সম্পাদকীয়

সংখ্যা: ১৪৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

 সব প্রশংসা আল্লাহ্ পাক-এর জন্য। যিনি হায়াত এবং মউতকে সৃষ্টি করেছেন, কার আমল ভাল এবং খারাপ তা প্রমাণিত করার জন্য। ভাল-মন্দ পার্থক্য নিরূপনকারী সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বেশুমার ছলাত ও সালাম। উম্মতে মুহম্মদীর প্রতি, মহান আল্লাহ্ পাক-এর যেসব অমূল্য নিয়ামত রয়েছে তার মধ্যে শবে বরাত একটি। বরাত বা তক্বদীর ফায়সালার রাত হিসেবে এ রাতটি বিশেষ তাৎপর্যম-িত। কাজেই বিশেষ আমল, দোয়া ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে এ রাতের ফযীলত হাছিলে প্রবৃত্ত হওয়া উচিত। মূলতঃ কেবল শবে বরাতই নয়, পুরো শাবান মাসই হচ্ছে আমল বৃদ্ধির মাস।           উল্লেখ্য, আমলের ইমাম হচ্ছে ইল্ম। ইল্মের ধারক ও বাহক ও আলিমের, আমলের ব্যাপকতা ও  শুদ্ধতা তাই অত্যাবশ্যকীয়। যিনি হাদী, যিনি আলিম তিনি পরিচালিত হবেন গভীর তাক্বওয়া ও হিকমত দ্বারা। প্রসঙ্গতঃ স্মর্তব্য, হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আলিম নামধারীদের ভুল, মুনাফিকের বিরোধ ও ভ্রান্তপথে চালিত শাসকদের হুকুম, ইসলাম বিনষ্টের কারণ।” বলাবাহুল্য উপরোক্ত তিনটি অবস্থাই বর্তমানে বিশেষভাবে বিরাজ করছে।  ইসলামের নামে কোন কোন মহল আজ বোমা মেরে, হত্যা ও সন্ত্রাস চালিয়ে ইসলাম কায়েমের অলীক কল্পনায় বিভোর। তথ্য সূত্রে প্রতিভাত হয়েছে এরা লা-মাযহাবী সম্প্রদায় বা আহলে হাদীছ নামধারী তথা ওহাবী গোষ্ঠী। ইতিহাস প্রমাণ করে মুহম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব নজদী ও তার ওহাবী মতবাদ, ইসলামের মাঝে ফিরক্বা ও ফিৎনা তৈরীর জন্য ইহুদীদেরই সৃষ্টি। এরা শবে বরাতে বিশ্বাসী নয়। এরা আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সমুন্নত মর্যাদা-মর্তবায় বিশ্বাস করে না। ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করে না ও মীলাদ শরীফ পাঠ করে না। ওলীআল্লাহদের মানে না। মাজার শরীফকে শ্রদ্ধা করে না। তাই মাজার শরীফে বোমা হামলায় এরা সক্রিয়। মূলতঃ এরা বাতিল ৭২ ফিরকার অন্তর্গত। প্রসঙ্গতঃ প্রশাসন তথা গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে ‘লা-মাযহাবী’ বা ‘আহলে হাদীছ’ কথাটি বার বার এসেছে। কিন্তু এই লা-মাযহাবী বা আহলে হাদীছ সম্প্রদায়ের আক্বীদা ও দর্শন যে এদেশের সিংহভাগ মুসলমানের অনুভূতি ও বিশ্বাসের সাথে গভীর সংঘাতময় চেতনা; তদপ্রেক্ষিতে সরকারের ভূমিকা এখনও নিষ্ক্রিয়। মূলতঃ সরকারকে শুধু বিচ্ছিন্নভাবে জে,এম,বি বা জামা’আতুল মুজাহিদিনকে নিষিদ্ধ করলে চলবে না বরং নিষিদ্ধ করতে হবে লা-মাযহাবী তথা আহলে হাদীছ নামধারী গোটা ওহাবী সম্প্রদায়কেই। ইহুদীদের ছত্রছায়ায় এদের নেটওয়ার্ক বিশ্বব্যাপী। রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজের মত অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা এদের অর্থায়ন করছে। বিষয়টি বহুবার অবগত ও সতর্ক করার পরও সরকারের নিষ্ক্রিয়তা তাদেরকে এতটা শক্তিশালী করেছে। এদের মধ্যে এহসার, জায়েরি এহসার ও নেতা ইত্যাদি বিভক্তির লোক থাকলেও আসলে এরা নির্মোহ হয়ে কাজ করেছে তা নয়। এদের সর্বনিম্ন কর্মীরা পায় হাজার টাকার ঊর্ধ্বে। জে.আই.সি জানিয়েছে, দেশব্যাপী ৫০০ স্পটে অংশগ্রহণকারী ৩০,০০০ বোমা হামলাকারীকে বোমা হামলার জন্য মোট দশ লাখেরও বেশী টাকা দেয়া হয়েছে। আর  মূল হোতারা পেয়েছে শত শত কোটি টাকা। পত্রিকান্তরে প্রকাশ ইসলামী ঐক্যজোট নামধারী এক তথাকথিত মুফতি এমপি এখন ব্যাংক খোলার জন্য উদগ্রীব হয়েছেন। যার জন্য প্রয়োজন একশত কোটি টাকা। উল্লেখ্য, এই এমপিই “আমরা সবাই তালেবান বাংলা হবে আফগান” এই শ্লোগানের রচয়িতা। সুতরাং এরাও যে তালেবানী কায়দায় বোমা হামলার প্রতিভূ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।  পাশাপাশি মওদুদীবাদের সাথে সালাফী তথা ওহাবী মতবাদের একটা আদর্শিক মিল রয়েছে। এ কারণে আহলে হাদীছ নামধারীদের অনেকেই মওদুদীবাদের সক্রিয় কর্মী। সুতরাং একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠের মত বলা যায় যে, তারা সবাই …. “বিপ্লব! বিপ্লব! তথাকথিত সশস্ত্র ইসলামী বিপ্লবে বিশ্বাসী।” মুসলমান দেশে, মুসলমানের বিরুদ্ধে ‘জিহাদ জিহাদ জিহাদী’-এ ে াগানের বাকধারী। বিগত সরকারের আমলে তাদের বয়ানের ক্যাসেটগুলোর ময়নাতদন্ত করলেই এসত্যগুলো বেরিয়ে আসবে। আমরা মনে করি আমলহীনতা তথা আদর্শিক শূন্যতা থেকেই ইসলামের নামে এ সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদের উৎপত্তি। মূলতঃ যারা  যেনোতেনোভাবে ইসলাম কায়িম করতে চায় মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক এর প্রতি ঈমান রাখে না। তারা মুসলমান নয়। কারণ ইসলামের মালিক আল্লাহ পাক। আল্লাহ পাক বান্দার মূল্যায়ন এমনকি ইসলাম কায়িমেরও মুখাপেক্ষী নন। তাই আল্লাহ পাক-এর মনোনীত ও নির্দেশিত পথের বাইরে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ আর বোমা হামলা চালিয়ে ইসলাম কায়িমের স্বপ্ন দেখা আল্লাহ পাক-এর সঙ্গে শত্রুতা এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করা ছাড়া অন্য কিছুই নয়। স্মর্তব্য, আল্লাহ পাক সবার দ্বারা দ্বীন ইসলামের খিদমত নেন না। ইসলাম আল্লাহ পাক-এর মনোনীত দ্বীন। ঠিক এই দ্বীনও তিনি যার দ্বারা কায়িম করাবেন তিনিও হবেন তাঁর খাছ মনোনীত। রূহানী ভাবে খাছ তাওয়াল্লুক সমৃদ্ধ।  বলার অপেক্ষা রাখেনা যে যাবতীয় বেশরা বিদয়াত নির্মূলীকরণের পাশাপাশি হাজার হাজার লুপ্তপ্রায় সুন্নত সাধারণ মানুষের আমলে জিন্দাকরণের প্রেক্ষিতে তথা তাদেরকে তায়াল্লুক মাআল্লাহ করণের পটভূমিকায় যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যমই সে মহান ব্যক্তিত্ব। মহান আল্লাহ পাক তাঁর নেক ছোহবতে আমাদের খাঁটি আমলদার করুন, কামিয়াব করুন। (আমীন)

সম্পাদকীয়

 সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়