ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক!! ঈদ মুবারক!!!
কুল-মাখলূক্বাতের যিনি নবী ও রসূল, যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, যিনি ইমামুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, যিনি রহমাতুল্লিল আলামীন, যিনি খাতামুন নাবিয়্যীন, যিনি নূরে মুজাসসাম, যিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মাসই হচ্ছেন সম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, কুল-মাখলূক্বাতের জন্য যিনি সম্মানিত ওলী ও মুর্শিদ, যিনি সাইয়্যিদুল আউলিয়া ওয়াল মুরশিদীন, যিনি ইমামুল আউলিয়া ওয়াল মুজাদ্দিদীন, যিনি ক্বায়িম-মাক্বামে রহমাতুল্লিল আলামীন, আওলাদে রসূল, আহলে বাইতে রসূল, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুকাররম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনারও সুমহান বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মাস সম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
যেহেতু কায়িনাতের মাঝে খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট উনার যিনি হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে সম্মানিত তাই, উনার সাথে নিসবতযুক্ত যাবতীয় বিষয়ও সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে সম্মানিত। সুবহানাল্লাহ!
যার কারণে সম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসটি অন্য সমস্ত মাস থেকে শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত। ফলে উক্ত সম্মানিত মাস উনাকে সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম, শাহরুল আকবর ইত্যাদি সর্বশ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত নামে অভিহিত করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, উক্ত সম্মানিত মাস উনার সম্মানিত ১২ তারিখ ও সম্মানিত ইওয়ামুল ইছনাইন (সোমবার) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার কারণে উক্ত তারিখ সমস্ত তারিখ হতে শ্রেষ্ঠতম ও সম্মানিত হয়েছে। ফলে উক্ত সম্মানিত তারিখ উনাকে ১২ই শরীফ হিসেবে অভিহিত করা হয়। সুবহানাল্লাহ! একইভাবে সম্মানিত ইয়াওমুল ইছনাইন শরীফ উনার মধ্যে বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার কারণে উক্ত সম্মানিত দিনটি সমস্ত দিন হতে শ্রেষ্ঠতম ও সম্মানিত হয়েছে। ফলে উক্ত সম্মানিত দিন উনাকে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম হিসেবে অভিহিত করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, নূরে মুকাররম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনিও সম্মানিত ১২ই শরীফ তারিখে বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তবে উনার সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিনটি হচ্ছে ইয়াওমুল জুমুআহ শরীফ।
বলার অপেক্ষা রাখে না, সম্মানিত ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ এবং সম্মানিত ইয়াওমুল জুমুআহ শরীফ উভয় সম্মানিত দিনই হচ্ছেন মু’মিন মুসলমান তথা কায়িনাতবাসীর জন্য সম্মানিত ঈদ তথা খুশি প্রকাশের দিন। সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই মর্যাদা বা শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হচ্ছেন উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম-আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। অতঃপর মর্যাদা বা শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হচ্ছেন হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা। তারপর মর্যাদা বা শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হচ্ছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা। অতঃপর হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। সুবহানাল্লাহ!
আরো স্মরণীয় যে, আওলাদে রসূল, আহলে বাইত রসূল, নূরে মুকাররম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি উনার মুবারক নছীহতকালে বলেন, আমাকে একাধিকবার দেখানো হয়েছে, আমি দেখলাম যে, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই অবস্থান মুবারক করছেন উনার সম্মানিত আব্বা আলাইহিস সালাম ও উনার সম্মানিতা আম্মা আলাইহাস সালাম এবং উনার সম্মানিতা আযওয়াজে মুত্বহ্হারাত আলাইহিন্নাস সালাম তথা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! আর উনার সম্মুখ দিকে অবস্থান মুবারক করছেন উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম-আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্যান্য সম্মানিত সদস্যগণ উনারা। সুবহানাল্লাহ!
