সারাবছর ছবি, বেপর্দা, বেহায়াপনা, অশ্লীল বিজ্ঞাপন ও ব্যাপক অনৈসলামিক সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের বিরুদ্ধে না বলে কেবল- নির্বাচনের সময় ইসলামের দোহাই দেয়া ইসলাম নিয়ে খেল-তামাশা করা। জামাতী-খারেজীরা সে জঘন্য খেলাই খেলছে এবং মুসলমানদের সাথে স্পষ্ট প্রতারণা ও প্রকাশ্য মুনাফিকী করছে

সংখ্যা: ১৭১তম সংখ্যা | বিভাগ:

সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মহা পরাক্রমশালী হয়েও আল্লাহ পাক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মশার উপমা দিতেও কুণ্ঠা বোধ করেন না। নিষ্ফল প্রচারকারী ও প-শ্রমকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তারা মাকড়শার জালের ন্যায় ঘর বানায়।” উল্লেখ্য, মাকড়সার জালের ন্যায় ঘরের মত ঠুনকো ও ভঙ্গুর ঘর দ্বিতীয়টি সৃষ্টি জগতে নেই। তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারীরা ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী খিলাফত কায়েম ইত্যাদি প্রচারের বিপরীতে তাদের কর্মকা- নিছক মাকড়সার জাল বুনার ন্যায় অসার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়। আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া কিছুই নয়। অলীক ও অবাস্তব ছাড়া কিছুই নয়। ইসলামের কাজ করার জন্য চাই ঈমান। ঈমানের বহিঃপ্রকাশ। তার কুওওয়ত, বলে। হাদীছ শরীফে এই ঈমানী বলের পরিচয় দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘যখন কোন স্থানে অন্যায় সাধিত হয়, তখন হাত দ্বারা বাধা দিও, না পারলে মুখে বল। তাও না পারলে অন্তর থেকে ঘৃণা কর। আর শেষোক্তটি হল তৃতীয় স্তরের ঈমান।’ বলাবাহুল্য, আজকে তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারীদের মাঝে তৃতীয় স্তরের ঈমানটিও অবশিষ্ট নেই। রাজাকার, আল বাদর, জামাতী, দেওবন্দী, খারেজী, ওহাবীরা ইসলামের নামে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। ভাবখানা এই যে; তারা ইসলামী দল। সারা বছর তারা ইসলামী কাজ করে থাকে। আর দাবীখানা এরূপ যে, তাদের ইসলামী কর্মকা-ে জনগণ তুষ্ট ও প্রভাবিত এবং এদেশের সবাই খুবই ইসলাম দরদী সাচ্চা মুসলমান হয়ে গেছে। যতই দিন যাচ্ছে, ততই তথাকথিত ইসলামী দলগুলোর কর্মকা-ে মুসলমানদের মধ্যে ঈমানী জজবা তৈরী হচ্ছে। দেশে দিন দিন ইসলামী পরিবেশ বিস্তৃত হচ্ছে। ইসলামী অনুভূতি দিন দিন প্রবল হচ্ছে। ফলতঃ আগামী নির্বাচনেই এদেশবাসী জামাতীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করছে। আর জামাতীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে অধিষ্ঠিত হয়ে দেশে ইসলাম কায়েম করছে। মূলতঃ জামাতীদের এ প্রচারণার বিপরীতে বাস্তবতা সম্পর্কে মাকড়সার জালের ঘর ছাড়াও আল্লাহ পাক আরো একটি উপমা দেন। তাদের উদাহরণ ঐ বুড়ির মত, যে চড়কা কাটে সূতা বানায়; আবার তা ছিড়ে ফেলে। ফলতঃ সে যা করে তা কেবলি প-শ্রম হয়।  