সম্পাদকীয়

সংখ্যা: ২৯৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেছেন, “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার যিকির মুবারক উনাকে বুলন্দ করেছি।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইনশিরাহ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

বুলন্দির পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে আমলও করেন। ইরশাদ মুবারক হচ্ছে- “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত শরীফ পাঠ করেন। হে মু’মিনগণ! তোমরাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত শরীফ তথা দুরূদ শরীফ পাঠ করো এবং সালাম শরীফ প্রেরণ করো প্রেরণ করার মতো।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)

ছলাত শরীফ সালাম শরীফ পাঠ করতে হবে নিখুত ও নিরন্তর খুশী প্রকাশের সহিত। ইরশাদ মুবারক হচ্ছে – “হে মানবজাতি! অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালা উনার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট এসেছেন মহান নছীহতকারী, অন্তরের পরিশুদ্ধতা দানকারী, হিদায়েত দানকারী ও ঈমানদারদের জন্য রহমত দানকারী। (ইয়া হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে দিন, তারা যে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার পক্ষ হতে ‘ফযল মুবারক ও রহমত মুবারক’ পেয়েছে সে জন্য তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। নিশ্চয়ই তাদের এ খুশি প্রকাশ করাটা তাদের সমস্ত ইবাদত বন্দেগী থেকেও উত্তম।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)

যথাযথ খুশী করার সাথে সাথে স্বত:স্ফূর্ত ও সমৃদ্ধ ছলাত শরীফ ও সালাম শরীফের সমন্বয়ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ।

চন্দ্র মাসের ধারাবাহিকতায় প্রতি সম্মানিত ঈদ উনার ক্ষেত্রেই বলতে হয়- বছর ঘুরে আবারো এলো মহাসম্মানিত ঈদ। কিন্তু পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর, পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার ক্ষেত্রে এ কথামালা প্রযোজ্য নয়। কারণ পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর, পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ এমন মহাসম্মানিত ঈদ- যার কেবল শুরুই আছে। যার কোনো শেষ নেই। যার কোনো বিরতি নেই। যা অনন্তকালের জন্য।

মহিমান্বিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের শক্তিমত্তা, সুফল ও সমৃদ্ধি কতটুকুই আর না পালনেরই বা ব্যার্থতা ও কুফল কী?

বলার অপেক্ষা রাখে না বিশ্বব্যাপী কথিত ইসলামী স্কলার, মুফতী, মুহাদ্দিস, মালানা, ইমাম, খতীব, ওয়ায়িজ সবারই দৃশ্যত: একটা চাওয়া  মুসলমান যেনো আমলদার হয়। আজকের হারাম কুফরী, বেহায়া-বেপর্দা থেকে মুসলমান ফিরে আসে। ইহুদী-খ্রীষ্টান-মুশরিক-নাস্তিকদের কুটচাল থেকে মুসলমান ফিরে আসে। ইবলিসের প্রতারণা ও নফসের ধোকা থেকে মুসলমান রক্ষা পায়। কিন্তু তা হচ্ছে না কেনো?

পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা ৩০০ কোটির বেশী এবং মুসলমান দেশের সংখ্যা ৬৫-এরও অধিক।

পৃথিবীতে মোট তেল ও গ্যাসের ৮০ ভাগ, কয়লার ৬০ ভাগ, স্বর্ণের ৬৫ ভাগ, রাবার ও পাটের ৭৫ ভাগ এবং খেজুরের ১০০ ভাগই মুসলমান দেশের। সুবহানাল্লাহ!

পৃথিবীর মোট দেশের আয়তনের তিনভাগের একভাগ এখনো মুসলমানদের দেশসমূহ। পৃথিবীর মোট ৩ কোটি সৈন্যের এক কোটিই মুসলমান। সুবহানাল্লাহ! অমুসলিম বিশ্বের ৮৭ ভাগ বাণিজ্যই মুসলমানের সাথে।

মুসলিম বিশ্ব তার জ্বালানি তেল বহির্বিশ্বে রপ্তানি না করলে ইউরোপ-আমেরিকার ইলেক্ট্রনিক, মিডিয়া, প্রযুক্তি, শিল্প-বাণিজ্য সবকিছুতে ধস নেমে আসবে। ওআইসি’র সদস্যভুক্ত ৫৭টি দেশের সক্রিয় সৈন্য রয়েছে প্রায় ৫২ লাখ, সামরিক বাজেট প্রায় ১৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

অর্থাৎ মুসলমানরা চাইলেই যেকোনো মুহূর্তে সারাবিশ্ব দখল করে নিতে পারে। এবং অমুসলিম বিশ্ব তথা লুটেরা কাফিররা মুসলমান বিশ্বের তথা মুসলমানদের সম্পদ হরণ করেই বা নির্ভর করেই বেঁচে আছে। কিন্তু তারপরও আজ মুসলিম বিশ্ব পদানত কেন?

আজ কাশ্মীর ও গাজাবাসীর প্রতি সক্রিয় যুদ্ধ সহযোগীতায়, ইথিওপিয়া- সুদানসহ গরীব মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আর্থিক সহমমীর্তায় সক্ষম ও ধনী মুসলিম দেশগুলোর উদাসীনতা, নিস্ক্রিয়তার পেছনে কারণ কী?

মূলত: মুসলমানদের দুরাবস্থা এবং আমলহীনতা তথা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাওয়ার পেছনে একটাই কারণ তা হল রাহমাতুল্লীল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত থেকে দূরে সরে যাওয়া। যথাযথ শ্রদ্ধাবোধ, সুউচ্চ ধারণা, আক্বীদা আদব থেকে বিচ্যুত হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!

প্রসঙ্গত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন এমন- এক আমল যা মুসলমানের অন্তরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সুদৃঢ় মহব্বতের ভিত্তি তৈরী করে। সে মহান মহব্বতই তাকে পরিপূর্ণ অনুসরণ-অনুকরণে অনুপ্রাণিত করে। চালিত করে। অগ্রসর করে। মর্দে মুজাহিদে উন্নীত করে। হাক্বীক্বী মুমিন মুত্তাকীতে সমুন্নত করে। সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য, ফিতনার এ যুগে প্রবৃত্তির সংশোধন তথা পবিত্র দ্বীন ইসলামী আমলে প্রবৃত্ত হওয়ার জন্য- হামিলু লিওয়ায়িল হামদ, হাবীবে আ’যম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সার্বক্ষণিক রূহানী সংযোগ সমৃদ্ধ ও উনার সুমহান সুন্নত শরীফ দ্বারা সুশোভিত মুকাম্মিলে আ’যম, হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম, ঢাকা রাজারবাগ শরীফের মহাসম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক উনার বিকল্প নেই। পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আযম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সে মহান নিয়ামত মুবারক নছীব করুন। (আমীন)

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়