সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আব্বাজান আলাইহিস সালাস ও আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা ফিতরাত যুগের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন ও উনারা দ্বীনে হানীফার উপর কায়িম ছিলেন।

সংখ্যা: ১৪০তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রকাশের বহু পূর্বে এবং হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে প্রায় ৫০০ বছর পরে উনার আব্বাজান আলাইহিস সালাম ও আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা উভয়েই মহান আল্লাহ পাক উনার দীদার মুবারক-এ চলে যান।

যাঁরা কোন নবী আলাইহিস সালাম উনার আমল পাননি, যাঁদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছায়নি এবং যাঁরা দুই নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তবর্তীকালীন সময়ে ইন্তিকাল করেন- এ সময়টাকে বলা হয় ফিতরাত যুগ।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,

وَلَوْلَا أَن تُصِيبَهُم مُّصِيبَةٌ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ فَيَقُولُوا رَ‌بَّنَا لَوْلَا أَرْ‌سَلْتَ إِلَيْنَا رَ‌سُولًا فَنَتَّبِعَ آيَاتِكَ وَنَكُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ

অর্থ : “যারা ফিতরাত যুগের তাদের কৃতকর্মের জন্য যখনই কোন মুছীবত আসত তখন তারা বলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি কেন কোন রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে প্রেরণ করেননি, আমরা উনার আয়াত শরীফ-এর অনুসরণ করতাম এবং ঈমানদার হতাম।” (সূরা ক্বাছাছ : ৪৭)

এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ্য যে, হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুশরিকদের সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে বলেছেন, তারা জান্নাতবাসী। কেননা পবিত্র কারামুল্লাহ শরীফ-এর ঘোষণানুযায়ী প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেনি তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে না। (যদি কুফরী ও শিরকী না করে থাকে) আর যাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেছে, অথচ কুফরী ও শিরকী পরিত্যাগ করেনি তারা অবশ্যই জাহান্নামী। এতে কারো দ্বিমত নেই।

সুতরাং দুই নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তবর্তীকালীন সময়ে মৃত বা ইন্তিকালকারী উনারা আহলে ফিতরাত বিধায় তাদের হুকুম ব্যতিক্রম। অর্থাৎ উনারা যদি শুধু কুফরী ও শিরকী থেকে মুক্ত থাকেন তাহলে উনারা আযাব বা শাস্তি থেকেও মুক্ত থাকবেন। (মাসালিকুল হুসাফা লিস সুয়ূতী)

যেমন ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আব্বাজান আলাইহিস সালাম ও আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা। উনারা কোন প্রকার কুফরী-শিরকী করেননি। অর্থাৎ উনারা উভয়েই দ্বীনে হানীফে কায়িম ছিলেন। উনারা কখনও তাওহীদ বিরোধী কোন আমল করেছেন এমন কোন প্রমাণ মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে কেউই পেশ করতে পারবে না। এ বিষয়ে সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা একমত পোষণ করেন।

হাদীছ শরীফ-এর কিতাব “ত্ববারানী শরীফ”-এ উল্লেখ আছে, নি¤œবর্ণিত ব্যক্তি উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার একত্বে বিশ্বাসী ছিলেন এবং উনারা পাক-নাপাকীরও বিশ্বাসী ছিলেন। যদি উনাদের কেউ নাপাক হতেন, তাহলে অযূ-গোছল করে পবিত্র হতেন। এমনকি উনারা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার দ্বীনে বিশ্বাসী হয়ে আমল করতেন। উনাদের নাম মুবারক হলো-

(১)     হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম, (২) হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম,  (৩) হযরত আসওয়াদ বিন সারারা বিন মায়রুর আনসারী, (৪) হযরত মুহম্মদ বিন মাসলাম ও (৫) হযরত আবূ কাইস বিন সারমা।

‘তাহক্বীকুল মাক্বাম আলা কিফাইয়াতিল আওয়াম’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-

لَمْ اَزَلْ اَنْقُلُ مِنْ اَصْلاَبِ الطَّاهِرِيْنَ اِلىٰ اَرْحَامِ الطَّاهِرَاتِ عَلىٰ اَنَّ جَمِيْعَ اٰبَآئِهِ صَلَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاُمَّهَاتِهِۤ اِلىٰ اٰدَمَ وَحَوَّاءَ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ لَيْسَ فِيْهِمْ كَافِرٌ.

অর্থ: “আমি সবসময় পবিত্র পুরুষ উনাদের পৃষ্ঠ মুবারক থেকে এবং পবিত্রা নারী উনাদের রেহেম শরীফ-এ স্থানান্তরিত হয়েছি। আমার পূর্ববর্তী যত পুরুষ ও মহিলা উনারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদের পর্যন্ত অতীত হয়েছেন, উনাদের কেউই কাফির ছিলেন না। ”

এ পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা অধিকাংশ ইমাম মুজতাহিদ ও হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা দলীল পেশ করেছেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতা ও পিতামহ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং সম্মানিতা মাতা ও মাতামহ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম পর্যন্ত কেউই কাফির-মুশরিক, পথভ্রষ্ট ছিলেন না। উনারা কেউ ছিলেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম। আর অবশিষ্টগণ উনারা ছিলেন স্ব স্ব যুগের লক্ষ্যস্থল ও খাঁটি ঈমানদার।

উপরোক্ত হাদীছ শরীফ-এ الطاهر ‘ত্বহারাত’ লফয বা শব্দের উল্লেখ রয়েছে। الطاهر ‘ত্বহারাত’ শুধুমাত্র যারা মু’মিন, মুত্তাক্বীন ও নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের ক্ষেত্রে الطاهر ত্বহারাত প্রযোজ্য নয়। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,

إِنَّمَا الْمُشْرِ‌كُونَ نَجَسٌ

অর্থ : “নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক।” (সূরা তওবা : ২৮)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন,

وَلَأَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ خَيْرٌ‌ مِّن مُّشْرِ‌كَةٍ

অর্থ : “নিশ্চয়ই মুমিনা দাসী মুশরিকা (স্বাধীনা) মহিলা হতে উত্তম।” (সূরা বাক্বারা : ২২১)

وَلَعَبْدٌ مُّؤْمِنٌ خَيْرٌ‌ مِّن مُّشْرِ‌كٍ

অর্থ : “নিশ্চয়ই মুমিন দাস মুশরিক (স্বাধীনা) পুরুষ হতে উত্তম।” (সূরা বাক্বারা : ২২১)

উপরোক্ত আয়াত শরীফ হতে এটাই প্রমাণিত হয় যে, মুশরিক ও কাফিররা কখনও উত্তম হতে পারে না, কারণ তারা নাপাক। তাই সাধারণ মু’মিন ও মু’মিনাও তাদের থেকে উত্তম।

আল হাদ্বির ওয়ান নাযির, ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বাওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব

সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাহরীম শরীফ উনার শানে নুযূলকে কেন্দ্র করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ কুফরী বক্তব্য ও তার খণ্ডনমূলক জবাব

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমস্ত উম্মতের জন্য ফরযে আইন

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খরচ করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুননাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শারে’ বা সম্মানিত শরীয়ত প্রণেতা