জামাতী-খারেজী-ওহাবীরা যা করছে বাস্তবতার নিরীখে তা শুধু প-শ্রমই নয় বরং সাথে সাথে প্রতারণাও। জামাতী, খারেজী, দেওবন্দী, রাজাকার, আল বাদর, ওহাবীরা এই আশায় বসে আছে যে, দেশে ইসলামী পরিবেশ তৈরীর জন্য দেশবাসী তাদের ভোট দিবে। কিন্তু বাস্তবতা কি বলে? দেশে ইসলামী পরিবেশ কি দিন দিন বাড়ছে? না জ্যামিতিক হারে কমছে?  এক্ষেত্রে জামাতী, খারেজীদের উদাহরণ- ‘তাদের চোখ আছে কিন্তু তারা দেখে না, তাদের কান আছে কিন্তু তারা শুনে না, অন্তরে আছে কিন্তু তারা অনুভব করে না’র মতই।  রাস্তার মোড়ে মোড়ে প্রায় বিবস্ত্র ওয়েস্টার্ন পোশাকে ও ঢংয়ে যুবক-যুবতীদের অশ্লীল বিজ্ঞাপনে সারাদেশ ছেয়ে গেছে। ক্লোজ-আপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ, ফটোলাক্স সুন্দরী, দারুচিনি দ্বীপের নায়িকার খোঁজে, ফটোসুন্দরী নির্বাচন ইত্যাদির চরম অশ্লীল প্রক্রিয়ায় সারাদেশ ও দেশবাসী মত্ত হয়ে আছে।  পবিত্র ঈদের মত বিষয় উপলক্ষ করে টিভি চ্যানেলগুলো প্রচার করছে শত শত সিনেমা, টেলিফিল্ম, নাচ-গান ইত্যাদি। প্রায় প্রতি মুহূর্তেই বের হচ্ছে ওমুক সিনেমা, নাটক, টেলিফিল্মের সিডি আর তমুক গানের অ্যালবাম ইত্যাদি। সারাদেশ সারা মুহূর্ত এসব নাজায়িয, হারাম আনন্দ, উল্লাসে বেহুশ হয়ে আছে।  কিন্তু জামাতী, খারেজী, ওহাবীরা কোন সময়ই এসব বিষয়ে মাথা ঘামায় না। এক্ষেত্রে তারা যে তৃতীয় স্তরের ঈমানও হারিয়েছে তা নয়; বরং তারা এখন পুরো ঈমানটাই হারিয়ে মুরতাদে পরিণত হয়েছে।  কারণ তারা নিজেরাই আজ ঐসব নাজায়িয কাজ যথা ছবি-বেপর্দাকে জায়িয করে মুরতাদে পরিণত হয়েছে। তারা যেমন দেদারছে ছবি তুলছে, তেমনি ব্যাপকভাবে নারী-নেতৃত্বকে সমর্থন করেছে, তাদের সাথে মাখামাখি করেছে। (নাউজুবিল্লাহ) কিন্তু তারা মুখে সব সময়ই ইসলামের ফেনা তুলেছে। ইসলামের লেবেল আঁকড়ে রেখেছে। অথচ তাদের সরকারের আমলেই যে এতসব অনৈসলামী সাংস্কৃতিক কর্মকা- চলেছে, সে ব্যাপারে তারা ছিল লজ্জাকর ও ন্যাক্কারজনকভাবে চুপ।  কিন্তু ইসলামী খিলাফত কায়েমের দাবীতে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের আশায় ও প্রচারে তারা এখনও বহাল। তবে কি তাদের কর্মকা- ও আশা স্পষ্ট ও পুরোই প্রতারণা প্রতীয়মান হয় না? এটা কি দিনের সূর্যের মত স্পষ্ট ও উজ্জ্বল নয় যে, ক্লোজ-আপ ওয়ানের মত তারকাভক্তরা, লাক্স ফটো সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়েসীরা, শত শত সিনেমা নাটকের রস আহরণে উল্লাসিত জনতা কখনও তাদের ভোট দেবে না।  কারণ, যে ইসলামের মিথ্যা দোহাইয়ে জামাতী, ওহাবীরা তাদের ভোট দাবী করে সে ইসলামী আদর্শ জামাতী, ওহাবীদের সাথেই নেই এবং সে ইসলামী আদর্শের অনিবার্যতা ও মধুরতা- নাজায়িয আনন্দে উল্লাসিত ও উদভ্রান্ত জনতার কাছে তুলে ধরে তাদেরকে ইসলামের পথে ফিরিয়ে আনার মত রূহানী যোগ্যতার বিন্দুমাত্র তাদের মাঝে নেই।  