সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদ যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-৩০ (বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)

সংখ্যা: ২৫৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সিস্তানে অবস্থান

পূর্ব প্রকাশিতের পর

একদিন আমি আমার পীর ছাহিব ও মুর্শিদ ক্বিবলা হযরত খাজা উসমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি, শায়েখ আহাদুদ্দীন কিরমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং খাজা মুহম্মদ আরিফ রহমতুল্লাহি আলাইহিসহ এক সাথে দামেস্কের মসজিদে বসেছিলাম। আমাদের সামনে আরও কয়েকজন দরবেশও বসেছিলেন:

খাজা মুহম্মদ আরিফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “ক্বিয়ামতের দিন কুল কায়িনাতের সবাই হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের থেকে ফায়দা লাভ করবে।”

উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে এক ব্যক্তি তা বিশ্বাস করতে পারলো না। সে প্রতিবাদ করে বললো, এমন কথা কোন্ কিতাবে লিখা আছে?

খাজা মুহম্মদ আরিফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবটির নাম মনে ছিলো না। হেতু তিনি বললেন, আমি কিতাবে পড়েছি। কিন্তু কিতাবের নাম এ মুহুর্তে স্মরণে আসছে না। তখন লোকটি শক্তভাবে বললো, “আপনাকে কিতাব দেখাতে হবে।” তিনি মুরাকাবা করলেন। মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে হুকুম দিলেন, যে কিতাবে ঐ কথাটি লিখা আছে সে কিতাবটি নিয়ে ঐ বুযুর্গ ব্যক্তিকে দেখিয়ে নিয়ে আসুন।

খাজা মুহম্মদ আরীফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কিতাবের নাম, পৃষ্ঠাসহ ঐ ব্যক্তিকে বলে দিলেন। সে ব্যক্তি উনার ক্বদম মুবারকে পড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলো। তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন।

এরপর সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো যে, “এখানে যেসব দরবেশ সাহেব উপস্থিত আছেন উনারা সকলেই সম্মানিত কারামত প্রকাশ করবেন।”

প্রথমে আমার মুর্শিদ ক্বিবলা হযরত খাজা উসমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জায়নামাযের নীচে হাত দিয়ে একমুঠ স্বর্ণ বের করে আনলেন। একজন দরবেশকে সেগুলো দিয়ে বললেন, দরবেশদের জন্য হালুয়া কিনে আনুন। হালুয়া আনা হলো। এরপর হযরত আহাদুদ্দীন কিরমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার সামনে রক্ষিত এক খ- কাঠের উপর হাত রাখলেন, সাথে সাথে কাঠটি স্বর্ণে রূপান্তরিত হলো।

কিন্তু আমি হযরত পীর ছাহিব ক্বিবলা উনার আদবের প্রতি লক্ষ্য রেখে কিছুই প্রদর্শন করলাম না। তিনি আমার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন, হে হযরত মুঈনুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি কিছু করলেন না?

মুর্শিদ ক্বিবলা উনার নির্দেশ পেয়ে আমি আমার কম্বলের ভিতর থেকে কয়েকটি গরম রুটি বের করে এক ক্ষুধার্ত দরবেশকে দিয়ে দিলাম। ঐ দরবেশ এবং খাজা মুহম্মদ আরিফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা দুইজনই বললেন, “যে দরবেশের মধ্যে এতটুকু শক্তি নেই, তাকে দরবেশ বলা চলে না।” (দলীলুল আরেফীন: ৪১-৪২ পৃষ্ঠা)

বিধর্মী দুর্ধর্ষ ডাকাতদের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহন

সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি একবার সফরে (ভ্রমনে) বের হলেন। সফর করতে করতে জঙ্গলের নিকটবর্তী একটি আবাসস্থলে উপস্থিত হলেন। ঐ স্থানে ডাকাতদের দৌরাত্ম ছিল। তাদের প্রকৃতি ছিল যে, ভিন দেশী কাউকে পেলে তাদের মালামালা অর্থ-কড়ি সব লুণ্ঠন করতো। আর মুসলমান কাউকে পেলে তাদেরকে হত্যা করতো। ডাকাতরা যখন জানতে পারলো যে, একদল মুসলমান তাদের এলাকায় হাজির হয়েছে তখন তারা মারমুখী হয়ে অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সামনে উপস্থিত হলো। কিন্তু তারা উনার নূরানী চেহারা মুবারক দেখে নির্বাক ও অসাড় হয়ে পড়লো। কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার জালালিয়াতের দৃষ্টি মুবারক দ্বারা তাদের দিকে তাকালেন। তারা উনার জালালিয়াত দেখে অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে জীবন ভিক্ষা চাইতে লাগলো। ভীষন চিৎকার করে বলতে লাগলো, হে মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী! আপনি মেহেরবানী করে আমাদের স্বাভাবিক অবস্থা ভিক্ষা দান করুন। আমরা আজীবন আপনার গোলাম হয়ে থাকবো।

আর এদিকে তাদের অবস্থা পাথরের মত নিথর নিস্তব্দ ও অবশ হয়ে যাচ্ছিল। ভিতর বাহির সবকিছু পুড়ে ছারখার হচ্ছিল। তারা কাকুতি মিনতি করে বার বার ক্ষমা প্রার্থনা  করছিল।

সুলতানুল হিন্দ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সুশীতল ছায়াতলে তাদেরকে আশ্রয় দান করলেন। কালিমা শরীফ পড়িয়ে মুসলমান বানিয়ে নিজ মুরীদগণের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন। বর্ণিত আছে যে, পরে ঐ দেশের সকল পুরুষ মহিলা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করতঃ সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, খাজায়ে খাঁজেগা , আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদগণের অন্তর্ভুক্ত হলেন।  (বাবা গরীবে নেওয়াজের জীবনী-৫২)

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১১৯

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১২০

ক্বায়িম মাক্বামে আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাখ্দূমুল কায়িনাত, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-২৩৫

উম্মু মুর্শিদিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- মহাসম্মানিত হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম মুবারক সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত-৮৫

হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি