সর্বোচ্চ পর্যায়ের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকদের অন্তরে যেহেতু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিদ্বেষ রয়েছে, তাই তারা উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক সহ্য করতে পারে না, উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন বরদাশ্ত করতে পারে না। উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক শুনলে, উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন দেখলে মাল‘ঊন ইবলীস ও তার অনুসারী আবূ জেহেল, আবূ লাহাব, উতবা, শায়বাহ, মুগীরা ও উবাই ইবনে সুলূলের ন্যায় তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। না‘ঊযুবিল্লাহ! তাই সম্মানিত মুসলমান উনারা যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে না পারেন, এ জন্য তারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারীখ মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ’ এ বিষয়টি নিয়ে নানা বিভ্রান্ত ছড়িয়ে থাকে, নানা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ! সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী তারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ অস্বীকার করার কারণে কাট্টা কাফির ও চির মাল‘ঊন। ইহকালে তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- আর পরকালে রয়েছে তাদের জন্য জাহান্নামের সবচেয়ে ভয়াবহ কঠিন আযাব। না‘ঊযুবিল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَخْرَجَ حَضْرَتْ اَبُوْ بَكْرِ بْنُ اَبِـىْ شَيْبَةَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِـىْ كِتَابِهٖ قَالَ حَدَّثَنَا حَضْرَتْ عَفَّانُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ سَلِيْمِ بْنِ حَيَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ سَعِيْدِ بْنِ مِيْنَا رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْاَنْصَارِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَحَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّـهُمَا قَالَا وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيْلِ يَوْمَ الْاِثْنَيْـنِ الثَّانِـىْ عَشَرَ مِنْ شَهْرِ رَبِيْعِۣ الْاَوَّلِ. هٰذَا حَدِيْثٌ صَحِيْحٌ عَلـٰى شَرْطِ الشَّيْخَيْـنِ وَجَامِعِ اَئِمَّةِ الْـحَدِيْثِ.
অর্থ: “হযরত আবূ বকর ইবনে আবী শায়বাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, আর তিনি সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইবনে মীনা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে আর হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের থেকে বর্ণনা করেন। উনারা দু’জন বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘আমুল ফীল (হস্তীর বছর) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুলূগুল আমানী মিন আসরারিল ফাত্হির রব্বানী ২০তম খ- ১৮৯ পৃ., আছ ছিহ্হাহ ওয়াল মাশাহীর ১ম খ- ২৬৭ পৃ.)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার, ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং সমস্ত আইম্মাতুল হাদীছ তথা হাদীছ শরীফ উনার সমস্ত ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শর্ত অনুযায়ী ছহীহ। সুবহানাল্লাহ!
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালীন ইলাল আখিরীন, হাকিমে হাদীছ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ছহীহ।” সুবহানাল্লাহ!
মুহাদ্দিছগণ যে সকল শর্তের ভিত্তিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ নির্ণয় করে থাকেন, তার প্রত্যেকটিই এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান। সুবহানাল্লাহ! কেননা-
১. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা মুত্তাছিল সনদ তথা অবিচ্ছিন্ন সূত্রে বর্ণিত। সুবহানাল্লাহ!
২. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনাকারীদের সকলেই ‘আদ্ল বা নির্ভরযোগ্য, ন্যায়-পরায়ণ, দ্বীনদার ও উন্নত শিষ্টাচারের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
৩. সকলেই تَمُّ الضَّبْطِ (তাম্মুদ দ্বব্ত) তথা প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী। যারা রাবীর নির্ভরযোগ্যতা যাচাই-বাছাইয়ে জ্ঞান রাখেন, উনাদের দৃষ্টিতে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা বর্ণানাকারী উনারা প্রত্যেকেই বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য। সুবহানাল্লাহ!
৪. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনাকারী উনাদের চেয়েও অধিক নির্ভরযোগ্য কোন বর্ণনাকারী থেকে এর বিপরীত কোন বর্ণনা বিদ্যমান নেই অর্থাৎ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা شَاذّ (শায) নয়। সুবহানাল্লাহ!
