সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সংখ্যা: ২৯৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

মুহম্মদ ইরফানুল হক

বানারীপাড়া, বরিশাল

সুওয়াল: সম্প্রতি কতক নামধারী উলামায়ে সূ’ হিন্দু-মুশরিকদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, যতো ইচ্ছে মুর্তি তৈরী করুন, পাহারা দেয়ার দায়িত্ব তাদের। নাঊযুবিল্লাহ! এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফের ফায়ছালা জানিয়ে বাধিত করবেন।

জাওয়াব: পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফে মূর্তি ও মূর্তি পূজার ব্যাপারে শক্ত হুশিয়ারী দেয়া হয়েছে, শাস্তির কথা বলা হয়েছে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُـوْا قَـوْلَ الزُّوْرِ

অর্থ: তোমরা মূর্তির অপবিত্রতা থেকে এবং মিথ্যা বলা থেকে বেঁচে থাকো। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

بُعِثْتُ لِكَسْرِ الْمَزَامِيْرِ وَالْاَصْنَامِ

অর্থ: আমি বাদ্যযন্ত্র ও মূর্তি ধ্বংস করার জন্য প্রেরিত হয়েছি।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ اُمَامَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ بَـعَثَنِىْ رَحْمَةً لِّلْعَالَـمِيْنَ وَهُدًى لِّلْعَالَـِمِيَنْ وَاَمَرَنِىْ رَبِّىْ عَزَّ وَجَلَّ بِمَحْقِ الْـمَعَازِفِ وَالْـمَزَامِيْرِ وَالْاَوْثَانِ وَالصَّلِيْبِ وَاَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ

অর্থ: হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন সমস্ত জাহানের জন্য রহমত দানকারী এবং হিদায়েত দানকারী হিসেবে। আর আমাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি আদেশ মুবারক করেছেন, বাদ্যযন্ত্র, মূর্তি, ক্রুশ ও জাহিলী কাজসমূহ ধ্বংস করার জন্য। (মুসনাদে আহমদ ৫/২৬৮, মুসনাদে হারিছ ২/৭৭০)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

أَرْسَلَنِىْ بِصِلَةِ الأَرْحَامِ وَكَسْرِ الأَوْثَانِ وَأَنْ يُّـوَحَّدَ اللهُ لَا يُشْرَكُ بِهٖ شَىْءٌ

অর্থ: আমাকে আত্নীয়তার বন্ধন সুদূঢ় করার জন্য, মূর্তি ভেঙ্গে ফেলার জন্য এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি যে একক, উনার সাথে কোন কিছু শরীক করা যাবে না। (এই বিষয়গুলো শিক্ষা দেয়ার জন্য) প্রেরণ করেছেন। (মুসলিম শরীফ হাদীছ শরীফ নং ১৯৬৭)

স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি আদেশ করলেন, তোমরা মুর্তির অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থাকো। আর তারা  বলেছে যতো ইচ্ছা মূর্তি তৈরী করুন, তারা পাহারা দিবে। নাঊযুবিল্লাহ! স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রেরণ করা হয়েছে সমস্ত মূর্তি ভেঙ্গে ফেলার জন্য, কায়িনাতবাসীকে মহান আল্লাহ পাক উনার তাওহীদ শিক্ষা দেয়ার জন্য, উনার সাথে কাউকে শরীক না করার জন্য। আর তারা মুশরিকদের পূজার মন্দির পাহারা দেয়ার যিম্মাদারী নিচ্ছে এবং পাহারা দিচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! শুধু এতটুকুই নয় তারা এটাকে আবার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দায়িত্ব বলে প্রচার করছে। নাঊযুবিল্লাহ! এবং গর্বের সাথে বলছে এটাই নাকি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সৌন্দর্য। নাঊযুবিল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে- দুনিয়ার কোনো একপ্রান্তে যদি হারাম কাজ হয়। আর অন্য প্রান্ত থেকে যদি কেউ সেটাকে সমর্থন করে। তাহলে তারা উভয়ে সমান গুনাহে গুনাহগার হবে। শুধুমাত্র সমর্থন করার জন্য। এখন যে সমস্ত উলামায়ে সূ’রা মুশরিকদের পূজায় পাহারা দিচ্ছে, যারা মন্দির রক্ষার জন্য প্রতিশ্রম্নতি দিচ্ছে তারা কি তাহলে মুশরিক হলো না? অবশ্যই তারাও মুশরিকদের মতো মূর্তি পূজারী হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি মুশরিকদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেছেন-

إِنَّ اللهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُّشْرَكَ بِهٖ وَيَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ يَّشَآءُ وَمَنْ يُّشْرِكْ بِاللهِ فَـقَدِ افْـتَـرٰى إِثْمًا عَظِيْمًا

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সাথে কাউকে শরিক করলে তাকে ক্ষমা করবেন না। এছাড়া অন্যান্য গুনাহ তিনি চাইলে ক্ষমা করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কাউকে শরীক করলো সে মূলত উনার প্রতি অপবাদ দিলো, কঠিন গুনাহ অর্জন করলো। নাঊযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৮)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

 لَا تُشْرِكْ بِاللهِ ۖ  إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ

অর্থ: তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক করোনা। নিশ্চয়ই শিরক অত্যন্ত কঠিন অপরাধ। (পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)

এরপর তারা এই মন্দির পাহারা দেয়ার কারণে লা’নতগ্রস্ত হচ্ছে। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন-

وَلَا تَدْخُلُوْا عَلَى الْمُشْرِكِيْنَ فِيْ كَنَائِسِهِمْ يَوْمَ عِيْدِهِمْ فَإِنَّ السَّخْطَةَ تَـنْزِلُ عَلَيْهِمْ

অর্থ: তোমরা মুশরিকদের উৎসবের দিনগুলিতে তাদের মন্দিরে প্রবেশ করো না। কেননা ঐ সময় তাদের উপর লা’নত বর্ষিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!  (সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী ৯/৩৯২, মুসনাদুল ফারূক্ব ২/৪৯৪)

সম্মানিত ঈমান উনার তিনটি স্তর রয়েছে। শরীয়ত বিরোধী কাজ দেখলে হাতে বাধা দেয়া, সেটা না পারলে মুখে প্রতিবাদ করা, এটাও না পারলে অন্তরে খারাপ জেনে সেই স্থান ত্যাগ করা। এ প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

مَنْ رَأٰى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَـلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهٖ فَإِنْ لَّـمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهٖ فَإِنْ لَّمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهٖ وَذٰلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ

অর্থ: তোমাদের মধ্যে কেউ যখন কোনো খারাপ কাজ হতে দেখবে তখন তার দায়িত্ব হচ্ছে সে যেন সেটাকে হাত দিয়ে বাধা দেয়, যদি সেই সামর্থ্য না  থাকে তাহলে সে যেন মুখ দিয়ে প্রতিবাদ করে। যদি সে মুখ দিয়েও প্রতিবাদ করতে না পারে তাহলে যেন অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে;  (সেখান থেকে চলে যায়) আর এই তৃতীয় নাম্বারটা হচ্ছে দুর্বল ঈমানের পরিচয়। (মুসলিম শরীফ হা/নং ১৮৬, মুসনাদে আহমদ ৩/৪৯)

অন্য বর্ণনায় রয়েছে-

لَيْسَ وَرَاءَ ذٰلِكَ مِنَ الْإِيمَانِ حَبَّةُ خَرْدَلٍ

অর্থ: এরপরে সম্মানিত ঈমান উনার আর কোনো স্তর নেই। (আল আহকামুশ শরইয়্যাহ লিল ইশিবীলী ৩/২১৬)

অর্থাৎ হারাম কাজ দেখে বাধা না দেয়ার কারণে এবং সেখানে অবস্থান করার কারণে তাদের ঈমানের আর কোনো স্তর বাকী থাকলো না। তারা বেঈমান হিসেবেই সাব্যস্ত হলো। নাঊযুবিল্লাহ!

