(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
পাঁচটি জিনিসের প্রতি দৃষ্টি দেয়া ইবাদত এবং গোনাহ মাফের কারণ। তার তৃতীয়টি হচ্ছে- ওলীআল্লাহণ উনাদের মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার তথা চেহারা মুবারক দেখা।
যখন কোন ব্যক্তি মুহব্বত ও তা’যীম-তাকরীমের সাথে কোন ওলী আল্লাহ উনার চেহারা মুবারকের প্রতি দৃষ্টি দেয় তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সাথে সাথে একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে পয়দা করেন। যে ফেরেশতা আলাইহিস সালাম ক্বিয়ামত পর্যন্ত উক্ত ব্যক্তির জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর যার অন্তরে হক্কানী-রব্বানী আলিম তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের মুহব্বত ও তাযীম-তাকরীম সর্বদা বিরাজ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে হাজার বছরের ইবাদত-বন্দেগীর ছওয়াব দান করেন এবং ঐ সময়কালে তথা অন্তরে মুহব্বত ও তাযীম-তাকরীম বিরাজমান অবস্থায় ইন্তিকাল করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে হক্কানী-রব্বানী আলিমগণের মর্যাদা-মর্তবা দান করেন। তাকে ইল্লিনে স্থান দেন। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, আমি “ফাতওয়ায়ে যহীরিয়া” কিতাবে দেখেছি, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোন হক্কানী-রব্বানী আলিম এবং ওলীআল্লাহ উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার তথা উনাদের জিয়ারত মুবারক করার জন্য সাধ্যানুযায়ী পরিশ্রম করে, চেষ্টা-কোশেশ করে। আর সেই চেষ্টা-কোশেশ সাতদিন পর্যন্ত চালিয়ে যায়, ঐ সাত দিনে রোযা রাখে এবং রাত্রি জাগরণ করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাত হাজার বছর আমল করার ছাওয়াব তার আমলনামায় লিখার জন্য হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নির্দেশ মুবারক দান করেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি এ প্রসঙ্গে একটি ওয়াকেয়া বর্ণনা করেন, অনেক দিন পূর্বের কথা। এমন এক ব্যক্তি ছিলো, সে যখন কোন পীর-মাশায়িখকে দেখতো অবজ্ঞাভরে সাথে সাথে মুখ ফিরিয়ে নিত। ক্রোধ হিংসা ও অহংকারের আগুনে জ্বলতে থাকতো। নাউযুবিল্লাহ! এক সময় সে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলো। গোসল, কাফন ও জানাজার নামায পড়ার পর কবরে নামানো হলো। আর সাথে সাথে তার মুখটা ক্বিবলার দিক থেকে ফিরে গেল। বাম দিকে কাত হয়ে গেলো। লোকজন ডান দিকে তথা ক্বিবলামুখী করার জন্য অনেক চেষ্টা-কোশেশ করতে লাগলো। কিন্তু কিছুতেই ক্বিবলামুখী করতে পারলো না। এ অবস্থা দেখে সবাই হতবাক হয়ে গেল। এমতাবস্থায় গায়েবী আওয়াজ হলো- তোমরা এ লোকটির জন্য কেন অযথা চেষ্টা- কোশেশ করছো। তোমরা কখনই তাকে ক্বিবলামুখী করতে পারবে না। কারণ, এতো সেই লোক, যে আমার ওলী, পীর-মাশায়িখগণকে দেখলে মুখ ফিরিয়ে নিত। যে আমার ওলী উনার দর্শন করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে কখনো আমার রহমত লাভ করতে পারে না। সে পথভ্রষ্ট ও গোমরাহ হয়েছে। ক্বিয়ামতের দিন তাকে শুকরের চেহারায় হাশরের ময়দানে উত্তোলন করা হবে। নাউযুবিল্লাহ!