সব প্রসংশা মহান আল্লাহ পাক-এর জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।
হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমার উম্মতের উলামেয়ে ‘ছূ’দের (ধর্মব্যবসায়ীদের) প্রতি লা’নত অর্থাৎ তাদের জন্য জাহান্নাম। কারণ তারা ইলমকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করত: তাদের যুগের শাসকদের নিকট থেকে অর্থ ও পদ লাভের প্রচেষ্টা চালাবে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসব উলামায়ে ‘ছূ’দের বিরুদ্ধে এই বদ দোয়া করেন যে, আয় আল্লাহ পাক! যারা নিজেদের ইলম দ্বারা সরকার বা দুনিয়াবী ক্ষমতার সাথে ব্যবসা করতে চায়, তাদের ব্যবসায় বরকত দিবেন না।”
উল্লেখ্য, এদেশের সাধারণ মুসলমান সঙ্গতকারণেই ইসলামের লেবাসধারীদের গণতান্ত্রিক রাজনীতি করাকে প্রথম থেকেই ভাল চোখে দেখতেন না। কারণ তারাও বুঝতেন যে ঘণতান্ত্রিক রাজনীতির কলুষতা থেকে ইসলাম অনেক উর্ধ্বে ও পবিত্র। গণতান্ত্রিক রাজনীতির চোরাবালির পথে পরিচালিত হলে, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, ধোকাবজী, নীতিহীনতা, আদর্শবর্জন, ঘন ঘন রং বদল, ওয়াদা ভং্গ ইত্যাদি মুনাফিকীর আবর্তে আকণ্ঠই নিমজ্জিত হতে হয়। তারপরেও তথাকথিত ইসলামী গণতন্ত্রীরা ইসলাম আর গণতন্ত্র সমার্থক অপপ্রচার চালিয়ে প্রচলিত গণতন্ত্রের সাথে ইসলামের যে বৈরীতা রয়েছে সে মূল্যবোধকে দূর্বল করেছে।
সে দুর্বলতাকে পূজি করে অতঃপর ইসলাম পক্ষের বলে দু’ নারী নেতৃত্বের একটিকে জায়িয করেছে এবঙ অপরটিকে ইসলাম বিদ্বেষী, মাদ্রাসা ধ্বংসকারী, আলিম-উলামার উপর নির্যাতনকারী ইত্যাদি মহা অনৈসলামিক বিশেষনে ভূষিত করেছে। ক্তিু তারপরেও সাধারণ মুসলমান বিস্ময়ে বিমূঢ় হল যখন বিগত পাঁচ বছর জোট সরকারের হালুয়া-রুটি, লুটে-পুটে খাওয়ার পর, জোট সরকারের বেকায়দা অবস্থা দেখে, নতুন করে হালুয়া-রুটি ভাগ পাওয়ার জন্য তারা তাদের কথিত, বিবৃত, প্রচারিত, উচ্চারিত চিরন্তন ইসলাম বিদ্বেষী আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন। আওয়ামী নারী নেতৃত্বও জাায়িয করলেন। ধর্ম নিরপেক্ষতার জোর প্রবক্তা সাজালেন। তাদের সূরে সুর মিলিয়ে বললেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়।
তারা আশা করেছিলেন জোট সরকারের পরিবর্তে এবার আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসবে। তাই আগে থেকেই আওয়ামী সরকারে যোগ দিয়ে বিগত জোট সরকারের ন্যায় হালুয়া-রুটি খাওয়ার রাস্তা খোলা রাখবেন।
কিন্তু হাদীছ শরীফের অমোঘ ঘোষণার প্রতিফলন তাহলে কি করে হবে?