৫. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সনদে বা মতনে প্রচ্ছন্ন কোন ক্রটি বা عِلَّة (‘ইল্লাত) বিদ্যমান নেই। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং কোন প্রকার সন্দেহ-সংশয় ছাড়াই নিশ্চিতভাবে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ছহীহ। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও
১. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা দুইজন বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের থেকে বর্ণিত। সুবহানাল্লাহ! আর উনারা হচ্ছেন মুকাছ্ছিরীন রাবী তথা সবার্ধিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
২. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সমর্থনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুরসাল হাদীছ শরীফ রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
৩. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সমর্থনে উম্মতের মশহূর আক্বওয়াল (বর্ণনা) রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ ১/৮৪, মাওলিদুর রাভী ১২৯, শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ১/২৪৮, আস সীরতুল হালাবিয়্যাহ ১/৮৪ ইত্যাদি।)
৪. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সমর্থনে উম্মতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হযরত ইমাম ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম ইবনে জায্যার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম ত্বীবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম ইবনে বাযযার রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা ইজমা’ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (শরহুয যারক্বানী ১/২৪৮, মা ছাবাত বিসসুন্নাহ ২৩৯, সীরাতু খতামুল আম্বিয়া ১২ ইত্যাদি।)
৫. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা দুইজন সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য ইমাম উনারা উনাদের স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
৬. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সকল রাবীগণ থেকে ছিহাহ সিত্তার ইমামগণসহ আরো অন্যান্য সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য ইমামগণ স্বীয় কিতাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ লিপিবদ্ধ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
৭. এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার একই সনদে বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, ইবনে হিব্বান, আবূ না‘ঈম, বাইহাক্বী, মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহসহ বিভিন্ন কিতাবে ২৫টিরও অধিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ লিপিবদ্ধ হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালীন ইলাল আখিরীন, হাকিমে হাদীছ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি যে ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ছহীহ।’ এটাই দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ উনার পরিবর্তে অন্য কোন তারীখকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ হিসেবে সাব্যস্ত করতে চায়, তারা কি আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ন্যায় এরূপ বিশুদ্ধ কোন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দেখাতে পারবে? কস্মিনকালেও নয়। যদি তাই হয়, তাহলে তাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারীখ হিসেবে মেনে নেয়া। এরপরেও যারা মানবে না, সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার দৃষ্টিতে তারা হচ্ছে লা-মাযহাবী, ওহাবী-সালাফী, মুনাফিক্ব-উলামায়ে সূ’ ও বাতিল ৭২ ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ অস্বীকার করার কারণে কাট্টা কাফির ও চির মাল‘ঊন। ইহকালে তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- আর পরকালে রয়েছে তাদের জন্য জাহান্নামের সবচেয়ে ভয়াবহ কঠিন আযাব। না‘ঊযুবিল্লাহ!
‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ’ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার রাবী ও সনদ মুবারক সম্পর্কে আলোচনা:
১. হযরত ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রথম রাবী হযরত ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সর্বজনমান্য নির্ভরযোগ্য বিশ্বখ্যাত ইমাম এবং ছিক্বাহ রাবী। সুবহানাল্লাহ! উনার বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ছিহাহ সিত্তাহর সমস্ত ইমামগণসহ আরো অন্যান্য বিশ্বখ্যাত ও সর্বজনমান্য ইমাম- মুজতাহিদগণ গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্পর্কে হযরত হাফেয ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
حَضْرَتْ عَفَّانُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ هُوَ بْنُ مُسْلِمِۣ الصَّفَّارُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَهُوَ مِنْ شُيُوْخِ الْبُخَارِيِّ
অর্থ: “হযরত ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হচ্ছেন হযরত ‘আফফান ইবনে মুসলিম ছফ্ফার রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শায়েখ উনাদের অন্যতম।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল বারী ১০/১৫৮)
হযরত হাফেয ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন-
حَضْرَتْ عَفَّانُ ابْنُ مُسْلِمِ ابْنِ عَبْدِ اللهِ الْبَاهِلِىُّ اَبُوْ عُثْمَانَ الصَّفَّارُ الْبَصْرِىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ثِقَةٌ ثَبْتٌ
অর্থ: “হযরত ‘আফফান ইবনে মুসলিম ইবনে আব্দুল্লাহ বাহিলী আবূ ‘উছমান ছফ্ফার বাছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন ছিক্বাহ ও ছাব্ত।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল বারী, তাহ্যীবুত তাহযীব)
হযরত ছফীউদ্দীন আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
اَحَدُ الْاَئِمَّةِ الْاَعْلَامِ
অর্থ: “তিনি ছিলেন একজন বিশ্বখ্যাত ইমাম।” সুবহানাল্লাহ! (খুলাছাতু তাহযীব)
হযরত ইমাম ‘ইজলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
ثِقَةٌ ثَبْتٌ
অর্থ: “তিনি ছিলেন ছিক্বাহ এবং ছাব্ত।” সুবহানাল্লাহ! (খুলাছাতু তাহযীব)
হযরত ইমাম আবূ হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন,
اِمَامٌ ثِقَةٌ مُتْقِنٌ مَتِيْـنٌ
অর্থ: “তিনি ছিলেন নির্ভরযোগ্য ইমাম, ছিক্বাহ, মুতক্বিন এবং মাতীন সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব।” সুবহানাল্লাহ! (খুলাছাতু তাহযীব)
হযরত ইমাম ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘আছ ছিক্বাত’ নামক কিতাব মুবারক-এ হযরত ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নাম মুবারক উল্লেখ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (আছ ছিক্বাত ৮/৫২২)
আবুল হাসান ‘ইজলী কূফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত ‘মা’রিফাতুছ ছিক্বাত’ কিতাব মুবারক-এ উনার আলোচনা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘বুখারী শরীফ’-এ ১৩ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মুসলিম শরীফ’-এ ৫০ টিরও অধিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম ইবনে মাজাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘ইবনে মাজাহ শরীফ’-এ ২৫ টিরও অধিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম আবূ দাঊদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘আবূ দাঊদ শরীফ’-এ ১০ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তিরমিযী শরীফ’-এ ১৯ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘নাসাঈ শরীফ’-এ ১৯ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও ১. মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, ২. মুসনাদে বাযযার, ৩. মুসনাদে রূইয়ানী, ৪. মুসনাদে ইসহাক্ব ইবনে রাহাওয়াইহ, ৫. মুসনাদে দারিমী, ৬. মুসনাদুস সিরাজ, ৭. মুসনাদুশ শাশী, ৮. মুসনাদুশ শামিয়্যীন, ৯. মুসনাদে সা’দ, ১০. ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ, ১১. মুস্তাখরজে আবী ‘আওয়ানা, ১২. ছহীহ ইবনে হিব্বান, ১৩. সুনানুদ দারিমী, ১৪. শরহুস সুন্নাহ লিল বাগভী, ১৫. আস সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী, ১৬. আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী, ১৭. শু‘য়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী, ১৮. মা’রিফাতুস সুনানা ওয়াল আছার লিল বাইহাক্বী, ১৯. আদ দা’ওয়াতুল কাবীর লিল বাইহাক্বী, ২০. দালায়িলুন নুবুুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী, ২১. আল আসমা’ ওয়াছ ছিফাত লিল বাইহাক্বী, ২২. আল বা’ছু ওয়ান নুশূর লিল বাইহাক্বী, ২৩. আল ই’তিক্বাদ লিল বাইহাক্বী, ২৪. আস সুন্নাহ, ২৫. আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী, ২৬. আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত ত্ববারনী, ২৭. আল মু’জামুছ ছগীর লিত ত্ববারনী, ২৮. আদ দো‘আ লিত ত্ববারনী, ২৯. মুসনাদে আবী ইয়া’লা, ৩০. মুস্তাদরকে হাকিম, ৩১. সুনানুদে দারাকুতনী, ৩২. রু’ইয়াতুল্লাহ লিদ দারাকুতনী, ৩৩. আল মুন্তাক্বা লিইবনে জারূদ, ৩৪. শরহু মুশকিলিল আছার, ৩৫. শরহু মা‘য়ানিয়িল আছার, ৩৬. আহ্কামুশ শরী‘য়াহ, ৩৭. আখবারু মক্কাহ, ৩৮. আল ঈমান ইবনে মুন্দাহ, ৩৯. আত তাওহীদ লিইবনে মুন্দাহ, ৪০. আস সুনানুল ওয়ারিদাহ ফিল ফিতান, ৪১. মু’জামু ইবনি আ’রাবী, ৪২. মু’জামুছ ছাহাবাহ, ৪৩. আল মু’জাম লিইবনে মুক্বরী, ৪৪. মু’জামুশ শুয়ূখ, ৪৫. মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ লিআবী না‘ঈম, ৪৬. হিলইয়াতুল আউলিয়া’, ৪৭. তাহ্যীবুল আছার লিত ত্ববারী, ৪৮. আল মাজালিসাহ লিআহমদ ইবনে মারওয়ান মালিকী, ৪৯. তা’যীমু ক্বদরিছ ছলাহ, ৫০. আত তুহূর, ৫১. আল ফাওয়াইদ, ৫২. আল আহাদীছুল মুখতারাহ, ৫৩. মাকারিমুল আখলাক্ব, ৫৪. আশ শরী‘য়াহ, ৫৫. আল মুসনাদুল মুস্তাখরাজ, ৫৬. হাদীছুয যুহরী, ৫৭. আল কুনা ওয়াল আসমা লিদ দূলাবী, ৫৮. আল মাক্বছাদ, ৫৯. জামি‘উ বায়ানিল ইলমসহ আরো অনেক নির্ভরযোগ্য কিতাব মুবারক-এ উনার বর্ণিত বহু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কতো উচ্চ স্তরের সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য ছিক্বাহ রাবী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
২. হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি: হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সর্বজনমান্য নির্ভরযোগ্য বিশিষ্ট ছিক্বাহ রাবী। সুবহানাল্লাহ! উনার বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম আবূ দাঊদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারাসহ আরো অন্যান্য বিশ্বখ্যাত ও সর্বজনমান্য ইমাম-মুজতাহিদগণ গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্পর্কে হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
سَلِيْمُ بْنُ حَيَّانَ هُوَ ثِقَةٌ
অর্থ: “হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ।” সুবহানাল্লাহ! (আল ‘ইলাল ওয়া মা’রিফাতুর রিজাল ২/৪৯৫)
‘সুওয়ালাতু আবী দাঊদ’ নামক কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-
سَـمِعْتُ حَضْرَتْ اَحْـمَدَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ حَضْرَتْ سَلِيْمُ بْنُ حَيَّانَ بَصْرِىٌّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ثِقَةٌ وَقَالَ لَا بَاْسَ بِهٖ
অর্থ: “আমি শুনেছি হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন, হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান বাছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ এবং উনার বর্ণায় কোন সমস্যা নেই।” সুবহানাল্লাহ! (সুওয়ালাতু আবী দাঊদ ১/৩৩২)
‘ইলালুদ দারাকুত্বনী’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-
وَقَوْلُ حَضْرَتْ سَلِيْمِ بْنِ حَيَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِيْهِ اَصَحُّ لِاَنَّهٗ ثِقَةٌ.
অর্থ: “এই ক্ষেত্রে সালীম ইবনে হাইয়্যাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথা সর্বাধিক ছহীহ। কেননা তিনি হচ্ছেন ছিক্বাহ।” সুবহানাল্লাহ! (‘ইলালুদ দারাকুত্বনী ১/১৬৭)
‘ইলালুদ দারাকুত্বনী’ কিতাবে আরো উল্লেখ রয়েছে,
حَضْرَتْ سَلِيْمٌ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ثِقَةٌ
অর্থ: “হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হচ্ছেন ছিক্বাহ।” সুবহানাল্লাহ! (‘ইলালুদ দারাকুত্বনী ১/২২৫)
এছাড়াও হযরত ইমাম দারাকুত্বনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘যিকরু আসমা ও তাবিঈন’ নামক কিতাবের ২য় খণ্ডের ১০৮ নং পৃষ্ঠায় হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ছিক্বাহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
‘মাওসূ‘য়াতু আক্বওয়ালি আহমদ ইবনে হাম্বল’ নামক কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-
قَاَل حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ اَحْـمَدَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ اَبِـىْ حَضْرَتْ سَلِيْمُ بْنُ حَيَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ هُوَ ثِقَةٌ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার সম্মানিত পিতা (হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি) বলেছেন, হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ।” সুবহানাল্লাহ! (মাওসূ‘য়াতু আক্বওয়ালি আহমদ ইবনে হাম্বল )
হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘বুখরী শরীফ’-এ ৭ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মুসলিম শরীফ’-এ ৮ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম আবূ দাঊদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘আবূ দাঊদ শরীফ’-এ ১ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তিরমিযী শরীফ’-এ ৪ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও ১. সুনানে নাসায়ী, ২. সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩. মুসনাদে আহমদ, ৪. ছহীহ ইবনে হিব্বান, ৫. মুসনাদে বাযযার, ৬. মুসনাদে ত্বয়ালসী, ৭. আস সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী, ৮. মুসনাদে আবী ইয়া’লা, ৯. সুনানুদ দারাকুতনী, ১০. আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী, ১১. আল মুসনাদুল মুস্তাখরাজ, ১২. মুস্তাখরজে আবী ‘আওয়ানা, ১৩. আত তাওহীদ লিইবনে খুযাইমাহ, ১৪. আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী, ১৫. আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত ত্ববারনী, ১৬. আল মু’জামুছ ছগীর লিত ত্ববারনী, ১৭. আমছালুল হাদীছ লিআবিশ শায়খ আল ইছবাহানী, ১৮. আল আহকামুশ শর‘ইয়্যাহ, ১৯. আস সুনানুছ ছুগরা লিল বাইহাক্বী, ২০. আখবারু মক্কাহ, ২১. তাহযীবুল আছার লিত ত্ববারী, ২২. দালায়িলুন নুবুুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী, ২৩. শরহুস সুন্নাহ লিল বাগভী, ২৪. শরহু মুশকিলিল আছার, ২৫. শরহু মা‘য়ানিয়িল আছার, ২৬. শু‘য়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী, ২৭. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, ২৮. মু’জামুল ইসমা‘ঈলী, ২৯. মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ লিআবী না‘ঈমসহ আরো অনেক বিশ্বখ্যাত এবং সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহে হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণিত বহু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কতো উচ্চ স্তরের সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য ছিক্বাহ রাবী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
৩. হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি:
হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সম্মানিত তাবিয়ী এবং সর্বজনমান্য নির্ভরযোগ্য বিশিষ্ট ছিক্বাহ রবী। সুবহানাল্লাহ! উনার বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম আবূ দাঊদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারাসহ আরো অন্যান্য বিশ্বখ্যাত ও সর্বজনমান্য ইমাম-মুজতাহিদগণ গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্পর্কে হাকিমে হাদীছ হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনে মু‘ঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
عَنْ حَضْرَتْ يَـحْيَـى بْنِ مُعِيْـنٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ حَضْرَتْ سَعِيْدُ بْنُ مِيْنَاءَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ثِقَةٌ.
অর্থ: “হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনে মু‘ঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ।” সুবহানাল্লাহ! (আল জারহু ওয়াত তা’দীল লির রাজী)
হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
حَضْرَتْ سَعِيْدُ بْنُ مِيْنَاءَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ثِقَةٌ.
অর্থ: “হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ।” সুবহানাল্লাহ! (আল ‘ইলাল ওয়া মা’রিফাতুর রিজাল লিআহমদ ইবনে হাম্বল, আল জারহু ওয়াত তা’দীল লির রাজী)
হযরত ইমাম দারাকুত্বনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ হযরত ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল কাশ্শাফ ফী মা’রিফা’ নামক কিতাবে এবং হযরত ইমাম ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আছ ছিক্বাত’ নামক কিতাবে হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ছিক্বাহ বলেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তাহ্যীবুত তাহ্যীব’ নামক কিতাবে বলেন-
قَالَ حَضْرَتْ اِبْنُ مُعِيْـنٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَحَضْرَتْ اَبُوْ حَاتِـمٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ثِقَةٌ وَذَكَرَهٗ حَضْرَتْ اِبْنُ حِبَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِـى الثِّقَاتِ
অর্থ: “হযরত ইয়াহইয়া ইবনে মু‘ঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম আবূ হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ছিক্বাহ বলেছেন এবং হযরত ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘আছ ছিক্বাত’ নামক কিতাবে উনার আলোচনা মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাহযীবুত তাহযীব)
হযরত ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তাহ্যীবুত তাহ্যীব’ নামক কিতাবে আরো বলেন-
قَالَ حَضْرَتْ اَلنَّسَائِىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِـى الْـجَرْحِ وَالتَّعْدِيْلِ ثِقَةٌ.
অর্থ: “হযরত ইমাম নাসায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল জারহু ওয়াত তা’দীল’ নামাক কিতাবে উনাকে ছিক্বাহ বলেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘সিয়ারু আ’লামিন নুবালাতে’ বলেন-
حَضْرَتْ سَعِيْدُ بْنُ مِيْنَاءَ الْـحِجَازِىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ * (خَ، م، د، ت، ق) اَلْاِمَامُ الثِّقَةُ اَبُو الْوَلِيْدِ الْـحِجَازِىُّ.حَدِيْثُهٗ فِـى الصِّحَاحِ.
অর্থ: “হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা হিজাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বুখারী, মুসলিম, আবূ দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ) তিনি ইমাম ও ছিক্বাহ আবুল ওয়ালীদ হিজাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনার বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ছিহাহ সিত্তাহর মধ্যে রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’)
আল্লামা বদরুদ্দীন ‘আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
حَضْرَتْ سَعِيْدُ بْنُ مِيْنَاءَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ………. وَقَالَ حَضْرَتْ اَحْـمَدُ بْنُ حَنْــبَلٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَحَضْرَتْ يَـحْيـَى بْنُ مُعِيْــنٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَحَضْرَتْ اَبُوْ حَاتِـمٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ثِقَةٌ ذَكَرَهٗ حَضْرَتْ اِبْنُ حِبَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِـىْ كِتِابِ الثِّقَاتِ.
অর্থ: “হযরত সা‘ঈদ ইবনে রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ……………. হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হাকিমে হাদীছ হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনে মু‘ঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম আবূ হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা ছিক্বাহ বলেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর হযরত ইমাম ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘আছ ছিক্বাত’ নামক কিতাবে উনার আলোচনা মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাগানিউল আখইয়ার)
হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘বুখারী শরীফ’-এ ৯ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মুসলিম শরীফ’-এ ৭ টিরও অধিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম আবূ দাঊদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘আবূ দাঊদ শরীফ’-এ ১ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তিরমিযী শরীফ’-এ ১ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও ১. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, ২. মুসনাদে আহমদ, ৩. মুসনাদে বাযযার, ৪. আল মুসনাদুল মুস্তাখরাজ, ৫. মুস্তাখরজে আবী ‘আওয়ানা, ৬. ছহীহ ইবনে হিব্বান, ৭. শরহুস সুন্নাহ লিল বাগভী, ৮. আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী, ৯. শু‘য়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী, ১০. মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার লিলবাইহাক্বী, ১১. দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী, ১২. আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী, ১৩. আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত ত্ববারনী, ১৪. মুসনাদে আবী ইয়া’লা, ১৫. মুস্তাদরকে হাকিম, ১৬. সুনানুদ দারাকুতনী, ১৭. শরহু মুশকিলিল আছার, ১৮. শরহু মা‘য়ানিয়িল আছার, ১৯. মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ লিআবী না‘ঈম, ২০. আমছালুল হাদীছ লিআবিশ শায়খ আল ইছবাহানী, ২১. আল আহকামুশ শর‘ইয়্যাহ, ২২. আস সুনানুছ ছুগরা লিল বাইহাক্বী, ২৩. তাহযীবুল আছার লিত ত্ববারী ২৪. মুসনাদে আবী ‘আওয়ানা, ২৫. মুসনাদে ত্বয়ালসী, ২৬. মু’জামু ইবনিল আ’রবী, ২৭. সুনানু সা‘ঈদ বিন মানছূরসহ আরো অনেক বিশ্বখ্যাত এবং সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহে হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণিত বহু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কতো উচ্চ স্তরের সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য ছিক্বাহ রাবী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এই বিশুদ্ধ সনদ মুবারক-এ ২৬টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে:
১. বুখারী শরীফ = ১টি
২. মুসলিম শরীফ = ১টি
৩. মুসনাদে আহমদ শরীফ = ৮টি
৪. ছহীহ্ ইবনে হিব্বান শরীফ = ১টি
৫. আবূ না‘ঈম শরীফ (মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ) = ১টি
৬. বাইহাক্বী শরীফ (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ) = ১টি
৭. আল মুখতাছারুন নাছীহ শরীফ = ১টি
৮. আল ফাওয়ায়িদ শরীফ = ১টি
৯. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ শরীফ = ২টি
১০. শরহুস সুন্নাহ শরীফ = ১টি
১১. মুস্তাখরাজে আবী ‘আওয়ানাহ শরীফ = ১টি
১২. মুসনাদে আবী ‘আওয়ানাহ শরীফ = ১টি
১৩. আস সুনানুল কুবরা শরীফ (বাইহাক্বী) = ১টি
১৪. আছ ছিহাহ ওয়াল মাশাহীর শরীফ = ১টি
১৫. মুসনাদে আবী দাঊদ ত্বয়ালসী শরীফ = ৪টি
এই বিশুদ্ধ সনদ মুবারক-এ ছহীহ বুখারী শরীফ-এ বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ:
وَقَالَ حَضْرَتْ عَفَّانُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ حَدَّثَنَا حَضْرَتْ سَلِيْمُ بْنُ حَيَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ مِيْنَاءَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ سَـمِعْتُ اَبَا هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا عَدْوٰى وَلَا طِيَـرَةَ وَلَا هَامَةَ وَلَا صَفَرَ وَفِرَّ مِنَ الْـمَجْذُوْمِ كَمَا تَفِرُّ مِنَ الْاَسَدِ
অর্থ: “হযরত ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাদের নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, তিনি বলেন, আমাদের নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছি যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সংক্রামক রোগ বলতে কিছুই নেই, অশুভ ও কুলক্ষণ বলতে কিছুই নেই, পেঁচার মধ্যে কোন কুলক্ষণ নেই এবং সম্মানিত ও পবিত্র সফর শরীফ মাস উনার মধ্যে কোন অশুভ নেই। তুমি কুষ্ঠরোগী থেকে দূরে থাকো, যেভাবে তুমি বাঘ হতে দূরে থাকো।” (ছহীহ বুখারী শরীফ : دار طوق النجاة হতে প্রকাশিত : ৭ম খ- ১২৬ নং পৃষ্ঠা : বাবুল জুযাম : মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৫৭০৭)
সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা তো অবশ্যই; এমনকি কাট্টা গোমরাহ, ওহাবী নাছিরুদ্দীন আলবানী তার ‘সিলসিলাতু আহাদীছিছ ছহীহাহ’-এর ২য় খণ্ডের ৪১৪ নং পৃষ্ঠায় এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে ছহীহ হিসেবে মেনে নিয়েছে।
এই বিশুদ্ধ সনদ মুবারক-এ ছহীহ মুসলিম শরীফ-এ বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ
حَدَّثَنَا حَضْرَتْ اَبُوْ بَكْرِ بْنُ اَبِـىْ شَيْبَةَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ حَدَّثَنَا حَضْرَتْ عَفَّانُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ حَدَّثَنَا حَضْرَتْ سَلِيْمُ بْنُ حَيَّانَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ حَدَّثَنَا حَضْرَتْ سَعِيْدُ بْنُ مِيْنَاءَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَثَلِـىْ وَمَثَلُ الْاَۢنْبِيَاءِ كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنٰـى دَارًا فَاَتَـمَّهَا وَاَكْمَلَهَا اِلَّا مَوْضِعَ لَبِنَةٍ فَجَعَلَ النَّاسُ يَدْخُلُوْنَـهَا وَيَتَعَجَّبُوْنَ مِنْهَا وَيَقُوْلُوْنَ لَوْلَا مَوْضِعُ اللَّبِنَةِ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاَنَا مَوْضِعُ اللَّبِنَةِ جِئْتُ فَخَتَمْتُ الْاَۢنْبِيَاءَ.