কোনো স্থানে মহান আল্লাহ পাক উনার আয়াত শরীফ বা নিদর্শন মুবারক উনাকে অস্বীকার করতে বা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতে দেখলে সে স্থান ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَقَدْ نَـزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ اٰيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَـهْزَأُ بِهَا فَلَا تَـقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتّٰى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهٖ إِنَّكُمْ إِذًا مِّثْـلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْـعًا

অর্থ: আর নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি কিতাবে নাযিল করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে (কোনো স্থানে বা মজলিসে) মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র আয়াতসমূহ অস্বীকার করা হচ্ছে ও সেগুলোকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হচ্ছে তখন তোমরা তাদের সঙ্গে বসে থেকো না, যে পর্যন্ত না তারা অন্য কোনো প্রসঙ্গে যায় (বা এটা থেকে বিরত থাকে), (যদি তোমরা সেখানে বসে থাকো) নিঃসন্দেহে তাহলে তোমরাও তাদের মতোই হয়ে যাবে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মুনাফিক ও কাফিরদেরকে সম্মিলিতভাবে জাহান্নামে একত্রিত করবেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪০)

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফে উনার সাথে শরীক করতে নিষেধ করেছেন। আর পূজার মধ্যে সরাসরি এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিরুদ্ধাচরণ করা হয়। এর চেয়ে আর বড় ঠাট্টা-বিদ্রুপের স্থান যমীনের কোথাও হতে পারে না। আর নামধারী উলামায়ে সূ’রা সেই পূজার মণ্ডপ পাহারা দেয়ার ঠিকাদারী নিয়েছে এবং পাহারা দিচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হচ্ছে- এরা হলো মুসলমান নামধারী মুনাফিক। মহান আল্লাহ পাক তিনি এদেরকে কাফিরদের সাথে জাহান্নামে একত্রিত করবেন। নাঊযুবিল্লাহ!

সম্মানিত শরীয়ত উনার উছূল হচ্ছে-

اَلرِّضَا بِالْكُفْرِ كُفْرٌ

অর্থ: কুফরী কাজে সন্তুষ্ট হওয়া, খুশি প্রকাশ করা কুফরী। (লাওয়ামিউল আনওয়ার ১/৩৬৩)

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এই উলামায়ে সূ’রা এবং তাদের অনুসারীরা মন্দির পাহারা দিয়ে সেটা আবার প্রচার করছে এবং গর্ববোধ করছে। নাঊযুবিল্লাহ! অথার্ৎ তারা বড় অপরাধ করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে, খুশি প্রকাশ করছে। নাঊযুবিল্লাহ! সম্মানিত শরীয়ত উনার উছুল অনুযায়ী তাদের ঈমান নষ্ট হয়ে গেছে, তারা বেঈমান, মুরতাদ হয়ে গেছে। নাঊযুবিল্লাহ!

আর শরীয়তে মুরতাদের ফায়ছালা হচ্ছে- তাদেরকে তওবা করার জন্য তিনদিন সময় দেয়া হবে, তিনদিনের মধ্যে তওবা না করলে তাদের একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। তারা হজ্জ করলে হজ্জ বাতিল হয়ে যাবে, বিবাহ করলে বিবাহ ফাসেদ হয়ে যাবে, তাদের জীবনের সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে। তাদেরকে মুসলমানদের কোনো কবরস্থানে দাফন করা যাবে না। কুকুর-শৃগালের মতো গর্তে পুতে রাখতে হবে। কেউ যদি তাদের গোসল, কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করে তার উপরও একই হুকুম বর্তাবে। নাঊযুবিল্লাহ! এখন যদি সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক থাকতো তাহলে তাদের সবার উপর এই হুকুম কায়িম করা হতো। তবে তারা ইহকালে বাঁচলেও পরকালে অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট তাদেরকে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে এবং তারা কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে।

মূলত: তারা সম্মানিত ইসলাম উনার নাম ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লাভ করার জন্যই এই কাজগুলো করে যাচ্ছে। তারা বহিঃবিশ্বের কাফিরদের কাছে প্রমাণ করতে চায় বাংলাদেশে অন্য ধর্মের মানুষ নিরাপদ, তারা তাদের ধর্ম নির্বিঘ্নে পালন করতে পারছে। আর এ জন্য এই উলামায়ে সূ’রা মূল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যাতে করে তাদেরকে যেন একটু ক্ষমতায় বসানো হয়। তারা হাক্বীক্বত দ্বীন ইসলাম চায়না। যদি চাইতো তাহলে কাফিরদের উপর ভরসা না করে, মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ভরসা করতো।

কিন্তু তারা এতোটাই বোকা এই বুঝটাও তাদের নেই যে, কাফিররা কখনোই চায়না কোনো দেশে ইসলাম জারী হোক, মুসলমানরা কর্তৃত্ব করুক। কারণ দুনিয়ার সমস্ত কাফিররাই ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী। মুসলমানদের বিরুদ্ধে তারা একদল।

তাদেরকে এই মন্দির পাহারা দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা বলে ‘সমস্ত ধর্মের লোকদের নিরাপত্তা দেয়া না কি দীন ইসলাম উনার দায়িত্ব।’ নাঊযুবিল্লাহ! তারা এটা বলে সাধারণ মানুষকে ধোকা দেয়ার চেষ্টা করছে। এখানে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, বর্তমানে আমাদের দেশে যেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা এটা কোনো ইসলামী ব্যবস্থা না। এটা গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা। গণতন্ত্রে সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তার জনগণকে নিরাপত্তা দেয়া। এখন মন্দির পাহারা দেয়া এটা মুশরিকদের দায়িত্ব। এটা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কোনো দায়িত্ব না। কারণ দ্বীন ইসলাম কাউকে কোনো অন্যায় কাজে সাহায্য সহযোগিতা করার অনুমতি দেয়নি।

হঁ্যা, কোনো এলাকায় যদি সম্মানিত খিলাফত ব্যবস্থা থাকে এবং সেখানকার বিধর্মীরা জিযিয়া কর দেয় তাহলে এই শর্তে তখন তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া হবে। তবে তারা তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের ধর্ম পালন করবে। তাদের ধর্মের কোনো প্রচার-প্রসার করতে পারবে না। নতুন করে কোনো মন্দির বানাতে পারবে না। (এ বিষয়ে জানতে হলে দ্বিতীয় খলীফা সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত পরিচালনার ইতিহাস দেখা যেতে পারে।)

মহান আল্লাহ পাক তিনি দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানদেরকে এই সমস্ত উলামায়ে সূ’দের ধোকা থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক্ব দান করুন।

