সম্পাদকীয়

সংখ্যা: ১৩৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

          আউয়াল ও আখেরের মালিক মহান আল্লাহ পাক-এর জন্যই সব ছানা সিফত। সমগ্র সৃষ্টির মূল লক্ষ্যস্থল- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্যই সব ছলাত ও সালাম।  পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত চারটা হারাম বা সম্মানিত মাস সমূহের মধ্যে একটি রজব। এর প্রথম রাত দোয়া কবুলের রাত, যা শবে বরাত, শবে ক্বদরের বা দু’ঈদের রাতের সমপর্যায়। অপরদিকে এ মাসের প্রথম শুক্রবার ‘লাইলাতুল রাগায়িব’রূপে বিশেষ মর্যাদাবান। উল্লেখ্য, বৃষ্টি হলেও তা সমভাবে গ্রহণ করার ক্ষমতা যেমন প্রকৃতির সবকিছুর নেই, তেমনি রহমতও সবার সমানভাবে গ্রহণ করার কুয়ত নেই। তদুপরি আল্লাহ পাক কারো কারো প্রতি আলাদাভাবে রহমত করেন। আল্লাহ পাক বলেন, “আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা স্বীয় রহমতে দাখিল করে নেন।” (সূরা ফাতাহ/২৫)

আল্লাহ পাক-এর তরফ থেকে খাছ ভাবে রহমতপ্রাপ্ত এধরনের  একজন ওলীআল্লাহ হচ্ছেন সুলতানুল হিন্দ, খাঁজায়ে খাজেগাঁ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশ্তী সান্জেরী, আজমিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। বর্ণিত রয়েছে যে, এক কোটিরও বেশী বিধর্মী তাঁর উছীলায় মুসলমান হন। অসংখ্য, অগণিত লোক ওলীআল্লাহ হন এবং তাঁরাও হিদায়েতের কাজ চালান। মূলতঃ তিনি ছিলেন, আল্লাহ পাক-এর লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ। ইন্তেকালের পর মুহূর্তে তাঁর কপাল মুবারকে সোনালী অক্ষরে লেখা উঠেছিল- “হাযা হাবীবুল্লাহ্ মাতা ফী হুব্বিল্লাহ্।” অর্থাৎ ইনি আল্লাহ পাক-এর হাবীব, আল্লাহ পাক-এর মহব্বতে ইন্তেকাল করেছেন।  ঐতিহ্যমণ্ডিত ফযীলতপূর্ণ ছয়’ই রজব পালনের ধারা বর্তমানেও বিরাজমান। এটি আশাপ্রদ হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অজ্ঞতা, বেশরা-বিদ্য়াত কার্যকলাপ ও মুনাফিকী আশাহতের বিষয়।

হালে নামধারী মাওলানাদের ফতওয়া ও কর্মকাণ্ডে প্রতিভাত হয় যে, সর্বশক্তিমান ও কুদরতময়ী আল্লাহ পাক-এর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস তথা ঈমান তারা হারিয়ে ফেলছেন। তারা প্রতিপন্ন করছেন যে, মহান আল্লাহ পাক ওহী নাযিলের সময় বর্তমান সময় সম্পর্কে অবগত ছিলেন না এবং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্তমান সময়ের নবী নন। তাই তারা ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত ইসলামকে আর অক্ষুণœ রাখতে চাইছেন না। ইসলাম পালনের ক্ষেত্রে, ইসলাম মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তারা ‘বর্তমান সময়’ বলে একটা আলাদা অজুহাত যোগ করছেন। তারা মত প্রকাশ করছেন যে, বর্তমান সময়ে ইসলামের জন্য এটা ভালো, ওটা ভালো বা ওটা মন্দের ভালো ইত্যাদি। বর্তমান সময়ে ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, মৌলবাদী দাবী করা, গণতন্ত্র করা, নির্বাচন করা, নারী নেতৃত্ব সমর্থন করা, ব্লাসফেমী আইন চাওয়া এগুলো ইসলামের জন্য ভালো। অথবা বর্তমান দুরবস্থায় ইসলামের নিয়মনীতি কিছু কাটছাট করলে ভাল হবে।  ইসলামের জন্য এরূপ অনৈসলামিক দলের চেয়ে ওরূপ অনৈসলামিক দল ভাল হবে, ওরূপ অনৈসলামিক দলকে ভোট দিয়ে ইসলামের জন্য ভাল হবে- এসবই মূলতঃ ইসলামের দৃষ্টিতে অলীক কথা।

এ বিষয়য়ে অনিবার্যভাবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ইসলামের জন্য ইসলামই ভাল। সময়ের প্রেক্ষিতে কোন অনৈসলামিক দল বা আচার বা পন্থা ইসলামের জন্য সহায়ক বা ভাল হতে পারে না। ইসলামকে ইসলামের আঙ্গিকে চলতে হলে তার নিজস্ব পথে চলতে হবে। এর অন্যথা হলে সেটা ইসলাম হবে না এবং তার পিছনে ইসলামী মানসিকতাও কাজ করবে না সেটা হবে ইসলামের নাম ব্যবহার করে ফায়দা হাছিলের কূটকৌশল মাত্র। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান, “তবে কি তোমরা কুরআন শরীফের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশ অবিশ্বাস কর।” (সূরা বাক্বারা/৮৫)

 মূলতঃ পরিপূর্ণ দ্বীন হিসেবে ইসলাম নাযিল হবার পরও যারা কাটছাট করতে চায় তাদের প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে বা চায় তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবেনা। বরং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (সূরা আলে ইমরান/৮৫)

স্মর্তব্য যে, গরীবে নেওয়াজ, সুলতানুল হিন্দ, হাবীবুল্লাহ হযরত খাঁজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি আল হাসানী, ওয়াল হুসাইনী, ওয়াল কুরাঈশী-এর চল্লিশ জন সহযাত্রীর বিশিষ্ট জনের উত্তর পুরুষই হলেন বর্তমান যামানায় আল্লাহ পাক-এর লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, মুহিয়্যুস্ সুন্নাহ, আওলাদে রসুল, হযরত মাওলানা শাহ সূফী শায়খ সাইয়্যিদ মুহম্মদ দিল্লুর রহমান আল হাসানী, ওয়াল হুসাইনী, ওয়াল কুরাঈশী, মুদ্দা জিল্লুহুল আলী। রূহানী তায়াল্লুকের বদৌলতে যিনি স্বয়ং রসুলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছ থেকে খেলাফত প্রাপ্ত। সার্বিক সুন্নত পালনে যিনি অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্ব, ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত দ্বীনের প্রতি যিনি বেমেছাল ভাবে নিবেদিত। একমাত্র যাঁর মাধ্যমে সত্যিকার ইসলাম বর্তমানে উদ্ভাসিত। মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে তার নেক ছোহবত, নেয়ামত ও নেক সন্তুষ্টি নছীব করুন। (আমীন)

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়