সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক অনুমোদন
কুতুবুল মাশায়িখ, সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশ্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি হলেন কুতুবুল হিন্দ। উপমহাদেশে কেউ বেলায়েত লাভ করলে, সেখানে হিদায়েতের কাজ করতে হলে তাঁর একটা রূহানী বা বাতিনী অনুমোদন বা সত্যায়ন লাগে। অর্থাৎ কামিল পীর ছাহেব হওয়ার জন্য তাঁর সত্যায়ন বা সুপারিশ প্রয়োজন। সে সত্যায়ন বা অনুমোদন স্বপ্নে, মোরাকাবায়, কাশফে কিংবা সরাসরি তাঁর মাজার শরীফ জিয়ারত যে কোনভাবে হতে পারে। সেটা মৌখিক হতে পারে আবার বরকতপূর্ণ কোন জিনিস দেয়ার মাধ্যমেও হতে পারে। সব আউলিয়ায়ে কিরাম একইভাবে নাও পেতে পারেন। মাকাম ও মর্যাদার তারতম্যে প্রাপ্তির ভিন্নতা থাকা স্বাভাবিক। ইমামে রব্বানী, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর মাজার শরীফ জিয়ারতের মাধ্যমে মাজার শরীফের গিলাফ মুবারক পেয়েছিলেন। তিনি খাদিমকে বলেছিলেন, ‘আমাকে দাফনের জন্য কোন কাফনের দরকার নেই। এই গিলাফ মুবারকই হবে আমার কাফন।’ তাই করা হয়েছিলো। (সুবহানাল্লাহ) স্মর্তব্য যে, আউলিয়ায়ে কিরামগণ দু’শ্রেণীতে বিভক্ত। একশ্রেণী যাঁরা নিয়ামত তালাশ করেন। অপরশ্রেণী যাঁদেরকে নিয়ামতই তালাশ করে। ইমামে আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউসুল আ’যম, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী সেই শ্রেণীর ওলী আল্লাহ যাকে নিয়ামতই তালাশ করে। তাঁকে আজমীর শরীফ যেতে হয়নি। বরং আজমীর শরীফ থেকে সেই নিয়ামত তাঁর কাছে পাঠানো হয়েছিলো। ওলীয়ে মাদারজাদ, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি (যিনি হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর শ্রদ্ধেয় আব্বাজান) আজমীর শরীফ যাতায়াত কালে একবার জিয়ারত শেষে বাড়ীতে ফেরার সব প্রস্তুতি সম্পন্নকরলেন। ইত্যবসরে মাযার শরীফের খাদিম এসে জানালেন- সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ হযরত খাঁজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি আপনাকে ডেকেছেন। ছহিবে ইসমে আ’যম, হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি খাদিমের সাথে মাযার শরীফে গেলাম। খাদিম একস্থানে বসালেন এবং বললেন, আপনি অপেক্ষা করুন। গভীর রাতে সাক্ষাত হবে। যা বলার তিনি তখন বলবেন। আমি অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলাম। রাত গভীর হল। আমাকে মাযার শরীফের নিকটবর্তী হতে বলা হল। নিকটে গেলাম হঠাৎ দেখতে পেলাম কে যেন আমার বুকের সাথে বুক মেলালেন। একটু ভয়ও পেলাম। উল্লেখ্য যে, “হযরত আবুল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে নিয়ামত দেয়ার জন্য সুলতানুল আরিফীন হযরত বায়েজিদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় মাযার শরীফ থেকে উঠেছিলেন। সে সময় হযরত আবুল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহিও এরূপই বলেছিলেন। জিজ্ঞাসা করলাম- আপনি কে? জবাব আসলো আমি গরীবে নেওয়াজ হযরত খাঁজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি। একটা জরুরী বিষয়ে আপনাকে ডেকেছি। এটা বলে তিনি গন্দম রঙ্গের একটা পাগড়ী মুবারক হাতে দিয়ে বললেন, ‘এটা আপনার ছাহেবজাদাকে দিবেন।’ বললাম আমার কোন ছাহেবজাদাকে দিব?’ তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, ইমামে আ’যম, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নাম মুবারক উল্লেখ করে বললেন তাঁকে দিবেন।” (সুবহানাল্লাহ) আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন, ‘আমি যখন আজমীর শরীফ জিয়ারত শেষে বাড়ী ফিরলাম। প্রবেশ পথে সর্বপ্রথম হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর সাথে দেখা হলো। উল্লেখ্য যে, ছহিবে ইসমে আ’যম, আওলাদে রসূল, হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি কখনো হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করতেন না। সব সময় অতি আদবের সাথে ‘হুযূর ক্বিবলা’ বলেই সম্বোধন করতেন। (সুবহানাল্লাহ) হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আমার নিকটে এসে বললেন, ‘হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি আমাকে যেটা দিয়েছেন সেটা দিন।’ মামদুহ্ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর কথা শুনে আশ্চর্য হলাম। আর দেরী না করেই তৎক্ষনাত সেই পাগড়ী মুবারক তার হাত মুবারকে তুলে দিলাম। আর বুঝে নিলাম উভয় আউলিয়ায়ে কিরামের মাঝে রূহানী তায়াল্লুক বা সম্পর্ক কতটুকু।