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ডান দিকে অবস্থান মুবারক করছেন হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! আর উনার বাম দিকে অবস্থান মুবারক করছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা। সুবহানাল্লাহ! আর উনাদের পিছনে অবস্থান মুবারক করছেন হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। সুবহানাল্লাহ!
এ থেকে মূলত উনাদের প্রত্যেকের সম্মানিত মাক্বাম উনার বিষয়টিই দেখানো হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! যার দ্বারা প্রতিভাত হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই মর্যাদা-মাক্বাম বা শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হচ্ছেন সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম-আলাইহিন্নাস সালাম উনারা এবং উনাদের মধ্যে প্রথম স্তর হচ্ছেন উনার সম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারা এবং দ্বিতীয় স্তর হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা আর তৃতীয় স্তর হচ্ছেন হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আসবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সিবত্বাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, উক্ত প্রথম স্তর, দ্বিতীয় স্তর ও তৃতীয় স্তর উনাদের অন্তর্ভুক্ত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ আলাইহিমুস সালাম-আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ। সুবহনাল্লাহ!
আর অন্য সকল হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম, সকল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম, সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, সকল হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম এবং সকল জিন ও ইনসান পুরুষ-মহিলা এমনকি সমস্ত সৃষ্টি উনারা প্রত্যেকেই উনার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই উম্মতের জন্য তাদের যিনি সম্মানিত নবী ও রসূল, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম-আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, সম্মান করা, খিদমত করা, ছানা-ছিফত করা ফরয। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, কোনো ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্তুতি, এমনকি সমস্ত মানুষ থেকে এবং আরেক বর্ণনায় রয়েছে, তার ধন-সম্পদ ও জীবন থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বেশি মুহব্বত না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত সে ঈমানদার হতে পারবে না।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করার পর উনার যারা সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করতে হবে, সম্মান করতে হবে এবং উনাদের খিদমত মুবারক করতে হবে পাশাপাশি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের হুকুম বা আদেশ নিষেধসমূহ পালন করতে হবে।
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত, সম্মান ও মুবারক খিদমতের বিষয়টি খাছভাবে উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর ন্যাস্ত করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের নিকট কিতাব হিসেবে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বা পবিত্র হাদীছ শরীফ রেখে যাচ্ছি। আর আমার অবর্তমানে আমার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে রেখে যাচ্ছি। সুবহানাল্লাহ! উনাদেরকে ধরে রাখলে বা অনুসরণ করলে তোমরা কখনোই গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট হবে না। সুবহানাল্লাহ!
আরেক পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার মুহব্বত বা সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার জন্য আমার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো বা সন্তুষ্ট করো।
জানা আবশ্যক যে, সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আগমনের ধারাবাহিকতায় বর্তমান যামানায় সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন আওলাদে রসূল, আহলে বাইতে রসূল, নূরে মুকাররম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করার প্রতিদান সম্মানিত জান্নাত ব্যতীত কিছু নয়। সুবহানাল্লাহ!
যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت ابى ذر رضى الله تعالى عنه انه قال وهو اخذ بباب الكعبة سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول الا ان مثل اهل بيتى فيكم مثل سفينة حضرت نوح عليه السلام من ركبها نجا ومن تخلف عنها هلك.
অর্থ: “হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দরজা মুবারক ধরে বলেন, আমি শুনেছি যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাবধান! জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন তোমাদের মাঝে হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিশতীর ন্যায়। যারা তাতে আরোহণ করেছিলেন উনারা নাজাত বা মুক্তি পেয়েছেন। আর যারা তাতে আরোহণ করেনি তারা ধ্বংস হয়ে গেছে।” (আহমদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
অর্থাৎ সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যারা মুহব্বত করবে, তারা নাজাতপ্রাপ্ত ও জান্নাতী হবেন। আর যারা উনাদের থেকে দূরে থাকবে, উনাদেরকে মুহব্বত করবে না, তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত ও জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। নাউযুবিল্লাহ!
মাহে যিলক্বদ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা
মাহে যিলহজ্জ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা
মাহে মুহররমুল হারাম ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা