হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতিত সকলেরই সম্মানিতা “মাতা”। সুবহানাল্লাহ! কাজেই অন্য কোন মহিলাদের অবস্থার সাথে উনাদের অবস্থার মেছাল বা উদাহরণ দেয়া যাবে না।
উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত এবং মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশেই উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদেরকে গ্রহণ করেছেন। কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানেই উনারা সম্মানিতা। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সমকক্ষ যেমন কেউ নেই তদ্রুপ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সমকক্ষও কেউ নেই। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاءِ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা নিসা আলাইহিন্নাস সালাম অর্থাৎ সম্মানিতা উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম! আপনারা অন্য কোন মহিলাদের মতো নন। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)
উল্লেখ্য, উম্মু রূহিল্লাহ হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَيْسَ الذَّكَرُ كَالْاُنْثٰى
অর্থাৎ- তিনি এমন এক সম্মানিতা মহিলা উনার সমকক্ষ কোন পুরুষও নেই। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)
জানা আবশ্যক যে, হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত মর্যাদা-মর্তবা প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা সম্পর্কে যখন ঘোষণা করা হলো তখন দেখা গেল যে, হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনিসহ কোন মহিলাই উনাদের সমকক্ষ নন। সুবহানাল্লাহ!
তাই, নূরে মজাসসাম হাবীবুল্লহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে কারো তুলনা করবে না। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ঊম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পবিত্রতা ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيْـرًا
অর্থ: হে হযরত আহলু বাইত আলাইহিমুস সালাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের থেকে সকল প্রকার অপত্রিতা দুর করত: পুতঃপবিত্রতম করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
অন্য কোন মহিলার কি পবিত্রতা ঘোষণা করা হয়েছে? ঘোষণা করা হয়নি। তাহলে উনাদেরকে অন্য কারো সাথে তুলনা দেয়া যায় কি করে?
মূলত, উনারা হচ্ছেন সর্বসাধারণ সকলের জন্যই মহান আদর্শ। সকল উম্মাহর জন্য অনুসরনীয় অনুকরনীয় মহান ব্যক্তিত্ব। অনুসরনীয় মহান ব্যক্তিত্বগণের সাথে তুলনা তারাই দিতে পারে যারা চরম পর্যায়ের জাহিল।
এদের কুফরীর একটি দিক হচ্ছে, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম তথা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে অন্যান্য মহিলাদের সাথে তুলনা দেয়া। উনাদেরকে অন্যান্য মহিলাদের মত মনে করে (নাউযুবিল্লাহ) বলতে গেলে সকল লিখকই তাদের লিখনীর মধ্যে, সকল বক্তাই তাদের বক্তব্যে এই কুফরীমুলক কাজটি অবলীলাক্রমে লিখে থাকে, বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যার ফলে তাদের পাঠক ও শ্রোতা সবাই কুফরীতে নিমজ্জিত হয়। নাউযুবিল্লাহ!
তারা এমন কথাও বলতে দ্বিধা করেনা যে, হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা সাধারণ মহিলাদের মত উনারা নাকি সতীনে সতীনে ঝগড়া করেছেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!! নাউযুবিল্লাহ !!!
যেখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, উনারা কারো মত নন। সেখানে যারা উনাদেরকে অন্য কারো সাথে তুলনা দিবে তারা কিভাবে ঈমানদার থাকতে পারবে? যারা উনাদের সাথে অন্য কাউকে তুলনা দিবে তারা কাফির হবে। গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট হবে। হবে চির জাহান্নামী। নাউযুবিল্লাহ!
এই গোমরা লোকগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফও পড়েনা, যদি কেউ পড়েও কিন্তু বুঝেনা।
এদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بَعْدَ اِيْـمَانِهِمْ ثُمَّ ازْدَادُوْا كُفْرًا لَّنْ تُقْبَلَ تَوْبَتُهُمْ وَأُولٰـئِكَ هُمُ الضَّالُّوْنَ
অর্থ: নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনার পর কুফরী করে, আর (তাওবা করেনা বরং) কুফরীকে বৃদ্ধি করে কস্মিনকালেও তাদের তওবা কবুল করা হবে না। মূলত এরাই হচ্ছে গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯০)
উল্লেখ্য যে, মু’মিন- মু’মিনা উনাদের মধ্যে যারা কুফরী করে এবং কুফরীর উপর ইস্তিক্বামত (অবিচল) থাকে, ফলে কুফরী বৃদ্ধি পায়, আর তওবাও করে না বরং কুফরীতে দৃঢ় থাকে তারাই গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট। এ পথভ্রষ্ট বা গোমরাহ লোকদের সংখ্যাই বেশী। এদেরকে মানুষ সহজেই হাতের কাছে পায়, এদেরকে অনুসরন করে, এদেরকে দ্বীনের ধারক বাহক মনে করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি সবাইকে মহান মুজাদ্দিদে আযম মামদুহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসিলায় আমাদের সবাইকে হিফাজত করুন। (আমীন)
-মুহম্মদ হালীমুযযামান