সব প্রশংসা মহান আল্লাহ্ পাক-এর জন্য। যিনি সব শুকরিয়ার মালিক এবং অসীম ক্ষমাময়। যার অপার করুণায় তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত আরো একটি নতুন বছরের সওগাতের মুবারক সূচনা করলো। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অফুরন্ত দরূদ ও সালাম। যিনি রহমাতুল্লিল আলামীনরূপে পৃথিবীতে আর্বিভূত হয়েছেন।
কালের প্রেক্ষিতে বর্তমানে উম্মতে মুহম্মদী এতই গাফিল যে, তারা গযবের কারণ সম্পর্কে উপলদ্ধি করতে বড়ই বে-খবর, শুধু তাই নয় বরং গযবকে গযব রূপে মালুম করতেও বর্তমানে তারা বড়ই অক্ষম হয়ে পড়ছে। (নাউযুবিল্লাহ) এই যে গ্রীস্মের প্রচন্ড দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড়, শিলাবৃষ্টি, বন্যা, তুফান এগুলো যে আযাব আর গযবেরই অন্তর্ভুক্ত তা ক’জনই বা অনুভব করে। পাশাপাশি, সারাবিশ্বে মুসলমানদের উপর সাম্রাজ্যবাদীদের আক্রমণ তথা ইরাকে বন্দীদের উপর ইতিহাসের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক নির্মম, পাশবিক অত্যাচার ও যে গোটা মুসলিম বিশ্বের জন্য গযবস্বরূপ।তাও বা আমরা ক’জনে হৃদয়াঙ্গম করছি।
উল্লেখ্য, মার্কিনীদের ইরাক দখলের বিরুদ্ধে তথাকথিত সচেতন মুসলমান নেতৃবৃন্দ তথা মাওলানারাও মার্কিনীদের সাম্রাজ্যবাদী অগ্রাসানের দিকটিই মূল্যায়ন করছেন। পাশাপাশি সারাবিশ্বে চরমভাবে সমালোচিত ইরাকী বন্দীদের উপর মার্কিনীদের পাশবিক অত্যাচারের পিছনে কেউ কেউ শুধু জেনেভা কনভেনশনের চরম লঙ্ঘন দেখে আর্তনাদ করেছেন। কিন্তু সুটেট বুটেড তথাকথিত ভদ্রতার মুখোশধারী, গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা তথা মানবাধিকারের বুলিধারী ইঙ্গ-মার্কিনীরা যে এখনও অসম্প্রদায়িকতার মুখোশের আড়ালে কত বেশী সাম্প্রদায়িক, কত বড় ইসলাম বিদ্বেষী, কত কট্টর খ্রীষ্টান, সে বিষয়টিই ইরাকের বন্দী নির্যাতনে আরো একবার খোলামেলা ভাবে প্রকাশ পেয়েছে। কট্টর খ্রীষ্টান এই বর্বররা কঠোর নির্যাতনের মুখে বন্দীকে ইসলাম সম্পর্কে গালিগালাজ করতে বাধ্য করেছে। অতঃপর যীশুর প্রশংসা করলে নির্যাতন বন্ধ করেছে। জোর করে রোজার দিনে খেতে বাধ্য করেছে মদ ও শুকরের গোশত। এড়াছা মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে ঘৃনীত কাজ সমকামিতার মত নানা বিকৃত এবং পাশবিক অশ্লীল কাজ করতে তারা বাধ্য করেছে। মূলতঃ এটি শুধু ইরাকী বন্দীর উপর নির্যাতন নয় বরং এ প্রতীকী নির্যাতন ও অবমাননা দ্বারা তারা গোটা মুসলিম বিশ্বকে চরমভাবে লাঞ্ছিত করেছে। বর্তমান মুসলিম বিশ্বের অসহায়ত্বেকে তারা চরমভাবে উপহাস করেছে। মুলতঃ মুসলমান নামধারী মুনাফিকরাই এ সুযোগ করে দিয়েছে। গত ১৯শে মে এদেশে স্বাক্ষরিত হয়েছে পারসোনাল আইডেন্টিফিকেশন সিকিউর কম্পারিজম এন্ড ইভ্যালিউশন সিস্টেম। (পি আই এস. সি. ই. এস)। এ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রন ছাড়াই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফ.বি.আই তাদের নিজস্ব ক্ষমতাবলে জঙ্গীবাদী, মৌলবাদী তৎপরতা তদন্ত চালাতে পাবে এবং তাদের মনমত ব্যবস্থা নিতে পারেব। উল্লেখ্য মাসিক আল বাইয়্যিনাত এ বহু আগ থেকেই কুরআন-সুন্নাহর দলীল দেয়া হচ্ছে যে, ‘ইসলাম- মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ বিশ্বাস করেনা।’ বলাবাহুল্য, এদেশের চিহ্নিত মৌলবাদী দলগুলো মুলতঃ জামাতী, ওহাবী, খারেজী সালাফী আক্বীদার সাথে সংশ্লিষ্ট। এরা ওলীআল্লাহকে বিশ্বাস করেনা। এরা মাজার শরীফকে সম্মান করেনা। এই মহলটি এখন একের পর এক বিভিন্ন মাজার শরীফে গাজার মাছ, কাছিম হত্যা, পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন ধ্বংস ও চুরি করা ইত্যাদি নানা অপত্যৎপরতা সহ সরাসরি বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালাচ্ছে। মূলতঃ এরা ধর্মের শত্রু, দেশের শত্রু। খোদা না করুন এদের এরূপ অপতৎপরতার ফলেই বিধর্মী মার্কিনীরা ‘এদেশে মৌলবাদের জঙ্গীবাদের ভয়ানক তৎপরতা আছে’ এই ইস্যূ বানিয়ে এদেশে তাদের স্থায়ী ঘাটি বসানোর অপচেষ্টা করতে পারে। উল্লেখ্য এই মৌলবাদী গোষ্ঠী ও তার দোসররা শুধু বেছালপ্রাপ্ত ওলী-আল্লাহ্দেরই নয় বরং এরা বর্তমান জামানার মুজাদ্দিদ, মুযাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর বিভিন্ন মাহ্ফিলে চোরা-গোপ্তা হামলাসহ তার নামে আকাশ-কুসুম অপবাদ রটনা, মিথ্যা প্রপাগান্ডা ইত্যাদি ছড়াচ্ছে।
স্মর্তব্য যে, আল্লাহর রাসূূল হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামেও আবু জাহেল গং বিভিন্ন অপবাদ রটিয়েছিল। কিন্তু মহান আল্লাহপাক এজাতীয় লোকদের প্রকৃতি সম্পর্কে বলেন, “হে রাসূল আপনি তার কথায় কর্ণপাত করবেন না, সে মিথ্যা শপথকারী, ঘৃণিত, অপমানিত, নিন্দাকারী, চোগলখোর, সৎকাজ নিষেধকারী, সীমালংঘনকারী, পাপিষ্ঠ, পাষাণ হৃদয় এবং অধিকন্ত সে অবৈধ সন্তান। (সূরা ক্বলম ১০-১২)
জ্ঞাতব্য যে, এই আয়াত শরীফের তাফসীরো বলা হয়েছে, যারা ওলামায়ে হক্কানী-রব্বানীর নামে মিথ্যা অপবাদ প্রচার করে তারাও উল্লিখিত খারাপ গুণাবলীর অধিকারী হওয়ার কারণে সে খারাপ কাজে উৎসাহ পেয়ে থাকে।
অতএব আমরা মনে করি যে, যেসব ব্যক্তি তথা পত্র-পত্রিকা জামানার লক্ষ্যস্থল হক্ব ওলী আল্লাহ্র নামে মিথ্যা অপবাদ প্রচার করে, ব্যক্তি হিসেবে তারা যেমন নিকৃষ্ট তেমনি কাজ হিসেবেও সেটি পুরোই নিস্ফল এবং পন্ডশ্রম মাত্র। কারণ আখেরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর লক্ষ্যস্থল ওয়ারিছ হিসেবে সমুহ বিদায়াত ও বিদায়াতীদের মিটিয়ে তাঁর দ্বারা আল্লাহ পাক সুন্নতের প্রতিষ্ঠা তথা হেদায়েতের নুর বিকশিত করবেন এটাই আল্লাহপাকের ইচ্ছা। আল্লাহপাক এরশাদ করেন “আল্লাহ তার নূর প্রতিষ্ঠা করবেনই যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।” অতএব এরূপ মহান ওলীআল্লাহর তথা মহান মুযাদ্দিদের স্বত:স্ফূর্ত অনুসরনেই কাঙ্খিত কামিয়াবী লাভ সম্ভব। পরম করুনাময় আল্লাহ্ পাক আমাদেরকে তা নসীব করুন। (আমীন)