মুহম্মদ আনিসুয যামান,

শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ।

সুওয়াল: কিছুদিন পূর্বে সিরাজগঞ্জ, শাহজাদপুর, গালা, দেওয়ান তারটিয়া এলাকায় মাহফিলের পোষ্টারে লিখিত হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে উনার প্রিয় রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অসীম রহমত ও কৃপায়……পবিত্র ইছালে ছওয়াব প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হইয়া আসিতেছে। এখন সুওয়াল হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত ও কৃপার বিষয়টি উনার প্রিয় রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত করাটা শরীয়ত সম্মত কি-না? দয়া করে জানাবেন।

জাওয়াব: মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত ও কৃপায় বা দয়ায় বিষয়টি উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পৃক্ত করা অবশ্যই শরীয়ত সম্মত।

জিন-ইনসান ক্বিল্লতে ইলিম ও ক্বিল্লতে ফাহাম অর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে এ বিষয়ে চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ! বিশেষ করে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বত, শ্রেষ্ঠত্ব, মযার্দা-মর্তবা, বুযুগীর্-সম্মান মুবারক সম্পর্কে না বুঝা ও না জানার কারণে তারা উক্তরূপ সুওয়াল করে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রকাশের মাধ্যমই হচ্ছেন উনার প্রিয়তম হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

كُنْتُ كَنْـزًا مَخْفِيًّا فَأَحْبَـبْتُ أَنْ أُعْرَفَ فَخَلَقْتُ الْـخَلْقَ لِأُعْرَفَ

অর্থ: “আমি গোপন সত্ত্বা মুবারক ছিলাম। অতঃপর আমার মুহব্বত হলো যে, আমি প্রকাশিত বা পরিচিত হই, তখনই আমার প্রকাশ বা পরিচিতির জন্য সৃষ্টির যিনি মূল (আমার মহাসম্মনিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনাকে সৃষ্টি করলাম ।” (আল মাকাছিদুল হাসানাহ ৮৩৮, কাশফুল খফা-২০১৩, আসনাল মুত্বালিব-১১১০, তমীযুত তীব-১০৪৫, আসরারুল মারফুয়া-৩৩৫, তানযিয়াতুশ শরীয়াহ, আদ্দুরারুল মুন্তাছিরা-৩৩০, আত তাযকিরা ফি আহাদীছিল মুশতাহিরা)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَوَّلُ مَا خَلَقَ اللهُ نُـوْرِىْ وَخَلَقَ كُلَّ شَىْءٍ مِّنْ نُـوْرِىْ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি র্সবপ্রথম আমার সম্মানিত নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন এবং আমার সম্মানিত নূর মুবারক থেকেই সমস্ত কায়িনাত সৃষ্টি করেছেন।” (নূরে মুহম্মদী, আল ইনসানুল কামিল, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী)

মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত নিয়ামত মুবারক যিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেছেন। আর উক্ত সমূদয় নিয়ামত মুবারকের বণ্টনকারী হচ্ছেন উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।

এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

إِنَّمَا أَنَا قَاسِمٌ وَّخَازِنٌ وَّاللهُ يُعْطِيْ

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন (সবকিছুর) দাতা বা দানকারী আর নিশ্চয়ই আমি হচ্ছি (সবকিছুর) বণ্টনকারী ও ভান্ডার। (বুখারী শরীফ)

বলার অপেক্ষা রাখে না, যিনি বণ্টনকারী তিনিও দাতা বা দানকারীই হয়ে থাকেন। বণ্টনকারী না দিলে কেউ কিছু লাভ করতে পারবে না।

কাজেই, মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত সমূহ পেতে হলে উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমেই লাভ করতে হবে। সেটা ঈমান, ইসলাম, হিদায়েত, সুন্নত, ইলিম, হিকমত, আমল, ইখলাছ, রহমত, বরকত, সাকীনা, মুহব্বত, মা’রিফত, নিছবত, কুরবত, রেযামন্দী, শাফায়াত, নাজাত, জান্নাত ইত্যাদি যা কিছুই হোক না কেন।

অতএব মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া বা রহমত মুবারক উনারও বণ্টনকারী ও দানকারী হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। যে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সম্মানিত কিতাব পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে নিজেই ইরশাদ মুবারক করে জানিয়ে দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَاۤ أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِيْنَ

অর্থ: অবশ্যই আমি আপনাকে রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছি। (সম্মানিত ও পবিত্র আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৭)

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমভাবে কায়িনাতবাসীর জন্য রহমত স্বরূপ বা রহমত মুবারক দানকারী সে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া তিনি খাছভাবে মু’মিন মুসলমানদের জন্য রহমত মুবারক দানকারী সে সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ

অর্থ: মু’মিনদের জন্য রহমত মুবারক দানকারী। (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭)

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وَلَوْ أَنَّـهُمْ رَضُوْا مَا اٰتَاهُمُ اللهُ وَرَسُوْلُهٗ وَقَالُوْا حَسْبُـنَا اللهُ سَيُـؤْتِيْـنَا اللهُ مِنْ فَضْلِهٖ وَرَسُوْلُهٗ إِنَّا إِلَى اللهِ رَاغِبُـوْنَ

অর্থ: কতই না ভাল হত, যদি তারা সন্তুষ্ট হত মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ও উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি এবং বলতো, মহান আল্লাহ পাক তিনিই আমাদের জন্যে যথেষ্ট। মহান আল্লাহ তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অথার্ৎ উনারা আমাদেরকে দিবেন নিজ করুণায়/দয়ায়। আমরা শুধু মহান আল্লাহ পাক উনারই আকাঙ্খী। (পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)

প্রতিভাত হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও ফদ্বল-করম বা দয়া করেন।

উপরে উল্লেখিত দলীল প্রমাণের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনিও যে করম বা দয়া ও রহমত করে থাকেন তা  সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত।

এ বিষয়ে আরো অনেক আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ রয়েছে। কলেবর বৃদ্ধির আশংকায় এখানে সংক্ষেপ করা হলো।

মুহম্মদ গোলাম রব্বানী,

চাঁপাই নবাবগঞ্জ।

সুওয়াল: যদি কোন ইমাম মেহরাবের ভিতর দাঁড়িয়ে ইমামতি করেন তাহলে নামায শুদ্ধ হবে কি না?

জাওয়াব: না, নামায শুদ্ধ হবে না। ইমাম ছাহেবকে মেহ্রাবের বাহিরে দাঁড়াতে হবে। আর যদি মেহ্রাবের ভিতরে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয়, তাহলে ইমামের সাথে আরো একাধিক বা কমপক্ষে একজন মুক্তাদী মেহ্রাবের ভিতর দাঁড়াতে হবে। ইমাম ছাহেব একাকী দাঁড়ালে নামায মাকরূহ্ তাহ্রীমী হবে। এটাই ফতওয়াগ্রাহ্য মত। (বাহ্রুর রায়েক, হাশিয়ায়ে তাহ্তাবি, আলমগীরী, হেদায়া, ফতহুল ক্বাদীর ইত্যাদি)

আহমদ নাসরীন জাহান,

পীরগঞ্জ, রংপুর।

সুওয়াল: আমাদের এলাকায় কয়েকটি ফিরকা বের হয়েছে তারা প্রচার করে বেরাচ্ছে যে, যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, আমাকে তোমরা যেভাবে নামায পড়তে দেখেছ সেভাবে নামায আদায় করো। তাছাড়া বাজারে বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বার কিছু বইপত্র বের হয়েছে যাতে লিখা হয়েছে, ‘পুরুষ ও মহিলার নামায আদায়ের পদ্ধতি একই রকম। কোনরূপ প্রভেদ বা পার্থক্য নেই।’ এ বিষয়ে সঠিক ফায়ছালা জানিয়ে বাধিত করবে।

