প্রশংসার সবকিছুই মহামহিম রাব্বুল আলামীনের জন্য। সাথে ছলাত ও সালামের সবই রহমতুল্লিল আলামীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ঘিরে আবর্তিত ও ব্যাপ্ত।
ইসলামী বছরের দ্বিতীয় মাস ছফর। হায়াৎ মুবারকের শেষ বছরে, ১১ হিজরী সালে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুর্হরম মাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন, যা ছফর মাসেও অব্যাহত থাকে। তবে এ মাসের শেষ বুধবার সকালে তিনি অনেকটা সুস্থ্যতা বোধ করেন। এ খবর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা মুহব্বতের ফাল্গুধারায় উৎফুল্ল হয়ে উঠেন এবং মুক্ত হস্তে দান করে শুকরিয়া আদায় করেন। ‘আখিরী চাহার শোম্বা’ অভিহিত এই দিনটির ফযীলত হাছিলে আমাদেরও তাই যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিৎ।
স্মর্তব্য যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর প্রতি কেবল মুহব্বতই রাখেননি, মুহব্বতের হক্বও তাঁরা আদায় করেছেন। সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম সুন্নত পালন করেছেন।
কিন্তু আজকে সাধারণ মুসলমানতো বটেই এমনকি আলিম নামধারীরাও সুন্নত পালনে সচেষ্ট নয়। উল্টো হাজারো হারাম কাজে তারা লিপ্ত। আজ পেপার পত্রিকায় আলিম নামধারীদেরকে নিয়েও বহু ব্যঙ্গ কার্টুন দেখা যায়। কিন্তু তারা প্রতিবাদমুখর হতে পারেন না। কারণ, অহরহ ছবি ছাপানোর পাশাপাশি ইসলামের নামে বিবিধ হারাম ও হাজারো দুর্নীতির সাথে জড়িত হয়ে তথা ইসলামের নামে মৌলবাদ জঙ্গীবাদী তৎপরতা চালিয়ে এর ভিত্তি তারাই তৈরী করেছেন।
মূলত: এসবই ছিল আলিম নামধারীদের প্রতি- ইহুদী-খ্রিষ্টানদের পাতা ফাঁদ। আর আজকের ব্যঙ্গ চিত্র প্রকাশের প্রাক পটভূমিকা তৈরীর সুদূর প্রাসারী পরিকল্পনা। তারা তাতে সফল হয়েছে। তারা তাদের এজেন্ট ধর্মব্যবসায়ীদের সহযোগীতায় ‘প্রাণীর ছবি তোলা নাজায়িয’ মুসলমানের ভেতর এ অনুভূতি দূর করার পাশাপাশি ধর্মব্যবসায়ীদের, জঙ্গীবাদে সম্পৃক্ত করার পরই আজকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ব্যঙ্গ চিত্র ছাপানোর সুযোগ নিয়েছে। কিন্তু তারপরও নির্বিকার ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ‘ছু’। কেবল মাত্র যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীই ‘ছবি তোলা নাজায়িয’- ইসলামের অনিবার্য ও অবিচ্ছেদ্য সে কথা উচ্চকিত করছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজকে প্রতিবাদ হচ্ছে ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে। ভাবখানা এই যে, ছবি ব্যঙ্গ না হয়ে সাধারণ চিত্র হলে বুঝি সমস্যা হত না। কিন্তু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামূল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ব্যঙ্গ চিত্র নয়; কোন সাধারণ মুসলমানের চিত্রও নয়, এমনকি কোন প্রাণীর চিত্রও যে জায়িয নয়- মুসলমান হিসেবে এ অনুভূতির প্রচার ও আমল যদি থাকতো তাহলে ইহুদী- খ্রিষ্টানরা কখনই আজকের এই ব্যঙ্গ চিত্র প্রকাশের সাহস পেত না।
মূলত: ওদের এ সাহস দুঃসাহসে পরিণত হয় যখন ওরা দেখে আজকের ধর্মব্যবসায়ী, উলামায়ে ছুরাই হক্বের প্রতিভূ, যামানার মুজাদ্দিদের ‘প্রাণীর ছবি তোলা হারাম’- এ ফতওয়ার বিরোধীতা করছে। তাঁর মাহফিলে বাঁধা দিচ্ছে, অপবাদ রটনা করছে।
তবে স্মর্তব্য যে, তাবত ধর্মব্যবসায়ী, নামধারী মাওলানারাও যদি যামানার মুযাদ্দিদের বিরুদ্ধে একজোট হয়, তারা যদি তাদের বিরোধীতার মাত্রা আকাশ সীমা পর্যন্ত পৌঁছায়, তারা যদি নির্যাতনের রোলার সারা যমীনে বিস্তার করে তবু যামানার ইমাম ও মুযাদ্দিদ চিন্তিত নন, শঙ্কাগ্রস্থ নন, পেরেশানীগ্রস্থ নন।
কারণ, হক্ব ও নাহক্বের দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে সৃষ্টির শুরু হতেই। প্রথম মানব, প্রথম নবী, প্রথম রসূল হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম সৃষ্টির পর হতেই ইবলিস তাঁর শত্রুতা করেছিল, অপবাদ রটনা করে বলেছিল, ‘হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম-এর চেয়ে সে ভাল।’ (নাউযুবিল্লাহ্)
অর্থাৎ দুষ্টরা দুষ্টামি করবে এটাই স্বাভাবিক। আবু জাহিল, আবু লাহাব গং আল্লাহ্ পাক-এর রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীর মুবারকে নামাযরত অবস্থায় উটের নারী-ভুড়ি চাপিয়ে দিয়েছে। তায়েফের ময়দানে বৃষ্টির মত ইট-পাটকেল মেরেছে।
সুতরাং উলামায়ে ‘ছূ’ তথা বিরোধীতাকারীদের এ ধারণা করার অবকাশ নেই যে, তারা যেখানে অপপ্রচারের বিষবাষ্প ছড়িয়ে ধুম্রজাল তৈরী করেছে অথবা বৃষ্টির মত প্রস্তর বর্ষণ করেছে, দুনিয়াবী দৃষ্টিতে যেখানকার অবস্থা বিশেষ প্রতিকুল, জীবনের নিরাপত্তা যেখানে হাড়ির মত ঠুনকো, সেখানে বুঝি যামানার ইমাম ও মুজাদ্দিদের তাজদীদের কাজ থমকে দাঁড়াবে। বরং উলামায়ে ‘ছূ’দের চোখ কপালে উঠলেও খোদায়ী ইচ্ছায় ও মদদে আবারও তিনি ঠিকই সেখানে যাবেন, মাহ্ফিল করবেন। উলামায়ে ‘ছূ’দের মুখোশ উন্মোচন করবেন, হক্ব মত ও পথ প্রতিষ্ঠা করবেন। তায়েফের সুন্নত আদায়ের পাশাপাশি মক্কা বিজয়ের সুন্নতও তিনি আদায় করবেন ইনশাআল্লাহ।
মূলতঃ যামানার মুজাদ্দিদ স্বার্থক মেছদাক ঐ আয়াত শরীফের, “তোমরা চিন্তিত হয়োনা, তোমরা পেরেশানীগ্রস্থ হয়োনা, তোমরাই কামিয়াব হবে যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক।” স্মর্তব্য যে, উলামায়ে ‘ছূ’রা অতি শীঘ্রই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। যামানার মুজাদ্দিদের বিরোধীতা করার কারণে- তারা বেপর্দা হওয়া, ছবি তোলা, লংমার্চ করা, হরতাল করা, মৌলবাদ দাবী করা, ব্লাসফেমী আইন চাওয়া, নারী নেতৃত্ব সমর্থন করা ইত্যাদি হারাম, কুফরী কাজে লিপ্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে অতি শীঘ্রই খোদায়ী গযব তাদের গ্রেফতার করবে। যেমন, কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আপনার শত্রুরা নির্বংশ, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।” অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, “সত্য এসেছে, মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ার যোগ্য।”
মূলতঃ মুজাদ্দিদে আ’যমই এ সত্যের ধারক-বাহক। মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে তাঁর সোহবতের মাধ্যমে সত্য পথ ও মতের অন্তর্ভুক্ত করুন। (আমীন)