আল্লাহ পাক-এর এমন কতিপয় আখাছ্ছুল খাছ (বিশেষ) বান্দা আছেন যাদের তা’লীম-তরবিয়ত দান করেন স্বয়ং আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
والله يجتبى اليه من يشاء.
অর্থঃ- “আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা নিজের দিকে আকর্ষণ করেন।” (সূরা শুরা-১৩)
والله يختص برحمته من يشاء.
অর্থঃ- “আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা তাকে খাছভাবে স্বীয় রহমত-বরকত দান করেন।” (সূরা বাক্বারা-১০৫)
ذلك فضل الله يؤتيه من يشاء.
অর্থঃ- “এটা আল্লাহ পাক-এর ফজল ও করম তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে তা দান করেন।” (সূরা মায়িদা-৫৪) ইত্যকার শ্বাশতবানী তারই উজ্জল স্বাক্ষর বহন করে। তাঁদের বাহ্যিক অবস্থা, জাহিরীভাবে চোখে যা দেখা যায় তা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কাজেই সে সমস্ত আউলিয়ায়ে কিরাম স্বীয় মুর্শিদ ক্বিবলা থেকে খিলাফত লাভ করলেও আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক প্রাপ্ত খিলাফতই মূখ্য। খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দাজিল্লুহুল আলী হচ্ছেন তাঁেদরই প্রতিভূ। তিনি স্বীয় মুর্শিদ ক্বিবলা হতে খিলাফতপ্রাপ্তি এবং মুরীদ করানোর অনুমতি পাওয়ার পরেও দীর্ঘদিন বাইয়াত করাননি। আর এদিকে মুর্শিদ ক্বিবলার তরফ থেকে পুনঃপুনঃ তাকীদ আসতে লাগলো। এমনকি এক প্রকার চাপও যেন আসলো। একদিন তাঁর মুর্শিদ ক্বিবলা কুতুবুল আলম, সুলতানুল আরিফীন, রইসুল মুহাদ্দিছীন, তাজুল মুফাস্সিরীন, হুজ্জাতুল ইসলাম, শাইখুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ, আল্লামাতুদ্ দাহর, হযরত শাহ সূফী শায়খ আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি একান্ত স্নেহের মুরীদ ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীকত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল মুজতাহিদীন, ফকীহুল ইম্মত, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দাজিল্লুহুল আলীকে স্বেচ্ছায় বললেন, “আমি আপনাদের বাড়ীতে যাব। আপনার শ্রদ্ধেয় আব্বাজানের সাথে জরুরী কথা আছে।” তিনি স্বীয় মুর্শিদ ক্বিবলার এরূপ অভিপ্রায়ে খুশি হলেন। দিন তারিখ ধার্য্য হলো। নির্দিষ্ট দিনে তিনি আসলেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে কুশলাদী বিনিময় হলো। এক পর্যায়ে তিনি ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছাহিবে ইসমে আ’যম, আওলাদে রসূল আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহিকে বললেন, “হাজী ছাহেব! জায়গা দিন। আপনার শাহ্জাদার জন্য খানকা শরীফ বানানো হবে। তিনি লোকদেরকে তা’লীম-তরবিয়ত দিবেন। একথা শুনে আওলাদে রসূল, কুতুবুজ্জামান, হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি হাসলেন। তাঁকে আকস্মাৎ এরূপ হাসতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কি ব্যাপার! আপনি হাসলেন কেন?’ তিনি বললেন, ‘কারণ পরে বলবো, আপনার কথা আগে শেষ করুন।’ তিনি আবার বলতে লাগলেন, গত রাতে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছেন, আমি যেন আপনাকে জানিয়ে দেই, আপনার ছেলে মুসলিম উম্মাহকে তা’লীম-তরবিয়ত দিবেন। তাঁর খানকা শরীফ স্থাপনের ব্যবস্থা করুন। সেটা জানানোর জন্যই আপনার কাছে আসলাম। “বলুন, এবার আপনার হাসির কারণ।” আওলাদে রসূল, কুতুবুজ্জামান, হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি জানালেন, ‘আমিও গত রাতে এ স্বপ্নই দেখেছি। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আপনার ছেলে মুসলিম উম্মাহকে তা’লীম-তরবিয়ত দান করবেন। তাঁর খানকা শরীফ বানানোর ব্যবস্থা করুন।’ (সুবহানাল্লাহ) উল্লেখ্য যে, আওলাদে রসূল, কুতুবুজ্জামান, আমাদের দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন যাত্রাবাড়ীর মুর্শিদ ক্বিবলার পীর ভাই। দু’জন বুযূর্গের সম্পর্ক ছিল একান্ত নিবিড়, একান্ত গভীর, অন্তরঙ্গ। (অসমাপ্ত)