জাওয়াব: বাতিল ফিরকার উক্ত বক্তব্য এবং লেখা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ইমাম ও ফক্বীহ্গণের মত ও পথের সম্পূর্ণ খিলাফ ও কুফরী। আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ইমাম ও ফক্বীহগণের মতে, নামাযের মধ্যে অনেক স্থানে মহিলার নামায আদায়ের পদ্ধতি আর পুরুষের নামায আদায়ের পদ্ধতি এক রকম নয়; বরং পার্থক্য রয়েছে। এ পার্থক্য শরয়ী কারণে এবং এ পার্থক্য কেবল নামাযেই নয় অন্যান্য ইবাদতের মধ্যেও রয়েছে। কেননা পুরুষ ও মহিলার অবস্থা সমান নয়। উদাহরণস্বরূপ মহিলাদের মাসিক অসুস্থতার সময় নামাযই পড়তে হয়না। বরং উক্ত অবস্থায় নামায পড়লে ছওয়াবের পরিবর্তে গুণাহ হবে। আর উক্ত অবস্থায় যে নামায তরক করা হয় তা ক্বাযাও করতে হয়না। মহিলাদের উক্ত অবস্থায় রোযার মাসে রোযা রাখাও নিষিদ্ধ। বরং অন্য সময় তারা রোযা ক্বাযা করে নিবে। হজ্বের সামর্থ থাকার পরও তাদের জন্য একাকী হজ্ব আদায় করা নিষিদ্ধ; যতক্ষণ না তাদের সাথে একজন সচ্চরিত্রবান মাহরাম পুরুষ থাকবে। মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে মহিলারা ছেলেদের অর্ধেক পেয়ে থাকে ইত্যাদি।

অতএব, কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফ মতে নামাযে যে সকল স্থানে পুরুষ ও মহিলার মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাব থেকে নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-

১. তাকবীরে তাহরীমা বাঁধার সময় পুরুষেরা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে। আর মহিলারা হাত উঠাবে কাঁধ পর্যন্ত।

২. ঠান্ডা বা অন্য কোন ওজর না থাকলে তাকবীরে তাহরীমা বাঁধার সময় পুরুষেরা চাদর ইত্যাদি হতে হাত বের করে কান পর্যন্ত হাত উঠাবে। আর মহিলারা সর্বদাই কাপড়ের ভিতর হাত রেখে কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাবে।

৩. পুরুষেরা নাভীর নীচে বা নাভী বরাবর হাত বাঁধবে। আর মহিলারা বুকের উপর হাত বাঁধবে।

৪. পুরুষেরা হাত বাঁধার সময় ডান হাতের বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা হালকাভাবে বাম হাতের কব্জি ধরবে এবং ডান হাতের অনামিকা, মধ্যমা ও শাহাদত আঙ্গুল বাম হাতের পিঠের উপর বিছিয়ে রাখবে। আর মহিলারা ডান হাতের পাতা বাম হাতের পিঠের উপর রাখবে। কিন্তু কব্জি বা কলাই ধরবেনা।

৫. রুকু করার সময় পুরুষেরা এমনভাবে ঝুকবে যেন মাথা, পিঠ ও নিতম্ব বরাবর হয়। আর মহিলারা এ পরিমাণ ঝুঁকবে যাতে আঙ্গুল হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছে।

৬. রুকুর সময় পুরুষেরা হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁক ফাঁক করে হাটু ধরবে। আর মহিলারা আঙ্গুল বিস্তার করবেনা এবং হাঁটুও ধরবেনা। বরং আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে হাঁটু  স্পর্শ করে রাখবে।

৭. রুকুতে পুরুষেরা হাঁটু সোজা করে রাখবে। আর মহিলারা হাঁটু কিছুটা বাঁকাবে।

৮. রুকুর অবস্থায় পুরুষেরা কনুই পাঁজর হতে ফাঁক রাখবে। আর মহিলারা কনুই পাঁজরের সাথে মিলিয়ে রাখবে।

৯. সিজদাকালে পুরুষেরা পেট উরু হতে এবং বাজু বগল হতে পৃথক রাখবে। আর মহিলারা পেট রানের সাথে এবং বাজু বগলের সাথে মিলিয়ে রাখবে।

১০. সিজদা অবস্থায় পুরুষেরা কনুই মাটি হতে উপরে রাখবে। আর মহিলারা মাটির সাথে মিলিয়ে বা বিছিয়ে রাখবে।

১১. সিজদার মধ্যে পুরুষেরা পায়ের আঙ্গুলগুলো ক্বিবলার দিকে মুড়িয়ে তার উপর ভর দিয়ে পায়ের পাতা দু’খানা খাঁড়া রাখবে। আর মহিলারা উভয় পায়ের পাতা ডান দিকে বের করে মাটিতে বিছিয়ে রাখবে।

১২. বসার সময় পুরুষেরা পায়ের আঙ্গুলগুলো ক্বিবলার দিকে মুড়িয়ে রেখে তার উপর ভর দিয়ে ডান পায়ের পাতা খাঁড়া রাখবে এবং বাম পায়ের পাতা বিছিয়ে তার উপর বসবে। আর মহিলারা পায়ের উপর বসবে না। বরং পায়ের পাতা ডান দিকে বের করে চোতরে ভর করে বসবে।

১৩. পুরুষদের জন্য নামাযে জেহরী বা স্বশব্দে ক্বিরায়াত রয়েছে। আর মহিলাদের জন্য জেহরী বা স্বশব্দে ক্বিরায়াত নেই।

১৪. পুরুষদের জন্য জামায়াতে নামায পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। আর মহিলাদের জন্য মসজিদে জামায়াতে গিয়ে নামায পড়া আমভাবে মাকরূহ তাহরীমী এবং খাছভাবে কুফরী।

১৫. পুরুষদের জন্য জুমুয়া ফরয। আর মহিলাদের জন্য জুমুয়া নেই।

১৬. পুরুষদের জন্য ঈদের নামায ওয়াজিব। আর মহিলাদের জন্য ঈদের নামায নেই।

১৭. পুরুষের জন্য আযান ও ইক্বামত রয়েছে। মহিলাদের জন্য আযান ও ইক্বামত নেই।

১৮. পুরুষদের জন্য ফজরের ওয়াক্তে বিশেষ পরিস্কার হলে ফরয পড়া মুস্তাহাব। আর মহিলাদের জন্য আঁধার থাকতেই পড়া মুস্তাহাব।

কাজেই, বাতিল ফিরকার লোকদের কোন বক্তব্য এবং তাদের কোন লেখা গ্রহন করা যাবে না যতক্ষণ না সেটা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের মুয়াফিক না হবে অথার্ৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুযায়ী না হবে।

জানা আবশ্যক, কোন বিষয়ে মাসয়ালা বা ফতওয়া দিতে হলে সমস্ত বর্ণনা যাচাই করে ফতওয়া দিতে হবে। কোন্ হাদীছ শরীফের কি হুকুম সেটা জানতে হবে। অন্যথায় মাসয়ালা বা ফতওয়া শুদ্ধ হবে না।

মূলকথা হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পুরুষ-মহিলা, জিন-ইনসান সকলের জন্য আদর্শ মুবারক। উনার সেই আদর্শ মুবারক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম- আনহুন্নাগণ উনারা গ্রহণ করেছেন বা উনাদেরকে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন। পরবতীর্ উম্মত সেই আদর্শ মুবারক গ্রহণ করতে হলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম-আনহুন্না উনাদের থেকে গ্রহণ করতে হবে। আর এ কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করে দিয়েছেন-

