে হয়, গণতন্ত্রে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য বিভিন্ন বেড়া দেয়া হলেও বেড়াই ক্ষেত খেয়ে ফেলে। সে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার করা হলেও বর্তমানে দেখা যাচ্ছে  সে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রক্রিয়াও এখন অস্বচ্ছতার অধীন।

প্রতিটি রাজনৈতিক দলই কথিত গণতন্ত্রের চরম ম্পর্শকাতর বিভাগ, বিচার বিভাগকে পর্যন্ত প্রভাবান্বিত করার সুযোগ সৃষ্টি করতে চায়। বিচারপতি এমনকি প্রধান বিচারপতি এমনভাবে নিয়োগ করতে চায় যাতে করে তথাকথিত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা  হন তাদের নিজস্ব লোক। নির্বাচনে নিজস্ব লোকের দ্বারা ফায়দা হাসিলের জন্যই এ কৌশল। অর্থাৎ কিনা তাহলে সত্যিকার অর্থে বহুল প্রচারিত এই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্দলীয় আদলটি কার্যতঃ থাকছেনা। সোজা কথায় এই তত্ত্বের অধীনেও নির্বাচনটি আর স্বচ্ছ হচ্ছেনা। যদিও এটি ছিল কথিত গণতন্ত্রীদের জন্য শেষ প্রচেষ্টা। এখন কার্যতঃ এ প্রচেষ্টা যে ব্যর্থ শুধু তাই প্রমাণিত হলনা বরং এ ধারা এখন এতদিনের কথিত গণতন্ত্রীদের জন্য তুলনামূলক স্বচ্ছ দাবীকৃত বিচারবিভাগের উচ্চতর  পর্যায় তথা বিচারপতি ও প্রধান বিচারপতির ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করল। মূলতঃ এসব কিছুর মূলেই রয়েছে গণতন্ত্রের ব্যর্থতা। বিশেষতঃ যারা ইসলামের নামে গণতন্ত্র করেন তাদের জন্য এ ব্যর্থতা উপলদ্ধি করা খুবই সোজা যদি না তাদের দিলে মহর পড়ে থাকে।

কারণ তারাই ইসলামের সে মহান বাণী প্রচার করে থাকেন যে, ইসলাম পরিপূর্ণ ধর্ম। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে গণতন্ত্র তথা নির্বাচন প্রথাতো ইসলাম থেকে আসেনি। এসেছে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের তরফ থেকে। যারা গোমরাহ ও লা’নত প্রাপ্ত। কাজেই তাদের প্রচলিত প্রথার মধ্যেই রয়েছে লা’নত।

যেমন হাদীছ শরীফে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্রাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে পদপ্রার্থী হয় তার প্রতি লা’নত।’ তাই এখনই সময় ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা সম্পর্কিত বিষয়টি ভাববার।

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ্, বাসাবো, ঢাকা।

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৪

প্রসঙ্গঃ গণতন্ত্র; এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার- ১০

একটি অভূতপূর্ব ওয়াজ শরীফ এবং কম্পিউটারে কুরআন শরীফ, মাজার শরীফের উপরে ভাসমান দৃশ্য ও তাঞ্জানিয়ার সেই ছেলের কথা

প্রসঙ্গঃ দরসে বুখারীর পঞ্চদশ বছর পূর্তি নামধারী জাহিরী আলিমদের ডামাডোলের বিপরীতে মুজাদ্দিদুয্ যামানের পরিচয়

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৫