তারা মুখে মুখে এবং সময়ে সময়ে ইসলাম ইসলাম বলে কিন্তু যেসব বিজ্ঞাপন রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবাধে প্রদর্শিত হচ্ছে, তা যে শতকরা প্রায় ৯৫ ভাগ মুসলমানের এই দেশে কোনোমতেই  সঙ্গতিপূর্ণ নয়, সমর্থনযোগ্য নয়, সে ব্যাপারে তাদের কোনো আওয়াজ নেই।  যে অনৈসলামী সংস্কৃতি মুসলমানদের ঈমানের শেষ অনুভূতিটুকু বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে, সে ব্যাপারে তাদের কোনোই প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ নেই। কিন্তু তারপরও তাদের প্রচারণা ও আশাটা এ রকম যে, এমন বিপথগামী মুসলমানই যেন ইসলামের মুহব্বতে তাদেরকে ভোট দিবে। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, এসব বিপথগামী মুসলমানদের জন্য পপ তারকা ম্যাডোনা বা ইসলামের শত্রু বুশকেও ভোট দেয়া অনেক বেশী স্বতঃস্ফূর্ত হবে। কারণ তারা তাদের কাঙ্খিত ও লালিত অনৈসলামী সংস্কৃতিকে আরো বেশী অনৈসলামিক করবে, আরো বেশী অনৈসলামিক আনন্দে তাদের ভরিয়ে, মাতিয়ে তুলবে। (নাউজুবিল্লাহ) বলাবাহুল্য, এসব বিপথগামী মুসলমান; বুশ আর ম্যাডোনার মত জামাতীদেরও বড় পুঁজি। কারণ সত্যিকার মুসলমানের যদি জাগরণ ও বিস্তার ঘটে, তবে তারা জামাতের অনৈসলামিক চরিত্রটি যেমন নির্ণয় করবে, তেমনি সত্যিকার ইসলামী মাধুর্য ফুটিয়ে তুলে বিপথগামী মুসলমানকেও আকৃষ্ট করতে পারবে। তাতে জামাত তার স্বঘোষিত ইসলামের ঠিকাদারী হারিয়ে ফেলবে।  দেশের লোক যত মূর্খ থাকে, তত যেমন অত্যাচারী, স্বৈরাচারী শাসকের সুবিধা; তেমনি মুসলমান যত অজ্ঞ ও বেআমলদার থাকে, ততই জামাতী, খারেজীদের ইসলামী রাজনীতির নামে হালুয়া-রুটি অর্জনে সুবিধা। সারাবছর সারাসময় সব অনৈসলামের বিরুদ্ধে কথা না বলে, কাজ না করে কেবল নির্বাচনের সময় ইসলামের নামে ভোট চেয়ে ধরা না পড়ার মহাসুবিধা। ইসলামকে নিয়ে এরূপ ছিনিমিনি খেলা ও ব্যবসা করার পরও ভ- ও প্রতারক রূপে নির্ণীত হয়ে মার না খাওয়ার মহাসুবিধা। এক্ষেত্রে জামাতী-খারেজীদের ইসলামী খিলাফত কায়েমের কথা কুরআন শরীফে বর্ণিত উপমার মাকড়সার জালের ঘর বুনানো ছাড়া অন্য কিছুই নয়।

 -মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮

‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’- একটি সূক্ষ্ম ও গভীর ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া অথচ নিশ্চুপ তথাকথিত খতীব, মহিউদ্দীন, আমিনী ও শাইখুল হাদীছ গং তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ীরা- (১)

মওদুদীর নীতি থেকেও যারা পথভ্রষ্ট সেই জামাত- জামাতীদের জন্যও ভয়ঙ্কর মুনাফিক॥ আর সাধারণের জন্য তো বলারই অপেক্ষা রাখেনা

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২