فَإِنْ اٰمَنُـوْا بِمِثْلِ مَا اٰمَنْـتُمْ بِهٖ فَـقَدِ اهْتَدَوْا

অর্থাৎ- লোকেরা যদি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ন্যায় ঈমান আনয়ন করে (এবং আমল করে) তবেই তারা হিদায়েত লাভ করবে। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৭)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

أَصْحَابِيْ كَالنُّجُوْمِ فَبِأَيِّهِمُ اقْـتَدَيْـتُمُ اهْتَدَيْـتُمْ

অর্থাৎ- আমার সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম নক্ষত্রের ন্যায়। তোমরা যে কাউকে অনুসরণ করলে হিদায়েত লাভ করবে। (মিশকাত শরীফ)

অতএব প্রতিভাত যে, পরবতীর্ পুরুষদের জন্য অনুসরণীয় হচ্ছেন হযরত পুরুষ ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা। আর পরবতীর্ মহিলাদের জন্য অনুসরণীয় হচ্ছেন হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনারা। আর এজন্যই পবিত্র হাদীছ শরীফ মারফত জানা যায় যে, হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনারা উনাদের যাবতীয় বিষয় হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিকট জেনে নিয়ে আমল করেছিলেন।

আলহাজ্জ মুহম্মদ আব্দুল ক্বাদির (সউদী প্রবাসী)

কুমিল্লা।

সুওয়াল: আবুল কালাম বাশার নামক জনৈক ব্যক্তি এক প্রশ্নের জবাবে বলেছে, পবিত্র সূরা দ্বুহা শরীফ উনার ৭নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পথহারা পেয়ে পথ দান করেছেন। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!

এ ব্যাপারে সঠিক ফায়ছালা জানিয়ে উম্মতের ঈমান হিফাজত করবেন।

জাওয়াব: মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কে উক্ত ব্যক্তির বক্তব্য সম্পূর্ণ অশুদ্ধ ও কুফরী হয়েছে। মুসলমান নামধারী কেউ কুফরী করলে সে মুরতাদ হয়ে যায়। আর মুরতাদের ব্যাপারে শরয়ী হুকুম হচ্ছে- তার ঈমান নষ্ট হবে। আমল বরবাদ হবে। বিবাহ বিচ্ছেদ হবে। তার ওয়ারিছ সত্ব বাতিল হবে। তার তওবার জন্য সময়সীমা তিন দিন। এর মধ্যে তওবা না করলে খিলাফতের তরফ থেকে তার একমাত্র শাস্তি মৃত্যদন্ড। সে মারা গেলে কোন মুসলমানের জন্য তার গোসল, কাফন, দাফন, জানাযা কোনটিই দেয়া জায়িয হবে না। এমনকি মুসলমানদের কবরস্থানেও তাকে দাফন করা যাবে না। বরং তাকে মৃত কুকুর-শৃগালের ন্যায় মাটিতে পূঁতে রাখতে হবে। নাঊযুবিল্লাহ!

হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারকের ব্যাপারে সবোর্পরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কে সে চরম জাহিলের পরিচয় দিয়েছে। সে এতটাই গন্ডমূর্খ যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যমীনে পাঠানোর উদ্দেশ্যই তার জানা নেই। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যমীনে পাঠানোর উদ্দেশ্যই হচ্ছে উনারা স্ব স্ব উম্মতদেরকে সঠিক পথে পরিচালনা করা, গোমরাহী থেকে হিদায়েত দান করা, পথহারা থেকে পথ প্রদর্শর্ন করা বা পথ দান করা। অথার্ৎ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি হাদী বা হিদায়েত দানকারী হিসেবেই যমীনে পাঠিয়েছেন। উনাদের প্রতি ওহী মুবারক নাযিল করেছেন। উনাদেরকে কিতাব ও ছহীফা দিয়েছেন বা নাযিল করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে ইলিম ও হিকমত শিক্ষা দিয়েছেন। উনাদেরকে নবী ও রসূল হিসেবে মনোনীত করেছেন এবং সৃষ্টি মুবারক করেছেন। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে কিতাবে বর্ণিত হয়েছে, নবী তো নবী যদিও তিনি শিশু হন না কেন। অর্থাৎ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নবী-রসূল হিসেবেই সৃৃষ্টি করা হয়েছে। বিষয়টি এরূপ নয় যে, উনারা শুরুতে সাধারণ মানুষ ছিলেন বা শুরুতে উনারা নবী বা রসূল ছিলেন না, পরে উনাদেরকে নবী বা রসূল করা হয়েছে। বরং যারা নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টির শুরু থেকেই নবী ও রসূল হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে এবং সৃষ্টি মুবারক করা হয়েছে। এ মর্মে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-

اَللهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهٗ

 অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি সবার্ধিক জ্ঞাত কোথায় বা কাকে তিনি উনার রিসালাত মুবারক প্রদান করবেন। (পবিত্র সূরা আনআম: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২৪)

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

إِنَّ اللهَ اصْطَفٰى اٰدَمَ وَنُـوْحًا وَّاٰلَ إِبْـرَاهِيْمَ وَاٰلَ عِمْرَانَ عَلَى الْعَالَمِيْنَ

 অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে, হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনাকে এবং হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার বংশধরকে এবং হযরত ইমরান আলাইহিস সালাম উনার বংশধরকে মনোনীত করেছেন সারা আলমের মধ্যে। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

اَللهُ يَصْطَفِيْ مِنَ الْمَلَآئِكَةِ رُسُلًا وَّمِنَ النَّاسِ

 অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি ফেরেশ্তাদের মধ্য হতে এবং মানুষের মধ্য হতে রসূল মনোনীত করেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৫)

উপরে উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের আলোকে প্রতিভাত যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত।

এখন যিনি বা যারা সম্মানিত নবী ও সম্মানিত রসূল হিসেবে মনোনীত, পবিত্র ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, পবিত্র কিতাব মুবারক ও পবিত্র ছহীফা মুবারক প্রাপ্ত, সম্মানিত হাদী হিসেবে মনোনীত তিনি বা উনারা কি করে পথহারা হতে পারেন?

উল্লেখ্য যে, পাপিষ্ঠ, গুনাহগার, পথহারা, বিভ্রান্ত, গুমরাহ, গযবপ্রাপ্ত, অভিশপ্ত, কাফির, মুশরিক, ফাসিক, জাহিল, জালিম, মিথ্যাবাদী ইত্যাদি শব্দসমূহ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারকের খিলাফ। এই সাধারণ জ্ঞান যার নেই সে ব্যক্তি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অর্থ ও ব্যাখ্যা করার মোটেও অধিকার রাখে না। তারপরও কেউ যদি জোরপূর্বক করে সেটা হবে গ্রীশচন্দ্র মাকার্ অর্থ ও ব্যাখ্যা এবং সে হবে সেই গ্রীশচন্দ্রেরই খাছ অনুসারী। যে অনেককিছু অনুবাদ করেছে বটে কিন্তু ঈমান-ই আনতে পারে নি। নাঊযুবিল্লাহ!