হাদীছ শরীফে এদের ব্যবসায় বরকত না হওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই দেখা গেল দীর্ঘদিনের বিষোদগার লেপন করেছেন যে দলের প্রতি; লজ্জার মাথা খেয়ে তাদের সাথে যোগদানের পর সে দলটিই তাদেরকে আসতাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করেছে। টয়লেট পেপারের মত ছুড়ে ফেলেছে। তাদের আবার হালুয়া-রুটি খাবার স্বপ্ন চুর্ণ-বিচূর্ণ হয়েছে।
বিএনপি ইসলাম পক্ষের দল আর আওয়ামী লীগ ইসলাম বিরোধী দল, ইসলামের নামে দালালী ও ধর্মব্যবসার এই অপসুযোগ তারা চিরতরে হারিয়েছে।
হাদীছ শরীফে উল্লেখিত ধর্মব্যবসায় বরকতহীনতার ধারাবাহিকতায় এখন দেখাযাচ্ছে যে, তারা শুধু আম জনতা বা বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দ্বারাই প্রত্যাখাত হয়নি। তাদের অনুসারীরা এখন তাদের হাক্বীক্বত ফাঁস করে দিচ্ছে।
পত্র-পত্রিকায় ব্যাপক রিপোর্টিং হয়েছে যে, অন্যের বাড়ি দখল, দোকান দখল, ত্রাণের টিন দখল, এমনকি মাদরাসা দখলেও অভিযুক্ত হয়েছেন জামাতে ইসলামী এম.পি, নেতা, ঐক্যজোটের শাইখুল হদস, আমিনী ওরফে কমিনী মুফতে শহিদুল গং।
অথচ এরাই এতদিন তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির সোল এজেন্ট রূপে নিজেদের জাহির করত। আল্লাহর আইন চাই, সৎলোকের শাসন চাই বলে ঢেরা পেটাত। কিন্তু এখন শুধু ত্রাণের টিন নয়, চারিত্রিক বিকারগ্রস্থতা নয়, মসজিদ মাদ্রাসা দখলের অভিযোগে তারা অভিযুক্ত হচ্ছে। মামলার আসামী হচ্ছে। গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
মূলতঃ এসব কিছুই সে পুরোনো মূল্যবোধকে সঠিক প্রমাণ করেছে। ‘মাওলানা সাহেবরা দলীয় রাজনীতি করবেন কেন?
কারণ প্রচলিত গণতন্ত্রের নামে কলুষ রাজনীতির পথে যে ইসলামী মূল্যবোধ ও আমল টিকিয়ে রাখা যায় না তা ইসলাম বিবৃত চিরন্তন সত্য। ইসরামের নামে তথাকথিত রাজনীতিবিদদের আজকের অধঃপতিত অবস্থানই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
মূলতঃ প্রচলিত গণতন্ত্র এমনই এক প্রক্রিয়া যে পথে কখনও ইসলাম কায়েম হতে পারেনা। ‘সব সার্বভেৌম ক্ষমতা জনগণের’ -এই তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ইসলামের দৃষ্টিতে এক হারাম মতবাদ। উল্লেখ্য এক হারাম আরো দশ হারামের জন্ম দেয়। তাই দেখা গিয়েছে ইসলামের নামে গণতন্ত্রকারীরা একে একে ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, নারী নেতৃত্ব সমর্থন করা, হরতাল করা, লংমার্চ করা, মৌলবাদ সমর্থন করা, ব্লাস ফেমী চাওয়া, নির্বাচন করা ইত্যাদি সব নাজায়িয ও হারাম কাজই স্বত:স্ফূর্তভাবে করেছে বা জায়িয বলে কুফরী করেছে।
উল্লেখ্য বর্তমান সরকার অবৈধ সম্পদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তার মাধ্যে ইসলামের নামে সুবিধাভোগী এই সব ধর্মব্যবাসায়ীদের বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। সরকার যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে প্রতিক্রিয়া তৈরী হবে ভাবে তবে তা একদিকে যেমন হবে অজ্ঞতা অপরদিকে হবে দুর্বলতা। কারণ ওরা আজ জনমনে ধর্মব্যবসায়ী হিসেবে সমধিক পরিচিত। মাসিক আল বাইয়্যিনাত এর কারণে ওদের সব হাক্বীক্বত আজ উন্মোচিত, প্রচারিত ও সর্বজন বিদিত। এরা যে হাদীছ শরীফের ভাষায় সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব তাও সর্বজনবিদিত।
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তিনি হক্ব এবঙ নাহক্ব পার্থক্য করা ব্যতীত ছাড়বেন না।” বলাবাহুল্য মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর কারামতে আজ তাই হচ্ছে।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে মুজাদ্দিদে আ’যমের নেক ছায়াতলে কবুল করুন।