সুদী ব্যবস্থার কুফল আজ সারা বিশ্বে উন্মোচিত। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সুদী প্রথার কারণে ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছে না। তাদের জন্য তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকের পরিবর্তে প্রকৃত ইসলামী ব্যাংক গড়তে হবে

সংখ্যা: ২৫০তম সংখ্যা | বিভাগ:

বিশ্বে প্রতিনিয়ত ব্যাংকিং সেবায় গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশীদের মধ্যে ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশের ব্যাংক হিসাব রয়েছে। বাংলাদেশে ঋণ ও আমানতের সুদের হারের ব্যবধান ৫ দশমিক ২ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্ক ২ দশমিক ৩ শতাংশ ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের সাড়ে ৪ শতাংশ অর্থাৎ ২৮ লাখ ৪০ হাজার ধর্মপ্রাণ বিত্তশালী লোক ধর্মীয় কারণে ব্যাংকে যান না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার ০.২ শতাংশ উপজাতির ধর্মীয় সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সংরক্ষণে শুধু তৎপরই নয়; বরং বদ্ধপরিকর। সেক্ষেত্রে যারা ধর্মীয় কারণে ব্যাংক সেবা নিচ্ছে না, তাদের সংখ্যা ৪.৫ শতাংশ হওয়ার পরও তাদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সরকারের পদক্ষেপ কোথায়? উল্লেখ্য, বর্তমানে তথাকথিত যেসব ইসলামী ব্যাংক রয়েছে, তা সম্মানিত ইসলামী ভাবধারায় পরিচালিত নয় বিধায় তাকে ইসলামী ব্যাংক বলা যায় না। বরং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নাম ভাঙ্গিয়ে এখানে সুদের ব্যবস্থা আরো বেশি করা যায় বলে এখন শুধু বাংলাদেশের ধর্মব্যবসায়ীরাই নয়; ইউরোপ-আমেরিকার বিধর্মীরাও তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকিংয়ে নেমেছে।

বাংলাদেশে ব্যবসা করছে এমন কয়েকটি বিদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংকও সুদবিহীন ইসলামী ব্যাংকের প্রডাক্টস গ্রাহকদের জন্য বাজারে নিয়ে এসেছে। এসব ব্যাংকের অন্যতম হলো এইচএসবিসি এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এদের অন্যতম পণ্য দুটো হলো, আমানাহ্ ও সাঝেম এ ধরনের দুটো নাম। বোঝা গেল, এখানে ব্যবসা করতে এসে বিধর্মীরাও এ দেশের মানুষের চাহিদা দেখে ব্যাংকিং পণ্য ডিজাইন করেছে। যারা সুদবিহীন আর্থিক প্রডাক্টস বা পণ্যেও বিনিয়োগ করতে চায়, তাদের জন্য বিকল্পগুলো এখনো অবরুদ্ধ নয়। এদেশে এ পর্যন্ত সরকার কিংবা কোনো প্রাইভেট কোম্পানি সুদবিহীন বন্ড ছেড়ে অর্থ তুলতে উদ্যোগ নেয়নি। সুদবিহীন বন্ডকে সম্মানিত ইসলামী পরিভাষায় সুকুক (SUKUK)  বলা হয়। অতিসম্প্রতি লন্ডনে বিশ্ব ইসলামী ইকোনমিক ফোরামের (WIEF) শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। সম্মেলনটি উদ্বোধন করেছিলো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। সে ঘোষণা করলো- তার সরকার অতি শিগগিরই ইসলামী বন্ড সুকুক চালু করবে। ডেভিড ক্যামেরন এও বললো যে, সে লন্ডনকে ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থাপনার অন্যতম কেন্দ্র বানাতে চায়।