অর্থ: “হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাদের নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত আবূ বকর ইবনে আবী শায়বাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, তিনি বলেন, আমাদের নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, তিনি বলেন, আমাদের নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, তিনি বলেন, আমাদের নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে, তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের দৃষ্টান্ত মুবারক হচ্ছেন ঐ ব্যক্তির ন্যায়, যে ব্যক্তি এমন একটি বাড়ি নির্মাণ করেছে যা পরিপূর্ণভাবে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে একটি মাত্র ইটের স্থান ব্যতীত। অর্থাৎ একটি ইটের স্থান খালি ছিলো। লোকজন সেই ঘরে প্রবেশ করে এবং আশ্চর্য প্রকাশ করে বলেন, যদি ঐ ইটের স্থানটি না হতো অর্থাৎ যদি ঐ স্থানটি খালি না থাকতো! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আর আমিই হচ্ছি সেই সম্মানিত ইট মুবারক। আমি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছি, অতঃপর সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক উনার ধারাবাহিকতা সমাপ্ত হয়েছেন’। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ আমার মাধ্যমেই সেই সম্মানিত ঘর মুবারক তথা সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক পূর্ণতায় পৌঁছেছেন, সৌন্দর্যম-িত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ছহীহ মুসলিম শরীফ : দারুল আফাক্ব বৈরূত থেকে প্রকাশিত ছহীহ মুসিলম শরীফ ৭ম খ- ৬৫ নং পৃষ্ঠা, বাবু যিক্রি কাওনিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাতামুন নাবিয়্যীন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৬১০৩)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা এক বাক্যে ছহীহ হিসেবে মেনে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর কাট্টা গোমরাহ, ওহাবী আলবানী তার ‘সিলসিলাতু আহাদীছিছ ছহীহা-এর ১২তম খণ্ডের ১৮ নং পৃষ্ঠায় এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছহীহ হিসেবে মেনে নিয়েছে।
মুসনাদে আহমদ শরীফ উনার মধ্যে এই সম্মানিত সনদ মুবারক এ ৮টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছেন। প্রতিটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সম্মানিত সনদ মুবারক উনার ব্যাপারে শু‘য়াইব আরনাঊত তিনি বলেন-
اِسْنَادُهٗ صَحِيْحٌ عَلـٰى شَرْطِ الشَّيْخَيْـنِ
অর্থ: “এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সম্মানিত সনদ মুবারক হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং হযরত ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের শর্ত অনুযায়ী ছহীহ।” সুবহানাল্লাহ!
মোট কথা, এই বিশুদ্ধ সনদ মুবারক-এ ২৫ টিরও অধিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছেন। কলেবর বৃদ্ধির আশঙ্কায় আমরা এখানে সমাপ্ত করলাম। তাহলে এখান থেকে এ বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও চির অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত। সুবহানাল্লাহ! কাজেই, এরপরেও যারা এ বিষয়ে চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এটা যারা মানবে না, সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার দৃষ্টিতে তারা হচ্ছে লা-মাযহাবী, ওহাবী-সালাফী, মুনাফিক্ব-উলামায়ে সূ’ ও বাতিল ৭২ ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ অস্বীকার করার কারণে কাট্টা কাফির ও চির মাল‘ঊন। ইহকালে তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- আর পরকালে রয়েছে তাদের জন্য জাহান্নামের সবচেয়ে ভয়াবহ কঠিন আযাব। না‘ঊযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে ছহীহ সমঝ দান করুন। আমীন!
-মুহম্মদ আল আমীন