পীরে কামিল-এর পরিচয়
ইল্মে ফিক্বাহ ও ইল্মে তাছাউফের পরিপূর্ণ ইল্ম থাকা কামিল পীর ছাহেব হওয়ার একটি শর্ত। সেক্ষেত্রে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামে আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যম, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ইল্ম সম্পর্কে আলোচনার প্রয়োজন নেই। কারণ তাঁর ইল্ম সম্পর্কে বাতিলপন্থীরাও প্রকাশ্যে না হলেও অন্তরে দ্বিমত পোষণ করেন না। তাঁর ইল্মের সমকক্ষ কেউ নেই। যে কারনে তারা আজ পর্যন্ত তাঁর সাথে বাহাসে বসতে আসেনি। বরং তারা সরাসরি নিজেরা না আসলেও অনেক সময় লোক মারফত তারা অতি জটিল ও কঠিন মাসয়ালা-মাসায়িলগুলো তাঁর নিকট প্রেরণ করে। এমনকি বহির্বিশ্বেও যে সকল ফতওয়ার জাওয়াব কেউ দিতে পারে না সেগুলোও তাঁর কাছে পাঠানো হয় এবং তিনি সেগুলো ছহীহ ও সঠিক জাওয়াব দান করেন। এরূপ হাজার হাজার ফতওয়া রয়েছে যেগুলো তাঁর মাসিক আল বাইয়্যিনাত ও দৈনিক আল ইহসানে পত্রস্থ হয়েছে। উল্লেখ্য যে, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ব্যক্তিগত লাইব্রেরীতে পাঁচ কোটি টাকারও বেশী কিতাব মওজুদ রয়েছে। এমন কোন কিতাব নেই যার মধ্যে তাঁর কলমের দাগ নেই। তিনি যে কিতাবই পড়তেন তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর নিচে দাগ দিতেন। যেটা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ সেটা আরো ভালভাবে শনাক্ত করতেন। ভূল বিষয়গুলোর পাশে কখনও ‘ভুল’ লিখতেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে লাল কালি দ্বারা শনাক্ত করতেন। অতি অল্প সময়ে বুঝার জন্য কিতাবের উপরে লিখে রাখতেন, ‘এই কিতাবে অনেক ভুল আছে।’ এই কিতাবের ‘অমুক অমুক বিষয়গুলো ভুল।’ এই কিতাব ‘সাধারণ লোকের জন্য পড়া উচিত নয়।’ ইত্যাদি ইত্যাদি। আগেই বলা হয়েছে যে, তিনি শুধু একজন কামিল পীর ছাহেবই নন। তিনি হচ্ছেন- যামানার ইমাম, মুজাদ্দিদ। হানাফী মাযহাবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইমাম। কাজেই তাঁর ইল্মের ব্যাপকতা কিরূপ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। মাকতুবাত শরীফে উল্লেখ আছে যদি হযরত নবী আলাইহিমুস সালামগণের আগমনের ধারা অব্যাহত থাকত তবে যামানার মুজাদ্দিদগণই হতেন সেই ব্যক্তিত্ব। (মাকতুবাত শরীফ) মুজাদ্দিদে যামান-এর ইল্ম এবং ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ’র মুহতাজ (মুখাপেক্ষী) সকলেই। মু’মিন-মুসলমান, কাফির-মুশরিক সকলেই তাঁর ফয়েজ ও তাওয়াজ্জুহ’র বদৌলতে স্বীয় জীবন উপকরণ পেয়ে থাকে। তাঁর মুহব্বতকারী অনুসরণকারী এবং খিদমতকারী খাদিমগণ যেমন তাঁর ফয়েজ ও তাওয়াজ্জুহ পান তেমনি তাঁর মুখালিফ বা বিরোধিগণও তাঁরই উসীলায় রহমত পেয়ে বেঁচে থাকে। সূর্য যেমন সকলকে সমান ভাবে স্বীয় আলো বিকিরণ করে। তেমনি যামানার ইমাম ও মুজাদ্দিদগণও অকাতরে সকলকেই স্বীয় ফয়েজ ও তাওয়াজ্জুহ দান করেন। উল্লেখ্য যে, যামানার ইমাম, যামানার সকল বিষয়ের সঠিক ফায়সালা দাতা। কাজেই ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর সাথে যারা নিসবত রাখেন, তাঁর তালিম-তরবিয়ত মত যারা ফতওয়া দান করেন তাঁদের ফতওয়াই ত্রুটিমুক্ত। মাসিক আল বাইয়্যিনাত, দৈনিক আল ইহসান পত্রিকা পাঠ করলে সে বিষয় সম্পর্ক কোন প্রশ্নের অবকাশ থাকবে না। অনুরূপভাবে তাঁর নিকট হতে যারা তাফসীরের ইল্ম হাছিল করেছেন শুধু তাদের তাফসীরই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা-কিয়াস সম্মত। অন্যথায় তা “তাফসীর বির রায়” এ পর্যবসিত। তিনি যাদেরকে হাদীছ শরীফ শিক্ষা দিয়েছেন তারাই হচ্ছেন হাক্বীক্বী মুহাদ্দিস। মোদ্দাকথা তাঁর ছোহবত ইখতিয়ারকারী যে কোনভাবে ও নিসবত হাছিলকারীগণ হচ্ছেন হক্বানী রব্বানী আলিম। মূলত যামানার ইমাম ও মুজাদ্দিদ-ই হচ্ছেন কোন ব্যক্তির কামিল-মুকাম্মিল হওয়ার সনদদাতা। তিনি হচ্ছেন ইল্মে লাদুন্নী হাছিলের শ্রেষ্ঠ ও বিশেষ দৃষ্টান্ত। তাঁর বাতিনী দিকটি উপলদ্ধির জন্য একটা ঘটনার অবতারণা করছি। তিনি বলেন- একদিন আমি কিতাবাদি পড়তে পড়তে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। স্বপ্নে দেখতে পেলাম অতি সুন্দর সীরত সুরাতধারী এক ব্যক্তি। যিনি আমার সামনে সামনে হেঁটে চলছেন। আমি তাঁর পিছনে পিছনে চলছি। কিছুক্ষণ চলার পর সেই সুদর্শন ব্যক্তি দাঁড়ালেন এবং আমাকে হাতছানী দিয়ে কাছে ডাকলেন। আমি যখন তাঁর নিকটবর্তী হলাম তিনি তাঁর হাত মুবারক আমার পিঠ মুবারকে রেখে বললেন, আমি হচ্ছি ইমামে আ’যম, ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি। আজ আমার সমস্ত ইল্মই আপনাকে হাদিয়াস্বরূপ দান করলাম। (সুবহানাল্লাহ) (অসমাপ্ত)