“হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনি তার কথায় কর্ণপাত করবেন না। সে মিথ্যা শপথকারী, ঘৃণিত, অপমানিত, নিন্দাকারী, চোগলখোর, সৎকাজে নিষেধকারী, সীমালঙ্ঘনকারী, পাপিষ্ঠ, পাষান হৃদয় এবং অধিকন্তু সে অবৈধ সন্তান।” (সূরা ক্বলম ১০-১২)
প্রদত্ত আয়াত শরীফে যারা রসুলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা তাঁর মুহতারাম নায়েব বা উলীল আমর তথা হক্ব ওলী আল্লাহদের নামে অপবাদ ছড়ায়, মিথ্যা রটনা করে তাদের হাক্বীক্বত সম্পর্কে বলা হয়েছে।
বলাবাহুল্য, বর্তমান যামানায় উলিল আমর বা ওলী আল্লাহদের সর্দার তথা যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর বিরুদ্ধেও উক্ত অপবাদ লেপনকারী কুচক্রী মহল রয়েছে। কিন্তু তারা যে মূলতঃ কোন্ প্রকৃতির লোক উপরোক্ত আয়াত শরীফে তাই বর্ণিত হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ সুনামগঞ্জের কথা আসে। এ বছরের গোড়ার দিকে সুনামগঞ্জে রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ২ দিন অবস্থানকালে উক্ত কুচক্রীমহলটি এমন মিথ্যার পাহাড় রচনা করেছিল যা মিথ্যার জন্য কুখ্যাত হিটলার শিষ্য গোয়েবলসকেও হার মানায়। বাংলায় প্রবাদ রয়েছে, ‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।’ কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ার যোগ্য।’
সুনামগঞ্জে সেদিন তথাকথিত যে ইমাম-মুয়াজ্জিন পরিষদ মিথ্যা প্রপাগান্ডায় মত্ত হয়েছিল আজ সুনামগঞ্জবাসীই তাদের হাক্বীক্বত উপলব্ধি করতে পারছে। ঘটনাটি পেপার পত্রিকায়ও ফলাও করে ছাপা হয়েছে।
সুনামগঞ্জে সেই মাওলানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী
সুনামগঞ্জে এক অনাথ হিন্দু তরুণীকে মুসলমান দাবি করে বিয়ের আসর থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় আলোচিত সেই মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তেঘরিয়া-লম্বাহাটির বাসিন্দারা। স্থানীয় গাজীর দরগাহ জামে মসজিদে বৈঠক করে এ দাবি তোলেন।
বৈঠকে এলাকাবাসী আনোয়ারের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এতে এলাকার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তারা কাল রোববার রাতে পঞ্চায়েতি বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেন।
সেলিম আহমদ বলেন, ‘আনোয়ারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে পঞ্চায়েতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে সুনামগঞ্জ শহরের পুরনো হাসপাতাল আবাসিক এলাকা থেকে এক অনাথ হিন্দু তরুণীকে মুসলমান দাবি করে মাওলানা আনোয়ারের নেতৃত্বে একদল লোক বিয়ের আসর থেকে তুলে নেয়। পরে ওই রাতে পৌর চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে তরুণীকে উদ্ধার করে বিয়ে দেওয়া হয়। (প্রথম আলো, ২২ এপ্রিল/২০০৬)
উল্লেখ্য তথাকথিত ইমাম-মুায়াজ্জিন পরিষদের ব্যানারে তাদের নেতা এই মাওলানা আনোয়ারই সেদিন রাজারবাগ শরীফ বিরোধী কর্মকাণ্ডে নির্মম নেতৃত্ব দিয়েছিল। শরাবখোর, গুণ্ডা, বদমায়েশ তথা জঙ্গীদের লেলিয়ে দিয়েছিল। রাজারবাগ শরীফ সম্পর্কে সুনামগঞ্জবাসীকে মিথ্যার বেড়াজালে প্ররোচিত করেছিল।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর কারামত আজ সেই মাওলানা আনোয়ারের বিরুদ্ধেই সুনামগঞ্জবাসী জেগে উঠেছে।
পত্রিকায় এসেছে “সুনামগঞ্জে এক অনাথ হিন্দু তরুনীকে বিয়ের আসর থেকে তুলে নিয়ে মুসলমান বানানোর মত অমানবিক ঘটনার জন্য মাওলানা আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে। বিবৃতিতে তারা বলেন, “আমরা মনে করি ব্যক্তিগত কোন স্বার্থসিদ্ধির জন্য এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। (প্রথম আলো, ২১ এপ্রিল/০৬) পত্রিকায় আরো বলা হয়, “মাওলানা মুহিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অস্বীকার করার উপায় নেই, মাওলানা আনোয়ারের চরিত্র হচ্ছে লালসালু উপন্যাসের মজিদের চরিত্রের মতো। এজন্য তার কোনো কর্মকাণ্ড আমরা কখনো সমর্থন করিনা। ১৯৯৩ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের ঘটনায় মাওলানা আনোয়ার উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন। এতে সুনামগঞ্জের মন্দিরগুলোতে হামলার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে দিয়ে ধর্মের ছদ্মাবরণে তার ধর্মান্ধ স্বরূপ আলেম সমাজের কাছে প্রকাশিত।”( প্রথম আলো, ২১ এপ্রিল-২০০৬)
তথাকথিত ইমাম-মুয়াজ্জিন
পরিষদের মিথ্যাচার
“ইমাম- মুয়াজ্জিন পরিষদ সুনামগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলী নূর স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তৃতাকে শতাধিক আলিমের বিবৃতি বলে উল্লেখ করা হলেও এতে ছিল ২৫ জনের নাম।”(প্রথম আলো, ২৪ এপ্রিল/০৬)
মূলতঃ এমনই ছিল ব্যাপারটা যদিও তারা ইমাম-মুয়াজ্জিন পরিষদের ব্যানারে প্রশাসনের কাছে দাবী করেছিল গোটা সুনামগঞ্জবাসীই তাদের সাথে রয়েছে। আসলে তা নয়, ৮০% লোকই তাদের সাথে ছিলনা বরং ছিল রাজারবাগ শরীফের পক্ষে।
তথাকথিত মাওলানা আনোয়ার
কত নারীর মুখ দেখেছে ?
অবশেষে তথাকথিত ইমাম মুয়াজ্জিন পরিষদের নেতা মাওলানা নিজেই নিজের ব্যাভিচারের কথা প্রকাশ করেছে। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “চোখের ব্যাভিচার হল তাকানো।” হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘চোখের দৃষ্টি শয়তানের বিষাক্ত তীর সমূহের একটি। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ পাক লা’নত করেন দৃষ্টিকারী পুরুষ এবং দৃষ্টিতে পতিত নারীদের প্রতি।’ (বায়হাক্বী, শোয়াবুল ঈমান)
এপ্রিলের প্রথম আলোতে কয়েকবার এসেছে “মাওলানা আনোয়ার মেয়েটিকে দেখে বলে, “তোমাকে দেখতে তো মুসলমানের মত লাগে। … মাওলানা আনোয়ার হোসেন বলে, … মেয়েটি দেখতে তো মুসলমানের মত।”
উল্লেখ্য, মুসলমান পুরুষ আর হিন্দু পুরুষকে ধার্মিকতার দিক থেকে আলাদাভাবে চিনা সম্ভব। ধার্মিক মুসলমান পুরুষ দাড়ি রাখে, পাগড়ী কোর্তা পড়ে। কিন্তু এদেশের অবিবাহিত হিন্দু মুসলিম মেয়েদের আলাদাভাবে চেনার কোন বৈশিষ্ট্য নাই। কারণ তারা সবাই প্রায় একই ধরনের পোশাক পড়ে। তারপরেও কুচক্রী মাওলানা আনোয়ার দাবী করেছে যে, সে মেয়েদের চেহারা দেখে বুঝতে পারে সে হিন্দু না মুসলমান। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হয়, ভণ্ড আনোয়ার মাওলানা কত হাজার হাজার হিন্দু-মুসলিম মেয়েদের দিকে তাকিয়ে তার কথিত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। আর শুধু মুসলমান মেয়েই নয়, হাজার হাজার হিন্দু মহিলাদের দিকেও আলাদা, গাঢ় এবং অত্যন্ত মনোযোগী ও দীর্ঘক্ষণ দৃষ্টি দিয়ে সে কত লক্ষ লক্ষ ব্যাভিচার করেছে, কত শক্ত লা’নতী হয়েছে তা ভেবে দেখেছে কি?