বলাবাহুল্য, যেটা ইংলিশ প্রধানমন্ত্রী বুঝলো, সেটা আজ পর্যন্ত মুসলিম অনেক দেশের প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, অর্থমন্ত্রীরা বুঝলো না। ইউরোপের অন্য দেশ ফ্রান্সও ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। রাশিয়াও এক্ষেত্রে উদারনীতি গ্রহণ করেছে। ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থার মূল উপাদান হলো, এ ব্যবস্থায় পূর্বনির্ধারিত সুদ (Interest) বলতে কিছু থাকতে পারবে না। গ্রাহকদের মুনাফার অংশীদার করতে হবে। এ ধারণা মুসলমানদের মধ্যে এসেছে সম্মানিত ইসলামী অনুশাসন থেকে; যে বিশ্বাস তাদেরকে সুদ গ্রহণ ও দেয়া থেকে দূরে থাকতে বলেছে। এ ধারণা সম্পূর্ণ যুক্তিভিত্তিক এবং বিজ্ঞানসম্মত। ফলে অমুসলিমদের পক্ষেও সুদবিহীন আর্থিক প্রডাক্টস তৈরি করতে কোনো অসুবিধা হয়নি। আজকে সুদবিহীন আর্থিক প্রডাক্টসের ক্রেতা তারাও। বাংলাদেশে তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে অনেক নন-মুসলিমও রয়েছে। তারা এসব ব্যাংকের অংশীদারও বটে। সম্মানিত ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থা এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত বিকল্প একটি ব্যবস্থা। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ইউরোপীয় এবং আমেরিকান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে ধসে পড়েছে, সেটা লক্ষ্য করে ওইসব দেশের নেতারা বড়ই উদগ্রীব।

অতিলোভ এবং সুদ ও ঋণের অতি ব্যবহার থেকে তাদের আর্থিক ব্যবস্থায় ধস নামে। লাখ লাখ আমেরিকানকে ঋণের জালে আবদ্ধ হয়ে ঘরবাড়ি হারাতে হয়েছে। আজ ইউরোপীয় ও আমেরিকান সরকারগুলো আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঋণগ্রস্ত। এ ঋণগ্রস্ততার মূল্যও দিতে হবে সেই দেশের জনগণকেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সুদভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কলাপস বা বসে যাওয়া থেকে অনেকে এখন বলছে, তোমরা যেসব মৌলিক বিষয়গুলোর ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে ওইভাবে চলতে দিলে আবারো বিপদ আসবে। বিপদটা আসবে হয়তো আরো অনেক বছর পর, যখন মানুষেরা পুরনো বিপদের কথা ভুলে যাবে। ওইসব পরিপ্রেক্ষিতেও অনেকে বলাবলি করছে, আর্থিক ব্যবস্থাকে টেকসই করতে হলে সুদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে, স্পেকুলেটিভ (Speculative)  মার্কেটের বা ব্যবসার লাগাম টেনে ধরতে হবে এবং যে বস্তু প্রকৃত অর্থে অবস্থান করে না, ওইসব বস্তুর বেচাকেনা বন্ধ করতে হবে। মুসলমানদের জন্য অতিরিক্ত স্পেকুলেশন নিষিদ্ধ এবং যে বস্তু প্রকৃত অর্থে অবস্থান করে না, সে বস্তুর আগাম বেচাকেনা বৈধ নয়। এটা হলো সম্মানিত ইসলামী শরীয়তের ভাষ্য। পশ্চিমা দেশগুলোয় ঋণকে রি-প্যাকেজিং করে অগ্রিম বেচাকেনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বা এখনো ডেরিভেটিভস নামের এক ধরনের হাতিয়ার বেচাকেনা হয়, যেটা সম্পূর্ণভাবে স্পেকুলেশনের ভিত্তিতে বেচাকেনা হয়। ওদের আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে লাভ-সুদ-স্পেকুলেশন এ তিনটি উপাদানের উপর ভিত্তি করে। এর একমাত্র বিকল্প হিসেবে সম্মানিত ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থা অনেক মজবুত এবং সমতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। এ পদ্ধতি ফুটো হওয়ার কথা নয়।

কাজেই সুদবিহীন ও পুঁজিবাদবিরোধী সম্মানিত ইসলামী অর্থনীতির গুরুত্ব রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার দেশ বাংলাদেশকে জোরদারভাবে অনুধাবন করতে হবে। বিশেষ করে যারা ধর্মপ্রাণ মুসলমান, যারা সুদকে অত্যান্ত ঘৃণা করেন ও বর্জন করেন, তাদের জন্য সুদমুক্ত অর্থনীতির ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয়ভাবে করতে হবে। ০.২ উপজাতির সাংস্কৃতিক সাতন্ত্র্য রক্ষায় যদি সরকার নিবেদিত হতে পারে, তবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্যও সুদমুক্ত অর্থনীতি তথা ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ আশরাফুল মাহবূবে রব্বানী

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।