কাজেই, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের ক্ষেত্রে যেখানে পথহারা শব্দটি উনাদের শান মুবারক বিরোধী তাহলে যিনি সকল হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, সকল রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, যিনি ইমামুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, যিনি খাতামুন নাবিয়্যীন, যিনি রহমাতুল্লিল আলামীন, যিনি নূরে মুজাসসাম, যিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি সমস্ত সৃষ্টি কায়িনাতের মহাসম্মানিত মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্ষেত্রে উক্ত শব্দ ব্যবহার করা কত বড় জঘন্য অপরাধ ও কত বড় কুফরী হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলশ্রম্নতিতে সে ব্যক্তি কত বড় অপরাধী, কত বড় কাফির এবং কি পরিমাণ কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে তা ভাষায় বর্ণনা করা দুষ্কর। এ কারণেই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে- অর্থ: যে ব্যক্তি মনগড়াভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অর্থ বা ব্যাখ্যা করলো সে কুফরী করলো।

মনে রাখতে হবে, পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ এ উদ্দেশ্যে নাযিল ও বর্ণনা করা হয়নি যে, মহান আল্লাহ পাক উনার যারা মনোনীত ব্যক্তিত্ব যথাক্রমে যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শান মুবারকের খিলাফ বিষয় বলা হবে। বরং উনাদের ছানা-ছিফত মুবারক করার জন্য  নাযিল ও বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَرَفَـعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ

 অর্থ: (আমার মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমি আপনার যিকির বা আলোচনা মুবারক বুলন্দ বা সমুন্নত করেছি। (সম্মানিত ও পবিত্র আল ইনশিরাহ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিকির বা আলোচনা মুবারক, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক কতখানি বুলন্দ বা সমুন্নত করেছেন সে সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْـخُدْرِيِّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ، عَنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهٗ قَالَ : أَتَانِيْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَـقَالَ : إِنَّ رَبِّيْ وَرَبَّكَ يَـقُوْلُ : كَيْفَ رَفَـعْتُ ذِكْرَكَ ؟ قَالَ: وَاللهُ أَعْلَمُ ، قَالَ : إِذَا ذُكِرْتُ ذُكِرْتَ مَعِيْ

অর্থ: বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার নিকট হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম আসলেন অতঃপর বললেন, আয় মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আপনার এবং আমার যিনি রব তায়ালা তিনি বলেন বা জানতে চান, আপনার যিকির বা আলোচনা মুবারক, বুলন্দ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক কিভাবে তিনি প্রকাশ করবেন? মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উত্তরে বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনিই অধিক জানেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, (আমার মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জেনে রাখুন,) আমার যিকির বা আলোচনা মুবারক যেখানেই করা হবে সেখানেই আমার সাথে সাথে আপনারও যিকির বা আলোচনা মুবারক করা হবে। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

যার কারণে আমরা দেখতে পাই, পবিত্র কালেমা শরীফ থেকে শুরু করে পবিত্র নামায, পবিত্র আযান ইত্যাদি সমস্ত ইবাদত ও আমলের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

অর্থাৎ আমরা যে কালিমা শরীফ পাঠ করি

لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

উক্ত পবিত্র কালিমা শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারকের সাথে উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক সংযুক্ত। কোন ব্যক্তি যদি শুধু লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু বলে তাহলে সে মুসলমান হবে না, সে ঈমানদার হবে না, সে চির জাহান্নামী, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলবে। অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মেনে না নিবে ততক্ষণ পর্যন্ত সে মুসলমান হতে পারবে না, সে নাজাত পাবে না, সে জান্নাতে যেতে পারবে না, সে জাহান্নামী হবে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক উনাকে ঈমানের সাথে সম্পর্কযুক্ত করেছেন। নামায হোক, আযান হোক, সকল স্থানে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারকের সাথে উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক যুক্ত আছে। ইসলামে যত প্রকার ইবাদত আছে, ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, প্রত্যেকটা ইবাদত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ ব্যতীত করা সম্ভব নয়।

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

إِنَّاۤ أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيرًا. لِتُـؤْمِنُـوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ وَتُـعَزِّرُوْهُ وَتُـوَقِّرُوْهُ وَتُسَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّأَصِيْلًا

অর্থ: নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি প্রত্যক্ষদশীর্ বা স্বাক্ষ্যদাতা হিসেবে, সুসংবাদ দানকারী হিসেবে, সতর্ককারী হিসেবে, যেন তোমরা (উম্মত) অবশ্যই ঈমান আন মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। সুতরাং উনার তোমরা গোলামী বা খিদমত মুবারক করো, উনাকে তোমরা সম্মান করো এবং উনার তোমরা ছানা-ছিফত মুবারক করো সকাল-সন্ধ্যা অথার্ৎ দায়িমীভাবে।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাতহ্ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮,৯ )

যদি তাই হয়ে থাকে অথার্ৎ মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত ব্যক্তিত্ব উনাদের ছানা-ছিফত মুবারক করাই যদি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ নাযিল ও বর্ণনা করা উদ্দেশ্য হয় তাহলে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম শান মুবারকে ‘উনাকে পথহারা পেয়ে পথ দান করেছেন’ নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! পবিত্র সূরা দ্বুহা শরীফ উনার ৭নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার উক্ত অর্থ কি করে শুদ্ধ হতে পারে? বরং উনার পবিত্রতম শান মুবারকে উক্ত অর্থ কাট্টা কুফরীর শামিল।

প্রকৃতপক্ষে সুওয়ালে উল্লেখিত পবিত্র সূরা দ্বুহা শরীফ উনার ৭নং পবিত্র আয়াত শরীফ-

وَوَجَدَكَ ضَآلًّا فَـهَدٰى

 উনার বিশুদ্ধ অর্থ হচ্ছে, “মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে কিতাববিহীন পেয়েছেন অতঃপর কিতাব দিয়েছেন।” যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

قَدْ جَآءَكُمْ مِّنَ اللهِ نُورٌ وَّكِتَابٌ مُبِيْنٌ

অর্থ: অবশ্যই তোমাদের নিকট এসেছেন মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ হতে মহাসম্মানিত নূর অথার্ৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং প্রকাশ্য কিতাব অথার্ৎ পবিত্র কুরআন শরীফ। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মায়িদাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)

অথার্ৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে তাশরীফ মুবারকের পর ৪০তম দুনিয়াবী বয়স মুবারকের সময় আনুষ্ঠানিকভাবে রিসালাত মুবারক প্রকাশিত হয় অর্থাৎ উক্ত সময়ে কিতাব মুবারক নাযিল হওয়া শুরু হয়ে পরবতীর্ ২৩ বৎসরে তা শেষ হয়।

মোটকথা, কিতাব পাওয়া বা লাভ করার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে পরে সংঘটিত হয়েছে।

মুহম্মদ রিয়াজুল ইসলাম

সদর, চাঁদপুর

সুওয়াল: সাম্প্রতিক সময়ে হোচিমিন নামক এক ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ঢুকতে না পারার ঘটনা বেশ আলোচিত হয়েছে। এর আগে স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে ‘শরীফার গল্প’ শিরোনামে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়টি পাঠ্য করেছিলো এনসিটিবি, যদিও পরে সমালোচনার কারণে বাদ দেয়। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রান্সজেন্ডার কোটা চালু করা কিংবা মিডিয়ায় ট্রান্সজেন্ডার সংবাদ পাঠিকা অন্তর্ভুক্তি করার ঘটনায় ‘ট্রান্সজেন্ডার’ ইস্যুটি বার বার সামনে আসছে। যেহেতু এটা একটি নতুন ধরনের ফিতনা, তাই এ ব্যাপারে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সঠিক ফায়ছালা কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