মূলতঃ এরূপ কঠিন লা’নত যুক্ত হয়ে তার অন্তরে মহর পড়ে যাওয়ার কারণেই সে চরম অন্যায়ভাবে রাজারবাগ শরীফের বিরোধীতায় নেমেছে।
জালিয়াত ও জাহিল মাওলানা আনোয়ার
ভণ্ড মাওলানা আনোয়ার তার জঙ্গী বাহিনী দ্বারা হিন্দু মেয়েটিকে অপহরণ করার পর আসল ঘটনা চুপিয়ে রেখে দুরভিসন্ধিমূলকভাবে সাবেক কমিশনার কামরান আলীকে জোর করে ধর্মপিতা বানিয়ে তার জিম্মায় দেয়া। এ প্রসঙ্গে কথিত ধর্মপিতা কামরান আলী বলে, আমাকে আনোয়ার মাওলানা ডেকে নিয়ে বলেছিলো, মেয়েটি অনাথ, আপনার মেয়ের মত। ধর্মপিতা হিসেবে তাকে আশ্রয় দেন। পরে আসল ঘটনা শুনে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি।”
উল্লেখ্য বর্ণিত ঘটনায় হিন্দু মেয়েকে জোর করে অপহরনের ঘটনা চুপিয়ে রাখার জালিয়াতি কেবল নয় বরং তার জেহালতিও প্রকাশ পেয়েছে। কারণ ইসলামে ধর্মপিতা বলে কোন সম্পর্ক নেই। ধর্ম পিতা বা বোনের নামে যারা দেখা সাক্ষাত করে এবং এ প্রথাকে সমর্থন করে তারা চুড়ান্ত জাহেল ও গোমরাহ। আর তথাকথিত কুচক্রী মাওলানা তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীন দাবী করলেও আসলে সে কত বড় জাহিল ও জালিয়াত তা তার ভণ্ডামি ও গোমরাহীর সাথে ধরা পড়লো।
আসলে কি?
প্রথম আলোতে বিবৃতি এসেছে “আমরা মনে করি ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থসিদ্ধির জন্য এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।” অভিজ্ঞ মহল মনে করেন যে, কিছুদিন আগে জিন-ছাড়ানোর অজুহাতে উক্ত হিন্দু মেয়েটিকে ঝাড়ফুকের নামে জেল রোড মসজিদের ইমাম, মাওলানা আনোয়ারের ডানহাত- মোজাম্মেল, হিন্দু মেয়েটির নিকট সান্নিধ্যে যায়। তখনই মেয়েটির প্রতি তার চোখ পড়ে যায়। আর এরপর হঠাৎ উক্ত মেয়েটির বিয়ে শুনেই তার জিহ্বা লকলক করে উঠে। এবং তার সে কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই এতসব নাটকের অবতারণা হয়। এদিকে একই নফসানিয়তের প্রাবল্য হেতু সহযোগী ইমামকে মদদ করতেই ভণ্ড মাওলানা আনোয়ার নেমে পড়ে ময়দানে।
উল্লেখ্য মাওলানা আনোয়ার রাজারবাগ শরীফের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডার পাহাড় রচনা করেছিল। এবং সত্যিই যে সে এ কুকর্মের বয়োজৈষ্ঠ নেতা তা সে যথার্থ ভাবেই প্রমাণ করল। কারণ, আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান, “জীন ও মানুষের মধ্যে যারা শয়তান বা বদ প্রকৃতির, তাদেরকেই আমি নবী-রসূলের (ও আউলিয়ায়ে কিরামের) শত্রু বানিয়েছি।” পাশাপাশি আল্লাহ পাক আরো বলেন, “আমি সত্য এবং মিথ্যাকে পার্থক্য করা ব্যতীত ছাড়বো না।”
এই আয়াত শরীফের প্রেক্ষিতেই তাই আজকে সুনামগঞ্জের কুচক্রী মহল তথাকথিত ইমাম-মুয়াজ্জিন পরিষদের নেতা ভণ্ড মাওলানার যে হাক্বীক্বত প্রকাশ হয়েছে তাহলো- সে একাধারে মিথ্যাবাদী, নারী লোলুপ, বদচরিত্র, জালিয়াত, গোমরাহ, জাহিল, পরনিন্দাকারী, জঙ্গী, উস্কানিদাতা, ধর্মব্যবসায়ী, ধর্মের লেবাসধারী ও ব্যাভিচারী তথা হাদীছ শরীফের ভাষায় “সৃষ্টির মাঝে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট ও শয়তানের সহচর।”
আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রযীম।
-খন্দকার মুহম্মদ মুসলিম, ঢাকা।
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