সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদ যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-৪ (বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)

সংখ্যা: ২৩৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

সম্মানিতা মাতা উনার রেহেম শরীফে অবস্থানকালীন অবস্থা মুবারক

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

পবিত্র ফযর নামায শেষে বিষয়টি নিয়ে আমরা পুনরায় আলোচনা করতে লাগলাম। পরে পবিত্র যিকির উনার লফজ বা শব্দটি আবিষ্কার করতে সমর্থ হলাম। লফজ বা শব্দটি ছিলো, “সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ।”

আমার যাওজুল মুকাররাম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদ গিয়াসুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “এ যিকির আলমে আরওয়াহ (রূহের জগতে) সকল ইনসানের জন্য নির্দ্ধারিত ছিলো। এটাই ওই জগতের একমাত্র ইবাদত হিসেবে নির্দ্ধারিত রয়েছে। এ ইবাদতের উপর নির্ভর করেই বান্দাগণ দুনিয়ায় নিজ মর্যাদা-মর্তবা লাভ করে জন্ম নেয়। কেউ ওলীআল্লাহ উনাদের ঘরে, কেউ আলিমের, কেউ জাহিদের ঘরে, কেউ মুমিনের ঘরে, কেউ কাফির বেদ্বীন-বদ্বীনের ঘরে। আর ওই জগতের ইবাদত-বন্দেগীর উপর নির্ভর করেই বান্দাগণ শারীরিক সুস্থতা, অসুস্থতা, অন্ধ, কানা, খোঁড়া ও বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম নেয়। কেননা ওই জগতে ইবাদত-বন্দেগীর বিনিময়ে যা প্রাপ্তি ঘটে তাতে সে দুনিয়ায় নিজ মর্যাদা বা স্তর লাভ করে। আলমে আরওয়াহ বা রূহের জগতের কর্মফল দুনিয়ায় লাভ হওয়ার পর সে নিষ্পাপ হয়ে জন্ম নেয়।” আমি আমার স্বামীর এসব জ্ঞানগর্ভ কথা শুনে মোহিত হয়ে পড়েছিলাম। যে সব তথ্য আমার জানা ছিলো না তাও জানতে পেরে যারপর নেই আনন্দিত হলাম।

এ মাসটি ছিলো আমার সন্তান রেহেম শরীফে অবস্থানের চতুর্থ মাস। এভাবেই একটা মহা আনন্দের মধ্যে আমার সুযোগ্য সন্তান উনার পবিত্র যিকির শুনে শুনে আমার মধ্যেও যযবা ও হালের সৃষ্টি হতো। আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলতাম। অবশ্য আমি নিজেও ওই যিকিরের সাথে সাথে যিকির করতাম। এ সোনালী ও স্বর্গীয় আবেশে বিমোহিত দিনগুলো আস্তে আস্তে শেষ হতে হতে আরও ছয়টি মাস অতিবাহিত হয়ে পবিত্র রজব মাস আগমন করলো। যে মাস সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “رجب شهر الله”  অর্থাৎ “পবিত্র রজব মাস হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মাস।” এ পবিত্র রজব মাসেরই চৌদ্দ তারিখ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার শরীফ রাতে অবসানে দিনের শুরুতে আমার মুবারক সন্তান দুনিয়ার যমীনে আগমন করেন। আলহামদুলিল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারকে আমরা আমাদের সন্তানের নাম মুবারক ‘মুঈনুদ্দীন’ এবং ডাক নাম ‘হাসান’ রাখলাম। আমরা উনাকে আদর করে ‘হাসান’ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেই সবসময় ডাকতাম।

মুবারক লক্বব বা উপাধিসমূহ:

সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অসংখ্য অগণিত লক্বব মুবারক রয়েছে। এক কথায় তিনি ‘নবী-রসূল’ ব্যতীত যত লক্বব রয়েছে সমস্ত লক্বব মুবারকেরই অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি ছিলেন সকল ছিফত বা গুণ মুবারকের অধিকারী। তন্মধ্যে আমরা কয়েকটি লক্বব মুবারক আলোচ্য নিবন্ধে উল্লেখ করছি।

১।  سلطان الـهند (সুলতানুল হিন্দ) অর্থাৎ পাক ভারত উপমহাদেশের আধ্যাত্মিক বাদশাহ।

২। سيد العابدين (সাইয়্যিদুল আবিদীন) অর্থাৎ ইবাদতকারীগণের সাইয়্যিদ।

৩। تاج الـمقربين والـمهققين (তাজুল মুকাররাবীন ওয়াল মুহাক্কিকীন) অর্থাৎ মুহাক্কিক্ব ও নৈকট্য হাছিলকারীগণের মুকুট।

৪। برهان الواصلين (বুরহানুল ওয়াছিলীন) অর্থাৎ মুবারক দীদার বা জিয়ারত লাভকারীগণের দলীল।

৫।  صاحب اسرار(ছহিবে আসরার) অর্থাৎ আসরার বা গুপ্তভেদের অধিকারী বা রহস্যের ভা-ার।

৬। امام الشريعة والطريقة (ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীকত) অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত এবং সম্মানিত ত্বরীকত উনার ইমাম।

৭। معين الـملة والدين (মুঈনুল মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন) অর্থাৎ সম্মানিত মিল্লাত এবং সম্মানিত দ্বীন উনার সাহায্যকারী বা সহায়ক।

৮। سلطان العارفين (সুলতানুল আরিফীন) অর্থাৎ আরিফ তথ ওলীআল্লাহগণ উনাদের সুলতান বা বাদশাহ।

সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-১৭৩ -মুহম্মদ সাদী

পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদুর রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মহা সম্মানিতা আম্মা আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম (২২) উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-১৯ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)

সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদ যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-৩ (বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-১৭৪