জওয়াব: সম্মানিত দ্বীন ইসলাম অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার ফায়ছালা বা ফতওয়া হচ্ছে- ট্রান্সজেন্ডার সম্পূর্ণরূপে হারাম, নাজায়িয ও কাট্টা কুফরী। কারণ এটি হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিকে পরিবর্তন করা ও উনার সাথে বিদ্রোহ করার শামিল এবং একটি সমকামী মতবাদ যা ইবলীসী কর্মকাণ্ড হিসেবে গন্য।

এ সম্পের্ক মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

وَلَأٰمُرَنَّـهُمْ فَـلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ

অর্থ: “(শয়তান বললো-) নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে নির্দেশ দিবো, ফলে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিকে বিকৃত করবেই।” না’উযুবিল্লাহ। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৯)

সুতরাং, নি:সন্দেহে ট্রান্সজেন্ডার হচ্ছে একটি ইবলীসী কাজ। আর এটা লা’নতগ্রস্ত হওয়ারও কারণ। এ সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি বলেন-

لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُتَشَبِّهِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলার বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলার উপর লা’নত দিয়েছেন।” না’উযুবিল্লাহ। (বুখারী শরীফ)

কাজেই সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে ট্রান্সজেন্ডার সম্পূর্ণরূপে হারাম, নাজায়িয ও কাট্টা কুফরী।

ট্রান্সজেন্ডার শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে লিঙ্গ পরিবর্তন বা রূপান্তর। পরিভাষায় ট্রান্সজেন্ডার হলো- যারা সুস্থ স্বাভাবিকভাবে জন্ম গ্রহণ করেও কেবল খেয়াল-খুশির বশবর্তী হয়ে বিপরীত লিঙ্গের মতো হতে চায়। অনেকে নিজেকে ট্রান্সজেন্ডার দাবি করে সার্জারি বা হরমোন ট্রিটমেন্ট করে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করে। তবে এই মতবাদ অনুযায়ী সার্জারি না করে শুধু মুখে নিজেকে বিপরীত লিঙ্গের দাবি করলেও তাকে ট্রান্সজেন্ডার বলে ধারণা করা হয়। এই মতবাদ অনুসারে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত ফায়ছালা অনুযায়ী মানুষের লিঙ্গ নির্ধারিত হয় না। বরং বলা হয়, ‘লিঙ্গ একটি সামাজিক ধারণা। না’উযুবিল্লাহ! কোনো মহিলা যদি নিজেকে পুরুষ বলে মনে করে, তাহলে সে একজন পুরুষ। আবার কোনো পুরুষ যদি নিজেকে মহিলা বলে মনে করে, তাহলে সে একজন মহিলা।’ না’উযুবিল্লাহ!

সম্প্রতি নিজেদের সুশীল দাবি করা কিছু কুশীল ও তথাকথিত মুক্তমনা দল ট্রান্সজেন্ডারকে বৈধতা দেয়ার জন্য হিজড়াদের সাথে ট্রান্সজেন্ডারকে মিলিয়ে ফেলে। প্রকৃতপক্ষে হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার এক বিষয় নয়। হিজড়া হচ্ছে এক ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধী। যারা লিঙ্গ প্রতিবন্ধীরুপেই জন্মগ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে তাদের কোনো ইখতিয়ার নেই। অপরদিকে ট্রান্সজেন্ডার কোনো শারীরিক সমস্যা বা জন্মগত অসুস্থতা নয়; বরং এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা বা কুরুচি।

কেউ যদি স্বেচ্ছায় সার্জারি করে নিজের সুস্থ-সবল লিঙ্গ পরিবর্তন করে অথবা একজন পুরুষ সম্পূর্ণ পুরুষ শরীর থাকার পরও যদি মনে মনে নিজেকে মহিলা মনে করে। কিংবা একজন মহিলা পরিপূর্ণ মহিলা শরীর থাকার পরও যদি মনে মনে নিজেকে পুরুষ মনে করে, তবে ট্রান্সজেন্ডারদের দাবী হচ্ছে- ঐ ব্যক্তি একজন ট্রান্সজেন্ডার। বাস্তবে ট্রান্সজেন্ডার বলে কিছু নেই। এরা নকল পুরুষ বা নকল মহিলা। সম্প্রতি একটি গোষ্ঠী বের হয়েছে, তারা এ ধরনের মানসিক অসুস্থতা বা কুরুচিকে একটি ভিন্ন জেন্ডার বা লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি চায়। সমাজে তাদের পাকাপোক্ত অবস্থান চায়।

 উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার কয়েক বছর আগে প্রাকৃতিক হিজড়াদের স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু ট্রান্সজেন্ডার নামক মানসিক অসুস্থদের স্বীকৃতি দেয়নি। আর এটা স্বীকৃতি পাওয়ার মতোও কোনো বিষয় নয়। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْـثٰى

অর্থ: “কুসম! সেই মহান আল্লাহ পাক উনার, যিনি পুরুষ ও মহিলা সৃষ্টি করেছেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা লাইল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)

এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বিভিন্ন তাফসীরগ্রন্থে উল্লেখ রয়েছেন-

إنَّ اللّٰه لَـمْ يـَخْلُقْ خَلْقًا مِّنْ ذَوِى الْأَرْوَاحِ لَيْسَ بِذَكَرٍ وَّلَا أُنْـثٰى

অর্থঃ “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত অন্য কোন জীব বা প্রাণী সৃষ্টি করেননি। অর্থাৎ মানুষসহ সমস্ত প্রাণীই হয়তো পুরুষ অথবা মহিলা। এর বাইরে নয়।” (রূহুল বায়ান, ফুতুহুল গইব, তাফসীরে যামাখশারী ইত্যাদি)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

لِلّٰهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَآءُ يَهَبُ لِمَنْ يَّشَآءُ إِنَاثًا وَّيَهَبُ لِمَنْ يَّشَآءُ الذُّكُوْرَ. أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَّإِنَاثًا وَّيَجْعَلُ مَنْ يَّشَآءُ عَقِيْمًا إِنَّهٗ عَلِيْمٌ قَدِيْـرٌ

অর্থ:”মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত আসমান এবং যমীনের মালিক। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা মেয়ে সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা ছেলে সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন ছেলে ও মেয়ে উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করেন। নিশ্চয়ই তিনি সব কিছু জানেন, সমস্ত বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৯-৫০)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِيْ أَحْسَنِ تَـقْوِيْمٍ

অর্থ: অবশ্যই আমি মানুষকে সর্বোত্তম ছূরতে সৃষ্টি করেছি।” সুবহানাল্লাহ। (পবিত্র সূরা তীন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

কাজেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত সৃষ্টিকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি মানুষকে পুরুষ অথবা মহিলা হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং সর্বোত্তম ছূরত বা আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই মুসলমানের জন্য ফরয হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার এই ফায়ছালাকে বিনা চু-চেরা, কীল-কালে মেনে নেয়া এবং এর উপর সন্তুষ্ট থাকা।

 সুতরাং কেউ যদি নিজেকে ট্রান্সজেন্ডার দাবি করে অর্থাৎ কোনো পুরুষ যদি নিজেকে মহিলা দাবি করে অথবা কোনো মহিলা যদি নিজেকে পুরুষ দাবী করে, তাহলে তার অর্থ হলো মহান আল্লাহ পাক তিনি যে তাকে পুরুষ অথবা মহিলা হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, মহান আল্লাহ পাক উনার এই ফায়ছালার উপর সে সন্তুষ্ট না এবং সে এটা মানেও না: বরং সে এই ফায়ছালার বিরোধিতা করে এবং বিরোধিতা করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়ছালার বিপরীতে সে নিজেকে পুরুষ বা মহিলা হিসেবে দাবী করে। যা চরম সীমালঙ্ঘন, সুস্পষ্ট গোমরাহী, কাট্টা কুফরী ও চির জাহান্নামী হওয়ার কারণ।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَنْ يَّعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَيَـتَـعَدَّ حُدُوْدَهٗ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيْـهَا وَلَهٗ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ

অর্থ “আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের নাফরমানী করলো, অবাধ্য হলো এবং মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলো, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সে ব্যক্তি সেখানে অনন্তকাল যাবৎ অবস্থান করবে। তার জন্যে রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।” নাউযুবিল্লাহ। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা’ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ: لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَشَبِّهِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলার বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর এবং পুরুষের বেশ ধারণকারিণী মহিলার উপর লা’নত দিয়েছেন।” না’উযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ- পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৫৮৮৫)

এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় আল্লামা হযরত ইমাম আবুল হাসান ইবনে বাত্ত্বাল মালিকী কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

فِيْهِ مِنَ الْفِقْهِ أَنَّهٗ لَا يَجُوْزُ لِلرِّجَالِ اَلتَّشَبُّهٗ بِالنِّسَاءِ فِى اللْبَاسِ وَالزِّيْنَةِ الَّتِىْ هِىَ لِلنِّسَاءِ خَاصَّةً، وَلَا يَجُوْزُ لِلنِّسَاءِ التَّشَبُّهٗ بِالرِّجَالِ فِيْمَا كَانَ ذٰلِكَ لِلرِّجَالِ خَاصَّةً

অর্থ: “এই পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে ফিক্বহী মাসয়ালা বের করা হয়েছে যে, পুরুষদের জন্য জায়েয নেই মহিলাদের সাদৃশ্যতা ধারণ করা পোশাকের ক্ষেত্রে এবং ঐ সমস্ত সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে যা মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট। আর মহিলাদের জন্য জায়েয নেই পুরুষদের সাদৃশ্যতা ধারণ করা ঐ সবক্ষেত্রে যা পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট।” (শরহে ছহীহুল বুখারী লি ইবনে বাত্তাল ৯/১৪০)

একইভাবে মহিলাদের জন্য পুরুষদের ন্যায় অঙ্গভঙ্গি করা ও কথা বলা এবং পুরুষদের জন্য মহিলাদের ন্যায় অঙ্গভঙ্গি করা ও কথা বলা জায়েয নেই।

যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে ট্রান্সজেন্ডার কি করে জায়েয হতে পারে? কস্মিনকালেও জায়েয হতে পারে না।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ هُرَيْـرَةَ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ وَالْمَرْأَةَ تَـلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ

অর্থ: “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এমন পুরুষের উপর লা’নত দিয়েছেন, যে পুরুষ মহিলার পোশাক পরিধান করে এবং এমন মহিলার উপর লা’নত দিয়েছেন, যে মহিলা পুরুষের পোশাক পরিধান করে।” না’উযুবিল্লাহ! (আবু দাউদ শরীফ: হাদীছ শরীফ নং ৪০৯৮)

এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ‘ফাইযুল কাদীর’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-

حُرْمَةُ تَشَبُّهِ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَعَكْسِهٖ لِأَنَّهٗ إِذَا حُرِّمَ فِى اللِّبَاسِ فَفِى الْحَرَكَاتِ وَالسَّكِنَاتِ وَالتَّصْنَعِ بِالْأَعْضَاءِ وَالْأَصْوَاتِ أَوْلٰى بِالذَّمِّ وَالْقَبْحِ فَـيُحَرِّمُ عَلَى الرِّجَالِ التَّشَبُّهِ بِالنِّسَاءِ وَعَكْسِهٖ

অর্থ: পুরুষের জন্য মহিলাদের অনুকরণ করা হারাম এবং বিপরীতে মহিলাদের জন্য পুরুষের অনুকরণ হারাম। কেননা যদি পোশাকের ক্ষেত্রে একে অপরের অনুকরণ করা হারাম হয় তাহলে চলাফেরা, নড়াচড়া, উঠাবসা এবং অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তার ক্ষেত্রে অনুকরণের বিষয়টি আরো অধিক দোষণীয় ও নিকৃষ্ট। কাজেই পুরুষের জন্য মহিলাদের অনুকরণ করা হারাম এবং বিপরীতে মহিলাদের জন্য পুরুষের অনুকরণ হারাম। (ফাইযুল ক্বাদীর শারহুল জামিয়িছ ছগীর ৫/২৬৯)

যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে ট্রান্সজেন্ডার জায়েয হয় কিভাবে? সম্পূর্ণরূপে হারাম ও না জায়িয।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ: لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُخَنَّثِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالْمُتَـرَجِّلاَتِ مِنَ النِّسَاءِ وَقَالَ أَخْرِجُوْهُمْ مِنْ بُـيُـوْتِكُمْ قَالَ فَأَخْرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فُلَانًا وَأَخْرَجَ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فُلَانًا

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি লা’নত বর্ষণ করেছেন মহিলারূপী পুরুষ ও পুরুষরূপী মহিলাদের উপর এবং ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের ঘর থেকে তাদেরকে বের করে দাও।’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অমুক ব্যক্তিকে বের দিয়েছেন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফরূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি অমুক ব্যক্তিকে বের করে দিয়েছেন।” (বুখারী শরীফ- হাদীছ শরীফ নং ৫৮৮৬)

এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ইমাম ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

الْمُخَنَّثُ ضَرْبَانِ…….. وَالثَّانِي مَنْ يَّـتَكَلَّفُ أَخْلَاقَ النِّسَاءِ وَحَرَكَاتِهِنَّ وَسَكَنَاتِهِنَّ وَكَلَامَهُنَّ وَزِيَّـهُنَّ فَـهَذَا هُوَ الْمَذْمُوْمُ الَّذِيْ جَاءَ فِي الْحَدِيْثِ لَعْنُهُ

অর্থ: “মুখান্নাছ বা মহিলার স্বভাব ধারণকারী পুরুষ দুই প্রকার।… দ্বিতীয় প্রকার হচ্ছে- যে স্বেচ্ছায় বা ভান করে মহিলাদের নৈতিকতা, চলাফেরা, অঙ্গভঙ্গি, কথাবার্তা এবং রূপ-সৌন্দর্য গ্রহণ করে। কাজেই অবশ্যই সে দোষী বা শরীয়তের আদেশ অমান্যকারী। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যাকে লা’নত বর্ষণের কথা উল্লেখ রয়েছে। যা বুখারী শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে। অনুরূপ মুসনাদে আহমদ, আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ কিতাবসমূহেও বর্ণিত রয়েছে।

যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে ট্রান্সজেন্ডার কি করে জায়েয হতে পারে? তা মোটেও জায়েয হতে পারে না। বরং তা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও না জায়েয। জায়েজ ধারণা করাটাও কুফরী।

 সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল-জাওয়াব

সুওয়াল-জওয়াব

সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল-জাওয়াব